প্রতিশ্রুতি আর নানা অভিযোগ নিয়ে প্রার্থীরা প্রচারে

সিটি নির্বাচনে আর ১১দিন প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। ২৮ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা চালানো যাবে। ভোটগ্রহণের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততাও বাড়ছে প্রার্থীদের। গণসংযোগ, মাইকিং, মিছিল ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রচারণায় প্রতিদিনই দিচ্ছেন নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি। ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে প্রায় ৫৪ লাখ ভোটার রয়েছেন।

গতকাল ছিল প্রচারণার সপ্তম দিন। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নৌকা ও ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীরা গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়েছেন। তাদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচার-প্রচারণায় মাঠে ছিলেন। ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হবে ২৮ তারিখ রাত ১২টায়। সে হিসেবে প্রচারণার আর মাত্র ১১ দিন বাকি রয়েছে। অন্য দিনের মতো গতকালও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা নানা অভিযোগ করেছেন। আর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আতিকুল : উত্তর সিটি করপোরেশনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম আলুব্দি ঈদগাহ মাঠ থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ড, মিরপুর ১২, সেকশন ১১, পলাশ নগর, সেকশন ১০, পল্লবী ও রূপনগর এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে সব ধর্মের লোক বাস করে, সবারই উৎসব পালনের অধিকার রয়েছে। আমি অবশ্যই মনে করি, সরস্বতী পূজার কারণে যদি নির্বাচন পেছানোর দরকার হয় সেটা করতে হবে। আমি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমার পক্ষ থেকে, দলের পক্ষ থেকে দাবি জানাচ্ছি, যদি সম্ভব হয় তাহলে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিন। কারও ধর্ম পালনে যেন কোন বিঘœ না ঘটে। নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আতিকুল বলেন, আমি যদি বলতাম আমার নেতাকর্মীরা যদি বলত, তাবিথ আউয়ালের কোন পোস্টার ঢাকা শহরে থাকত না। আমি দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধ করব, আমাদের কোন পোস্টার ছেঁড়া লাগবে না, কাউকে বাধা দেয়া লাগবে না। আমি বরং ওয়েলকাম করব, প্রয়োজন পড়লে আমি পোস্টার লাগিয়ে দেব কিন্তু ছিঁড়ব না। এ সময় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

তাবিথ : গতকাল বসুন্ধরা সিটি মার্কেটের সামনে থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা শুরু করেন ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। এদিন তিনি গ্রিন রোড, আনন্দ সিনেমা হলের পাশ দিয়ে তেজগাঁও কলেজ, ইন্দিরা রোড, খামারবাড়ি, মণিপুরিপাড়া, আওলাদ হোসেন মার্কেট হয়ে আগারগাঁও, তালতলা এলাকা, ৬০ ফুট সড়ক ধরে পীরের বাগ এলাকায় জনসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাব। জনগণ ভোট দিতে পারলে বিজয় সুনিশ্চিত। গত দশ বছর সরকারি দলের মেয়র ছিল। কিন্তু ঢাকা শহর পৃথিবীর বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার শীর্ষে স্থান নিয়েছে। অন্যদিকে সিলেটে বিএনপির মেয়র অভাবনীয় কাজ করে বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছেন। সুতরাং কাজের ইচ্ছা থাকলে বিরোধী দলে থাকলেও কাজ করা যায়। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ব্যবহারে জনগণ এখনও প্রস্তুত নয়। নির্বাচন কমিশন নিজেই স্বীকার করছে, তাদের প্রশিক্ষিত জনবল নাই, সেনাবাহিনীর থেকে ধার করতে হচ্ছে। আমরা সবসময় বলে আসছি, আমরা প্রযুক্তির বিপক্ষে নই, আমরা প্রসেসটার বিরোধিতা করছি। নির্বাচন কমিশন যদি একতরফাভাবে ইভিএম ব্যবহার করতেই চায়, তাহলে অনেক আগেই উচিত ছিল, জনগণকে প্রশিক্ষণ দেয়ার, তাদের সচেতন করার। কিন্তু তাদের সে ব্যবস্থা নেয়ার ইচ্ছা নেই।

তাপস : দক্ষিণে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস গতকাল আজিমপুর-নিউমার্কেট এলাকার বিজিবি ৩ নম্বর গেটের সামনে থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে মেয়র হিসেবে নয় একজন সেবক হিসেবে ঢাকাবাসীর জন্য কাজ করে যাব। সেখানে একজন সেবক হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২৪ ঘণ্টা ঢাকাবাসীর সেবা করবে। ঢাকাবাসী আমাকে তাদের কাছে ২৪ ঘণ্টাই পাবে। আমাদের হেল্পলাইন আমরা চালু করব, যাতে ঢাকাবাসীর যেকোন সমস্যা যে কোন অভিযোগ দিতে পারে। হেল্পলাইনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান না হলে তারা সরাসরি মেয়রকে ফোন করতে পারবে। মেয়র সেই বিষয়ে সঙ্গে সঙ্গে সমাধান দেবে। এভাবে আমরা আমাদের সেবাকে সার্বক্ষণিক ঢাকাবাসীর দোরগোঁড়ায় পৌঁছাব। তিনি বলেন, ঢাকা নগরীকে আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে বাসযোগ্য সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। রাস্তায় আবর্জনামুক্ত অবস্থায় থাকবে না। মশক নিধন, সবুজায়ন এসব আমরা দৈনন্দিন ভিত্তিতে করব। ২৪ ঘণ্টা সিটি করপোরেশন এই কাজে নিয়োজিত থাকবে। আমাদের প্রাণের ঐতিহ্যের ঢাকা থাকবে একটি গর্বের জায়গায়। এ সময় তাপসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনিবাহী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজিসহ বিভিন্ন নেতারা ছিলেন।

ইশরাক : দক্ষিণে ধানের শীষের প্রার্থী দয়াগঞ্জ ব্রিজ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, উত্তর যাত্রাবাড়ী, ৪৮নং ওয়ার্ড শহীদ জিয়া স্কুল, ধলপুর রোড, সূতি খালপাড়, কাজলা মেইন রোড, ডেমরা রোড, ভাঙ্গা প্রেস, বাঁশপট্টি, শেখদী চৌরাস্তা, শনির আখড়া’র আশপাশের এলাকায় প্রচারণা চালান। প্রচারণার সময় তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, যত ষড়যন্ত্রই হোক আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকব। জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাব। কারণ, জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা জনগণকে নিয়েই লড়াই করব। নির্বাচন কমিশনে এসব বিষয়ে প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কমিশন থেকে এখনও কার্যকর কোন উদ্যোগ দেখছি না। আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা মহানগরীতে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ মুখিয়ে আছে ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য। আমরা যে এলাকায় গিয়েছি সেখানেই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব শ্রেণীর মানুষের উচ্ছ্বাস দেখেছি। এ অবস্থা দেখে ক্ষমতাসীনরা নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের ফন্দি আটছে।

রুবেল : উত্তরে সিপিবির মেয়র প্রার্থী সাজেদুল হক রুবেল গতকাল উত্তরা থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এদিন মোহাম্মাদপুর, তেজগাঁও, হাতিরঝিল, গুলশান, মিরপুর, কাফরুল এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ঢাকা শহর শুধু টাকাওয়ালাদের না। এখানে মেহনতি শ্রমিক, মধ্যবিত্তের সংখ্যাই বেশি। এরাই ঢাকাকে সচল রেখেছে। এজন্য প্রয়োজন সবার জন্য নিরাপদ ঢাকা, বিভিন্ন সংকট দূর করতে দক্ষ ঢাকা, কর্মসংস্থানবান্ধব, সমতাভিত্তিক ঢাকা। আর এসব কাজে মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে অফিসকেন্দ্রিক মেয়র কার্যক্রম পরিবর্তন করে ওয়ার্ড ও মহল্লাভিত্তিক জনম-লীনির্ভর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নগর সরকার প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। তিনি কাস্তে প্রতীকে নির্বাচন করছেন।

শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২০ , ৩ মাঘ ১৪২৬, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

প্রচারণার বাকি ১১ দিন

প্রতিশ্রুতি আর নানা অভিযোগ নিয়ে প্রার্থীরা প্রচারে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

সিটি নির্বাচনে আর ১১দিন প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। ২৮ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা চালানো যাবে। ভোটগ্রহণের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততাও বাড়ছে প্রার্থীদের। গণসংযোগ, মাইকিং, মিছিল ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রচারণায় প্রতিদিনই দিচ্ছেন নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি। ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে প্রায় ৫৪ লাখ ভোটার রয়েছেন।

গতকাল ছিল প্রচারণার সপ্তম দিন। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নৌকা ও ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীরা গণসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়েছেন। তাদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচার-প্রচারণায় মাঠে ছিলেন। ৩০ জানুয়ারি নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হবে ২৮ তারিখ রাত ১২টায়। সে হিসেবে প্রচারণার আর মাত্র ১১ দিন বাকি রয়েছে। অন্য দিনের মতো গতকালও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা নানা অভিযোগ করেছেন। আর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আতিকুল : উত্তর সিটি করপোরেশনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম আলুব্দি ঈদগাহ মাঠ থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ড, মিরপুর ১২, সেকশন ১১, পলাশ নগর, সেকশন ১০, পল্লবী ও রূপনগর এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশে সব ধর্মের লোক বাস করে, সবারই উৎসব পালনের অধিকার রয়েছে। আমি অবশ্যই মনে করি, সরস্বতী পূজার কারণে যদি নির্বাচন পেছানোর দরকার হয় সেটা করতে হবে। আমি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমার পক্ষ থেকে, দলের পক্ষ থেকে দাবি জানাচ্ছি, যদি সম্ভব হয় তাহলে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দিন। কারও ধর্ম পালনে যেন কোন বিঘœ না ঘটে। নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আতিকুল বলেন, আমি যদি বলতাম আমার নেতাকর্মীরা যদি বলত, তাবিথ আউয়ালের কোন পোস্টার ঢাকা শহরে থাকত না। আমি দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধ করব, আমাদের কোন পোস্টার ছেঁড়া লাগবে না, কাউকে বাধা দেয়া লাগবে না। আমি বরং ওয়েলকাম করব, প্রয়োজন পড়লে আমি পোস্টার লাগিয়ে দেব কিন্তু ছিঁড়ব না। এ সময় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

তাবিথ : গতকাল বসুন্ধরা সিটি মার্কেটের সামনে থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা শুরু করেন ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। এদিন তিনি গ্রিন রোড, আনন্দ সিনেমা হলের পাশ দিয়ে তেজগাঁও কলেজ, ইন্দিরা রোড, খামারবাড়ি, মণিপুরিপাড়া, আওলাদ হোসেন মার্কেট হয়ে আগারগাঁও, তালতলা এলাকা, ৬০ ফুট সড়ক ধরে পীরের বাগ এলাকায় জনসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাব। জনগণ ভোট দিতে পারলে বিজয় সুনিশ্চিত। গত দশ বছর সরকারি দলের মেয়র ছিল। কিন্তু ঢাকা শহর পৃথিবীর বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার শীর্ষে স্থান নিয়েছে। অন্যদিকে সিলেটে বিএনপির মেয়র অভাবনীয় কাজ করে বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছেন। সুতরাং কাজের ইচ্ছা থাকলে বিরোধী দলে থাকলেও কাজ করা যায়। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ব্যবহারে জনগণ এখনও প্রস্তুত নয়। নির্বাচন কমিশন নিজেই স্বীকার করছে, তাদের প্রশিক্ষিত জনবল নাই, সেনাবাহিনীর থেকে ধার করতে হচ্ছে। আমরা সবসময় বলে আসছি, আমরা প্রযুক্তির বিপক্ষে নই, আমরা প্রসেসটার বিরোধিতা করছি। নির্বাচন কমিশন যদি একতরফাভাবে ইভিএম ব্যবহার করতেই চায়, তাহলে অনেক আগেই উচিত ছিল, জনগণকে প্রশিক্ষণ দেয়ার, তাদের সচেতন করার। কিন্তু তাদের সে ব্যবস্থা নেয়ার ইচ্ছা নেই।

তাপস : দক্ষিণে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস গতকাল আজিমপুর-নিউমার্কেট এলাকার বিজিবি ৩ নম্বর গেটের সামনে থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে মেয়র হিসেবে নয় একজন সেবক হিসেবে ঢাকাবাসীর জন্য কাজ করে যাব। সেখানে একজন সেবক হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২৪ ঘণ্টা ঢাকাবাসীর সেবা করবে। ঢাকাবাসী আমাকে তাদের কাছে ২৪ ঘণ্টাই পাবে। আমাদের হেল্পলাইন আমরা চালু করব, যাতে ঢাকাবাসীর যেকোন সমস্যা যে কোন অভিযোগ দিতে পারে। হেল্পলাইনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান না হলে তারা সরাসরি মেয়রকে ফোন করতে পারবে। মেয়র সেই বিষয়ে সঙ্গে সঙ্গে সমাধান দেবে। এভাবে আমরা আমাদের সেবাকে সার্বক্ষণিক ঢাকাবাসীর দোরগোঁড়ায় পৌঁছাব। তিনি বলেন, ঢাকা নগরীকে আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে বাসযোগ্য সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। রাস্তায় আবর্জনামুক্ত অবস্থায় থাকবে না। মশক নিধন, সবুজায়ন এসব আমরা দৈনন্দিন ভিত্তিতে করব। ২৪ ঘণ্টা সিটি করপোরেশন এই কাজে নিয়োজিত থাকবে। আমাদের প্রাণের ঐতিহ্যের ঢাকা থাকবে একটি গর্বের জায়গায়। এ সময় তাপসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনিবাহী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজিসহ বিভিন্ন নেতারা ছিলেন।

ইশরাক : দক্ষিণে ধানের শীষের প্রার্থী দয়াগঞ্জ ব্রিজ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, উত্তর যাত্রাবাড়ী, ৪৮নং ওয়ার্ড শহীদ জিয়া স্কুল, ধলপুর রোড, সূতি খালপাড়, কাজলা মেইন রোড, ডেমরা রোড, ভাঙ্গা প্রেস, বাঁশপট্টি, শেখদী চৌরাস্তা, শনির আখড়া’র আশপাশের এলাকায় প্রচারণা চালান। প্রচারণার সময় তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, যত ষড়যন্ত্রই হোক আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকব। জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাব। কারণ, জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা জনগণকে নিয়েই লড়াই করব। নির্বাচন কমিশনে এসব বিষয়ে প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কমিশন থেকে এখনও কার্যকর কোন উদ্যোগ দেখছি না। আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা মহানগরীতে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ মুখিয়ে আছে ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য। আমরা যে এলাকায় গিয়েছি সেখানেই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব শ্রেণীর মানুষের উচ্ছ্বাস দেখেছি। এ অবস্থা দেখে ক্ষমতাসীনরা নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের ফন্দি আটছে।

রুবেল : উত্তরে সিপিবির মেয়র প্রার্থী সাজেদুল হক রুবেল গতকাল উত্তরা থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এদিন মোহাম্মাদপুর, তেজগাঁও, হাতিরঝিল, গুলশান, মিরপুর, কাফরুল এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ঢাকা শহর শুধু টাকাওয়ালাদের না। এখানে মেহনতি শ্রমিক, মধ্যবিত্তের সংখ্যাই বেশি। এরাই ঢাকাকে সচল রেখেছে। এজন্য প্রয়োজন সবার জন্য নিরাপদ ঢাকা, বিভিন্ন সংকট দূর করতে দক্ষ ঢাকা, কর্মসংস্থানবান্ধব, সমতাভিত্তিক ঢাকা। আর এসব কাজে মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে অফিসকেন্দ্রিক মেয়র কার্যক্রম পরিবর্তন করে ওয়ার্ড ও মহল্লাভিত্তিক জনম-লীনির্ভর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নগর সরকার প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। তিনি কাস্তে প্রতীকে নির্বাচন করছেন।