করোনারকালে এক বছরে ৫ শতাধিক বাল্যবিয়ে

দারিদ্র্য, পারিবারিক ও সামাজিক অসচেতনতার ফলে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে করোনাকালের এক বছরে ৫০১টি বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার বাল্যবিয়ের হার ২৩ শতাংশ। নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ল্যাম্ব-ইসিএমের সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটি ১০টি ইউনিয়নে ২০২০ সালের জুলাই থেকে জুন ২১ পর্যন্ত ১২ মাসের জরিপ চালিয়েছে। ওমেন্স হপ ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় ল্যাম্ব-ইসিএম প্রকল্প আয়োজনে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রীতম শাহা, পৌর মেয়র এজেডএম মেনহাজুল হক, পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর, ল্যাম্ব-ইসিএম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহমুদুল হক, টেকনিক্যাল অফিসার নির্মলা রানী রায়সহ শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, কাজী ও সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। করোনাকালে উপজেলায় ৫০১ ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মহিলা বিষয় কর্মকর্তা খন্দকার শাকিনা বিনতে শরীফ বলেন, এ সংক্রান্ত কোন তথ্য তার কাছে নেই। এবিষয়ে কেউ অভিযোগও করেননি। হাবড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুজ্জামান বলেন, বাল্যবিয়ের খবর পেলে পিতা-মাতাকে নিষেধ করলেও তারা গোপনে গোপনে বিয়ে দেন। আর ভুয়া সনদে এসব বিয়ে পড়ালেও মেয়ের অভিভাবকরাই বিপদে পড়েন। কাজীরা বাল্যবিয়ে পড়ার কারণে বিয়ের আসল কাগজপত্র দেয় না। ফলে আইনি সহযোগিতা থেকেও মেয়ের অভিভাবকরা বঞ্চিত হয়। মোমিনপুর ইউনিয়নের কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, ছেলে-মেয়েদের বয়স লুকিয়ে অন্য উপজেলা থেকে মৌলভী ডেকে মসজিদ মাদ্রাসায় ও বিয়ে পড়ানো হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশ্ররাফুল হক প্রধান বলেন, করোনায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ১ হাজার ৫শ বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। উপজেলায় ৬৬ মাধ্যমিক, ৩৭ মাদ্রাসা, ৭ কলেজ, ৬ স্কুল এন্ড কলেজ, ৩ ইন্টারমিডিয়েট এবং ২০৮ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আর এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাশিদ কায়সার রিয়াদ বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে উপজেলা প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বাল্যবিয়ে ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অসচেতন অভিভাবকরা মেয়েদের বিয়ে দিয়েছে, যা দুঃখজনক।

শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১ , ২৮ কার্তিক ১৪২৮ ৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

করোনারকালে এক বছরে ৫ শতাধিক বাল্যবিয়ে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, দিনাজপুর

দারিদ্র্য, পারিবারিক ও সামাজিক অসচেতনতার ফলে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে করোনাকালের এক বছরে ৫০১টি বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলার বাল্যবিয়ের হার ২৩ শতাংশ। নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ল্যাম্ব-ইসিএমের সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটি ১০টি ইউনিয়নে ২০২০ সালের জুলাই থেকে জুন ২১ পর্যন্ত ১২ মাসের জরিপ চালিয়েছে। ওমেন্স হপ ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় ল্যাম্ব-ইসিএম প্রকল্প আয়োজনে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রীতম শাহা, পৌর মেয়র এজেডএম মেনহাজুল হক, পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর, ল্যাম্ব-ইসিএম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহমুদুল হক, টেকনিক্যাল অফিসার নির্মলা রানী রায়সহ শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, কাজী ও সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। করোনাকালে উপজেলায় ৫০১ ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মহিলা বিষয় কর্মকর্তা খন্দকার শাকিনা বিনতে শরীফ বলেন, এ সংক্রান্ত কোন তথ্য তার কাছে নেই। এবিষয়ে কেউ অভিযোগও করেননি। হাবড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুজ্জামান বলেন, বাল্যবিয়ের খবর পেলে পিতা-মাতাকে নিষেধ করলেও তারা গোপনে গোপনে বিয়ে দেন। আর ভুয়া সনদে এসব বিয়ে পড়ালেও মেয়ের অভিভাবকরাই বিপদে পড়েন। কাজীরা বাল্যবিয়ে পড়ার কারণে বিয়ের আসল কাগজপত্র দেয় না। ফলে আইনি সহযোগিতা থেকেও মেয়ের অভিভাবকরা বঞ্চিত হয়। মোমিনপুর ইউনিয়নের কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, ছেলে-মেয়েদের বয়স লুকিয়ে অন্য উপজেলা থেকে মৌলভী ডেকে মসজিদ মাদ্রাসায় ও বিয়ে পড়ানো হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশ্ররাফুল হক প্রধান বলেন, করোনায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ১ হাজার ৫শ বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। উপজেলায় ৬৬ মাধ্যমিক, ৩৭ মাদ্রাসা, ৭ কলেজ, ৬ স্কুল এন্ড কলেজ, ৩ ইন্টারমিডিয়েট এবং ২০৮ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আর এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাশিদ কায়সার রিয়াদ বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে উপজেলা প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বাল্যবিয়ে ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অসচেতন অভিভাবকরা মেয়েদের বিয়ে দিয়েছে, যা দুঃখজনক।