১০৩ বছরেও মেলে না বয়স্ক ভাতা!

মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের সাকুচিয়া ইছামতি গুচ্ছগ্রামের ফুলজান বেগমের ১০৩ বছর বয়সেও মিলেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড। তার জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ড অনুসারে জন্ম ১৯১৭ সনের ১১ই আগস্টে। বয়স দাঁড়ায় ১০৩ বছর! বসবাস ঝুপড়ি ঘরে। চোখে দেখতে পারেন না। ভুগছেন বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায়। বেশিরভাগ দাঁত পড়ে গেছে। বয়সের ভাড়ে ন্যুয়ে পড়েছে তার শরীরও। কিন্তু জীবনের ক্রান্তিকালে এসেও এখনো তিনি বয়স্ক বা বিধবা ভাতার সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আশির দশকের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠিত এই ইছামতি গুচ্ছ গ্রামের ২২নং প্লটে বাস করেন গুচ্ছ গ্রামটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের খইরা গ্রামের প্রয়াত আব্দুল জলিল মুন্সির স্ত্রী ফুলজান বেগমের ভিটেমাটি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। ঘরবাড়ি হারিয়ে অসহায় হয়ে দীর্ঘদিন বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে অবশেষে আশ্রয় মেলে এই গুচ্ছ গ্রামে। প্রায় ৩০ বছর আগে স্বামী হারান এই তিন সন্তানের জননী । তার তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে শামসুল ইসলাম ঢাকায় ছোট্ট পরিসরের ছাট কাগজের ব্যবসা করেন। ছোট ছেলে শহিদুল ইসলাম এলাকায় ফেরি করে কাপড় বিক্রি করেন। আর মেজ ছেলে বেশ কয়েকবছর আগেই মারা গেছেন। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা কার্ডের কথা জনতে চাইলেই তিনি বলেন, কত কইলাম মেম্বাররে। তা তো দিল না। মেম্বার কয় আমার নাকি বয়েস বেশি অইয়া গ্যাছে। ছোট ছেলে শহিদুলের স্ত্রী জানান, একটা ভাতার কার্ডের জন্য অনেক চেষ্টা করেছি, কেউ দেয়নি। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন জানান, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা কার্ডের জন্য মাইকিং করে আইডি কার্ড নেয়া হয়েছে। তাতে অনেকেরই কার্ড হয়েছে। ফুলজানের কার্ড হয়েছে কিনা আমার জনা নেই। বিষয়টা উপজেলা চেয়ারম্যানের হাতে। এতে আমার কোন হাত নেই। এ বিষয়ে চালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম বিশ্বাস মুঠোফোনে জানান, যোগাযোগ করতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে সংবাদকে জানান, শীঘ্রই ওনার কার্ডের ব্যবস্থা করবেন।

রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৩১ মাঘ ১৪২৭, ৩১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

১০৩ বছরেও মেলে না বয়স্ক ভাতা!

প্রতিনিধি, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)

image

মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের সাকুচিয়া ইছামতি গুচ্ছগ্রামের ফুলজান বেগমের ১০৩ বছর বয়সেও মিলেনি বয়স্ক ভাতার কার্ড। তার জাতীয় পরিচয়পত্র কার্ড অনুসারে জন্ম ১৯১৭ সনের ১১ই আগস্টে। বয়স দাঁড়ায় ১০৩ বছর! বসবাস ঝুপড়ি ঘরে। চোখে দেখতে পারেন না। ভুগছেন বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায়। বেশিরভাগ দাঁত পড়ে গেছে। বয়সের ভাড়ে ন্যুয়ে পড়েছে তার শরীরও। কিন্তু জীবনের ক্রান্তিকালে এসেও এখনো তিনি বয়স্ক বা বিধবা ভাতার সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আশির দশকের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠিত এই ইছামতি গুচ্ছ গ্রামের ২২নং প্লটে বাস করেন গুচ্ছ গ্রামটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের খইরা গ্রামের প্রয়াত আব্দুল জলিল মুন্সির স্ত্রী ফুলজান বেগমের ভিটেমাটি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। ঘরবাড়ি হারিয়ে অসহায় হয়ে দীর্ঘদিন বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে অবশেষে আশ্রয় মেলে এই গুচ্ছ গ্রামে। প্রায় ৩০ বছর আগে স্বামী হারান এই তিন সন্তানের জননী । তার তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে শামসুল ইসলাম ঢাকায় ছোট্ট পরিসরের ছাট কাগজের ব্যবসা করেন। ছোট ছেলে শহিদুল ইসলাম এলাকায় ফেরি করে কাপড় বিক্রি করেন। আর মেজ ছেলে বেশ কয়েকবছর আগেই মারা গেছেন। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা কার্ডের কথা জনতে চাইলেই তিনি বলেন, কত কইলাম মেম্বাররে। তা তো দিল না। মেম্বার কয় আমার নাকি বয়েস বেশি অইয়া গ্যাছে। ছোট ছেলে শহিদুলের স্ত্রী জানান, একটা ভাতার কার্ডের জন্য অনেক চেষ্টা করেছি, কেউ দেয়নি। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন জানান, বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা কার্ডের জন্য মাইকিং করে আইডি কার্ড নেয়া হয়েছে। তাতে অনেকেরই কার্ড হয়েছে। ফুলজানের কার্ড হয়েছে কিনা আমার জনা নেই। বিষয়টা উপজেলা চেয়ারম্যানের হাতে। এতে আমার কোন হাত নেই। এ বিষয়ে চালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম বিশ্বাস মুঠোফোনে জানান, যোগাযোগ করতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে সংবাদকে জানান, শীঘ্রই ওনার কার্ডের ব্যবস্থা করবেন।