ভূমিখেকোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে রক্তাক্ত হলো তরুণ

মামলা হলেও পুলিশের ভূমিকা নীরব হুমকি দেয়া হচ্ছে অভিযোগকারীকে

সিলেটে ভূমিখেকোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয়এক যুবককে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত করার ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ। গত ২৬ জুলাই এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলেও তদন্ত কর্মকর্তা নিরব ভূমিকায় রয়েছেন। উল্টো অভিযোগকারীকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। ঘটনাটি সিলেট মহানগরের শাহপরাণ এলাকার খাদিমপাড়ার।

জানা যায়, ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র নানাভাবে সরকারি ভূমি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দখল ও বিক্রি করে আসছে। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দা ও জাতীয় ভেজাল প্রতিরাধে ফাউন্ডেশনের শাহপরাণ (রহ.) শাখার সভাপতি মো. মঈন উদ্দিনের নজরে আসলে তিনি সরকারি বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়ে আসছিলেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনের লোকজন প্রায়ই সেখানে গিয়ে অভিযান চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় এ প্রতিবেদকসহ একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি জায়গা দখল, পাহাড়-টিলা কাটার ছবি তুলে নিয়ে আসেন। এটি অনুসন্ধানে থাকার মধ্যেই খবর পেয়ে স্থানীয় সিরাজ মিয়া গত ২৪ জুলাই মঈন উদ্দিনকে মসজিদে ডেকে নিয়ে মেরে রক্তাক্ত করেন।

শাহপরাণ থানায় সাধারণ ডায়েরিতে মঈন উদ্দিন অভিযোগ করেন, শাহপরাণ থানার খাদিমনগর মৌজার ১১৫৫ দাগসহ অন্যান্য দাগের ভূমি সিরাজ গং দখল করে নিজের নামে সিরাজনগর গ্রাম বানিয়ে অবৈধভাবে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিক্রি করে আসেছন। এ সম্পর্কে সবকিছু অবগত থাকায় ঘটনার দিন তাকে মসজিদে ডেকে নিয়ে সিরাজ মিয়া মেরে আহত করে। একপর্যায়ে ছোট ছুরি দিয়ে তার হাত কাটার চেষ্টা করলে রক্তাক্ত হন মঈন উদ্দিন। পাশাপাশি তার কাছে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সেটির গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়। ওইদিনই বিষয়টি মঈন উদ্দিন শাহপরাণ থানার ওসিকে অবগত করলে এসআই বোরহান ও এসআই আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে শান্তনা দেন এবং আবদুস সালাম চিকিৎসার জন্য তার হাতে এক হাজার টাকা ধরিয়ে দেন।

এদিকে, পরবর্তী সময়ে মঈন উদ্দিন ২৬ জুলাই শাহপরাণ (রহ.) থানায় সিরাজ গংদের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করলে তা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সুরমা গেট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুস সালামকে। তবে এখন পর্যন্ত তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।

যোগাযোগ করা হলে শাহপরাণ (রহ.) থানার ওসি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি এসআই সালামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সে যদি গাফিলতি করে তাহলে ঊর্ধ্বতনকে জানান। আমিত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি না।

এ বিষয়ে এসআই আবদুস সালাম বলেন, সাধারণ ডায়েরির কাগজটি তার কাছে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা না নেয়া প্রসঙ্গে বলেন, সে (মঈন উদ্দন) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও অভিযোগ দিয়েছে। এসি স্যার বিষয়টি দেখার কথা।

প্রসঙ্গত, খাদিমপাড়া এলাকায় ভূমিখেকােদের প্রশ্রয় দেয়ার বিষয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এখনও সেখানে সরকারি ভূমি দখল, পাহাড়-টিলা কাটার মহোৎসব চলছে। যার কাগজপত্র ও ভিডিও রেকর্ড রয়েছে এ প্রতিবেদকের কাছে। এ নিয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান ও যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যেই মঈন উদ্দিনের ওপর চড়াও হয় ভূমিখেকোচক্র।

আরও খবর
পদ্মা সেতুর ২৫নং পিলারের কাছে শুরু হয়নি ড্রেজিং
ফেরি চলাচল ব্যাহত পারের অপেক্ষায় শত শত গাড়ি, চরম দুর্ভোগ
সোমবার থেকে বিমান চলাচল শুরু
সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ : ফখরুল
সরবরাহ পর্যাপ্ত তবু কমছে না সবজির দাম
মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা আশিকুর এবার এক ধর্ষিতা মায়ের পাশে
অবৈধ বিলবোর্ড ও বিজ্ঞাপন প্রচারকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মেয়র আতিক
বরিশাল-ঢাকা নৌপথে সংক্ষিপ্ত মিয়ারচর চ্যানেল অকেজো হয়ে আছে
ঢাকা থেকে অপহৃত এক ব্যক্তি হবিগঞ্জে উদ্ধার
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবক খুন
বাংলাদেশি দুই দালালের বিরুদ্ধে মামলা
সাংবাদিকসহ গ্রেফতার ৩
৯০ কোটি টাকার মালামাল জব্দ

শনিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৫ মহররম ১৪৪২, ১৯ ভাদ্র ১৪২৭

সিলেটে

ভূমিখেকোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে রক্তাক্ত হলো তরুণ

মামলা হলেও পুলিশের ভূমিকা নীরব হুমকি দেয়া হচ্ছে অভিযোগকারীকে

বিশেষ প্রতিনিধি

সিলেটে ভূমিখেকোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয়এক যুবককে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত করার ঘটনায় কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ। গত ২৬ জুলাই এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলেও তদন্ত কর্মকর্তা নিরব ভূমিকায় রয়েছেন। উল্টো অভিযোগকারীকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। ঘটনাটি সিলেট মহানগরের শাহপরাণ এলাকার খাদিমপাড়ার।

জানা যায়, ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র নানাভাবে সরকারি ভূমি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দখল ও বিক্রি করে আসছে। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দা ও জাতীয় ভেজাল প্রতিরাধে ফাউন্ডেশনের শাহপরাণ (রহ.) শাখার সভাপতি মো. মঈন উদ্দিনের নজরে আসলে তিনি সরকারি বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়ে আসছিলেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনের লোকজন প্রায়ই সেখানে গিয়ে অভিযান চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় এ প্রতিবেদকসহ একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি জায়গা দখল, পাহাড়-টিলা কাটার ছবি তুলে নিয়ে আসেন। এটি অনুসন্ধানে থাকার মধ্যেই খবর পেয়ে স্থানীয় সিরাজ মিয়া গত ২৪ জুলাই মঈন উদ্দিনকে মসজিদে ডেকে নিয়ে মেরে রক্তাক্ত করেন।

শাহপরাণ থানায় সাধারণ ডায়েরিতে মঈন উদ্দিন অভিযোগ করেন, শাহপরাণ থানার খাদিমনগর মৌজার ১১৫৫ দাগসহ অন্যান্য দাগের ভূমি সিরাজ গং দখল করে নিজের নামে সিরাজনগর গ্রাম বানিয়ে অবৈধভাবে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিক্রি করে আসেছন। এ সম্পর্কে সবকিছু অবগত থাকায় ঘটনার দিন তাকে মসজিদে ডেকে নিয়ে সিরাজ মিয়া মেরে আহত করে। একপর্যায়ে ছোট ছুরি দিয়ে তার হাত কাটার চেষ্টা করলে রক্তাক্ত হন মঈন উদ্দিন। পাশাপাশি তার কাছে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সেটির গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়। ওইদিনই বিষয়টি মঈন উদ্দিন শাহপরাণ থানার ওসিকে অবগত করলে এসআই বোরহান ও এসআই আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে শান্তনা দেন এবং আবদুস সালাম চিকিৎসার জন্য তার হাতে এক হাজার টাকা ধরিয়ে দেন।

এদিকে, পরবর্তী সময়ে মঈন উদ্দিন ২৬ জুলাই শাহপরাণ (রহ.) থানায় সিরাজ গংদের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করলে তা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সুরমা গেট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবদুস সালামকে। তবে এখন পর্যন্ত তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।

যোগাযোগ করা হলে শাহপরাণ (রহ.) থানার ওসি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি এসআই সালামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সে যদি গাফিলতি করে তাহলে ঊর্ধ্বতনকে জানান। আমিত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি না।

এ বিষয়ে এসআই আবদুস সালাম বলেন, সাধারণ ডায়েরির কাগজটি তার কাছে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা না নেয়া প্রসঙ্গে বলেন, সে (মঈন উদ্দন) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও অভিযোগ দিয়েছে। এসি স্যার বিষয়টি দেখার কথা।

প্রসঙ্গত, খাদিমপাড়া এলাকায় ভূমিখেকােদের প্রশ্রয় দেয়ার বিষয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এখনও সেখানে সরকারি ভূমি দখল, পাহাড়-টিলা কাটার মহোৎসব চলছে। যার কাগজপত্র ও ভিডিও রেকর্ড রয়েছে এ প্রতিবেদকের কাছে। এ নিয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান ও যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যেই মঈন উদ্দিনের ওপর চড়াও হয় ভূমিখেকোচক্র।