করোনায় আরও দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আরও দুই পুলিশ সদস্য। ডিএমপির খিলগাঁও থানার এসআই এসএম মুকুল (৫৫) এবং কনস্টেবল মো. আবুল হোসেন আজাদ (৫১) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে পুলিশ বাহিনীতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৬ পুলিশ কর্মকর্তা- সদস্যসহ মোট ২৭ জনের মৃত্যু হলো।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, চলমান করোনাযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছেন পুলিশের আরও দুই সদস্য। এদের একজন হলেন ডিএমপির খিলগাঁও থানার কর্মরত এসআই এসএম মুকুল মিয়া এবং ডিএমপির উত্তরা বিভাগের আজমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত কনস্টেবল আবুল হোসেন আজাদ। এদের মধ্যে এসএম মুকুল মিয়া পুলিশ বাহিনীর জন্য ভাড়া নেয়া বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গতকাল বেলা ১১টার দিকে। অন্যদিকে কনস্টেবল আবুল হোসেন আজাদ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে মারা যান।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এসআই মুকুল মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য করোনাকালীন পরিস্থিতিতে পুলিশের জন্য ভাড়া নেয়া বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে এসএম মুকুল মিয়া স্ত্রী, ৩ কন্যা এবং এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া থানার চরকুলি গ্রামে। মরদেহ পুলিশের ব্যবস্থাপনায় গ্রামের বাড়ি পাঠানো হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে। অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত হলে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের আজমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত কনস্টেবল মো. আবুল হোসেন আজাদকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোরে তার মৃত্যু হয়। কনস্টেবল আবুল হোসেন আজাদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার মদন থানার জয়পাশা গ্রামে। তিনি স্ত্রী ২ কন্যাসহ অনেক আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। তার মরদেহ পুলিশী ব্যবস্থাপানায় গ্রামের বাড়ি পাঠানো হয়েছে। পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত পুলিশের ২৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এরমধ্যে ২৬ জন পুলিশ বাহিনীর সদস্য। একজন সিভিলিয়ান যিনি পুলিশ বাহিনীতে কাজ করতেন। প্রত্যেকেই পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং জনগনের সেবা করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করলেন। উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে ৭ হাজারের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরমধ্যে ৩ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। বাকিরা এখনও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরপরও প্রতিদিনই পুলিশ বাহিনীতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। সারাদেশে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির দিক থেকে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

এদিকে করোনায় সাব ইন্সপেক্টর এসএম মুকুল মিয়া ও কনস্টেবল মো. আবুল হোসেন আজাদের মৃত্যুতে পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

আইজিপি এক শোকবাণীতে বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় বীর সদস্যরা। জনগণকে সুরক্ষা দিতে গিয়ে দায়িত্ব পালনকালে আজ ( গতকাল) জীবন দিলেন আমাদের আরও দুই বীর সদস্য, সাব ইন্সপেক্টর এসএম মুকুল মিয়া এবং কনস্টেবল মো. আবুল হোসেন আজাদ। দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে এ বীর সেনানীরা সহকর্মীদের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন। তাদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। আইজিপি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।

আরও খবর
ইস্পাত কঠিন ঐক্য ও সচেতনতার প্রাচীর গড়ে আমরা আবার ফিরে পাবো চিরচেনা জগৎ : কাদের
আস্থা রাখুন বাংলাদেশ হার মানবে না : প্রধানমন্ত্রী
একজন বিশ্বস্ত বন্ধুর বিদায়
সিলেটের সাবেক মেয়র কামরানের মৃত্যু
বন্দুকযুদ্ধে ধর্ষক নিহত
সৌদি থেকে ফিরতে আগ্রহীদের আনা হবে পর্যায়ক্রমে
এবারের বাজেট মানবিক বাজেট : সংসদে অর্থমন্ত্রী
যুবলীগের চেষ্টায় বদলে গেল আখাউড়া হাসপাতাল
নকল ওষুধ তৈরির কারখানা : দশ কোটি টাকার ওষুধ জব্দ
টিআইবির অনেক রিপোর্টই একপেশে তথ্যমন্ত্রী
ডাক্তার নেই, এক্সরে মেশিন নষ্ট : করোনা আক্রান্ত ৪৩৯
নমুনা পরীক্ষায় বিলম্ব ফলাফলে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত
একদিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অন্যদিকে চলছে দখল প্রতিযোগিতা

মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০ , ২ আষাঢ় ১৪২৭, ২৩ শাওয়াল ১৪৪

করোনায় আরও দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন আরও দুই পুলিশ সদস্য। ডিএমপির খিলগাঁও থানার এসআই এসএম মুকুল (৫৫) এবং কনস্টেবল মো. আবুল হোসেন আজাদ (৫১) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে পুলিশ বাহিনীতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৬ পুলিশ কর্মকর্তা- সদস্যসহ মোট ২৭ জনের মৃত্যু হলো।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, চলমান করোনাযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছেন পুলিশের আরও দুই সদস্য। এদের একজন হলেন ডিএমপির খিলগাঁও থানার কর্মরত এসআই এসএম মুকুল মিয়া এবং ডিএমপির উত্তরা বিভাগের আজমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত কনস্টেবল আবুল হোসেন আজাদ। এদের মধ্যে এসএম মুকুল মিয়া পুলিশ বাহিনীর জন্য ভাড়া নেয়া বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গতকাল বেলা ১১টার দিকে। অন্যদিকে কনস্টেবল আবুল হোসেন আজাদ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে মারা যান।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এসআই মুকুল মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য করোনাকালীন পরিস্থিতিতে পুলিশের জন্য ভাড়া নেয়া বেসরকারি ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে এসএম মুকুল মিয়া স্ত্রী, ৩ কন্যা এবং এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া থানার চরকুলি গ্রামে। মরদেহ পুলিশের ব্যবস্থাপনায় গ্রামের বাড়ি পাঠানো হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুলিশের ব্যবস্থাপনায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে। অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত হলে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের আজমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত কনস্টেবল মো. আবুল হোসেন আজাদকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোরে তার মৃত্যু হয়। কনস্টেবল আবুল হোসেন আজাদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার মদন থানার জয়পাশা গ্রামে। তিনি স্ত্রী ২ কন্যাসহ অনেক আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। তার মরদেহ পুলিশী ব্যবস্থাপানায় গ্রামের বাড়ি পাঠানো হয়েছে। পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত পুলিশের ২৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এরমধ্যে ২৬ জন পুলিশ বাহিনীর সদস্য। একজন সিভিলিয়ান যিনি পুলিশ বাহিনীতে কাজ করতেন। প্রত্যেকেই পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং জনগনের সেবা করতে গিয়ে জীবন উৎসর্গ করলেন। উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে ৭ হাজারের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরমধ্যে ৩ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। বাকিরা এখনও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরপরও প্রতিদিনই পুলিশ বাহিনীতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। সারাদেশে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির দিক থেকে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

এদিকে করোনায় সাব ইন্সপেক্টর এসএম মুকুল মিয়া ও কনস্টেবল মো. আবুল হোসেন আজাদের মৃত্যুতে পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

আইজিপি এক শোকবাণীতে বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় বীর সদস্যরা। জনগণকে সুরক্ষা দিতে গিয়ে দায়িত্ব পালনকালে আজ ( গতকাল) জীবন দিলেন আমাদের আরও দুই বীর সদস্য, সাব ইন্সপেক্টর এসএম মুকুল মিয়া এবং কনস্টেবল মো. আবুল হোসেন আজাদ। দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে এ বীর সেনানীরা সহকর্মীদের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন। তাদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা। আইজিপি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।