শেষ ওভারে মাহমুদুল্লাহর ম্যাজিক

তারপরও হলো না

পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। সোমবার শেষ ম্যাচে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন ম্যাচের পরেও হেরেছে মাহমুদুল্লাহর দল। এই ম্যাচ পাকিস্তানকে জয়ের জন্য ১২৫ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। খেলার শেষ বলে তারা জয় নিশ্চিত করে। তবে ১৯তম ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক টপাটপ তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে দিলে খেলায় দারুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। শেষ বলে জয়ের জন্য দু’ রানের প্রয়োজনে ব্যাটিংয়ে নেমে নাওয়াজ বাউন্ডারি (চার) মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন।

ইনিংসের শুরু থেকে ম্যাচ জয়ের পথও মসৃন করে ফেলেছিলো সফরকারীরা। কিন্তু শেষদিকে তাদের ব্যাটারদের উপর চাপ সৃষ্টি করে টাইগার বোলাররা। এমন অবস্থায় ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে ৮ রান প্রয়োজন পড়ে পাকিস্তানের। শেষ ওভারে বল হাতে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের প্রবল সুযোগ তৈরি করেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু শেষ বলে বাউন্ডারি আদায় করে নিয়ে বাংলাদেশকে জয় বঞ্চিত করেন মোহাম্মদ নওয়াজ। ফলে জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও ম্যাচের শেষ বলে পাকিস্তানের কাছে হার মানতে হলো বাংলাদেশকে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০তে ৫ উইকেটে জিতলো পাকিস্তান। এই নিয়ে নিজেদের টি-২০ ইতিহাসে চতুর্থবারের মত হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে টি-২০তে হারের বৃত্ত থেকেও বের হওয়া হলোনা টাইগারদের। টানা আট ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ।

আগের দুই ম্যাচের মত গতকালও টস ভাগ্যে ছিলো বাংলাদেশের পক্ষে। টস আগে জিতে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন রিয়াদ। মোহাম্মদ নাইমের সাথে ইনিংস শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা শাহনাওয়াজ দাহানির করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হন শান্ত। বোল্ড হওয়ার আগে ৫ বলে ৫ রান করেন এই ব্যাটার। শান্তর বিদায়ে উইকেটে এসে প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন শামীম হোসেন। চতুর্থ ওভারের শেষ দুই বলেও দুই বাউন্ডারি আসে শামীমের ব্যাট থেকে। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেও বাউন্ডারি মেরে নিজের আত্মবিশ্বাসটা ধরে রাখেন শামীম। কিন্তু অন্যপ্রান্তে টেস্ট মেজাজে ছিলেন নাইম। তাই পাওয়া প্লেতে ৩৩ রান পায় বাংলাদেশ। যার মধ্যে ১৮ বলে ২০ রান ছিলো শামীমের। উইকেটে সেট হওয়া শামীম, নিজের ভুলে অষ্টম ওভারে থেমে যান। প্রথমবারের মত আক্রমনে আসা লেগ-স্পিনার উসমান কাদিরকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন শামীম। ৪টি চারে ২৩ বলে ২২ রান করেন শামীম।

দলীয় ৩৭ রানে শামীমের আউটে ক্রিজে আসেন আফিফ হোসেন। নাইমের সাথে ইনিংসকে বড় করছিলেন আফিফ। তবে সেটি ওয়ানডে স্টাইলে। দশম ওভারে ১টি করে চার ও ছক্কা মারেন নাইম। এতে ১০ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৫২ রান পায় বাংলাদেশ। ১২তম ওভারে ২টি ছক্কায় রানের গতি বাড়ান তিনি। কিন্তু ১৪তম ওভারে কাদিরের দ্বিতীয় শিকার হন আফিফ। ২টি ছক্কায় ২০ বলে ২১ রান করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে নাইমের সঙ্গে ৪২ বলে ৪৩ রান দলকে এনে দেন আফিফ। এরপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে ১৭তম ওভারে দলের স্কোর শতরানে নিয়ে যান নাইম। তাই বড় স্কোরের আশা শেষই হয়ে যায় বাংলাদেশের। তারপরও লড়াই করার পুঁজির জন্য বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিলো নাইম-মাহমুদুল্লাহ সোহানদের দিকে, হতাশ করেছেন তারা। ১৯তম ওভারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাইম ও নুরুল হাসান সোহান। ২টি করে চার-ছক্কায় ৫০ বলে ৪৭ রান করেন নাইম। টি-২০ মেজাজে না খেললেও, ছয় ইনিংস পর বলার মত স্কোর নাইমের। আগের ছয় ইনিংসে তার সর্বোচ্চ রান ছিলো ১৭। চার মেরে রানের খাতা খোলা নাইম-সোহানকে শিকার হন পেসার ওয়াসিমের। রউফের করা শেষ ওভারের প্রথমে বলে বাউন্ডারি লাইনের কাছে ওয়াসিমকে ক্যাচ দেন মাহমুদুল্লাহ। ১৪ বলে ১৩ রান করেন অধিনায়ক। পরের চার বলে ১টি বাউন্ডারিতে ৭ রান তুলেন মাহেদি হাসান ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। আর শেষ বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন বিপ্লব। মাহেদি ১টি চারে ৩ বলে অপরাজিত ৫ রান করেন। ৩ রান করেন বিপ্লব। পাকিস্তানের ওয়াসিম-কাদির ২টি করে উইকেট নেন।

বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে ১২৫ রানের সহজ টার্গেট পায় পাকিস্তান। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু পাকিস্তানের দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও অধিনায়ক বাবর আজমের। প্রথম ৩ ওভারে ৯ রান তুলেন তারা। চতুর্থ ওভারে প্রথম বাউন্ডারি মারেন বাবর। পঞ্চম ওভারে ইনিংসের দ্বিতীয় বাউন্ডারি আসে বাবরের ব্যাট থেকে। বাবরের দুই বাউন্ডারিতে পাওয়ার প্লেতে ২৮ রান উঠে পাকিস্তানের। সপ্তম ওভারের প্রথমবারের মত আক্রমনে এসেই উইকেট তুলে নেন লেগ-স্পিনার আমিনুল। ওভারের শেষ বলটি শর্ট পিচ করান আমিনুল। সেটি উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে নাইমকে ক্যাচ দেন ২৫ বলে ১৯ রান করা বাবর। সদ্য শেষ হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান করা বাবরের ব্যাট এই সিরিজে কথা বলেনি। প্রথম দুই ম্যাচে ৭ ও ১ রান করেছিলেন তিনি। দলীয় ৩২ রানে বাবরকে হারানোর পর দলের জয়ের পথ মসৃন করেছেন রিজওয়ান ও হায়দার আলি। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৯ বলে ৫১ রান যোগ করেন তারা। রিজওয়ানকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙ্গেন বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা পেসার শহিদুল। ৪৩ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করেন রিজওয়ান। এরপর তৃতীয় উইকেটে ২৬ বলে ৩৪ রান করে পাকিস্তানকে জয়ের পথেই রেখেছিলেন হায়দার ও সরফরাজ। ১৬ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৯৯ রান তুলে পাকিস্তান। তবে ১৭ থেকে ১৯তম ওভারে কিপটে বোলিংয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেন বাংলাদেশের বোলাররা। মাহেদি ১৭তম ওভারে ৭, তাসকিন ১৮তম ওভারে ৪ ও শহিদুল ১৯তম ওভারে ৭ রান দেন। ফলে শেষ ওভারে জিততে ৮ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের।

এই অবস্থায় বল হাতে তুলে নেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। বিপিএলে শেষ ওভারে বল হাতে নিয়ে তার দলকে বেশ কিছু ম্যাচ জিতিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। সেই অভিজ্ঞতায় বল হাতে নিয়েই প্রথম বলে ডট, দ্বিতীয়-তৃতীয় বলে যথাক্রমে সরফরাজ ও হায়দারকে শিকার করেন রিয়াদ। এতে পাকিস্তানের সামনে সমীকরন দাঁড়ায় ৩ বলে ৮ রানের। কিন্তু চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন ইফতিখার। আর পঞ্চম বলে ইফতিখারকে আউট করে বাংলাদেশের আশা বাঁচিয়ে রাখেন টাইগার কাপ্তান। শেষ বলে ২ রানের প্রয়োজনে বাউন্ডারি মারেন নাওয়াজ। এতে জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয় টাইগারদের। বাংলাদেশের মাহমুদুল্লাহ ১ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। শহিদুল-আমিনুল ১টি করে উইকেট নেন। পাকিস্তানের হায়দার ৪৫ ও সরফরাজ ৬ রান করেন। ম্যাচ সেরা হন হায়দার ও সিরিজ সেরা হন রিজওয়ান। টি-২০ শেষে এবার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট।

মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১ , ৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

শেষ ওভারে মাহমুদুল্লাহর ম্যাজিক

তারপরও হলো না

মো. ইমরান হোসেন

image

দুর্ভাগ্যজনক পরাজয়ের পর মাঠ ছাড়ছেন মাহমুদুল্লাহ বাহিনী -বিসিবি

পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। সোমবার শেষ ম্যাচে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন ম্যাচের পরেও হেরেছে মাহমুদুল্লাহর দল। এই ম্যাচ পাকিস্তানকে জয়ের জন্য ১২৫ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। খেলার শেষ বলে তারা জয় নিশ্চিত করে। তবে ১৯তম ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক টপাটপ তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে দিলে খেলায় দারুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। শেষ বলে জয়ের জন্য দু’ রানের প্রয়োজনে ব্যাটিংয়ে নেমে নাওয়াজ বাউন্ডারি (চার) মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন।

ইনিংসের শুরু থেকে ম্যাচ জয়ের পথও মসৃন করে ফেলেছিলো সফরকারীরা। কিন্তু শেষদিকে তাদের ব্যাটারদের উপর চাপ সৃষ্টি করে টাইগার বোলাররা। এমন অবস্থায় ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে ৮ রান প্রয়োজন পড়ে পাকিস্তানের। শেষ ওভারে বল হাতে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের প্রবল সুযোগ তৈরি করেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু শেষ বলে বাউন্ডারি আদায় করে নিয়ে বাংলাদেশকে জয় বঞ্চিত করেন মোহাম্মদ নওয়াজ। ফলে জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও ম্যাচের শেষ বলে পাকিস্তানের কাছে হার মানতে হলো বাংলাদেশকে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০তে ৫ উইকেটে জিতলো পাকিস্তান। এই নিয়ে নিজেদের টি-২০ ইতিহাসে চতুর্থবারের মত হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে টি-২০তে হারের বৃত্ত থেকেও বের হওয়া হলোনা টাইগারদের। টানা আট ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ।

আগের দুই ম্যাচের মত গতকালও টস ভাগ্যে ছিলো বাংলাদেশের পক্ষে। টস আগে জিতে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন রিয়াদ। মোহাম্মদ নাইমের সাথে ইনিংস শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা শাহনাওয়াজ দাহানির করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হন শান্ত। বোল্ড হওয়ার আগে ৫ বলে ৫ রান করেন এই ব্যাটার। শান্তর বিদায়ে উইকেটে এসে প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন শামীম হোসেন। চতুর্থ ওভারের শেষ দুই বলেও দুই বাউন্ডারি আসে শামীমের ব্যাট থেকে। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেও বাউন্ডারি মেরে নিজের আত্মবিশ্বাসটা ধরে রাখেন শামীম। কিন্তু অন্যপ্রান্তে টেস্ট মেজাজে ছিলেন নাইম। তাই পাওয়া প্লেতে ৩৩ রান পায় বাংলাদেশ। যার মধ্যে ১৮ বলে ২০ রান ছিলো শামীমের। উইকেটে সেট হওয়া শামীম, নিজের ভুলে অষ্টম ওভারে থেমে যান। প্রথমবারের মত আক্রমনে আসা লেগ-স্পিনার উসমান কাদিরকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন শামীম। ৪টি চারে ২৩ বলে ২২ রান করেন শামীম।

দলীয় ৩৭ রানে শামীমের আউটে ক্রিজে আসেন আফিফ হোসেন। নাইমের সাথে ইনিংসকে বড় করছিলেন আফিফ। তবে সেটি ওয়ানডে স্টাইলে। দশম ওভারে ১টি করে চার ও ছক্কা মারেন নাইম। এতে ১০ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৫২ রান পায় বাংলাদেশ। ১২তম ওভারে ২টি ছক্কায় রানের গতি বাড়ান তিনি। কিন্তু ১৪তম ওভারে কাদিরের দ্বিতীয় শিকার হন আফিফ। ২টি ছক্কায় ২০ বলে ২১ রান করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে নাইমের সঙ্গে ৪২ বলে ৪৩ রান দলকে এনে দেন আফিফ। এরপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে ১৭তম ওভারে দলের স্কোর শতরানে নিয়ে যান নাইম। তাই বড় স্কোরের আশা শেষই হয়ে যায় বাংলাদেশের। তারপরও লড়াই করার পুঁজির জন্য বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিলো নাইম-মাহমুদুল্লাহ সোহানদের দিকে, হতাশ করেছেন তারা। ১৯তম ওভারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাইম ও নুরুল হাসান সোহান। ২টি করে চার-ছক্কায় ৫০ বলে ৪৭ রান করেন নাইম। টি-২০ মেজাজে না খেললেও, ছয় ইনিংস পর বলার মত স্কোর নাইমের। আগের ছয় ইনিংসে তার সর্বোচ্চ রান ছিলো ১৭। চার মেরে রানের খাতা খোলা নাইম-সোহানকে শিকার হন পেসার ওয়াসিমের। রউফের করা শেষ ওভারের প্রথমে বলে বাউন্ডারি লাইনের কাছে ওয়াসিমকে ক্যাচ দেন মাহমুদুল্লাহ। ১৪ বলে ১৩ রান করেন অধিনায়ক। পরের চার বলে ১টি বাউন্ডারিতে ৭ রান তুলেন মাহেদি হাসান ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। আর শেষ বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন বিপ্লব। মাহেদি ১টি চারে ৩ বলে অপরাজিত ৫ রান করেন। ৩ রান করেন বিপ্লব। পাকিস্তানের ওয়াসিম-কাদির ২টি করে উইকেট নেন।

বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে ১২৫ রানের সহজ টার্গেট পায় পাকিস্তান। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু পাকিস্তানের দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও অধিনায়ক বাবর আজমের। প্রথম ৩ ওভারে ৯ রান তুলেন তারা। চতুর্থ ওভারে প্রথম বাউন্ডারি মারেন বাবর। পঞ্চম ওভারে ইনিংসের দ্বিতীয় বাউন্ডারি আসে বাবরের ব্যাট থেকে। বাবরের দুই বাউন্ডারিতে পাওয়ার প্লেতে ২৮ রান উঠে পাকিস্তানের। সপ্তম ওভারের প্রথমবারের মত আক্রমনে এসেই উইকেট তুলে নেন লেগ-স্পিনার আমিনুল। ওভারের শেষ বলটি শর্ট পিচ করান আমিনুল। সেটি উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে নাইমকে ক্যাচ দেন ২৫ বলে ১৯ রান করা বাবর। সদ্য শেষ হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান করা বাবরের ব্যাট এই সিরিজে কথা বলেনি। প্রথম দুই ম্যাচে ৭ ও ১ রান করেছিলেন তিনি। দলীয় ৩২ রানে বাবরকে হারানোর পর দলের জয়ের পথ মসৃন করেছেন রিজওয়ান ও হায়দার আলি। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৯ বলে ৫১ রান যোগ করেন তারা। রিজওয়ানকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙ্গেন বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা পেসার শহিদুল। ৪৩ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করেন রিজওয়ান। এরপর তৃতীয় উইকেটে ২৬ বলে ৩৪ রান করে পাকিস্তানকে জয়ের পথেই রেখেছিলেন হায়দার ও সরফরাজ। ১৬ ওভার শেষে ২ উইকেটে ৯৯ রান তুলে পাকিস্তান। তবে ১৭ থেকে ১৯তম ওভারে কিপটে বোলিংয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেন বাংলাদেশের বোলাররা। মাহেদি ১৭তম ওভারে ৭, তাসকিন ১৮তম ওভারে ৪ ও শহিদুল ১৯তম ওভারে ৭ রান দেন। ফলে শেষ ওভারে জিততে ৮ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের।

এই অবস্থায় বল হাতে তুলে নেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। বিপিএলে শেষ ওভারে বল হাতে নিয়ে তার দলকে বেশ কিছু ম্যাচ জিতিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। সেই অভিজ্ঞতায় বল হাতে নিয়েই প্রথম বলে ডট, দ্বিতীয়-তৃতীয় বলে যথাক্রমে সরফরাজ ও হায়দারকে শিকার করেন রিয়াদ। এতে পাকিস্তানের সামনে সমীকরন দাঁড়ায় ৩ বলে ৮ রানের। কিন্তু চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন ইফতিখার। আর পঞ্চম বলে ইফতিখারকে আউট করে বাংলাদেশের আশা বাঁচিয়ে রাখেন টাইগার কাপ্তান। শেষ বলে ২ রানের প্রয়োজনে বাউন্ডারি মারেন নাওয়াজ। এতে জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয় টাইগারদের। বাংলাদেশের মাহমুদুল্লাহ ১ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। শহিদুল-আমিনুল ১টি করে উইকেট নেন। পাকিস্তানের হায়দার ৪৫ ও সরফরাজ ৬ রান করেন। ম্যাচ সেরা হন হায়দার ও সিরিজ সেরা হন রিজওয়ান। টি-২০ শেষে এবার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রামে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট।