তিন জেলায় বন্যার অবনতি বিশুদ্ধ পানি গোখাদ্যের সংকট

ঝালকাঠিতে বিপদসীমার

৪৮ সেমি. উপরে পানি

জেলা বার্তা পরিবেশক, ঝালকাঠি

ঝালকাঠির বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত রবিবার সকালে শহরের রাস্তাঘাটের পানি কিছুটা কমলেও নদী তীরের বাসিন্দারা এখনও পানিবন্দী রয়েছে। অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে ঢুকে পড়া পানিতে গ্রামের ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের নিমজ্জিত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পান চাষিরা। বরজে পানি প্রবেশ করে পান ও বরজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া আমনের বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা বীজ তুলতে শুরু করেছে। পানির মধ্য দিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বীজ তুলে নিরাপদে সরিয়ে রাখার কাজ করছেন কয়েকটি ব্লকের কৃষকরা। তবে এসব বীজ সংরক্ষণ নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। এদিকে নদীর পানিতে কাঁঠালিয়ার আমুয়া ও নলছিটির ষাইটপাকিয়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে দুই দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, স্বাভাবিকের চেয়ে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে চার-পাঁচ ফুট পানি বেড়েছে। পাশাপশি টানা বৃষ্টিতে পানি জমে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ। সুগন্ধার নদী বেষ্টিত ঝালকাঠি শহরের ভেতরে বয়ে যাওয়া ১১টি খাল থেকে পানি ওঠানামা করছে। কিছু কিছু এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় পানি জমে আছে। ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, নদীর পানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানিবন্দী মানুষদের ত্রাণ দেয়া হবে। পানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। জেলা মৎস্য বিভাগ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে একশত মাছের ঘের ও ছয়শত পুকুরের মাছের ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারিভাবে কোন অর্থ বরাদ্দ হলে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের তা দেয়া হবে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা ।

লক্ষ্মীপুরে সেতু বিধ্বস্ত

সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

জেলা বার্তা পরিবেশক, লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় লরেন্স-নবীগঞ্জ সড়কে সেতু ধসে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। নদীর তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিদিন জোয়ারে প্লাবিত হয় গ্রামের পর গ্রাম। গত কয়েকদিনের মেঘনা নদীর দফায়-দফায় অস্বাভাবিক জোয়ারে উপজেলার মতিরহাট-তোরাবগঞ্জ সড়ক ও লুধূয়া-হাজিরহাট সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে জোয়ারে মতিরহাট-তোরাবগঞ্জ সড়কের প্রায় ৪০ ফুট রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর আগে বিকেলে লুধূয়া হাজিরহাট সড়ক ও লরেন্স-নবীগঞ্জ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বলিরপুল-নাছিরগঞ্জ সড়ক জোয়ারে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও মাতাব্বরহাট সড়ক, কদিরপ-িতের হাট সড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মেঘনার জোয়ার থেকে রক্ষায় কমলনগর উপজেলায় বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ার এলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। গত কয়েকদিনে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট উঁচু জোয়ারের পানির তোড়ে ওইসব সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়। কমলগরের মতিরহাট জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র। এখানে রয়েছে মাছঘাট ও মাছের বড় মোকাম। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে মতিরহাট থেকে মাছ কেনেন। প্রতিদিন তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়ক দিয়ে শত-শত যানবাহন চলাচল করে। জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে হাজিরহাট-লুধূয়া সড়ক, লরেন্স-নবীগঞ্জ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চর লরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ হিরণ বলেন, তীব্র জোয়ারে তার ইউনিয়নের লরেন্স-নবীগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া পুলসহ সেতু-কালভার্ট ধসে গেছে। কমলগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি বলেন, সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

পাইকগাছায় জোয়ারের পানিতে ভাসছে গ্রাম

প্রতিনিধি, পাইকগাছা (খুলনা)

মহামারী করোনাভাইরাসের মধ্যে অমাবস্যার প্রবল জোয়ারের পানিতে খুলনার পাইকগাছার ৫টি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে উঠেছে। শিবসা নদীর পানির তোড়ে পাউবো’র বাঁধ ভেঙ্গে ও উপচেপড়া পানিতে গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে গেছে। ভেঙ্গেছে বাড়ি ঘর, তলিয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের, পুকুর, জলাশয়, আমন ধানের বীজতলা ও ফসলের ক্ষেত। উপজেলার উপকূলবর্তী সোলাদানা, লতা দেলুটি ও গড়ইখালী ইউনিয়ন। প্রতিটা দুর্যোগে এসব এলাকা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়। চলমান অমাবস্যার প্রবল জোয়ারের হাত থেকেও রেহাই পাইনি এসব এলাকা। ভেঙ্গেছে সোলাদানার ভাঙ্গাহাড়িয়ার গেটের মুখ, টেংরামারি ও বেতবুনিয়া গুচ্ছগ্রাম। পাউবো’র বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে সোলাদানার পতনের আবাসন, গড়ইখালীর বাজারস্থ আবাসন ও আশ্রায়ণ কেন্দ্র।

দেলুটির চকরি-বকরি বদ্ধ জলমহলের বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে গেওয়াবুনিয়া, পারমধুখালী ও চকরি বকরি গ্রাম। গদাইপুরের কচুবুনিয়া অঞ্চল ও লতার কাঠামারি, বাইনচাপড়া ও হাড়িয়া গ্রাম। গড়ইখালীর আবাসন ও আশ্রায়ন কেন্দ্রে দেড়’শ পরিবার জলবদ্ধতার শিকার।

সমস্ত এলাকা শিবসা নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর পানিতেই সয়লাব হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের, পুকুর ও জলাশয়, শ’শ’ বিঘা আমনের বীজতলা, ফসলের ক্ষেত। আবাসন, আশ্রায়ন কেন্দ্র ও গুচ্ছ গ্রামের মানুষ জলবদ্ধতার মধ্যে মানবের জীবন কাটাচ্ছে। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। গো খাদ্যে চরম খাদ্যের অভাব দেখা দেয়ায় গবাদি পশু পাখি নিয়ে জলমগ্ন মানুষগুলো পড়েছে মহাবিপদে।

এ ব্যাপারে সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক ও দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষত কেটে ঊঠতে না উঠতেই আবার এ দূরাবস্থা। বাড়ি ঘর, রাস্তা ঘাট সব কিছুই পানিতে নিমর্জিত থাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টেকসই বেড়িবাঁধ ছাড়া এ উপকূল অঞ্চল রক্ষা করা কোনভাবেই সম্ভব না।

পাউবো উপ-প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন জানান, অর্থ সঙ্কটের কারণে টেকসই বেড়িবাঁধ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা জেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, আমি অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি, বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট চালসহ বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী দুর্গতদের মাঝে দিয়েছি। টেকসই বাঁধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।

মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট ২০২০ , ৫ মহররম ১৪৪২, ২৫ আগস্ট ২০২০

তিন জেলায় বন্যার অবনতি বিশুদ্ধ পানি গোখাদ্যের সংকট

image

ঝালকাঠিতে বিপদসীমার

৪৮ সেমি. উপরে পানি

জেলা বার্তা পরিবেশক, ঝালকাঠি

ঝালকাঠির বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত রবিবার সকালে শহরের রাস্তাঘাটের পানি কিছুটা কমলেও নদী তীরের বাসিন্দারা এখনও পানিবন্দী রয়েছে। অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে ঢুকে পড়া পানিতে গ্রামের ফসলের ক্ষেত, মাছের ঘের নিমজ্জিত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পান চাষিরা। বরজে পানি প্রবেশ করে পান ও বরজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া আমনের বীজতলা ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা বীজ তুলতে শুরু করেছে। পানির মধ্য দিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বীজ তুলে নিরাপদে সরিয়ে রাখার কাজ করছেন কয়েকটি ব্লকের কৃষকরা। তবে এসব বীজ সংরক্ষণ নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। এদিকে নদীর পানিতে কাঁঠালিয়ার আমুয়া ও নলছিটির ষাইটপাকিয়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে দুই দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, স্বাভাবিকের চেয়ে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে চার-পাঁচ ফুট পানি বেড়েছে। পাশাপশি টানা বৃষ্টিতে পানি জমে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ। সুগন্ধার নদী বেষ্টিত ঝালকাঠি শহরের ভেতরে বয়ে যাওয়া ১১টি খাল থেকে পানি ওঠানামা করছে। কিছু কিছু এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় পানি জমে আছে। ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, নদীর পানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানিবন্দী মানুষদের ত্রাণ দেয়া হবে। পানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। জেলা মৎস্য বিভাগ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে একশত মাছের ঘের ও ছয়শত পুকুরের মাছের ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারিভাবে কোন অর্থ বরাদ্দ হলে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের তা দেয়া হবে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা ।

লক্ষ্মীপুরে সেতু বিধ্বস্ত

সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

জেলা বার্তা পরিবেশক, লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় লরেন্স-নবীগঞ্জ সড়কে সেতু ধসে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। নদীর তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিদিন জোয়ারে প্লাবিত হয় গ্রামের পর গ্রাম। গত কয়েকদিনের মেঘনা নদীর দফায়-দফায় অস্বাভাবিক জোয়ারে উপজেলার মতিরহাট-তোরাবগঞ্জ সড়ক ও লুধূয়া-হাজিরহাট সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে জোয়ারে মতিরহাট-তোরাবগঞ্জ সড়কের প্রায় ৪০ ফুট রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর আগে বিকেলে লুধূয়া হাজিরহাট সড়ক ও লরেন্স-নবীগঞ্জ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বলিরপুল-নাছিরগঞ্জ সড়ক জোয়ারে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও মাতাব্বরহাট সড়ক, কদিরপ-িতের হাট সড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মেঘনার জোয়ার থেকে রক্ষায় কমলনগর উপজেলায় বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ার এলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। গত কয়েকদিনে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট উঁচু জোয়ারের পানির তোড়ে ওইসব সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়। কমলগরের মতিরহাট জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র। এখানে রয়েছে মাছঘাট ও মাছের বড় মোকাম। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে মতিরহাট থেকে মাছ কেনেন। প্রতিদিন তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়ক দিয়ে শত-শত যানবাহন চলাচল করে। জোয়ারে সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে হাজিরহাট-লুধূয়া সড়ক, লরেন্স-নবীগঞ্জ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চর লরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ হিরণ বলেন, তীব্র জোয়ারে তার ইউনিয়নের লরেন্স-নবীগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া পুলসহ সেতু-কালভার্ট ধসে গেছে। কমলগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি বলেন, সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

পাইকগাছায় জোয়ারের পানিতে ভাসছে গ্রাম

প্রতিনিধি, পাইকগাছা (খুলনা)

মহামারী করোনাভাইরাসের মধ্যে অমাবস্যার প্রবল জোয়ারের পানিতে খুলনার পাইকগাছার ৫টি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে উঠেছে। শিবসা নদীর পানির তোড়ে পাউবো’র বাঁধ ভেঙ্গে ও উপচেপড়া পানিতে গ্রামের পর গ্রাম তলিয়ে গেছে। ভেঙ্গেছে বাড়ি ঘর, তলিয়ে গেছে হাজার হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের, পুকুর, জলাশয়, আমন ধানের বীজতলা ও ফসলের ক্ষেত। উপজেলার উপকূলবর্তী সোলাদানা, লতা দেলুটি ও গড়ইখালী ইউনিয়ন। প্রতিটা দুর্যোগে এসব এলাকা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়। চলমান অমাবস্যার প্রবল জোয়ারের হাত থেকেও রেহাই পাইনি এসব এলাকা। ভেঙ্গেছে সোলাদানার ভাঙ্গাহাড়িয়ার গেটের মুখ, টেংরামারি ও বেতবুনিয়া গুচ্ছগ্রাম। পাউবো’র বাঁধ উপচে প্লাবিত হয়েছে সোলাদানার পতনের আবাসন, গড়ইখালীর বাজারস্থ আবাসন ও আশ্রায়ণ কেন্দ্র।

দেলুটির চকরি-বকরি বদ্ধ জলমহলের বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে গেওয়াবুনিয়া, পারমধুখালী ও চকরি বকরি গ্রাম। গদাইপুরের কচুবুনিয়া অঞ্চল ও লতার কাঠামারি, বাইনচাপড়া ও হাড়িয়া গ্রাম। গড়ইখালীর আবাসন ও আশ্রায়ন কেন্দ্রে দেড়’শ পরিবার জলবদ্ধতার শিকার।

সমস্ত এলাকা শিবসা নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর পানিতেই সয়লাব হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজার হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের, পুকুর ও জলাশয়, শ’শ’ বিঘা আমনের বীজতলা, ফসলের ক্ষেত। আবাসন, আশ্রায়ন কেন্দ্র ও গুচ্ছ গ্রামের মানুষ জলবদ্ধতার মধ্যে মানবের জীবন কাটাচ্ছে। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। গো খাদ্যে চরম খাদ্যের অভাব দেখা দেয়ায় গবাদি পশু পাখি নিয়ে জলমগ্ন মানুষগুলো পড়েছে মহাবিপদে।

এ ব্যাপারে সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক ও দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষত কেটে ঊঠতে না উঠতেই আবার এ দূরাবস্থা। বাড়ি ঘর, রাস্তা ঘাট সব কিছুই পানিতে নিমর্জিত থাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। টেকসই বেড়িবাঁধ ছাড়া এ উপকূল অঞ্চল রক্ষা করা কোনভাবেই সম্ভব না।

পাউবো উপ-প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন জানান, অর্থ সঙ্কটের কারণে টেকসই বেড়িবাঁধ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা জেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, আমি অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি, বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট চালসহ বিভিন্ন প্রকার খাদ্য সামগ্রী দুর্গতদের মাঝে দিয়েছি। টেকসই বাঁধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।