মঠবাড়িয়া পৌরসভায় ভুতুড়ে পানির বিল! অতিষ্ঠ পৌরবাসী

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভার ভুতুড়ে পানির বিল নিয়ে ফুঁসে উঠেছে পৌরবাসী। পৌরকর্তৃপক্ষের নিয়মবহিভূত সুপেয় পানির বিলের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অধিকাংশ পৌরবাসী মানববদ্ধনসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে। ইউনিট প্রতি ৩৫ টাকা ইউনিট চার্জ নিয়ে চলছে হাটেবাজারে নান আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি ক্ষমতাসীন আ:লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাগজ কলমে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেনীর ঘোষনা করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে নাগরিক সেবা বঞ্চিত পৌরবাসী। পেীরবাসীর নানা সমস্যার মধ্যে বিশুদ্ধ পানির সংকট ছিল অন্যতম। এ উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে টিকিকাটা সূর্য্যমণি বধ্যভূমি সংলগ্ন পানির প্রকল্পের কাজে জমি অধিগ্রহন করে প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর গ্রাহকদের কাছ থেকে বিধিবহিভূত ৬ হাজার টাকা গ্রাহকদেও কাছ থেকে পানির লাইন চার্জ নিয়ে অত্যন্ত নি¤œমানের পাইপ বসানো হয়। এরপর হাকডাক দিয়ে ৬ মাস পরীক্ষামূলক পানি সরবরাহের কাজ শুরু করেন। এর আগে শহীদ মিনার উপস্থিত জনতার সামনে পৌর মেয়র ঘোষনা দেন শতভাগ পানির পরিশুদ্ধতা না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষামূলক কার্য়ক্রম অব্যাহত থাকবে এবং পরিপূর্ন কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পানির প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করবেন। এদিকে সে উদ্বোধনের পূর্বেই গ্রাহকদের বাসায় পানির ভুতুড়ে বিলের কাগজ প্রদান করে যাচ্ছেন। অধিকাংশ বাসা-বাড়ীতে পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকায় পানির অপচয় রোধে সংযোগ পাইপের মাথাগুলো আগুনে পুড়িয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। অথচ বিকল অবস্থায় পড়ে খাকা ওই সংয়োগ থেকে এক ফোটা পানি ব্যবহার না করেও তাদের হাতে মোটা অঙ্কের টাকার বিল কাগজ পৌরকর্র্তৃপক্ষ ধরিয়ে দিয়েছেন বলে অভিয়োগ উঠেছে। এ নিয়ে গোটা পৌরবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকায় পানির বিল ইউনিট প্রতি ইউনিট ১৪ টাকা ২০ পয়সা, বরিশাল বিভাগের প্রতিটি পৌরসভার আবাসিক ইউনিট চার্জ ১৫ টাকা। মঠবাড়িয়ায় আবাসিক ইউনিট চার্চ ৩৫ টাকা ও বানিজ্যক ৪২ টাকা নির্ধারন করা হযেছে। ৪নং ওয়েির্ডর ব্যবসায়ী ফয়সাল আহ¤েœদ বলেন, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও একটি অভিভাবকহীন পৌর শহরের বাসিন্দা আমরা। কোথাও কোন অভিযোগ দেয়ার স্থান নেই। পৌর মেয়র মোজা ফ্যাক্টরির ব্যবস্যা নিয়ে বছরের মধ্যে ৯ মাস থাকেন ঢাকায়।

দীর্ঘদিনের অপেক্ষার ফসল ছিল কিছু না পেলেও অন্তত:একটু পানি পাবো তা না পাওয়ার আগেই আমার বাসার পানির বিল নির্ধারন করা হয়েছে ২১ হাজার টাকা। যা আমাকে হতবাক করেছে। জানামতে বিশে^ও কোন শহরে এত চড়া মূল্যের পানির বিল আছে কিনা তা আমার জানা নাই। এ রাক্ষুসে পানির বিল থেকে পৌরবাসী মুক্তি চায়। পৌ আ.লীগের সহ-সভাপতি পংকজ সওজাল বলেন, পাশর্^বতী জেলার পৌরসভার তুলনায় আমাদের পৌরসভার পানির বিল দ্বিগুনেরও বেশী ধরা হয়েছে। তাছাড়া এত নি¤œমানের পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। যা বিস্ফোরিত হয়ে অপরিশোধিত পানি রাস্তা বা ড্রেনকে প্রতিনিয়ত পরিশোধন করছে। পানির লোক নিয়োগ দেয়া হলেও এগুলো দেখবাল করার কোন লোক নেই। আর সেই পানি ব্যবহার না করে তার মাশুল গুনতে হচ্ছে জনগনকে।

উপজেলা আ.লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ফজলুল হক মনি বলেন, নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত পৌরবাসীর পানির বিল কাগজ ধরিয়ে দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত কিছুটা হলেও মানুষ স্বস্তিতে ছিল যে মৃত্যুর পূর্বে অন্তত এক মাস বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারবো। অথচ পৌরবাসী সে পানির সামান্য স্পর্শ না করেই হাজার হাজার টাকার বিল ভাউচার কর্মহীন করোনা ভাইরেিসর সময় তাদেরকে চরম দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। পৌরবাসী সেবার পরিবর্তে আমাদের রক্ত শোষন করছেন। এ বিষয়ে করোনা পরিস্থিতি স¦াভাবিক হলে পানির ভুতরে বিলের বিরুদ্ধে মানববদ্ধনসহ কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে। উপজেলা আ.লীগের সাধারন সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম মাতুব্বর বলেন, সাপ্লাই পানি থেকে এক ফোটা পানি ব্যবহার করিনি। অথচ ৮৮৩ ইউনিট পানির বিল কাগজে ৫৮ হাজার ৮শ টাকা বিল ধরিয়ে দিয়েছেন পৌর কর্তপক্ষ। যা ঢাকা ওয়াসার তুলনায় চারগুন। চলমান পানি সরবরাহতো পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। এর শতভাগ পরিশুদ্ধতা এখনও হয়নি। এই মুহূর্তে গ্রাহকদের বিল নির্ধারণ করার কোন যুক্তিকতা নেই। তাছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডারের সঙ্গে এ পানি বিশুদ্ধকরনের অতিরিক্ত অর্থ ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি মনে করি এ প্রহসনের পানি বিল পৌরবাসীর এক জগদ্দল পাথরে রুপান্তরিত হয়েছে।

আমি এ কাল্পনিক বিলের চরম বিরোধতা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পৌরসভার নির্বাহী প্রকেীশলী আব্দুস সালেক বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার পানির বিলের অসংগতির বিষয়টি আমাদেও কাছে একাধিক পৌরবাসী অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে পৌর মেয়রকে অবহিত করলে তিনি জানান, ১৫ আগষ্টের পূর্বে পৌরসভার নাগরিকদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পানির বিল সহনীয় মাএায রেখে নির্ধারন করা হবে। এ বিষয়ে পৌর মেয়র ও উপজেলা আ:লীগ সভাপতি রফিউদ্দিন আহ¤েœদ ফেরদৌস এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন নম্রটি বদ্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া যয়িনি।

শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১ , ১৬ শ্রাবণ ১৪২৮ ২০ জিলহজ ১৪৪২

মঠবাড়িয়া পৌরসভায় ভুতুড়ে পানির বিল! অতিষ্ঠ পৌরবাসী

প্রতিনিধি, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর)

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভার ভুতুড়ে পানির বিল নিয়ে ফুঁসে উঠেছে পৌরবাসী। পৌরকর্তৃপক্ষের নিয়মবহিভূত সুপেয় পানির বিলের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে অধিকাংশ পৌরবাসী মানববদ্ধনসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে। ইউনিট প্রতি ৩৫ টাকা ইউনিট চার্জ নিয়ে চলছে হাটেবাজারে নান আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি ক্ষমতাসীন আ:লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাগজ কলমে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেনীর ঘোষনা করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে নাগরিক সেবা বঞ্চিত পৌরবাসী। পেীরবাসীর নানা সমস্যার মধ্যে বিশুদ্ধ পানির সংকট ছিল অন্যতম। এ উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে টিকিকাটা সূর্য্যমণি বধ্যভূমি সংলগ্ন পানির প্রকল্পের কাজে জমি অধিগ্রহন করে প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর গ্রাহকদের কাছ থেকে বিধিবহিভূত ৬ হাজার টাকা গ্রাহকদেও কাছ থেকে পানির লাইন চার্জ নিয়ে অত্যন্ত নি¤œমানের পাইপ বসানো হয়। এরপর হাকডাক দিয়ে ৬ মাস পরীক্ষামূলক পানি সরবরাহের কাজ শুরু করেন। এর আগে শহীদ মিনার উপস্থিত জনতার সামনে পৌর মেয়র ঘোষনা দেন শতভাগ পানির পরিশুদ্ধতা না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষামূলক কার্য়ক্রম অব্যাহত থাকবে এবং পরিপূর্ন কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পানির প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন করবেন। এদিকে সে উদ্বোধনের পূর্বেই গ্রাহকদের বাসায় পানির ভুতুড়ে বিলের কাগজ প্রদান করে যাচ্ছেন। অধিকাংশ বাসা-বাড়ীতে পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকায় পানির অপচয় রোধে সংযোগ পাইপের মাথাগুলো আগুনে পুড়িয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। অথচ বিকল অবস্থায় পড়ে খাকা ওই সংয়োগ থেকে এক ফোটা পানি ব্যবহার না করেও তাদের হাতে মোটা অঙ্কের টাকার বিল কাগজ পৌরকর্র্তৃপক্ষ ধরিয়ে দিয়েছেন বলে অভিয়োগ উঠেছে। এ নিয়ে গোটা পৌরবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকায় পানির বিল ইউনিট প্রতি ইউনিট ১৪ টাকা ২০ পয়সা, বরিশাল বিভাগের প্রতিটি পৌরসভার আবাসিক ইউনিট চার্জ ১৫ টাকা। মঠবাড়িয়ায় আবাসিক ইউনিট চার্চ ৩৫ টাকা ও বানিজ্যক ৪২ টাকা নির্ধারন করা হযেছে। ৪নং ওয়েির্ডর ব্যবসায়ী ফয়সাল আহ¤েœদ বলেন, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও একটি অভিভাবকহীন পৌর শহরের বাসিন্দা আমরা। কোথাও কোন অভিযোগ দেয়ার স্থান নেই। পৌর মেয়র মোজা ফ্যাক্টরির ব্যবস্যা নিয়ে বছরের মধ্যে ৯ মাস থাকেন ঢাকায়।

দীর্ঘদিনের অপেক্ষার ফসল ছিল কিছু না পেলেও অন্তত:একটু পানি পাবো তা না পাওয়ার আগেই আমার বাসার পানির বিল নির্ধারন করা হয়েছে ২১ হাজার টাকা। যা আমাকে হতবাক করেছে। জানামতে বিশে^ও কোন শহরে এত চড়া মূল্যের পানির বিল আছে কিনা তা আমার জানা নাই। এ রাক্ষুসে পানির বিল থেকে পৌরবাসী মুক্তি চায়। পৌ আ.লীগের সহ-সভাপতি পংকজ সওজাল বলেন, পাশর্^বতী জেলার পৌরসভার তুলনায় আমাদের পৌরসভার পানির বিল দ্বিগুনেরও বেশী ধরা হয়েছে। তাছাড়া এত নি¤œমানের পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। যা বিস্ফোরিত হয়ে অপরিশোধিত পানি রাস্তা বা ড্রেনকে প্রতিনিয়ত পরিশোধন করছে। পানির লোক নিয়োগ দেয়া হলেও এগুলো দেখবাল করার কোন লোক নেই। আর সেই পানি ব্যবহার না করে তার মাশুল গুনতে হচ্ছে জনগনকে।

উপজেলা আ.লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ফজলুল হক মনি বলেন, নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত পৌরবাসীর পানির বিল কাগজ ধরিয়ে দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত কিছুটা হলেও মানুষ স্বস্তিতে ছিল যে মৃত্যুর পূর্বে অন্তত এক মাস বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারবো। অথচ পৌরবাসী সে পানির সামান্য স্পর্শ না করেই হাজার হাজার টাকার বিল ভাউচার কর্মহীন করোনা ভাইরেিসর সময় তাদেরকে চরম দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। পৌরবাসী সেবার পরিবর্তে আমাদের রক্ত শোষন করছেন। এ বিষয়ে করোনা পরিস্থিতি স¦াভাবিক হলে পানির ভুতরে বিলের বিরুদ্ধে মানববদ্ধনসহ কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে। উপজেলা আ.লীগের সাধারন সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম মাতুব্বর বলেন, সাপ্লাই পানি থেকে এক ফোটা পানি ব্যবহার করিনি। অথচ ৮৮৩ ইউনিট পানির বিল কাগজে ৫৮ হাজার ৮শ টাকা বিল ধরিয়ে দিয়েছেন পৌর কর্তপক্ষ। যা ঢাকা ওয়াসার তুলনায় চারগুন। চলমান পানি সরবরাহতো পরীক্ষামূলক কার্যক্রম। এর শতভাগ পরিশুদ্ধতা এখনও হয়নি। এই মুহূর্তে গ্রাহকদের বিল নির্ধারণ করার কোন যুক্তিকতা নেই। তাছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডারের সঙ্গে এ পানি বিশুদ্ধকরনের অতিরিক্ত অর্থ ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি মনে করি এ প্রহসনের পানি বিল পৌরবাসীর এক জগদ্দল পাথরে রুপান্তরিত হয়েছে।

আমি এ কাল্পনিক বিলের চরম বিরোধতা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পৌরসভার নির্বাহী প্রকেীশলী আব্দুস সালেক বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার পানির বিলের অসংগতির বিষয়টি আমাদেও কাছে একাধিক পৌরবাসী অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে পৌর মেয়রকে অবহিত করলে তিনি জানান, ১৫ আগষ্টের পূর্বে পৌরসভার নাগরিকদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পানির বিল সহনীয় মাএায রেখে নির্ধারন করা হবে। এ বিষয়ে পৌর মেয়র ও উপজেলা আ:লীগ সভাপতি রফিউদ্দিন আহ¤েœদ ফেরদৌস এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন নম্রটি বদ্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া যয়িনি।