সত্যতা পেয়েছে তদন্তে

উপাচার্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পাল্টা কমিটি গঠনের অভিযোগ

বেরোবিতে মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে জাতীয় পতাকা অবমাননা করে ও সেই ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উপাচার্য পতাকা অবমাননাকারী সিন্ডিকেট সদস্য ও তাদের স্বজনদের নিয়ে পাল্টা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

ইতোমধ্যে জেলা প্রসাসন গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে প্রদান করেছেন।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিভিন্ন পদে থাকা ১৫/২০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা মিলে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদনের নামে বিকৃত জাতীয় পতাকা নিয়ে স্বাধীনতাস্মারকে দাঁড়িয়ে ছবিতে পোজ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে। ছবিটি ভাইরাল হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়।

দায়ী শিক্ষক কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই চলছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন, বিক্ষোভ। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান এবং পতাকা অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়েরকারী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক অভিযোগ করেছেন, জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি পতাকার অবমাননার বিষয়টি সত্য বলে প্রতিবেদন দেয়ার পরও দায়ী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে একটি আজ্ঞাবহ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

পতাকা অবমাননার ঘটনায় নগরীর তাজহাট থানায় দুটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ অপরটি করেছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক। মামলাটি অনুমোদনের জন্য রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেটের কাছে আবেদন করা হলে আদালত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তাজহাট থানার ওসি আখতারুজ্জামান জানান, আমরা আদালতের দেয়া সময়সীমার মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। উল্লেখ্য, জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে যে ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তারা হলেনÑ বেরোবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক পরিমল চন্দ্র বর্ম্মন, ভুগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শামীম হোসেন, ইতিহাস ও প্রতœতত্ব বিভাগের শিক্ষক সোহাগ আলী, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাম প্রসাদ, শিক্ষক রহমতুল্লা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আবদুল কাইয়ুম এবং উপাচার্যের পিএস আমিনুর রহমান।

শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ১০ রবিউস সানি ১৪৪২

বেরোবিতে জাতীয় পতাকা অবমাননা

সত্যতা পেয়েছে তদন্তে

উপাচার্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পাল্টা কমিটি গঠনের অভিযোগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

বেরোবিতে মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে জাতীয় পতাকা অবমাননা করে ও সেই ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উপাচার্য পতাকা অবমাননাকারী সিন্ডিকেট সদস্য ও তাদের স্বজনদের নিয়ে পাল্টা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

ইতোমধ্যে জেলা প্রসাসন গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে প্রদান করেছেন।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিভিন্ন পদে থাকা ১৫/২০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা মিলে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদনের নামে বিকৃত জাতীয় পতাকা নিয়ে স্বাধীনতাস্মারকে দাঁড়িয়ে ছবিতে পোজ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে। ছবিটি ভাইরাল হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়।

দায়ী শিক্ষক কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই চলছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন, বিক্ষোভ। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান এবং পতাকা অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়েরকারী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক অভিযোগ করেছেন, জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি পতাকার অবমাননার বিষয়টি সত্য বলে প্রতিবেদন দেয়ার পরও দায়ী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে একটি আজ্ঞাবহ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

পতাকা অবমাননার ঘটনায় নগরীর তাজহাট থানায় দুটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ অপরটি করেছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক। মামলাটি অনুমোদনের জন্য রংপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেটের কাছে আবেদন করা হলে আদালত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তাজহাট থানার ওসি আখতারুজ্জামান জানান, আমরা আদালতের দেয়া সময়সীমার মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। উল্লেখ্য, জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে যে ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তারা হলেনÑ বেরোবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক পরিমল চন্দ্র বর্ম্মন, ভুগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শামীম হোসেন, ইতিহাস ও প্রতœতত্ব বিভাগের শিক্ষক সোহাগ আলী, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাম প্রসাদ, শিক্ষক রহমতুল্লা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আবদুল কাইয়ুম এবং উপাচার্যের পিএস আমিনুর রহমান।