পরীক্ষার হল থেকে আগুন আগুন চিৎকার শুনতে পাই

মাদ্রাসার প্রভাষকসহ আরও ৩ জনের সাক্ষ্য

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় গতকাল আরও তিন সাক্ষী সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক মো. কবির আহাম্মদ, আলিম পরীক্ষার্থী ফাহমিদা আক্তার হামদুনা ও নাসরিন সুলতানার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

এ পর্যন্ত ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আদালত আগামী রোববার ওই মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার, বিবি হাজেরা, আবু বকর ছিদ্দিক ও মো. আকবরের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন। গত ২৭ জুন থেকে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শুরু হয়ে টানা এ কার্যক্রম চলছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, সাক্ষ্য দিতে গিয়ে প্রভাষক মো. কবির আহাম্মদ বলেন, ৬ এপ্রিল ঘটনার দিন আমি ৮নং হলের দায়িত্বে ছিলাম। ওই হলে নুসরাত জাহান রাফিও পরীক্ষা দিচ্ছিল। ওই দিন সকাল সাড়ে ৯টার পর আমি হলে উপস্থিত হই। পৌনে ১০টায় খাতা দেয়া শেষ করি। এ সময় দেখতে পাই একজন অনুপস্থিত রয়েছে। জানতে চাইলাম, এটা কে? অন্যরা বলল, নুসরাত অনুপস্থিত। এর কিছুক্ষণ পর আগুন আগুন চিৎকার শুনতে পাই। খবর নিয়ে জানতে পারি নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়া হয়েছে।

নুসরাতের সহপাঠী হামদুনা এবং নাসরিন সুলতানা তাদের সাক্ষ্যে বলেন, সেদিন নুসরাত সাড়ে ৯টার দিকে হলে এসেছিল। কেউ একজন তাকে ডেকে বাইরে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় নুসরাত আমাদের বলেছিল, আমার বান্ধবী নিশাতের কোন সমস্যা হয়েছে মনে হয়; আমি আসছি। এর ২০ থেকে ২২ মিনিট পর হইচই শুনে অনেকের সঙ্গে আমরাও বাইরে আসি এবং দেখি একটি আগুনে পোড়া দেহ বেশ কয়েকজন মিলে ধরে সিএনজিতে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। পরে খবর নিয়ে জানতে পারি, ওটা ছিল নুসরাত। সাক্ষ্য শেষে সাক্ষীদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

আদালত সূত্রের বরাত দিয়ে জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ বলেন, ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার এক শিক্ষকসহ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী রোববার আরও চার সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। এরা নুসরাত হত্যা মামলার ২৯ থেকে ৩২ নম্বর সাক্ষী।

শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০১৯ , ৪ শ্রাবন ১৪২৫, ১৫ জিলকদ ১৪৪০

পরীক্ষার হল থেকে আগুন আগুন চিৎকার শুনতে পাই

মাদ্রাসার প্রভাষকসহ আরও ৩ জনের সাক্ষ্য

প্রতিনিধি, ফেনী

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় গতকাল আরও তিন সাক্ষী সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক মো. কবির আহাম্মদ, আলিম পরীক্ষার্থী ফাহমিদা আক্তার হামদুনা ও নাসরিন সুলতানার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

এ পর্যন্ত ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। আদালত আগামী রোববার ওই মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার, বিবি হাজেরা, আবু বকর ছিদ্দিক ও মো. আকবরের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন। গত ২৭ জুন থেকে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শুরু হয়ে টানা এ কার্যক্রম চলছে। আদালত সূত্রে জানা যায়, সাক্ষ্য দিতে গিয়ে প্রভাষক মো. কবির আহাম্মদ বলেন, ৬ এপ্রিল ঘটনার দিন আমি ৮নং হলের দায়িত্বে ছিলাম। ওই হলে নুসরাত জাহান রাফিও পরীক্ষা দিচ্ছিল। ওই দিন সকাল সাড়ে ৯টার পর আমি হলে উপস্থিত হই। পৌনে ১০টায় খাতা দেয়া শেষ করি। এ সময় দেখতে পাই একজন অনুপস্থিত রয়েছে। জানতে চাইলাম, এটা কে? অন্যরা বলল, নুসরাত অনুপস্থিত। এর কিছুক্ষণ পর আগুন আগুন চিৎকার শুনতে পাই। খবর নিয়ে জানতে পারি নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়া হয়েছে।

নুসরাতের সহপাঠী হামদুনা এবং নাসরিন সুলতানা তাদের সাক্ষ্যে বলেন, সেদিন নুসরাত সাড়ে ৯টার দিকে হলে এসেছিল। কেউ একজন তাকে ডেকে বাইরে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় নুসরাত আমাদের বলেছিল, আমার বান্ধবী নিশাতের কোন সমস্যা হয়েছে মনে হয়; আমি আসছি। এর ২০ থেকে ২২ মিনিট পর হইচই শুনে অনেকের সঙ্গে আমরাও বাইরে আসি এবং দেখি একটি আগুনে পোড়া দেহ বেশ কয়েকজন মিলে ধরে সিএনজিতে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। পরে খবর নিয়ে জানতে পারি, ওটা ছিল নুসরাত। সাক্ষ্য শেষে সাক্ষীদের জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

আদালত সূত্রের বরাত দিয়ে জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ বলেন, ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার এক শিক্ষকসহ তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী রোববার আরও চার সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। এরা নুসরাত হত্যা মামলার ২৯ থেকে ৩২ নম্বর সাক্ষী।