তিন বছরেও চালু করা যায়নি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন

৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান

নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে কোটি টাকা মূল্যের ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন দিয়ে ডিজিটাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে ৩ বছর আগে সরবরাহ করা মেশিনটি রেখে সরবরাহকারী পালিয়ে গেলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এই সরবরাহ থেকে তারা ৫০ লাখ টাক আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের দীর্ঘদিনের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্য দফতর এ হাসপাতালের জন্য একটি ৫০০ এমএ এক্স-রে মেশিন ঢাকা কেন্দ্রীয় ওষুধ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান সিএসডি, যা গত ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর হাসপাতালের স্টোরকিপার সাইফ খান ৮টি বাক্সবন্দী কার্টনে বুঝে নেন। এরপর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যালকে বারবার বলার পরও বাক্স খুলে বুঝিয়ে না দেয়ায় জনগণের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক ডা. আ ন ম শামছুল করিম হাসপাতালের চিকিৎসকসহ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে বাক্স খোলেন। বাক্স খুলে ১টি এক্স-রে মেশিন ৫০০ এমএ, ১টি জেনারেটর, ২টি এয়ার কন্ডিশনার, ২টি ডিইউমিডি কেয়ার, ১টি লিডগ্লাস, ২টি লিড এপ্রন বুনেন নেন। এরপর ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল একই স্টোরকিপার ১টি বাক্সে ১টি কমডিডেটড রেডিওগ্রাফি এবং ২০-০৮-২০১৭ তারিখে আরেক বাক্সে ক্রিসটাল ইমাজার ১ বক্স, সিপিউ ১ কার্টন, মনিটর ১ কার্টন, ক্রিসটাল ফিল্ম (১৫”-১৭”) (৫০০ পিস) ১ কার্টন, ক্রিসটাল ফিল্ম (১০”-১২”) (১০০ পিস), ১ প্যাক, ক্রিসটাল ফিল্ম (৮”-১০”) ১ সেট, ইউপিএস-১ কার্টন বুঝে নেন ২০১৭ সালে ৮ আগস্ট সরবরাহকারী সরবরাহের পরও এ ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের কার্টন খোলে মালামাল বুঝিয়ে দিয়ে তা বসিয়ে চালু না করায় তত্ত্বাবধায়ক ডা. আ ন ম সামছুল করিম তৎকালীন সহকারী পরিচালক ডা. খলিল উল্যার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে বাক্সগুলো খুলে চালানে উল্লেখিত মালামাল সঠিক রয়েছে কি না, তা দেখার নির্দেশ দেন এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত এক্স-রে মেশিনটি বসানোর অনুরোধপত্র দেন।

এরপর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রকৌশলী নেতৃত্বে টেকনিশিয়ানরা এসে মেশিনটি স্থাপন করলেও তা কাজ না করায় প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান যথাসম্ভব বিদ্যুতের হাইভোল্টজ থাকায় মেশিনটি কাজ করছে না এবং এ সমস্যায় দ্রুত সম্ভব সময়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এ রিপোর্ট লেখার সময়ও মেশিনটি চালু করতে আসেননি। যার ফলে মেশিনটি অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর এ ৩ বছরের এলাকায় ভুক্তভোগীরা হাসপাতালের এক্স-রে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, অচল এক্স-রে মেশিন বুঝিয়ে দিয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অন্তত ৫০ লাখ টাকার বিল তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। তাছাড়া যেসব মালামাল সরবরাহ করেছে তাও ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে যার ফলে সরকারের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খলিল উল্যা জানান, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে পরপর পত্র লিখেও কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯ , ১৫ শ্রাবন ১৪২৫, ২৬ জিলকদ ১৪৪০

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে দুর্নীতি

তিন বছরেও চালু করা যায়নি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন

৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান

মনিরুজ্জামান চৌধুরী, নোয়াখালী

নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে কোটি টাকা মূল্যের ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন দিয়ে ডিজিটাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে ৩ বছর আগে সরবরাহ করা মেশিনটি রেখে সরবরাহকারী পালিয়ে গেলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এই সরবরাহ থেকে তারা ৫০ লাখ টাক আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের দীর্ঘদিনের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্য দফতর এ হাসপাতালের জন্য একটি ৫০০ এমএ এক্স-রে মেশিন ঢাকা কেন্দ্রীয় ওষুধ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান সিএসডি, যা গত ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর হাসপাতালের স্টোরকিপার সাইফ খান ৮টি বাক্সবন্দী কার্টনে বুঝে নেন। এরপর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যালকে বারবার বলার পরও বাক্স খুলে বুঝিয়ে না দেয়ায় জনগণের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক ডা. আ ন ম শামছুল করিম হাসপাতালের চিকিৎসকসহ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে বাক্স খোলেন। বাক্স খুলে ১টি এক্স-রে মেশিন ৫০০ এমএ, ১টি জেনারেটর, ২টি এয়ার কন্ডিশনার, ২টি ডিইউমিডি কেয়ার, ১টি লিডগ্লাস, ২টি লিড এপ্রন বুনেন নেন। এরপর ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল একই স্টোরকিপার ১টি বাক্সে ১টি কমডিডেটড রেডিওগ্রাফি এবং ২০-০৮-২০১৭ তারিখে আরেক বাক্সে ক্রিসটাল ইমাজার ১ বক্স, সিপিউ ১ কার্টন, মনিটর ১ কার্টন, ক্রিসটাল ফিল্ম (১৫”-১৭”) (৫০০ পিস) ১ কার্টন, ক্রিসটাল ফিল্ম (১০”-১২”) (১০০ পিস), ১ প্যাক, ক্রিসটাল ফিল্ম (৮”-১০”) ১ সেট, ইউপিএস-১ কার্টন বুঝে নেন ২০১৭ সালে ৮ আগস্ট সরবরাহকারী সরবরাহের পরও এ ডিজিটাল এক্স-রে মেশিনের কার্টন খোলে মালামাল বুঝিয়ে দিয়ে তা বসিয়ে চালু না করায় তত্ত্বাবধায়ক ডা. আ ন ম সামছুল করিম তৎকালীন সহকারী পরিচালক ডা. খলিল উল্যার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে বাক্সগুলো খুলে চালানে উল্লেখিত মালামাল সঠিক রয়েছে কি না, তা দেখার নির্দেশ দেন এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত এক্স-রে মেশিনটি বসানোর অনুরোধপত্র দেন।

এরপর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রকৌশলী নেতৃত্বে টেকনিশিয়ানরা এসে মেশিনটি স্থাপন করলেও তা কাজ না করায় প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান যথাসম্ভব বিদ্যুতের হাইভোল্টজ থাকায় মেশিনটি কাজ করছে না এবং এ সমস্যায় দ্রুত সম্ভব সময়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এ রিপোর্ট লেখার সময়ও মেশিনটি চালু করতে আসেননি। যার ফলে মেশিনটি অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর এ ৩ বছরের এলাকায় ভুক্তভোগীরা হাসপাতালের এক্স-রে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, অচল এক্স-রে মেশিন বুঝিয়ে দিয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অন্তত ৫০ লাখ টাকার বিল তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। তাছাড়া যেসব মালামাল সরবরাহ করেছে তাও ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে যার ফলে সরকারের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খলিল উল্যা জানান, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে পরপর পত্র লিখেও কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।