বিএনপিতে বিভাজন, জয়ের লক্ষ্যে একাট্টা আ’লীগ

সাক্কুর পোস্টার ছেঁড়া, মাইক ভাঙচুরের অভিযোগ

মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় সরগরম কুমিল্লা মহানগরী। নগরজুড়ে ছেয়ে গেছে পোস্টার। প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে প্রচার-প্রচারণা। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠন হওয়ার পর টানা দুই দফায় বিএনপিপন্থি মনিরুল হক সাক্কু মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করলেও এবার দেখা দিয়েছে বিভাজন। এতে ফাটল ধরেছে ঐক্যে। উভয়কে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও বিএনপির বিবদমান দুটি গ্রুপ মাঠপর্যায়ে প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে একাট্টা হয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও।

এদিকে প্রচারণার দ্বিতীয় দিন শনিবারও মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জমজমাট প্রচারণায় নগরীতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এদিকে শুক্রবার গভীর রাতে মুখোশ ও হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। এদিকে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করতে আজ কুমিল্লায় আসছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

জানা গেছে, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন-উর রশীদ ইয়াছিনের সঙ্গে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সদ্যবিদায়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর গ্রুপের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই কমিটি গঠনসহ দলীয় বিভিন্ন কর্মকা- পাল্টাপাল্টি করে আসছেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠনের গত দুটি মেয়াদে প্রথমে নাগরিক ফোরামের ব্যানারে এবং পরে বিএনপি থেকে একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন মনিরুল হক সাক্কু। এবার তৃতীয় দফায় নির্বাচনে এসে বিবদমান দুটি গ্রুপ থেকে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপিতে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন-উর রশীদ ইয়াছিনের শ্যালক ও কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার।

দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও উভয়কে মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি রাবেয়া আক্তার। এমন ছবিও ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এদিকে প্রচারণা শুরু হওয়ায় নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত দুই প্রার্থী। জয়ের লক্ষ্যে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন তারা। অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগে দুটি গ্রুপে বিভাজন থাকলেও আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ পারভেজ খান ইমরান মনোনয়নপত্র তুলে নেয়ায় দলের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। জয়ের লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে নির্বাচনী পরিচালনা কমিটিও। গ্রুপিং-দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে জয়ের লক্ষ্যে একাট্টা আওয়ামী লীগ।

দুই মেয়র প্রার্থীকে জরিমানা

এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরীসহ ভিজিল্যান্স টিমের সদস্যরা গতকাল দুপুরে নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় প্রচার বাহনে একটি মাইকের স্থানে দুইটি মাইক ব্যবহার করায় নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে ফোনের মাধ্যমে সতর্ক করে দেন এবং একটি মাইক খুলে ফেলার নির্দেশ দেন। এছাড়া নৌকার সমর্থকরা গণপরিবহনে পোস্টার লাগানোর অভিযোগে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার (ঘোড়া) বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক নিয়ে প্রচারণা চালানো এবং জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে মিছিল করার দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

নগরজুড়ে প্রচারণা

এদিকে প্রচারণার ২য় দিনে সকাল ১০টার দিকে নগরীর শিশু মঙ্গল রোড, বাদুরতলা, কান্দিরপাড়, মনোহরপুর, ছাতিপট্টি, চকবাজার, নবাববাড়ি, দক্ষিণ চর্থা, কোটবাড়ি এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণা চালান স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন রাতের আঁধারে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও ঘোড়া প্রতীকই জয়ী হবে।

অন্যদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কাপাড়িয়াপট্টি, রাজগঞ্জ, চকবাজার, কাটাবিল, মোগলটুলি, নুরপুর এলাকায় প্রচারণা চালান সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। প্রচারণাকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার জনপ্রিয়তা দেখে এখন রাতের অন্ধকারে তার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। বিকেলে নগরীর কান্দিরপাড়, রানীর বাজার ও স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে দলীয় নেতাদের নিয়ে প্রচারণা চালান আ’লীগ নেতা ও কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন।

এ সময় তিনি বলেন, নৌকার পক্ষে নগরীতে প্রচরণা চালাতে গিয়ে তিনি ভোটারদের মাঝে নৌকার যে জনমত দেখেছেন এতে নৌকার নিশ্চিত বিজয় হবে বলে তিনি আশাবাদী। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সভা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম।

সাক্কুর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ও মাইক ভাঙচুর

পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা এবং দুটি মাইক ভাঙচুর করার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কু। শুক্রবার গভীর রাতে নগরীতে সাঁটানো এসব পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এছাড়া একই রাতে প্রচারণাকালে দুটি মাইক ভাঙচুর করা হয়। গতকাল দুপুরে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমে সাক্কু সাংবাদিকদের এসব অভিযোগ করেন। পরে বিকেলে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে সাক্কু সাংবাদিকদের বলেন, নগরীর কান্দিরপাড় থেকে চকবাজার পর্যন্ত সহস্রাধিক পোস্টার এবং বেশ কয়েকটি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে দুষ্কৃতকারীরা। গভীর রাতে ১০-১২টি মোটরসাইকেলে করে আসে দুর্বৃত্তরা। তারা কাঁচি দিয়ে পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় তাদের মাথায় হেলমেট এবং কেউ কেউ মুখোশ পরা ছিল। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, আমরা প্রথমে অভিযোগটি মৌখিক এবং পরে বিকেলে প্রার্থীর পক্ষ থেকে লিখিতভাবে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রচারণা চালানোর জন্য তিনি সব প্রার্থীকে অনুরোধ করেন।

সিইসির সঙ্গে প্রার্থীদের মতবিনিময় আজ

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আজ মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করবেন প্রার্থীরা। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।

রবিবার, ২৯ মে ২০২২ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪৩

কুমিল্লা সিটি নির্বাচন

বিএনপিতে বিভাজন, জয়ের লক্ষ্যে একাট্টা আ’লীগ

সাক্কুর পোস্টার ছেঁড়া, মাইক ভাঙচুরের অভিযোগ

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুমিল্লা

মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় সরগরম কুমিল্লা মহানগরী। নগরজুড়ে ছেয়ে গেছে পোস্টার। প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে প্রচার-প্রচারণা। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠন হওয়ার পর টানা দুই দফায় বিএনপিপন্থি মনিরুল হক সাক্কু মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করলেও এবার দেখা দিয়েছে বিভাজন। এতে ফাটল ধরেছে ঐক্যে। উভয়কে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও বিএনপির বিবদমান দুটি গ্রুপ মাঠপর্যায়ে প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে একাট্টা হয়েছে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও।

এদিকে প্রচারণার দ্বিতীয় দিন শনিবারও মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জমজমাট প্রচারণায় নগরীতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। এদিকে শুক্রবার গভীর রাতে মুখোশ ও হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। এদিকে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করতে আজ কুমিল্লায় আসছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

জানা গেছে, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন-উর রশীদ ইয়াছিনের সঙ্গে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সদ্যবিদায়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর গ্রুপের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই কমিটি গঠনসহ দলীয় বিভিন্ন কর্মকা- পাল্টাপাল্টি করে আসছেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠনের গত দুটি মেয়াদে প্রথমে নাগরিক ফোরামের ব্যানারে এবং পরে বিএনপি থেকে একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন মনিরুল হক সাক্কু। এবার তৃতীয় দফায় নির্বাচনে এসে বিবদমান দুটি গ্রুপ থেকে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপিতে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন-উর রশীদ ইয়াছিনের শ্যালক ও কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার।

দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও উভয়কে মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি রাবেয়া আক্তার। এমন ছবিও ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এদিকে প্রচারণা শুরু হওয়ায় নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত দুই প্রার্থী। জয়ের লক্ষ্যে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন তারা। অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগে দুটি গ্রুপে বিভাজন থাকলেও আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ পারভেজ খান ইমরান মনোনয়নপত্র তুলে নেয়ায় দলের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। জয়ের লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে নির্বাচনী পরিচালনা কমিটিও। গ্রুপিং-দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে জয়ের লক্ষ্যে একাট্টা আওয়ামী লীগ।

দুই মেয়র প্রার্থীকে জরিমানা

এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরীসহ ভিজিল্যান্স টিমের সদস্যরা গতকাল দুপুরে নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় প্রচার বাহনে একটি মাইকের স্থানে দুইটি মাইক ব্যবহার করায় নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে ফোনের মাধ্যমে সতর্ক করে দেন এবং একটি মাইক খুলে ফেলার নির্দেশ দেন। এছাড়া নৌকার সমর্থকরা গণপরিবহনে পোস্টার লাগানোর অভিযোগে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার (ঘোড়া) বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক নিয়ে প্রচারণা চালানো এবং জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে মিছিল করার দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

নগরজুড়ে প্রচারণা

এদিকে প্রচারণার ২য় দিনে সকাল ১০টার দিকে নগরীর শিশু মঙ্গল রোড, বাদুরতলা, কান্দিরপাড়, মনোহরপুর, ছাতিপট্টি, চকবাজার, নবাববাড়ি, দক্ষিণ চর্থা, কোটবাড়ি এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণা চালান স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন রাতের আঁধারে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও ঘোড়া প্রতীকই জয়ী হবে।

অন্যদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কাপাড়িয়াপট্টি, রাজগঞ্জ, চকবাজার, কাটাবিল, মোগলটুলি, নুরপুর এলাকায় প্রচারণা চালান সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। প্রচারণাকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার জনপ্রিয়তা দেখে এখন রাতের অন্ধকারে তার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। বিকেলে নগরীর কান্দিরপাড়, রানীর বাজার ও স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের পক্ষে দলীয় নেতাদের নিয়ে প্রচারণা চালান আ’লীগ নেতা ও কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন।

এ সময় তিনি বলেন, নৌকার পক্ষে নগরীতে প্রচরণা চালাতে গিয়ে তিনি ভোটারদের মাঝে নৌকার যে জনমত দেখেছেন এতে নৌকার নিশ্চিত বিজয় হবে বলে তিনি আশাবাদী। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সভা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম।

সাক্কুর পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ও মাইক ভাঙচুর

পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা এবং দুটি মাইক ভাঙচুর করার অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. মনিরুল হক সাক্কু। শুক্রবার গভীর রাতে নগরীতে সাঁটানো এসব পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এছাড়া একই রাতে প্রচারণাকালে দুটি মাইক ভাঙচুর করা হয়। গতকাল দুপুরে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমে সাক্কু সাংবাদিকদের এসব অভিযোগ করেন। পরে বিকেলে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে সাক্কু সাংবাদিকদের বলেন, নগরীর কান্দিরপাড় থেকে চকবাজার পর্যন্ত সহস্রাধিক পোস্টার এবং বেশ কয়েকটি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে দুষ্কৃতকারীরা। গভীর রাতে ১০-১২টি মোটরসাইকেলে করে আসে দুর্বৃত্তরা। তারা কাঁচি দিয়ে পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় তাদের মাথায় হেলমেট এবং কেউ কেউ মুখোশ পরা ছিল। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, আমরা প্রথমে অভিযোগটি মৌখিক এবং পরে বিকেলে প্রার্থীর পক্ষ থেকে লিখিতভাবে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রচারণা চালানোর জন্য তিনি সব প্রার্থীকে অনুরোধ করেন।

সিইসির সঙ্গে প্রার্থীদের মতবিনিময় আজ

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আজ মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করবেন প্রার্থীরা। জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।