নরসিংদীর রায়পুরায়

নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন : হুমকির মুখে শত শত গ্রাম

নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শত শত ঘর-বাড়ি, হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রাম। এতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ঘর-বাড়ি হারানো শত শত মানুষ। মেঘনায় যত্রতত্র ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের সৃষ্টিহলেও স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এসব অঞ্চলে গত কয়েক বছরে বিলীন হয়েছে নদী পারে খেটে খাওয়া মানুষের সহায় সম্বল। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে রায়পুরা উপজেলার মেঘনা নদী ভাঙন ক্রমেই রূপ নিচ্ছে ভয়াবহতায়। ইতোমধ্যে নদী গর্ভেবিলীন হয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। নতুন করে হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের কাচারিকান্দি, মজিদপুর, মনিপুর এবং মিজারচর ইউনিয়নের মিজারচর বাজার, চরলাফাংসহ বেশকটি গ্রাম। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে ব্যাপকভাবে। বসত-ভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন এসব এলাকার মানুষ। স্থানীয়রা জানান, চাঁনপুর ইউনিয়নের পূর্ব হোসেননগর মৌজায় চলতি বাংলা সনের জন্য জয়বাংলা ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠানকে বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। অভিযোগ রয়েছে বালু মহালের ইজারাদাররা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্ধারিত স্থান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পাড়াতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নিয়ম বর্হিভূতভাবে মেঘনার তীরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের কারণে দেখা দিয়েছে এসব ভাঙ্গন।

নদী গর্ভে বসত-ভিটা ও ফসলি জমি হারানো সালাহ উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়ে নির্দিষ্ট এলাকায় বালু উত্তোলন না করে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের নদীতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকার জনৈক আসাদুজ্জামান বাবু এসব ড্রেজারের মালিক বলে জানা যায়। নির্ধারিত স্থান ব্যতিত অন্য স্থানে বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গেলে বাবুর সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র দেখিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া প্রভাবশালী কাইয়ূম, সামসু মেম্বারসহ আরও অনেক প্রভাবশালী এসব অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। নরসিংদী ও পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মনবাড়িয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেন, সরকারি বিধি মেনে বালু মহাল ইজারা দিয়ে থাকে প্রশাসন। তবে ইজারা প্রদান কিংবা বাতিলের সর্বময় ক্ষমতা রাখে জেলা প্রশাসন। যদি বালুমহালের কারণে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে বালুমহাল বন্ধ করা হবে। ইতোমধ্যেই পূর্ব হোসেন নগর বালুমহালটির ইজারা বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলাব্যাপী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী সব বালুমহালের বিষয়ে জেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে।

image

নরসিংদী : অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে রায়পুরা উপজেলার চরলাফাং গ্রামটি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে -সংবাদ

আরও খবর
রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে জাতিসংঘ ব্যর্থ হলে তৃতীয় দেশে স্থানান্তরের দাবি
বর্জ্য পানিতে করোনা জীবাণুর জীন
খালেদাকে ফের কারাগারে পাঠানোর দাবি উঠতে পারে তথ্যমন্ত্রী
সর্ষের মধ্যে ভূত তাড়াতে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যানকে নির্দেশ সড়কমন্ত্রীর
সাড়ে ৯ হাজার শ্রমিককে ৪০ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান
অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের প্রতিবাদ
অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ধরা
বন্ড হাউসের পণ্য বিক্রি, ৫২ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি
আদালতে ঘাতক রিফাতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
থানায় আটকে টাকা আদায় : ওসিসহ ৫ পুলিশ ক্লোজড
রিমান্ড শেষে কারাগারে স্বাস্থ্যের আবজাল
ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান ডিএসসিসির
ডেমরায় স্টিল মিলে চুল্লি বিস্ফোরণ : ৫ শ্রমিক দগ্ধ

সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০১ মহররম ১৪৪২, ০৩ আশ্বিন ১৪২৭

নরসিংদীর রায়পুরায়

নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন : হুমকির মুখে শত শত গ্রাম

প্রতিনিধি, নরসিংদী

image

নরসিংদী : অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে রায়পুরা উপজেলার চরলাফাং গ্রামটি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে -সংবাদ

নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শত শত ঘর-বাড়ি, হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রাম। এতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ঘর-বাড়ি হারানো শত শত মানুষ। মেঘনায় যত্রতত্র ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙনের সৃষ্টিহলেও স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এসব অঞ্চলে গত কয়েক বছরে বিলীন হয়েছে নদী পারে খেটে খাওয়া মানুষের সহায় সম্বল। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে রায়পুরা উপজেলার মেঘনা নদী ভাঙন ক্রমেই রূপ নিচ্ছে ভয়াবহতায়। ইতোমধ্যে নদী গর্ভেবিলীন হয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। নতুন করে হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের কাচারিকান্দি, মজিদপুর, মনিপুর এবং মিজারচর ইউনিয়নের মিজারচর বাজার, চরলাফাংসহ বেশকটি গ্রাম। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে ব্যাপকভাবে। বসত-ভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন এসব এলাকার মানুষ। স্থানীয়রা জানান, চাঁনপুর ইউনিয়নের পূর্ব হোসেননগর মৌজায় চলতি বাংলা সনের জন্য জয়বাংলা ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠানকে বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। অভিযোগ রয়েছে বালু মহালের ইজারাদাররা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্ধারিত স্থান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পাড়াতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নিয়ম বর্হিভূতভাবে মেঘনার তীরবর্তী এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের কারণে দেখা দিয়েছে এসব ভাঙ্গন।

নদী গর্ভে বসত-ভিটা ও ফসলি জমি হারানো সালাহ উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়ে নির্দিষ্ট এলাকায় বালু উত্তোলন না করে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের নদীতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকার জনৈক আসাদুজ্জামান বাবু এসব ড্রেজারের মালিক বলে জানা যায়। নির্ধারিত স্থান ব্যতিত অন্য স্থানে বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গেলে বাবুর সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র দেখিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া প্রভাবশালী কাইয়ূম, সামসু মেম্বারসহ আরও অনেক প্রভাবশালী এসব অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। নরসিংদী ও পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মনবাড়িয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনে প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বলেন, সরকারি বিধি মেনে বালু মহাল ইজারা দিয়ে থাকে প্রশাসন। তবে ইজারা প্রদান কিংবা বাতিলের সর্বময় ক্ষমতা রাখে জেলা প্রশাসন। যদি বালুমহালের কারণে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে বালুমহাল বন্ধ করা হবে। ইতোমধ্যেই পূর্ব হোসেন নগর বালুমহালটির ইজারা বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলাব্যাপী অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী সব বালুমহালের বিষয়ে জেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে।