উদ্যানের প্রকল্পে সংশোধনের সুযোগ নেই : মন্ত্রী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ তৃতীয় পর্যায় নির্মাণ প্রকল্পের সংশোধনের আর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণপূর্ত ভবনের সম্মেলন কক্ষে স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে উদ্ভিদবিদ ও পরিবেশবাদীদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু এখন পর্যন্ত প্রকল্পের বিভিন্ন ভৌত কাজের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও পরিকল্পনা থেকে তেমন কিছু বাদ দেয়া যাবে না। তবে সবার মতামতের ভিত্তিতে যতটুকু সম্ভব সংযোজন ও বিয়োজন করা হবে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় ১০০০ গাছ লাগানো হবে। এজন্য পরিবেশ ও উদ্ভিদবিদদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হবে। আগামী জুলাই মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশকিছু গাছ কাটা পড়ায় পরিবেশবাদী সংগঠনসহ বিভিন্ন জন প্রতিবাদ করে। পরে আদালতের নির্দেশে গাছ কাটা বন্ধ রাখা হয়। তাই প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে উদ্ভিদবিদ, পরিবেশবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলী, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সুধীজন নিয়ে এই মতবিনিময় কর্মশালার আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

কর্মশালার আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রকল্পের কাজের জন্য আর কোন বৃক্ষ নিধন হবে না। এ পর্যন্ত ৬০-৭০টি গাছ কাটা হয়েছে। ১০০টি গাছ কাটার লক্ষ্য ছিল। আর সর্বোচ্চ ৫-১০টি গাছ কাটা প্রয়োজন হতে পারে বা নাও হতে পারে। তবে যথাযথ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।’

সভায় স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবেশ ও প্রতিবেশ যাতে নষ্ট করা না হয় সে বিষয়ে পরামর্শ দেন বিশিষ্টজনরা। এ সময় প্রকল্প সংশোধন করে উদ্যানের সবুজায়ন ঠিক রেখে টয়লেট ও ফুডকোর্ডসহ বিভিন্ন স্থাপনা মাটির নিচে করার পরামর্শ দেন তারা। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মো. হারুনুর রশিদ খান বলেন, ‘নকশাটি দেখে ‘ব্যথিত’ হয়েছি। কারণ এতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ মুক্তযুদ্ধের স্থাপনাগুলো ফুটে উঠেনি। তবে খাবার দোকান, টয়লেট মাটির নিচে করার পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. জমিস উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকায় ২ কোটি মানুষের জন্য ২৫ শতাংশ সবুজায়ন থাকা প্রয়োজন। কিন্তু তা আছে ৭ শতাংশের নিচে। তাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঢাকা শহরের সবুজায়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়ন যাতে পরিবেশবান্ধব হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমল হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘বিশ্বের যে কোন দেশে স্থাপনা করার সময় সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তা হয় না, যা দুঃখজনক। এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্মাণ কাজের নকশা দেখে মনে হচ্ছে এটি পার্কের মতোই। এটা বিনোদন কেন্দ্র হওয়া উচিত নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে পরিবেশ ঠিক রেখে নকশা সংশোধন করা প্রয়োজন। আমরা স্বাধীনতা স্তম্ভ চাই, তবে সেটা পরিবেশ এবং প্রতিবেশ ধ্বংস করে নয়।’

‘উদ্যানের কী পরিমাণ গাছ ছিল এবং প্রকল্পের জন্য কতটি গাছ কাটা হবে’ এ সম্পর্কে জানতে চেয়ে একুশে টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনের মূল্য কর্তৃপক্ষ কে তা অনেকেই জানে না। তাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ বাস্তবায়নের পর এটা দেখাশুনা দায়িত্ব কার থাকবে। এটা পরিষ্কার হওয়া দরকার। প্রকল্প নিয়ে প্রকৃত কোন তথ্য না থাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। পরিষ্কার করুন কতগুলো গাছ কাটা হবে। তাই প্রকল্প সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়ার জন্য একটি তথ্য কর্ণার বা তথ্য সেল গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

তবে পার্কে কী পরিমাণ গাছ আছে তার সঠিক তথ্য না দিয়ে বিভিন্ন জনের মতামতের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রকল্প বাস্তবায়নের পর এটা কেপিআই’র অন্তভুক্ত হবে। এটা রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য একটি কর্তৃপক্ষ থাকবে। এছাড়া অক্সিজেনের এজন্য এখানে বহু গাছ লাগাবো। একশ’ টন অক্সিজেনের যদি ক্ষতি হয়, আমরা পাঁচশ টনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তবে বাণিজ্যিক অর্থে সেখানে কোন ফুড কিয়স্ক তৈরি হচ্ছে না। এখানে যারা আসবে তারা যেন ৬/৭ ঘণ্টা থাকার পর কিনে কিছু খেতে পারে, তার ব্যবস্থা থাকবে।’

প্রকল্পে অগ্রগতি সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের স্থানে ভাস্কর্য নির্মাণ। এর উচ্চতা হবে ১৯ ফুট ৬ ইঞ্চি। বেদি হবে ৬ ফুট ৯ ইঞ্চি, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। এর উচ্চতা হবে ১৫ ফুট ও বেদি ৮ ফুট, ভূ-গর্ভস্থ কার পার্কিং নির্মাণ করা হবে। এর ধারণ ক্ষমতা হবে ৫০০ গাড়ি। এ পর্যন্ত কার পার্কিংয়ের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, দৃষ্টিনন্দন ওয়াটার ফাউন্টেইন। এর ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ, ৭টি ফুড কিয়স্ক। এখানে নারী, পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক টয়লেট ফ্যাসিলিটিও থাকবে। এসব ফুড কিয়স্কে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা হাল্কা জাতীয় নাস্তা খাবেন ও বিশ্রাম নিতে পারবেন। এ পর্যন্ত এর অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ, দর্শনার্থীদের যাতায়াতের নির্মাণ করা হবে ওয়াকওয়ে। এ পর্যন্ত এর অগ্রগতি ২৫ শতাংশ, মুসল্লিদের নামাজের জন্য ১টি মসজিদ নির্মাণ করা হবে। এ পর্যন্ত মসজিদের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, ভূ-গর্ভস্থ পানির রিজার্ভ ট্যাংকি নির্মাণ করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে প্রকল্পে সার্বিক অগ্রগতি ৬২ শতাংশ।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, একাত্তর টেলিভিশের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাখাওত হোসেনসহ উদ্ভিদবিদ, পরিবেশবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ , ১১ আষাঢ় ১৪২৮ ১৩ জিলকদ ১৪৪২

উদ্যানের প্রকল্পে সংশোধনের সুযোগ নেই : মন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ তৃতীয় পর্যায় নির্মাণ প্রকল্পের সংশোধনের আর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণপূর্ত ভবনের সম্মেলন কক্ষে স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে উদ্ভিদবিদ ও পরিবেশবাদীদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু এখন পর্যন্ত প্রকল্পের বিভিন্ন ভৌত কাজের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও পরিকল্পনা থেকে তেমন কিছু বাদ দেয়া যাবে না। তবে সবার মতামতের ভিত্তিতে যতটুকু সম্ভব সংযোজন ও বিয়োজন করা হবে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় ১০০০ গাছ লাগানো হবে। এজন্য পরিবেশ ও উদ্ভিদবিদদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হবে। আগামী জুলাই মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশকিছু গাছ কাটা পড়ায় পরিবেশবাদী সংগঠনসহ বিভিন্ন জন প্রতিবাদ করে। পরে আদালতের নির্দেশে গাছ কাটা বন্ধ রাখা হয়। তাই প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রমের বিষয়ে উদ্ভিদবিদ, পরিবেশবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলী, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সুধীজন নিয়ে এই মতবিনিময় কর্মশালার আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

কর্মশালার আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রকল্পের কাজের জন্য আর কোন বৃক্ষ নিধন হবে না। এ পর্যন্ত ৬০-৭০টি গাছ কাটা হয়েছে। ১০০টি গাছ কাটার লক্ষ্য ছিল। আর সর্বোচ্চ ৫-১০টি গাছ কাটা প্রয়োজন হতে পারে বা নাও হতে পারে। তবে যথাযথ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।’

সভায় স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবেশ ও প্রতিবেশ যাতে নষ্ট করা না হয় সে বিষয়ে পরামর্শ দেন বিশিষ্টজনরা। এ সময় প্রকল্প সংশোধন করে উদ্যানের সবুজায়ন ঠিক রেখে টয়লেট ও ফুডকোর্ডসহ বিভিন্ন স্থাপনা মাটির নিচে করার পরামর্শ দেন তারা। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মো. হারুনুর রশিদ খান বলেন, ‘নকশাটি দেখে ‘ব্যথিত’ হয়েছি। কারণ এতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ মুক্তযুদ্ধের স্থাপনাগুলো ফুটে উঠেনি। তবে খাবার দোকান, টয়লেট মাটির নিচে করার পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. জমিস উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকায় ২ কোটি মানুষের জন্য ২৫ শতাংশ সবুজায়ন থাকা প্রয়োজন। কিন্তু তা আছে ৭ শতাংশের নিচে। তাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঢাকা শহরের সবুজায়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্নয়ন যাতে পরিবেশবান্ধব হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমল হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘বিশ্বের যে কোন দেশে স্থাপনা করার সময় সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তা হয় না, যা দুঃখজনক। এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্মাণ কাজের নকশা দেখে মনে হচ্ছে এটি পার্কের মতোই। এটা বিনোদন কেন্দ্র হওয়া উচিত নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে পরিবেশ ঠিক রেখে নকশা সংশোধন করা প্রয়োজন। আমরা স্বাধীনতা স্তম্ভ চাই, তবে সেটা পরিবেশ এবং প্রতিবেশ ধ্বংস করে নয়।’

‘উদ্যানের কী পরিমাণ গাছ ছিল এবং প্রকল্পের জন্য কতটি গাছ কাটা হবে’ এ সম্পর্কে জানতে চেয়ে একুশে টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘রমনা পার্ক ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনের মূল্য কর্তৃপক্ষ কে তা অনেকেই জানে না। তাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ বাস্তবায়নের পর এটা দেখাশুনা দায়িত্ব কার থাকবে। এটা পরিষ্কার হওয়া দরকার। প্রকল্প নিয়ে প্রকৃত কোন তথ্য না থাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। পরিষ্কার করুন কতগুলো গাছ কাটা হবে। তাই প্রকল্প সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়ার জন্য একটি তথ্য কর্ণার বা তথ্য সেল গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।

তবে পার্কে কী পরিমাণ গাছ আছে তার সঠিক তথ্য না দিয়ে বিভিন্ন জনের মতামতের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রকল্প বাস্তবায়নের পর এটা কেপিআই’র অন্তভুক্ত হবে। এটা রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য একটি কর্তৃপক্ষ থাকবে। এছাড়া অক্সিজেনের এজন্য এখানে বহু গাছ লাগাবো। একশ’ টন অক্সিজেনের যদি ক্ষতি হয়, আমরা পাঁচশ টনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তবে বাণিজ্যিক অর্থে সেখানে কোন ফুড কিয়স্ক তৈরি হচ্ছে না। এখানে যারা আসবে তারা যেন ৬/৭ ঘণ্টা থাকার পর কিনে কিছু খেতে পারে, তার ব্যবস্থা থাকবে।’

প্রকল্পে অগ্রগতি সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের স্থানে ভাস্কর্য নির্মাণ। এর উচ্চতা হবে ১৯ ফুট ৬ ইঞ্চি। বেদি হবে ৬ ফুট ৯ ইঞ্চি, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। এর উচ্চতা হবে ১৫ ফুট ও বেদি ৮ ফুট, ভূ-গর্ভস্থ কার পার্কিং নির্মাণ করা হবে। এর ধারণ ক্ষমতা হবে ৫০০ গাড়ি। এ পর্যন্ত কার পার্কিংয়ের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, দৃষ্টিনন্দন ওয়াটার ফাউন্টেইন। এর ভৌত অগ্রগতি ৮০ শতাংশ, ৭টি ফুড কিয়স্ক। এখানে নারী, পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক টয়লেট ফ্যাসিলিটিও থাকবে। এসব ফুড কিয়স্কে দাঁড়িয়ে ক্রেতারা হাল্কা জাতীয় নাস্তা খাবেন ও বিশ্রাম নিতে পারবেন। এ পর্যন্ত এর অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ, দর্শনার্থীদের যাতায়াতের নির্মাণ করা হবে ওয়াকওয়ে। এ পর্যন্ত এর অগ্রগতি ২৫ শতাংশ, মুসল্লিদের নামাজের জন্য ১টি মসজিদ নির্মাণ করা হবে। এ পর্যন্ত মসজিদের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, ভূ-গর্ভস্থ পানির রিজার্ভ ট্যাংকি নির্মাণ করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে প্রকল্পে সার্বিক অগ্রগতি ৬২ শতাংশ।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার, একাত্তর টেলিভিশের প্রধান নির্বাহী ও প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাখাওত হোসেনসহ উদ্ভিদবিদ, পরিবেশবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।