ট্রাকে পা হারিয়ে মায়ের কোলে দুধের শিশু

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মায়ের কাছে দৌড়ে যাওয়ার সময় ট্রাকের চাকায় পিষ্ঠ হয়ে ৩ বছর বয়সের শিশুর ডান পায়ের টাকনু থেকে পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বাম পা হাঁটুর নিচে ভেঙ্গে গেছে। গত রোববার চিরিরবন্দর উপজেলার বেলতলী বাজারে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় চালক ও ট্রাকটিকে (ঢাকা মেট্রো-ট-১৪-৬৬৪১) আটক করে চিরিরবন্দর থানায় রাখা হয়েছে।

আহত শিশু সিয়াম (৩) চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেড়াই (ভজু পাড়া) গ্রামের আরিফুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে চিরিরবন্দর ব্র্যাক অফিসে লন তুলতে গিয়েছিলে ছেলে সিয়ামকে সঙ্গে নিয়ে। লন তুলে বেলতলী বাজারে সিয়ামের দাদুর পানের দোকানে ইজিবাইক থেকে নামেন। এ সময় ভাড়া দেয়ার জন্য খুচরা টাকা না থাকায় মা ছেলে রাস্তা পার হয়ে সিয়ামের দাদুর দোকানে যান। খুচরা টাকা নিয়ে ছেলেকে দাদুর দোকানে রেখে মা সালেহা বেগম রাস্তা পার হয়ে ইজিবাইক চালককে ভাড়া দিতে যায়। অবুঝ শিশু কিছু না বুঝেই রাস্তার অপর প্রান্তে মায়ের উদ্দেশে দৌড় দেয়। এ সময় পার্বতীপুর গামী একটি ট্রাক শিশুর পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে শিশু সিয়ামের ডান পায়ের টাকনু থেকে পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন যায় এবং বাম পা হাঁটুর নিচে থেকে ভেঙ্গে চূর্ণ বিচুর্ণ হয়ে যায়।

চালক অনেক চেষ্টা করেও দুর্ঘটনাটি ঠেকাতে পারেনি। এ সময় চালক ট্রাক থেকে নেমে শিশুটিকে হাসাপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চালক মো. আনোয়ার হোসেন ঠান্ডু (৪০)কে আটক করে ট্রাকসহ থানায় নিয়ে আসে।

পরে শিশু সিয়ামকে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে জরুরী ভাবে শিশুটিকে ব্লাড দিয়ে অস্ত্রপচার করা হয়েছে।

দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ নাদির হোসেন শিশুর দুই পায়ে অস্ত্রপচার সম্পন্ন করছেন। তিনি বলেন শিশুটির অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হয়েছে। আমরা দ্রুত অস্ত্রপচার করতে সক্ষম হয়েছি। তবে তার অবস্থা আশংকাজনক।

আহত শিশুটির পিতা আরিফুল ইসলাম বলেন, চারকে পরিবারের নসদ্যরা হাসাপাতালে এসেছেন। তারা সর্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন।

চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রশিদ জানান, দুর্ঘটনায় আহত শিশুটিকে দ্রুত হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। ট্রাক ও চালককে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। হেলপার পালিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১১ আশ্বিন ১৪২৯ ২৯ সফর ১৪৪৪

ট্রাকে পা হারিয়ে মায়ের কোলে দুধের শিশু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, দিনাজপুর

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মায়ের কাছে দৌড়ে যাওয়ার সময় ট্রাকের চাকায় পিষ্ঠ হয়ে ৩ বছর বয়সের শিশুর ডান পায়ের টাকনু থেকে পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বাম পা হাঁটুর নিচে ভেঙ্গে গেছে। গত রোববার চিরিরবন্দর উপজেলার বেলতলী বাজারে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় চালক ও ট্রাকটিকে (ঢাকা মেট্রো-ট-১৪-৬৬৪১) আটক করে চিরিরবন্দর থানায় রাখা হয়েছে।

আহত শিশু সিয়াম (৩) চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেড়াই (ভজু পাড়া) গ্রামের আরিফুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে চিরিরবন্দর ব্র্যাক অফিসে লন তুলতে গিয়েছিলে ছেলে সিয়ামকে সঙ্গে নিয়ে। লন তুলে বেলতলী বাজারে সিয়ামের দাদুর পানের দোকানে ইজিবাইক থেকে নামেন। এ সময় ভাড়া দেয়ার জন্য খুচরা টাকা না থাকায় মা ছেলে রাস্তা পার হয়ে সিয়ামের দাদুর দোকানে যান। খুচরা টাকা নিয়ে ছেলেকে দাদুর দোকানে রেখে মা সালেহা বেগম রাস্তা পার হয়ে ইজিবাইক চালককে ভাড়া দিতে যায়। অবুঝ শিশু কিছু না বুঝেই রাস্তার অপর প্রান্তে মায়ের উদ্দেশে দৌড় দেয়। এ সময় পার্বতীপুর গামী একটি ট্রাক শিশুর পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে শিশু সিয়ামের ডান পায়ের টাকনু থেকে পায়ের পাতা বিচ্ছিন্ন যায় এবং বাম পা হাঁটুর নিচে থেকে ভেঙ্গে চূর্ণ বিচুর্ণ হয়ে যায়।

চালক অনেক চেষ্টা করেও দুর্ঘটনাটি ঠেকাতে পারেনি। এ সময় চালক ট্রাক থেকে নেমে শিশুটিকে হাসাপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চালক মো. আনোয়ার হোসেন ঠান্ডু (৪০)কে আটক করে ট্রাকসহ থানায় নিয়ে আসে।

পরে শিশু সিয়ামকে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে জরুরী ভাবে শিশুটিকে ব্লাড দিয়ে অস্ত্রপচার করা হয়েছে।

দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ নাদির হোসেন শিশুর দুই পায়ে অস্ত্রপচার সম্পন্ন করছেন। তিনি বলেন শিশুটির অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ হয়েছে। আমরা দ্রুত অস্ত্রপচার করতে সক্ষম হয়েছি। তবে তার অবস্থা আশংকাজনক।

আহত শিশুটির পিতা আরিফুল ইসলাম বলেন, চারকে পরিবারের নসদ্যরা হাসাপাতালে এসেছেন। তারা সর্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন।

চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রশিদ জানান, দুর্ঘটনায় আহত শিশুটিকে দ্রুত হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। ট্রাক ও চালককে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। হেলপার পালিয়ে গেছে।