রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত মাঝিপাড়ায় হামলা করে বাড়িঘরে আগুন দেয়া মালামাল লুটসহ তাণ্ডবের মামলায় দীর্ঘ ৯ মাস পর মামলার প্রধান আসামি শহিদ ওরফে শহিদুজ্জামান মণ্ডলসহ ৫১ জন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিঞ্জ বিচারক সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। গতকাল দুপুরে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক এস এম শফিকুল ইসলাম এ আদেশ প্রদান করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত পীরগঞ্জ আমলি আদালতের জিআরও শহিদুল ইসলাম।

চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি পীরগঞ্জ থানার এসআই ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে ১৮ অক্টোবর ২০২১ সালে ১৪৬ জন আসামির নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাহবুব হোসেন সব আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার প্রধান আসামি শহিদ ওরফে শহিদুজ্জামানসহ শতাধিক আসামি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিল।

গতকাল দুপুরে প্রধান আসামিসহ ৫১ জন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। অন্য আসামিরা হলেনÑ আতাউর রহমান, মোজ্জল হোসেন, রুবেল সরকার, সাইফুল তালুকদার, সিরাজুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিলন মিয়া, আলফাজুর রহমান, রিপন আকন্দ, সুলতান আহাম্মেদ, ফাহিম, কাওসার আলী, হাফিজার রহমান, হারুন, অপিরুল ইসলাম, শাহিন, মিজানুর রহমান, বাবলু, শফিকুল, তাজুল ইসলাম, পিয়াস মিয়া, জাহাঙ্গীর হোসেন, পাপ্পু মিয়া, গেদা ওরফে জেয়াদ আলী, ফয়জার রহমান, খুশি মিয়া, জয়নাল আবেদীন, নজরুল ওরফে রানা, লিটন, গোলাম মোস্তফা, আরিফুল ইসলাম, সাদেকুল, রাসেল, জিল্লুর রহমান, রোকন, মশিউর, সাদেকুল ইসলাম, হাবিবর রহমান, মোহাম্মদ আলী, সুমন, মালেক, রাশেদ , হৃদয়, বাশিদুল ইসলাম, সুমন মিয়া, কাইয়ুম আলী, হুমায়ুন ও শরিফুল ইসলাম।

শুনানি শেষে বিচারক সব আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবু সাঈদ জানান আসামিরা সবাই সহায়-সম্বলহীন ও শ্রমজীবী তাদের পুলিশ অন্যায়ভাবে মামলায় আসামি করেছে।

উল্লেখ্য ফেইসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর স্ট্যাটাস দেয়ার ঘটনায় ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড় করিমপুর কসবা মাঝিপাড়া ও দক্ষিণ মাঝিপাড়ায় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে অন্তত ৩০টি বাড়িঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া মালামাল ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় আইসিটি আইনে ৩টি ও হিন্দুপাড়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় একটিসহ ৪টি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অন্তত ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছে।