আজ বার্লিনে বসছে শান্তি সম্মেলন

লিবিয়ার রাজনৈতিক সংঘাত নিরসনের উপায় খুঁজে বের করতে জার্মানিতে বসছে গুরুত্বপূর্ণ এক শান্তি সম্মেলন। এ সম্মেলনে অংশ নিতে তুরস্ক, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও অন্য আঞ্চলিক দেশগুলোর নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। আজ বার্লিনে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার ও বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তা খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর মধ্যে একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনা করার কথা।

গত ৯ মাস ধরে লিবিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (জিএনএ) ও দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা খলিফা জেনারেল হাফতারের অনুগত বাহিনী এলএনএ’র মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার স্বাক্ষর করলে এতে সই করেননি হাফতার। মস্কোর ওই খসড়া চুক্তিতে অনেক দাবি মানা হয়নি বলে দাবি তার। এমন প্রেক্ষাপটে বার্লিনের সম্মেলন ঘিরে উচ্চাকাক্সক্ষার বিষয়ে সতর্ক রয়েছে জার্মান সরকার। বার্লিন বলছে শুধু একটি মাত্র বৈঠকে লিবিয়ার সংকটের সমাধান হবে না। কিন্তু জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি রাজনৈতিক সমাধানের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। শুক্রবার চ্যান্সেলর মার্কেলের মুখপাত্র স্টিফেন সেইবার্ট বলেছেন, লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল সারাজ ও বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতার উভয়েই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। এদিকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও বার্লিনের সম্মেলনে অংশ নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কইটে সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। বার্লিন সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর অংশ নেয়ার কথা নিশ্চিত করেছে মার্কিন প্রশাসন। এছাড়া খলিফা হাফতারের অন্যতম সমর্থক দেশ মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাদজিদ টেবাউন ও কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ডেনিস সাসু নুগুয়েসুও বার্লিন সম্মেলনে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন। প্রায় ৫ বছর ধরে লিবিয়ায় দুটি সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০১১ সালে পশ্চিমা সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন হয়। তারপর থেকে লিবিয়ায় চলছে সীমাহীন সংঘাত। গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর ত্রিপোলিতে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি মনোনীত জিএনএ সরকার রয়েছে। তবে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে রয়ে গেছে। পশ্চিমাঞ্চলে জিএনএর কর্তৃত্ব থাকলেও পূর্ব ও দক্ষিণের বেশিরভাগ অঞ্চল সাবেক সেনা কর্মকর্তা জেনারেল হাফতারের অনুগত বাহিনী এলএনএর দখলে।

রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২০ , ৫ মাঘ ১৪২৬, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

লিবিয়া সংকট নিরসন

আজ বার্লিনে বসছে শান্তি সম্মেলন

সংবাদ ডেস্ক |

লিবিয়ার রাজনৈতিক সংঘাত নিরসনের উপায় খুঁজে বের করতে জার্মানিতে বসছে গুরুত্বপূর্ণ এক শান্তি সম্মেলন। এ সম্মেলনে অংশ নিতে তুরস্ক, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও অন্য আঞ্চলিক দেশগুলোর নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। আজ বার্লিনে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার ও বিদ্রোহী সেনা কর্মকর্তা খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর মধ্যে একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনা করার কথা।

গত ৯ মাস ধরে লিবিয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার গভর্নমেন্ট অব ন্যাশনাল অ্যাকর্ড (জিএনএ) ও দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা খলিফা জেনারেল হাফতারের অনুগত বাহিনী এলএনএ’র মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার স্বাক্ষর করলে এতে সই করেননি হাফতার। মস্কোর ওই খসড়া চুক্তিতে অনেক দাবি মানা হয়নি বলে দাবি তার। এমন প্রেক্ষাপটে বার্লিনের সম্মেলন ঘিরে উচ্চাকাক্সক্ষার বিষয়ে সতর্ক রয়েছে জার্মান সরকার। বার্লিন বলছে শুধু একটি মাত্র বৈঠকে লিবিয়ার সংকটের সমাধান হবে না। কিন্তু জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি রাজনৈতিক সমাধানের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। শুক্রবার চ্যান্সেলর মার্কেলের মুখপাত্র স্টিফেন সেইবার্ট বলেছেন, লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল সারাজ ও বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতার উভয়েই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। এদিকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও বার্লিনের সম্মেলনে অংশ নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপ কইটে সম্মেলনে অংশ নেয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। বার্লিন সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর অংশ নেয়ার কথা নিশ্চিত করেছে মার্কিন প্রশাসন। এছাড়া খলিফা হাফতারের অন্যতম সমর্থক দেশ মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাদজিদ টেবাউন ও কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ডেনিস সাসু নুগুয়েসুও বার্লিন সম্মেলনে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন। প্রায় ৫ বছর ধরে লিবিয়ায় দুটি সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০১১ সালে পশ্চিমা সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন হয়। তারপর থেকে লিবিয়ায় চলছে সীমাহীন সংঘাত। গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর ত্রিপোলিতে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি মনোনীত জিএনএ সরকার রয়েছে। তবে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে রয়ে গেছে। পশ্চিমাঞ্চলে জিএনএর কর্তৃত্ব থাকলেও পূর্ব ও দক্ষিণের বেশিরভাগ অঞ্চল সাবেক সেনা কর্মকর্তা জেনারেল হাফতারের অনুগত বাহিনী এলএনএর দখলে।