ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে ২৬ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৬ বিশিষ্ট নাগরিক। ত্বকী হত্যার বিচারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

গতকাল এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা সাত বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামী ৬ মার্চ। অথচ এ দীর্ঘ সময়েও আলোচিত এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। এটি অত্যন্ত পরিতাপের ও বেদনার। অথচ এ হত্যাকাণ্ডের বছর না যেতেই এর তদন্তকারী সংস্থা হত্যার সব রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছিল, যা আমরা সংবাদ মাধ্যমে জেনেছি। তারা অপরাধী, অপরাধের স্থান-কাল-কারণসহ বিস্তারিত প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তারপরে দীর্ঘ সময়েও সে অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। এ বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা যেমনি উৎসাহিত হচ্ছে, অপরদিকে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। একটি স্বাধীন দেশে এমনটি আমাদের কাম্য নয়। আমরা অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়ে এ বিচার-প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর যথাযথ নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ভাষাসৈনিক, লেখক ও গবেষক আহমদ রফিক, জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, রবীন্দ্র-গবেষক শিক্ষাবিদ ড. সনজীদা খাতুন, ভাষাসৈনিক ও সাংবাদিক কামাল লোহানী, শিক্ষাবিদ, কথা-সাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার, শিক্ষাবিদ ড. হায়াৎ মামুদ, লেখক, গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, দৈনিক সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, মানবাধিকার সংগঠক অ্যাড. সুলতানা কামাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী, শিক্ষাবিদ, লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক ড. সফিউদ্দিন আহমদ, শিক্ষাবিদ অধ্যপক শফি আহমেদ, নারী-অধিকার কর্মী, লেখক ড. মালেকা বেগম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, লেখক-গবেষক মফিদুল হক, নারী সংগঠক আয়শা খানম, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ অধ্যপক এমএম আকাশ।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে নিখোঁজ হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যার শাখা খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি তদন্তকারী সংস্থা। ত্বকীর পরিবারের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলেই এর বিচারকার্য থেমে আছে। এদিকে ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ মার্চ শহরে আলোকশিখা প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ১০ ফল্গুন ১৪২৬, ২৮ জমাদিউল সানি ১৪৪১

ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে ২৬ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৬ বিশিষ্ট নাগরিক। ত্বকী হত্যার বিচারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

গতকাল এক বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা সাত বছর পূর্ণ হচ্ছে আগামী ৬ মার্চ। অথচ এ দীর্ঘ সময়েও আলোচিত এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। এটি অত্যন্ত পরিতাপের ও বেদনার। অথচ এ হত্যাকাণ্ডের বছর না যেতেই এর তদন্তকারী সংস্থা হত্যার সব রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছিল, যা আমরা সংবাদ মাধ্যমে জেনেছি। তারা অপরাধী, অপরাধের স্থান-কাল-কারণসহ বিস্তারিত প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তারপরে দীর্ঘ সময়েও সে অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। এ বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা যেমনি উৎসাহিত হচ্ছে, অপরদিকে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। একটি স্বাধীন দেশে এমনটি আমাদের কাম্য নয়। আমরা অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়ে এ বিচার-প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর যথাযথ নির্দেশনা ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ভাষাসৈনিক, লেখক ও গবেষক আহমদ রফিক, জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, রবীন্দ্র-গবেষক শিক্ষাবিদ ড. সনজীদা খাতুন, ভাষাসৈনিক ও সাংবাদিক কামাল লোহানী, শিক্ষাবিদ, কথা-সাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার, শিক্ষাবিদ ড. হায়াৎ মামুদ, লেখক, গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, শিক্ষাবিদ ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, দৈনিক সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, মানবাধিকার সংগঠক অ্যাড. সুলতানা কামাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী, শিক্ষাবিদ, লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, শিক্ষাবিদ, গবেষক ড. সফিউদ্দিন আহমদ, শিক্ষাবিদ অধ্যপক শফি আহমেদ, নারী-অধিকার কর্মী, লেখক ড. মালেকা বেগম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, লেখক-গবেষক মফিদুল হক, নারী সংগঠক আয়শা খানম, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অর্থনীতিবিদ অধ্যপক এমএম আকাশ।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে নিখোঁজ হয় মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যার শাখা খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি তদন্তকারী সংস্থা। ত্বকীর পরিবারের অভিযোগ, নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলেই এর বিচারকার্য থেমে আছে। এদিকে ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ মার্চ শহরে আলোকশিখা প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।