সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে মৃত্যু : সম্মেলনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, স্ট্রোক করে মারা গেছে, বললেন ওবায়দুল কাদের

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন ওই মৃত্যুর সঙ্গে সম্মেলনের কোন সম্পর্ক নেই।

‘স্ট্রোক করে মারা গেছে, এর সঙ্গে সম্মেলনের কোন রিলেশন (সম্পর্ক) নেই। কোনভাবেই সম্মেলনের সঙ্গে এ ঘটনা যুক্ত নয়,’ বলেন ওবায়দুল কাদের, যিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সংঘর্ষে আহত হয়ে পরে মারা যান আজমল হোসেন (৩৫)। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, আজমল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

সাংবাদিকদের বন্ধু আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এভাবে যদি নিউজ করেন পুরোপুরি অবহিত না হয়ে, যদি কেউ মারা যায় সম্মেলনে, সে ক্ষেত্রে তো প্রমাণ থাকবে। স্ট্রোক করেছে আপনারা (সাংবাদিক) খবর নেন।’

রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকের শুরুতে গতকাল ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

আজমল কুলঞ্জ গ্রামের আবদুল হান্নান চৌধুরীর ছেলে। তিনি দিরাই সদরে হাসপাতাল রোডে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। নিহত আজমলের পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের বলেন, সমাবেশস্থলে সংঘর্ষ চলাকালে তার পিঠে ঢিল লাগে। এরপর তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে অনেকের ভিড়ে চিকিৎসা নিতে পারেননি। বাসায় চলে আসেন। পরে তিনি অস্থিরতা বোধ করতে থাকেন। এ অবস্থায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাকে আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় মঞ্চেও ইটপাটকেল ছোড়া হয়। ওই সময় মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়ার দিয়ে বেষ্টনী করে ইটপাটকেলের আঘাত থেকে রক্ষা করেন স্থানীয় নেতারা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের একটা উপজেলা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ওখানে ছোটখাটো একটা ঘটনা ঘটেছিল। বিদ্রোহীরা মঞ্চে বসা, কিন্তু পরবর্তী সময়ে সম্মেলন সুন্দরভাবে শেষ হয়েছিল। সকালে পত্রপত্রিকায় দেখলাম একজন মারা গেছে। এটা মৃত হওয়ার সুবাদে প্রথম পাতায় উঠে আসছে। সম্মেলনের আশপাশে কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজমল হোসেন দুবাইতে ছিলেন। তিনি দেশে এসেছেন। তার বাড়ি সম্মেলনস্থল থেকে অনেক দূরে। তিনি বলেন, ‘সে তার বাড়িতে ছিল। বাড়ি ওখান থেকে অনেক দূরে। সম্মেলনে ঘটনা ঘটেছে একটা। তিনটা বাজে ওর পরিবার ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।’

সম্প্রতি ছয়টি জেলা সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোথায় সম্মেলনে আমাদের এ ধরনের গোলমাল হয়েছে? একটা জেলা সম্মেলন, কুমিল্লায় যেটা হয়েছে, সেটা সম্মেলন থেকে অনেক দূরে। ওই চৌরাস্তার মোড়। তাও তো সেখানে মারামারিও হয়নি। কিছুই হয়নি। পটকা-পাটকা ফুটাইছে। তাও সম্মেলন ভেন্যু থেকে দূরে। এগুলো আপনারা (সাংবাদিক) একটু খেয়াল রাখবেন।’

বিরোধী দল বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধী দল হলে চার দিন আগে আসতেছে, লঞ্চে আসতেছে, নৌকায় আসতেছে, হেঁটে আসতেছে। দেন এটা আপনাদের ইচ্ছা। আমাদের এগুলো বারণ নেই। এগুলো আপনাদের ব্যাপার। পত্রিকার পলিসির ব্যাপার। কিন্তু আমাদের সম্পর্কে মিথ্যা খবর দেয়া থেকে বিরত থাকবেন। এটা আমার অনুরোধ। ইটস এ ফলস (মিথ্যা)। এটা ভুল। এখন আপনারা খবর নিতে পারেন। কী কারণে লোকটার মৃত্যু হয়েছে।’

বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২ , ০১ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২০ রবিউস সানি ১৪৪৪

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে মৃত্যু : সম্মেলনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, স্ট্রোক করে মারা গেছে, বললেন ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন ওই মৃত্যুর সঙ্গে সম্মেলনের কোন সম্পর্ক নেই।

‘স্ট্রোক করে মারা গেছে, এর সঙ্গে সম্মেলনের কোন রিলেশন (সম্পর্ক) নেই। কোনভাবেই সম্মেলনের সঙ্গে এ ঘটনা যুক্ত নয়,’ বলেন ওবায়দুল কাদের, যিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সংঘর্ষে আহত হয়ে পরে মারা যান আজমল হোসেন (৩৫)। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, আজমল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

সাংবাদিকদের বন্ধু আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এভাবে যদি নিউজ করেন পুরোপুরি অবহিত না হয়ে, যদি কেউ মারা যায় সম্মেলনে, সে ক্ষেত্রে তো প্রমাণ থাকবে। স্ট্রোক করেছে আপনারা (সাংবাদিক) খবর নেন।’

রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকের শুরুতে গতকাল ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

আজমল কুলঞ্জ গ্রামের আবদুল হান্নান চৌধুরীর ছেলে। তিনি দিরাই সদরে হাসপাতাল রোডে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। নিহত আজমলের পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকদের বলেন, সমাবেশস্থলে সংঘর্ষ চলাকালে তার পিঠে ঢিল লাগে। এরপর তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে অনেকের ভিড়ে চিকিৎসা নিতে পারেননি। বাসায় চলে আসেন। পরে তিনি অস্থিরতা বোধ করতে থাকেন। এ অবস্থায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাকে আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষের সময় মঞ্চেও ইটপাটকেল ছোড়া হয়। ওই সময় মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়ার দিয়ে বেষ্টনী করে ইটপাটকেলের আঘাত থেকে রক্ষা করেন স্থানীয় নেতারা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের একটা উপজেলা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ওখানে ছোটখাটো একটা ঘটনা ঘটেছিল। বিদ্রোহীরা মঞ্চে বসা, কিন্তু পরবর্তী সময়ে সম্মেলন সুন্দরভাবে শেষ হয়েছিল। সকালে পত্রপত্রিকায় দেখলাম একজন মারা গেছে। এটা মৃত হওয়ার সুবাদে প্রথম পাতায় উঠে আসছে। সম্মেলনের আশপাশে কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজমল হোসেন দুবাইতে ছিলেন। তিনি দেশে এসেছেন। তার বাড়ি সম্মেলনস্থল থেকে অনেক দূরে। তিনি বলেন, ‘সে তার বাড়িতে ছিল। বাড়ি ওখান থেকে অনেক দূরে। সম্মেলনে ঘটনা ঘটেছে একটা। তিনটা বাজে ওর পরিবার ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।’

সম্প্রতি ছয়টি জেলা সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা জানিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোথায় সম্মেলনে আমাদের এ ধরনের গোলমাল হয়েছে? একটা জেলা সম্মেলন, কুমিল্লায় যেটা হয়েছে, সেটা সম্মেলন থেকে অনেক দূরে। ওই চৌরাস্তার মোড়। তাও তো সেখানে মারামারিও হয়নি। কিছুই হয়নি। পটকা-পাটকা ফুটাইছে। তাও সম্মেলন ভেন্যু থেকে দূরে। এগুলো আপনারা (সাংবাদিক) একটু খেয়াল রাখবেন।’

বিরোধী দল বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধী দল হলে চার দিন আগে আসতেছে, লঞ্চে আসতেছে, নৌকায় আসতেছে, হেঁটে আসতেছে। দেন এটা আপনাদের ইচ্ছা। আমাদের এগুলো বারণ নেই। এগুলো আপনাদের ব্যাপার। পত্রিকার পলিসির ব্যাপার। কিন্তু আমাদের সম্পর্কে মিথ্যা খবর দেয়া থেকে বিরত থাকবেন। এটা আমার অনুরোধ। ইটস এ ফলস (মিথ্যা)। এটা ভুল। এখন আপনারা খবর নিতে পারেন। কী কারণে লোকটার মৃত্যু হয়েছে।’