স্বাভাবিক হয়েও প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্রের রহস্যজনক ব্যবহার সর. কর্মচারীর

শারীরিকভাবে সক্ষম একজন সরকারি কর্মচারী প্রতিবন্ধীর পরিচয়পত্র ব্যবহার করে দীর্ঘদিন থেকে সরকারের নানা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। ভাতা উত্তোলন না করলেও প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্রের রহস্যজনক ব্যবহার করছেন

মুহাম্মদ নুরুজ্জামান (৪৬)। তিনি শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (বালক) জামালপুর শাখার এডুকেটর পদে কর্মরত।

টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার ঘোনারচালা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের সন্তান মুহাম্মদ নুরুজ্জামান।

জানা যায়, মুহাম্মদ নুরুজ্জামান টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার কালিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭৫ সালের ২২ই ডিসেম্বর । একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে ব্যবসা এবং বেসরকারি চাকরি করতেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে মুহাম্মদ নুরুজ্জামান এডুকেটর পদে যোগদান করেন ২০১৫ সালের ১২ই জুলাই। প্রথমে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে যোগদান করলেও পরে বদলি হয়ে আসেন জামালপুর জেলায়। সরকারি চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মো. নুরুজ্জামানের শারীরিক প্রতিবন্ধীর পরিচয়পত্র ইস্যু হয় টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে। তার প্রতিবন্ধী আইডি নম্বর- ৯৩১৮৫৮১৯৬৮০৮৭-০২।

শারীরিকভাবে সুস্থ একজন কর্মদক্ষ মানুষ হয়েও কি কারণে তিনি নিজেকে প্রতিবন্ধী দাবি করছেন তা নিয়ে তার সহকর্মী ও স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিদের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহ আলম মোবাইল ফোনে জানান-‘এই বিষয়টি খুবই জটিল। তিনি প্রতিবন্ধী কার্ড করেছেন। কিন্তু ভাতা উত্তোলন করেন না। তবে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেন। একটি দুর্ঘটনায় তার বাম হাত ভেঙ্গে গেলেও হাতটি অচল না। আসলে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী কিনা এই বিষয়টিও আমরা এখনও পরিষ্কার না।’

এসব বিষয়ে নুরুজ্জামান বলেন, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে বাড়িতে বড়ই গাছ থেকে পড়ে আমার বাম হাত ভেঙ্গে যায়। তাই আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করেছি কিন্তু কোনদিন ভাতা উত্তোলন করি নাই। আর ভবিষ্যতে কখনও ভাতা উত্তোলন করবো না।’ ভাতা উত্তোলন না করে প্রতিবন্ধী কার্ড করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগের জন্যই আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করেছি। যদি ভবিষ্যতে বড় এমাউন্টের কিছু পাই, সেই আশায় আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করে রেখেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নুরুজ্জামানের সহকর্মীরা জানান, আমরা কখনও জানতাম যে তিনি প্রতিবন্ধী বা তার প্রতিবন্ধী কার্ড রয়েছে। আসলে তাকে দেখে কখনও মনে হয় নাই যে শারীরিকভাবে তিনি অক্ষম।

শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (বালক) জামালপুর শাখার উপপ্রকল্প পরিচালক সুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন-‘আমাদের এই জায়গায় এখনো কয়েকজন প্রতিবন্ধী চাকরি করছেন তাই মুহাম্মদ নুরুজ্জামানও এডুকেটর পদে চাকরি করতে পারেন। আর তিনি প্রতিবন্ধী হিসেবে কোনো ভাতা উত্তোলন করেন না এবং আমার এই জায়গা থেকে কোনো সুবিধা ভোগ করেন না।

আরও খবর
সিসিক’র স্বাস্থ্যকর্তা ফের করোনায় আক্রান্ত
বাজারের বর্জ্যে অস্তিত্ব সংকটে বামনসুন্দর খাল
স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকা নিচ্ছেন মানুষ
বোদায় জমি বিবাদে নারী নিহত
মামলার ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চিয়তায় পরিবার
শেওলা সেতুর টোল থেকে ২১ বছরেও মুক্তি পায়নি সিলেটবাসী
রাতে নৌকার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ দুর্বৃত্তদের
দাউদকান্দিতে মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াই
লোহালিয়া সেতুর নির্মাণ কাজ ফের বাড়ছে দু’বছর
সীতাকুন্ডে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় বিএনপি প্রার্থী
মাধবদীতে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত প্রার্থীরা
সুন্দরগঞ্জে দুই জামায়াত কর্মী ধৃত
আ’লীগ-যুবলীগের ৫ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে ৩ মামলা
নৌকার মাঝি হতে চান আ’লীগ নেতা রফিক

শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৯ মাঘ ১৪২৭, ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪২

স্বাভাবিক হয়েও প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্রের রহস্যজনক ব্যবহার সর. কর্মচারীর

প্রতিনিধি, জামালপুর

শারীরিকভাবে সক্ষম একজন সরকারি কর্মচারী প্রতিবন্ধীর পরিচয়পত্র ব্যবহার করে দীর্ঘদিন থেকে সরকারের নানা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। ভাতা উত্তোলন না করলেও প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্রের রহস্যজনক ব্যবহার করছেন

মুহাম্মদ নুরুজ্জামান (৪৬)। তিনি শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (বালক) জামালপুর শাখার এডুকেটর পদে কর্মরত।

টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার ঘোনারচালা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের সন্তান মুহাম্মদ নুরুজ্জামান।

জানা যায়, মুহাম্মদ নুরুজ্জামান টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলার কালিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন ১৯৭৫ সালের ২২ই ডিসেম্বর । একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে ব্যবসা এবং বেসরকারি চাকরি করতেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে মুহাম্মদ নুরুজ্জামান এডুকেটর পদে যোগদান করেন ২০১৫ সালের ১২ই জুলাই। প্রথমে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে যোগদান করলেও পরে বদলি হয়ে আসেন জামালপুর জেলায়। সরকারি চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মো. নুরুজ্জামানের শারীরিক প্রতিবন্ধীর পরিচয়পত্র ইস্যু হয় টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে। তার প্রতিবন্ধী আইডি নম্বর- ৯৩১৮৫৮১৯৬৮০৮৭-০২।

শারীরিকভাবে সুস্থ একজন কর্মদক্ষ মানুষ হয়েও কি কারণে তিনি নিজেকে প্রতিবন্ধী দাবি করছেন তা নিয়ে তার সহকর্মী ও স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিদের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহ আলম মোবাইল ফোনে জানান-‘এই বিষয়টি খুবই জটিল। তিনি প্রতিবন্ধী কার্ড করেছেন। কিন্তু ভাতা উত্তোলন করেন না। তবে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেন। একটি দুর্ঘটনায় তার বাম হাত ভেঙ্গে গেলেও হাতটি অচল না। আসলে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী কিনা এই বিষয়টিও আমরা এখনও পরিষ্কার না।’

এসব বিষয়ে নুরুজ্জামান বলেন, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে বাড়িতে বড়ই গাছ থেকে পড়ে আমার বাম হাত ভেঙ্গে যায়। তাই আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করেছি কিন্তু কোনদিন ভাতা উত্তোলন করি নাই। আর ভবিষ্যতে কখনও ভাতা উত্তোলন করবো না।’ ভাতা উত্তোলন না করে প্রতিবন্ধী কার্ড করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগের জন্যই আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করেছি। যদি ভবিষ্যতে বড় এমাউন্টের কিছু পাই, সেই আশায় আমি প্রতিবন্ধী কার্ড করে রেখেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নুরুজ্জামানের সহকর্মীরা জানান, আমরা কখনও জানতাম যে তিনি প্রতিবন্ধী বা তার প্রতিবন্ধী কার্ড রয়েছে। আসলে তাকে দেখে কখনও মনে হয় নাই যে শারীরিকভাবে তিনি অক্ষম।

শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (বালক) জামালপুর শাখার উপপ্রকল্প পরিচালক সুভঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন-‘আমাদের এই জায়গায় এখনো কয়েকজন প্রতিবন্ধী চাকরি করছেন তাই মুহাম্মদ নুরুজ্জামানও এডুকেটর পদে চাকরি করতে পারেন। আর তিনি প্রতিবন্ধী হিসেবে কোনো ভাতা উত্তোলন করেন না এবং আমার এই জায়গা থেকে কোনো সুবিধা ভোগ করেন না।