পুনর্নিরীক্ষণে পরিবর্তন ১১শ’ পরীক্ষার্থীর ফল

অষ্টম শ্রেণীর জেএসসি ও মাদ্রাসার জেডিসি পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণে এবারও সব বোর্ডেই অসংখ্য ভুল ধরা পরেছে। ৭টি শিক্ষাবোর্ডে পুনর্নিরীক্ষণে পরিবর্তন হয়েছে প্রায় সাড়ে ১১শ’ পরীক্ষার্থীর ফল। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯৯ জন এবং খাতা চ্যালেঞ্জ করে ফেল (অকৃতকার্য) করার পর সাত বোর্ডে পাস করেছে ৭৭৫ জন। এছাড়া অনেকের বিভিন্ন গ্রেডে ফল পরিবর্তন হয়েছে।

গত ডিসেম্বর প্রকাশিত জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) ও জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট) পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষনের আবেদনের পর গতকাল পৃথকভাবে শিক্ষাবোর্ডগুলো ফল প্রকাশ করেছে। এতে ফলাফলের ব্যাপক পরিবর্তনের তথ্য পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও স্ব স্ব বোর্ডে গিয়ে নিজেদের ফল জানতে পারছে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে যোগাযোগ করে ফল পরিবর্তনের তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে পাস করেছে ফেল করা ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী। ফেল করা দুইজন শিক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ঢাকা বোর্ডে ৩৯ হাজার ৫০৩ জন পরীক্ষার্থী ৫৪ হাজার ৬২৯টি খাতা চ্যালেঞ্জ করে ফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করেছিল।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ৪৩ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা চারজন পরীক্ষার্থী। আর ফল পুনর্নিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩ জন এবং তিন হাজার আটজন জেএসসি পরীক্ষার্থী চার হাজার ১৫৬ টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ১১৮ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। নতুন করে পাস করেছে ১০২ জন পরীক্ষার্থী।

যশোর শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ৫৯ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ৬১ জন পরীক্ষার্থী। আর ফল পুনর্নিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ পরিবর্তন হয়েছে নয় হাজার ৭৫৫ জনের।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ৯২ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ৯৭ জন পরীক্ষার্থী। ফল পুনর্নিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯২ জন।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ৪৫ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ২৮ জন পরীক্ষার্থী। এছাড়া ফল পুনর্নিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৫ জন।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের জেডিসি পরীক্ষার পুনর্নিরীক্ষণের ফলও গতকাল প্রকাশ করা হয়। এ বোর্ডে জেডিসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে নতুন করে ৪০ পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। ফেল করা ১৭০ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ পরিবর্তন হয়েছে ১০৬ জন পরীক্ষার্থীর।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত ফল চ্যালেঞ্জ করেন সাত হাজার ২৯ জন শিক্ষার্থী। তারা মোট দশ হাজার ৪৫টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেন। আবেদনকারীদের মধ্যে মোট ৩১৬ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এদের মধ্যে ফেল থেকে পাস ১৭০ জন, জিপিএ পরিবর্তন ১০৬ জনের আর নতুন করে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ৪০ জন।

এভাবে প্রতিটি শিক্ষা বোর্ডের অসংখ্য শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। ফল পরিবর্তনের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সবসময়ই দ্রুত ফল প্রকাশের কারনে তারাহুরো করতে হয়; এতে ভুলত্রুটি হয়। মূলত তিন ধরনের ভুল ধরা পরছে। এক, কিছু খাতায় নম্বরের যোগ ফল ঠিক ছিল না। দুই, কিছু উত্তরের নম্বরও যোগ করা হয়নি। আর তিন, ওএমআর ফরমে বৃত্ত ভরাটেও বেশ বিছু ভুল পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা বলেন, পুনঃনিরীক্ষণে সাধারণত মোট ৪টি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কিনা, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কীনা এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কিনা। এসব বিষয় পরীক্ষা করেই পুনঃনিরীক্ষার ফল দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২০ , ১৬ মাঘ ১৪২৬, ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪১

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা

পুনর্নিরীক্ষণে পরিবর্তন ১১শ’ পরীক্ষার্থীর ফল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

অষ্টম শ্রেণীর জেএসসি ও মাদ্রাসার জেডিসি পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণে এবারও সব বোর্ডেই অসংখ্য ভুল ধরা পরেছে। ৭টি শিক্ষাবোর্ডে পুনর্নিরীক্ষণে পরিবর্তন হয়েছে প্রায় সাড়ে ১১শ’ পরীক্ষার্থীর ফল। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯৯ জন এবং খাতা চ্যালেঞ্জ করে ফেল (অকৃতকার্য) করার পর সাত বোর্ডে পাস করেছে ৭৭৫ জন। এছাড়া অনেকের বিভিন্ন গ্রেডে ফল পরিবর্তন হয়েছে।

গত ডিসেম্বর প্রকাশিত জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) ও জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট) পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষনের আবেদনের পর গতকাল পৃথকভাবে শিক্ষাবোর্ডগুলো ফল প্রকাশ করেছে। এতে ফলাফলের ব্যাপক পরিবর্তনের তথ্য পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও স্ব স্ব বোর্ডে গিয়ে নিজেদের ফল জানতে পারছে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে যোগাযোগ করে ফল পরিবর্তনের তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে পাস করেছে ফেল করা ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী। ফেল করা দুইজন শিক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ঢাকা বোর্ডে ৩৯ হাজার ৫০৩ জন পরীক্ষার্থী ৫৪ হাজার ৬২৯টি খাতা চ্যালেঞ্জ করে ফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করেছিল।

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ৪৩ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা চারজন পরীক্ষার্থী। আর ফল পুনর্নিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩ জন এবং তিন হাজার আটজন জেএসসি পরীক্ষার্থী চার হাজার ১৫৬ টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ১১৮ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। নতুন করে পাস করেছে ১০২ জন পরীক্ষার্থী।

যশোর শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ৫৯ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ৬১ জন পরীক্ষার্থী। আর ফল পুনর্নিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ পরিবর্তন হয়েছে নয় হাজার ৭৫৫ জনের।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ৯২ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ৯৭ জন পরীক্ষার্থী। ফল পুনর্নিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯২ জন।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডে জেএসসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে ৪৫ জন পরীক্ষার্থী নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাস করেছে ফেল করা ২৮ জন পরীক্ষার্থী। এছাড়া ফল পুনর্নিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৫ জন।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের জেডিসি পরীক্ষার পুনর্নিরীক্ষণের ফলও গতকাল প্রকাশ করা হয়। এ বোর্ডে জেডিসি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে নতুন করে ৪০ পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। ফেল করা ১৭০ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ পরিবর্তন হয়েছে ১০৬ জন পরীক্ষার্থীর।

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত ফল চ্যালেঞ্জ করেন সাত হাজার ২৯ জন শিক্ষার্থী। তারা মোট দশ হাজার ৪৫টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেন। আবেদনকারীদের মধ্যে মোট ৩১৬ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এদের মধ্যে ফেল থেকে পাস ১৭০ জন, জিপিএ পরিবর্তন ১০৬ জনের আর নতুন করে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ৪০ জন।

এভাবে প্রতিটি শিক্ষা বোর্ডের অসংখ্য শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। ফল পরিবর্তনের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সবসময়ই দ্রুত ফল প্রকাশের কারনে তারাহুরো করতে হয়; এতে ভুলত্রুটি হয়। মূলত তিন ধরনের ভুল ধরা পরছে। এক, কিছু খাতায় নম্বরের যোগ ফল ঠিক ছিল না। দুই, কিছু উত্তরের নম্বরও যোগ করা হয়নি। আর তিন, ওএমআর ফরমে বৃত্ত ভরাটেও বেশ বিছু ভুল পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা বলেন, পুনঃনিরীক্ষণে সাধারণত মোট ৪টি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কিনা, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কীনা এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট ঠিক আছে কিনা। এসব বিষয় পরীক্ষা করেই পুনঃনিরীক্ষার ফল দেয়া হয়েছে।