একটি উদ্যোগে ভাগাড় এখন ফুলের বাগান

ময়লার ভাগাড় পথচারীদের শৌচাগার হিসেবেই পরিচিত ছিল স্থানটি। ছিল নোংড়া আর দুর্গন্ধযুক্ত। পাশ দিয়ে চলার সময় নাকে রুমাল না দিয়ে চলতে পরাতো না পথচারীরা। বলছি পালং মডেল থানার পশ্চিম ফটকের ঠিক উত্তর কোনে শরীয়তপুরের প্রধান সড়কের পাশের সেই ময়লার ভাগারটি অবস্থিত।

বছরের পর বছর এভাবে চলছিল স্বাভাবিক নিয়মেই। পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়নি কেউই। এখন দূর হয়েছে আবর্জনা, নেই দুর্গন্ধ। শুরু হয়েছে ফুলে চারা রোপণের কাজ।

এ মহতি উদ্যোগ নিয়েছেন সদর উপজেলার সদ্য দায়িত্ব নেয়া নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই। শহরের প্রাণ কেন্দ্রে এমন নোংড়া আর দুর্গদ্ধ স্থানটি তার নজরে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে। ছুটে যান ঘটনাস্থলে। যেই দেখা সেই শুরু কাজ। গাছ সংগ্রহে দ্রুত চলে যান বিভিন্ন নার্সারিতে। কিনে আনেন ফুল আর পাতা বাহারের বিভিন্ন চারা। ইতোমধ্যে বিষয়টি ছড়িয়ে যায় শহরে। সহযোগিতায় হাত বাড়ায় পালং থানা পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ আর জেলা প্রশাসনের লোকজন। ছুটে আসেন বিডি ক্লিনের এক ঝাক তরুণ সদস্য। শুরু হয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান। সবার মধেই ছিল প্রবল আগ্রহ। নিমিষেই অপসারিত হয় আবর্জনা স্তুপ। ট্রলিতে চলে আসে মাটি। তাও ফেলতে ফেলতে উঁচু হয়ে যায় স্থানটি। সবাই মিলে শুরু করে গাছ লাগানোর কাজ। এরপর গাছ রক্ষায় দেয়া হয় নেটের তৈরি বেড়া। সবশেষ সচেতন করা হয় স্থানীয়দের। যাতে করে রক্ষা পায় গাছ আর স্থানটি ফিরে না যায় পূর্বের অবস্থায়।

উল্লেখ্য যে এর আগেও পথে শুয়ে থাকা বিনা চিকিৎসায় মরতে বসা দুই নারীকেও মনদীপ ঘরাই নিজে তুলে এনে দিয়েছেন চিকিৎসা। নিয়মিত নিচ্ছেন তাদের খোঁজ খবরও। একের পর এক এমন জনকল্যাণ আর মহতি কাজ তাকে মানুষের কাছে করে তুলেছে জনপ্রিয়। যে কোন সমস্যা হলেই মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন সদরের নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে।

বিডি ক্লিনের শরীয়তপুরের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান জানান, আজ দুপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টেলিফোনে বিষয়টি জানায়। সাথে সাথে সংগঠনের ১০ জন সদস্য নিয়ে চলে আসি। সকলে মিলে শুরু করি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা । শহরের যেখানেই এমন খবর পাবো সেখানেই আমরা আবর্জনা পরিষ্কার করতে এগিয়ে যাবো। ধন্যবাদ জানাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই জানান, শুক্রবার রাতে ফেসবুকে জনৈক ব্যক্তি ময়লার এই স্থানটির খবর আমাকে ট্যাক করে। বিষয়টি সরেজমিন দেখতে আমি ও জেলা প্রশাসনের এনডিসি যাই। পরে পৌর কর্তৃপক্ষ ও বিডি ক্লিনের সদস্যদের সহযোগিতায় নোংড়া জায়গা এখন দৃষ্টিনন্দর বাগানে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শহরের যেখানেই এমন অবস্থা থাকবে সেখানটাই হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আর ফুল ফলের বাগান।

সোমবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২১ , ১১ মাঘ ১৪২৭, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

একটি উদ্যোগে ভাগাড় এখন ফুলের বাগান

প্রতিনিধি, শরীয়তপুর

image

ময়লার ভাগাড় পথচারীদের শৌচাগার হিসেবেই পরিচিত ছিল স্থানটি। ছিল নোংড়া আর দুর্গন্ধযুক্ত। পাশ দিয়ে চলার সময় নাকে রুমাল না দিয়ে চলতে পরাতো না পথচারীরা। বলছি পালং মডেল থানার পশ্চিম ফটকের ঠিক উত্তর কোনে শরীয়তপুরের প্রধান সড়কের পাশের সেই ময়লার ভাগারটি অবস্থিত।

বছরের পর বছর এভাবে চলছিল স্বাভাবিক নিয়মেই। পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়নি কেউই। এখন দূর হয়েছে আবর্জনা, নেই দুর্গন্ধ। শুরু হয়েছে ফুলে চারা রোপণের কাজ।

এ মহতি উদ্যোগ নিয়েছেন সদর উপজেলার সদ্য দায়িত্ব নেয়া নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই। শহরের প্রাণ কেন্দ্রে এমন নোংড়া আর দুর্গদ্ধ স্থানটি তার নজরে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে। ছুটে যান ঘটনাস্থলে। যেই দেখা সেই শুরু কাজ। গাছ সংগ্রহে দ্রুত চলে যান বিভিন্ন নার্সারিতে। কিনে আনেন ফুল আর পাতা বাহারের বিভিন্ন চারা। ইতোমধ্যে বিষয়টি ছড়িয়ে যায় শহরে। সহযোগিতায় হাত বাড়ায় পালং থানা পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ আর জেলা প্রশাসনের লোকজন। ছুটে আসেন বিডি ক্লিনের এক ঝাক তরুণ সদস্য। শুরু হয় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান। সবার মধেই ছিল প্রবল আগ্রহ। নিমিষেই অপসারিত হয় আবর্জনা স্তুপ। ট্রলিতে চলে আসে মাটি। তাও ফেলতে ফেলতে উঁচু হয়ে যায় স্থানটি। সবাই মিলে শুরু করে গাছ লাগানোর কাজ। এরপর গাছ রক্ষায় দেয়া হয় নেটের তৈরি বেড়া। সবশেষ সচেতন করা হয় স্থানীয়দের। যাতে করে রক্ষা পায় গাছ আর স্থানটি ফিরে না যায় পূর্বের অবস্থায়।

উল্লেখ্য যে এর আগেও পথে শুয়ে থাকা বিনা চিকিৎসায় মরতে বসা দুই নারীকেও মনদীপ ঘরাই নিজে তুলে এনে দিয়েছেন চিকিৎসা। নিয়মিত নিচ্ছেন তাদের খোঁজ খবরও। একের পর এক এমন জনকল্যাণ আর মহতি কাজ তাকে মানুষের কাছে করে তুলেছে জনপ্রিয়। যে কোন সমস্যা হলেই মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন সদরের নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে।

বিডি ক্লিনের শরীয়তপুরের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান জানান, আজ দুপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টেলিফোনে বিষয়টি জানায়। সাথে সাথে সংগঠনের ১০ জন সদস্য নিয়ে চলে আসি। সকলে মিলে শুরু করি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা । শহরের যেখানেই এমন খবর পাবো সেখানেই আমরা আবর্জনা পরিষ্কার করতে এগিয়ে যাবো। ধন্যবাদ জানাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই জানান, শুক্রবার রাতে ফেসবুকে জনৈক ব্যক্তি ময়লার এই স্থানটির খবর আমাকে ট্যাক করে। বিষয়টি সরেজমিন দেখতে আমি ও জেলা প্রশাসনের এনডিসি যাই। পরে পৌর কর্তৃপক্ষ ও বিডি ক্লিনের সদস্যদের সহযোগিতায় নোংড়া জায়গা এখন দৃষ্টিনন্দর বাগানে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শহরের যেখানেই এমন অবস্থা থাকবে সেখানটাই হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আর ফুল ফলের বাগান।