স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচন

ভোট দিল ৭৭ লাখ খুদে ভোটার

‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচনী উৎসবে সামিল হলো সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা। এই উৎসবে সামিল হতে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭৭ লাখ খুদে ভোটার। ছাত্রছাত্রীদের কোলাহলে মুখরিত ছিল রাজধানীসহ দেশের ৬৩ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পা রেখেই তারা মেতে ওঠে উল্লাসে। নিজ নিজ স্কুলে নির্বাচনী উৎসবে সামিল হয়ে শিশুরা নিজেরই ভোট দিয়ে নির্বাচন করলো নিজেদের প্রতিনিধি।

নির্বাচন কমিশনার, প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছে শিশুরাই। শৃঙ্খলা রক্ষায় কেউ কেউ হয়েছে র‌্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনীর সদস্য। সরাসরি ভোটের মাধ্যমে প্রতিটি বিদ্যালয়ে সাতজন করে প্রার্থী নির্বাচিত হল। যেখানে প্রার্থী ছিল আট লাখ ২৭ হাজার ৫৯৫ জন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) জানিয়েছে, প্রায় ৯৫ শতাংশ উপস্থিতি ছিল ব্যাতিক্রমী এই উৎসবে। রাজধানীর কয়েকটি স্কুলের নির্বাচন পরিদর্শন করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা শিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহসহ অন্য কর্মকর্তারা।

ডিপিই মহাপরিচালক নির্বাচনী উৎসবে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আসলেই এটা নির্বাচনের চেয়ে বেশি কিছুই। এটা যেন নির্বাচনী এক উৎসব। শিশুরা নির্বাচনী উৎসবে সামিল হয়ে ভোট দিয়ে গঠন করেছে স্টুডেন্টস কাউন্সিল। শিশুকাল থেকে গণতন্ত্র চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের প্রতি সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি, ঝরেপড়া রোধে সহযোগিতার লক্ষ্যে প্রাথমিকেও স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠনের গুরুত্ব অপরিসীম।

২০১০ সাল থেকে দেশের ১৯টি জেলার ২০টি উপজেলার ১০০টি প্রথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠন করা হয়। এরপর ২০১৩ সাল থেকে সারাদেশের সব থানার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ নির্বাচন চালু করা হয়।

গতকাল ৬৩ হাজার চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে ফল ঘোষণা করা হয়। এ নির্বাচনে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারে। মোট ভোটারের সংখ্যা ৭৬ লাখ ৬২ হাজার ৩৫২ জন। প্রার্থীর সংখ্যাও আট লাখ ২৭ হাজার ৫৯৫ জন। তাদের মধ্যে চার লাখ ৪১ হাজার ২৮ জনকে ভোটের মাধ্যমে স্টুডেন্টস কাউন্সিল প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করে।

প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে ভর্তির হার বৃদ্ধি, ঝরে পড়া রোধ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা, শিশুদের মাঝে গণতন্ত্র চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন, বিদ্যালয়ের শিখন শিখানো কার্যক্রমে শিক্ষকমণ্ডলীকে সহায়তা এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এই আয়োজনের লক্ষ্য।

নারায়ণগঞ্জ থেকে সংবাদ প্রতিনিধি জানান : জেলার ৫৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গতকাল ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদে ব্যাপক আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা যায়। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহীন্দ্র কুমার মণ্ডল ও সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিব আলম এবং সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহীন্দ্র কুমার মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী গড়ে তুলতে ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচন অত্যন্ত সফল হয়েছে। এ নির্বাচন উপলক্ষে স্কুলে এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যে আনন্দময় পরিবেশ দেখা যায় তা সত্যিকার অর্থেই একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

image

নারায়ণগঞ্জ : গতকাল প্রাথমিক বিদ্যালয় স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচনে কুতুবআইল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার -সংবাদ

আরও খবর
এখনও অপ্রতিরোধ্য
প্রতিদিন ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা অপচয়
খালেদার চিকিৎসার তথ্য চেয়েছেন হাইকোর্ট
ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন টাইগারদের
হলে উঠতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের ৭ শপথ
টাকা পরিশোধ করল গ্রামীণফোন
ঢাকা-১০ উপনির্বাচনে নির্ধারিত স্থানের বাইরে পোস্টার প্রচার নিষিদ্ধ
বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল বন্ধ করতে হবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
উত্তরায় বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে ২৬ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি
একুশে পদকে ভুল বানান : মান নিয়েও প্রশ্ন
ক্ষণগণনা : আর ২১ দিন

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ১০ ফল্গুন ১৪২৬, ২৮ জমাদিউল সানি ১৪৪১

স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচন

ভোট দিল ৭৭ লাখ খুদে ভোটার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

নারায়ণগঞ্জ : গতকাল প্রাথমিক বিদ্যালয় স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচনে কুতুবআইল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার -সংবাদ

‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচনী উৎসবে সামিল হলো সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা। এই উৎসবে সামিল হতে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭৭ লাখ খুদে ভোটার। ছাত্রছাত্রীদের কোলাহলে মুখরিত ছিল রাজধানীসহ দেশের ৬৩ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পা রেখেই তারা মেতে ওঠে উল্লাসে। নিজ নিজ স্কুলে নির্বাচনী উৎসবে সামিল হয়ে শিশুরা নিজেরই ভোট দিয়ে নির্বাচন করলো নিজেদের প্রতিনিধি।

নির্বাচন কমিশনার, প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছে শিশুরাই। শৃঙ্খলা রক্ষায় কেউ কেউ হয়েছে র‌্যাব, পুলিশ, আনসার বাহিনীর সদস্য। সরাসরি ভোটের মাধ্যমে প্রতিটি বিদ্যালয়ে সাতজন করে প্রার্থী নির্বাচিত হল। যেখানে প্রার্থী ছিল আট লাখ ২৭ হাজার ৫৯৫ জন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) জানিয়েছে, প্রায় ৯৫ শতাংশ উপস্থিতি ছিল ব্যাতিক্রমী এই উৎসবে। রাজধানীর কয়েকটি স্কুলের নির্বাচন পরিদর্শন করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা শিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহসহ অন্য কর্মকর্তারা।

ডিপিই মহাপরিচালক নির্বাচনী উৎসবে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আসলেই এটা নির্বাচনের চেয়ে বেশি কিছুই। এটা যেন নির্বাচনী এক উৎসব। শিশুরা নির্বাচনী উৎসবে সামিল হয়ে ভোট দিয়ে গঠন করেছে স্টুডেন্টস কাউন্সিল। শিশুকাল থেকে গণতন্ত্র চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের প্রতি সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি, ঝরেপড়া রোধে সহযোগিতার লক্ষ্যে প্রাথমিকেও স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠনের গুরুত্ব অপরিসীম।

২০১০ সাল থেকে দেশের ১৯টি জেলার ২০টি উপজেলার ১০০টি প্রথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠন করা হয়। এরপর ২০১৩ সাল থেকে সারাদেশের সব থানার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ নির্বাচন চালু করা হয়।

গতকাল ৬৩ হাজার চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে ফল ঘোষণা করা হয়। এ নির্বাচনে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ভোট দিতে পারে। মোট ভোটারের সংখ্যা ৭৬ লাখ ৬২ হাজার ৩৫২ জন। প্রার্থীর সংখ্যাও আট লাখ ২৭ হাজার ৫৯৫ জন। তাদের মধ্যে চার লাখ ৪১ হাজার ২৮ জনকে ভোটের মাধ্যমে স্টুডেন্টস কাউন্সিল প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করে।

প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে ভর্তির হার বৃদ্ধি, ঝরে পড়া রোধ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা, শিশুদের মাঝে গণতন্ত্র চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন, বিদ্যালয়ের শিখন শিখানো কার্যক্রমে শিক্ষকমণ্ডলীকে সহায়তা এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এই আয়োজনের লক্ষ্য।

নারায়ণগঞ্জ থেকে সংবাদ প্রতিনিধি জানান : জেলার ৫৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গতকাল ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদে ব্যাপক আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা যায়। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহীন্দ্র কুমার মণ্ডল ও সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিব আলম এবং সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহীন্দ্র কুমার মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী গড়ে তুলতে ‘স্টুডেন্টস কাউন্সিল’ নির্বাচন অত্যন্ত সফল হয়েছে। এ নির্বাচন উপলক্ষে স্কুলে এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যে আনন্দময় পরিবেশ দেখা যায় তা সত্যিকার অর্থেই একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।