সিলেটের সাবেক মেয়র কামরানের মৃত্যু

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের শোক মা-বাবার কবরের পাশে দাফন

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সদস্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরান মারা গেছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মাটি ও মানুষের এ জনপ্রিয় নেতা গতকাল ভোররাতে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে সিলেট নগরীর মানিকপীর টিলায় মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

গত ৫ জুন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় কামরানের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৭ জুন বিমানবাহিনীর এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে ঢাকায় নিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে প্লাজমা থেরাপিও দেয়া হয়েছিল।

এর আগে ২৭ মে কামরানের স্ত্রী আসমা কামরানেরও করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তিনি অনেকটা সুস্থ রয়েছেন এবং বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে পরিবার জানিয়েছে।

বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শোকবার্তায় বলেন, ‘প্রথম নির্বাচিত মেয়র হিসেবে সিলেটের উন্নয়নে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান যে অবদান রেখেছেন সেজন্য মানুষ তাকে সবসময় মনে রাখবে। তার মৃত্যুতে দেশ একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা হারাল।’ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় বলেছেন, ‘স্বীয় কর্মের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা কামরান গণমানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’ এদিকে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কামরানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথমবার সিলেট পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে হন সিলেট পৌরসভার চেয়ারম্যান। ২০০২ সালে সিলেট পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর কামরান মেয়র মনোনীত হন। ২০০৩ সালে সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে জিতে মেয়র পদ ধরে রাখেন তিনি। ২০০৭-০৮ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আরও অনেক রাজনীতিবিদের মতো কামরানকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে সময় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা কামরান কারাগারে থেকে নির্বাচন করেও বিপুল ভোটে জয়ী হন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে হেরে গিয়ে মেয়র পদ হারান কামরান। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি লড়েছিলেন, কিন্তু জয়ী হতে পারেননি।

১৯৮৯ সাল থেকে সিলেট শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০২ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হন কামরান। সেই দায়িত্বে ছিলেন প্রায় দেড় যুগ। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ পাওয়া কামরান বর্তমান কমিটিতে একই পদে ছিলেন।

জানাজায় মানুষের ঢল : গতকাল বেলা ২টা ১০ মিনিটে তার দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। এতে করোনা ভয়কে উপেক্ষা করে হাজারও মানুষ অংশ নেন।

এরপর তার বড় পুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলু সিলেটবাসীর কাছে তার বাবার জন্য দোয়া চান।

জানাজা শেষে জেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ ও সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কামরানের মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তার প্রথম জানাজা জোহরের নামাজ শেষে নগরের ছড়ারপার জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বেলা ১২টার দিকে ঢাকা থেকে তার মরদেহ সিলেটের নিজ বাসায় এসে পৌঁছে।

শোকে স্তব্ধ সিলেট : বদরউদ্দিন আহমদ কামরান সিলেটে ‘জনতার মেয়র’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষের কল্যাণ কাজ করে আসছিলেন। তার মৃত্যুতে তিন দিনের শোক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, তৃণমূল থেকে উঠে আসা কামরান এই পুরো যাত্রাপথে মানুষের সঙ্গেই ছিলেন। ভোটের রাজনীতিতে নগর ভবন থেকে ছিটকে পড়লেও মানুষের কাছ থেকে কখনও দূরে সরে যাননি তিনি। সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান সুদীর্ঘ ২১ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করেছেন। রোববার ৩টায় কামরানের মৃত্যুখবর সিলেটে ছড়িয়ে পড়লে দলমত নির্বিশেষে বাকরুদ্ধ, অশ্রুসজল ও শোকে কাতর হয়ে যান সিলেটবাসী। সাদা পাঞ্জাবির ওপর কালো মুজিব কোট, মাথায় সাদা টুপি আর চোখে চিকন ফ্রেমের চশমা পরা সদা হাস্যোজ্জ্বল বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ছিলেন সিলেটবাসীর মহীরূহস্বরূপ। সিলেটে অসাম্প্রদায়ীক রাজনীতির এক অতুজ্জ্বল অংশ ছিলেন তিনি। নিজে অসুস্থ হয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে অসহায় হয়ে পড়া মানুষের সাহায্যার্থে সবসময় পাশে ছিলেন কামরান।

তার মৃত্যুতে সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, ‘জনমানুষের নেতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ায় দেশ একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদকে হারালো।

সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের মতো একজন ঘনিষ্ঠ স্বজনের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপি নেতা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের মতো একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ, একজন দক্ষ জনপ্রতিনিধিকে হারিয়ে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘কামরান ছিলেন তৃণমূলের নেতা। এদিকে, কামরানের মৃত্যুতে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সিলেট জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, সিলেট চেম্বার অব কমার্সসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অঙ্গসংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

image
আরও খবর
ইস্পাত কঠিন ঐক্য ও সচেতনতার প্রাচীর গড়ে আমরা আবার ফিরে পাবো চিরচেনা জগৎ : কাদের
আস্থা রাখুন বাংলাদেশ হার মানবে না : প্রধানমন্ত্রী
একজন বিশ্বস্ত বন্ধুর বিদায়
বন্দুকযুদ্ধে ধর্ষক নিহত
সৌদি থেকে ফিরতে আগ্রহীদের আনা হবে পর্যায়ক্রমে
এবারের বাজেট মানবিক বাজেট : সংসদে অর্থমন্ত্রী
যুবলীগের চেষ্টায় বদলে গেল আখাউড়া হাসপাতাল
নকল ওষুধ তৈরির কারখানা : দশ কোটি টাকার ওষুধ জব্দ
টিআইবির অনেক রিপোর্টই একপেশে তথ্যমন্ত্রী
ডাক্তার নেই, এক্সরে মেশিন নষ্ট : করোনা আক্রান্ত ৪৩৯
করোনায় আরও দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
নমুনা পরীক্ষায় বিলম্ব ফলাফলে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত
একদিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অন্যদিকে চলছে দখল প্রতিযোগিতা

মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০ , ২ আষাঢ় ১৪২৭, ২৩ শাওয়াল ১৪৪

সিলেটের সাবেক মেয়র কামরানের মৃত্যু

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের শোক মা-বাবার কবরের পাশে দাফন

বিশেষ প্রতিনিধি, সিলেট

image

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সদস্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরান মারা গেছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মাটি ও মানুষের এ জনপ্রিয় নেতা গতকাল ভোররাতে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে সিলেট নগরীর মানিকপীর টিলায় মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

গত ৫ জুন সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় কামরানের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৭ জুন বিমানবাহিনীর এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে ঢাকায় নিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে প্লাজমা থেরাপিও দেয়া হয়েছিল।

এর আগে ২৭ মে কামরানের স্ত্রী আসমা কামরানেরও করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তিনি অনেকটা সুস্থ রয়েছেন এবং বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে পরিবার জানিয়েছে।

বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শোকবার্তায় বলেন, ‘প্রথম নির্বাচিত মেয়র হিসেবে সিলেটের উন্নয়নে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান যে অবদান রেখেছেন সেজন্য মানুষ তাকে সবসময় মনে রাখবে। তার মৃত্যুতে দেশ একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতা হারাল।’ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় বলেছেন, ‘স্বীয় কর্মের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতা কামরান গণমানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’ এদিকে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কামরানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথমবার সিলেট পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে হন সিলেট পৌরসভার চেয়ারম্যান। ২০০২ সালে সিলেট পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর কামরান মেয়র মনোনীত হন। ২০০৩ সালে সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে জিতে মেয়র পদ ধরে রাখেন তিনি। ২০০৭-০৮ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আরও অনেক রাজনীতিবিদের মতো কামরানকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে সময় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা কামরান কারাগারে থেকে নির্বাচন করেও বিপুল ভোটে জয়ী হন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে হেরে গিয়ে মেয়র পদ হারান কামরান। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি লড়েছিলেন, কিন্তু জয়ী হতে পারেননি।

১৯৮৯ সাল থেকে সিলেট শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০২ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হন কামরান। সেই দায়িত্বে ছিলেন প্রায় দেড় যুগ। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদ পাওয়া কামরান বর্তমান কমিটিতে একই পদে ছিলেন।

জানাজায় মানুষের ঢল : গতকাল বেলা ২টা ১০ মিনিটে তার দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। এতে করোনা ভয়কে উপেক্ষা করে হাজারও মানুষ অংশ নেন।

এরপর তার বড় পুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলু সিলেটবাসীর কাছে তার বাবার জন্য দোয়া চান।

জানাজা শেষে জেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ ও সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কামরানের মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তার প্রথম জানাজা জোহরের নামাজ শেষে নগরের ছড়ারপার জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বেলা ১২টার দিকে ঢাকা থেকে তার মরদেহ সিলেটের নিজ বাসায় এসে পৌঁছে।

শোকে স্তব্ধ সিলেট : বদরউদ্দিন আহমদ কামরান সিলেটে ‘জনতার মেয়র’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষের কল্যাণ কাজ করে আসছিলেন। তার মৃত্যুতে তিন দিনের শোক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, তৃণমূল থেকে উঠে আসা কামরান এই পুরো যাত্রাপথে মানুষের সঙ্গেই ছিলেন। ভোটের রাজনীতিতে নগর ভবন থেকে ছিটকে পড়লেও মানুষের কাছ থেকে কখনও দূরে সরে যাননি তিনি। সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান সুদীর্ঘ ২১ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাজ করেছেন। রোববার ৩টায় কামরানের মৃত্যুখবর সিলেটে ছড়িয়ে পড়লে দলমত নির্বিশেষে বাকরুদ্ধ, অশ্রুসজল ও শোকে কাতর হয়ে যান সিলেটবাসী। সাদা পাঞ্জাবির ওপর কালো মুজিব কোট, মাথায় সাদা টুপি আর চোখে চিকন ফ্রেমের চশমা পরা সদা হাস্যোজ্জ্বল বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ছিলেন সিলেটবাসীর মহীরূহস্বরূপ। সিলেটে অসাম্প্রদায়ীক রাজনীতির এক অতুজ্জ্বল অংশ ছিলেন তিনি। নিজে অসুস্থ হয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে অসহায় হয়ে পড়া মানুষের সাহায্যার্থে সবসময় পাশে ছিলেন কামরান।

তার মৃত্যুতে সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, ‘জনমানুষের নেতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ায় দেশ একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদকে হারালো।

সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের মতো একজন ঘনিষ্ঠ স্বজনের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপি নেতা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের মতো একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ, একজন দক্ষ জনপ্রতিনিধিকে হারিয়ে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘কামরান ছিলেন তৃণমূলের নেতা। এদিকে, কামরানের মৃত্যুতে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সিলেট জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, সিলেট চেম্বার অব কমার্সসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অঙ্গসংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।