মেট্রোরেল চালাতে পরীক্ষা

বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে ধীরগতিতে পরীক্ষামূলক চালানো হলো দেশের প্রথম মেট্রোরেল। গতকাল উত্তরার দিয়াবাড়ীর ডিপোতে মেট্রোরেল পরীক্ষামূলক যাত্রা অনলাইনে যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য জাপান থেকে প্রথম সেটের যে ছয়টি কোচ আনা হয়েছে, সেগুলোকে নিয়ে উত্তরার দিয়াবাড়ী ডিপোতে প্রদর্শনী করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, নিযুক্ত জাইকা’র চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইহুও হায়েকাওয়া, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক এবং মেট্রোরেল রুট-৬ এর প্রকল্প পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন তালুকদার। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, ডিটিসিএ ও ডিএমটিসিএলসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ডিপো এলাকায় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৪ শতাংশের মতো। আর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৮৫ শতাংশ। আর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্তকাজের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশ এবং ইলেক্ট্রিক্যাল মেকানিক্যাল সিস্টেম ও রোলিং স্টোন ও ডিপোর ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি প্রায় ৫৫ শতাংশ। ডিপোর ভূমি উন্নয়ন কাজের নয় মাস আগে আমরা শেষ করেছি। এতে সরকারের ৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। ডিপোর পূর্ত কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। প্রকল্পের ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৪ দশমিক ৪৯ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের ইরেকশন সম্পন্ন হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, এমআরটি-৬ প্রকল্পের সব ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ চলমান রয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে রেললাইন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভায়াডাক্টের উপর সাড়ে ১০ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ভায়াডাক্টের উপর মূল রেলপথে বৈদ্যুতিক ট্রেনের ‘পারফরমেন্স টেস্ট’ শুরু করা হবে। এরপর ‘ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট’ করা হবে। এরপর ট্রেনের ‘ট্রায়াল রান’ শুরু হবে।

জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি ইউহো হায়াকাওয়া বলেন, ‘এই প্রকল্প বাংলাদেশ এবং জাপানের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার একটি নমুনা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ডিএমটিসিএল এবং জাইকা দুই পক্ষই মহামারীর মধ্যেও আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এটি ঢাকা শহরের গণপরিবহনের চেহারা পাল্টে দেবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বৈদ্যুতিক এই ট্রেন চালু হলে এর সুফল ভোগ করবে এই রুটের বিপুল কর্মজীবী মানুষ। জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়া এই পরিবহন ব্যবস্থা নিরাপদ, জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। এই রেলের ছয় কোচের প্রতিটি সেট একসঙ্গে আগে ভাড়া পরিশোধ সিস্টেমে এক হাজার ৭০০ যাত্রী পরিবহন করবে।’

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বপ্নের উন্নয়নের মাইলফলকের এই প্রকল্পে অংশীদার হতে পেরে আমরা সত্যি গর্বিত। কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে এই প্রকল্পটির অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে। এজন্য তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১০০ মিনিটের ভ্রমণ সময় মেট্রোরেল লাইন চালুর মাধ্যমে মাত্র ৩৬ মিনিটে নেমে আসবে। ২০২২ সালে জাপান বাংলাদেশের বন্ধুত্বের ৫০ বছরের সুবর্ণজয়ন্তীতে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বুধবার, ১২ মে ২০২১ , ২৯ বৈশাখ ১৪২৮ ২৯ রমজান ১৪৪২

মেট্রোরেল চালাতে পরীক্ষা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে ধীরগতিতে পরীক্ষামূলক চালানো হলো দেশের প্রথম মেট্রোরেল। গতকাল উত্তরার দিয়াবাড়ীর ডিপোতে মেট্রোরেল পরীক্ষামূলক যাত্রা অনলাইনে যুক্ত হয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য জাপান থেকে প্রথম সেটের যে ছয়টি কোচ আনা হয়েছে, সেগুলোকে নিয়ে উত্তরার দিয়াবাড়ী ডিপোতে প্রদর্শনী করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, নিযুক্ত জাইকা’র চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইহুও হায়েকাওয়া, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক এবং মেট্রোরেল রুট-৬ এর প্রকল্প পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন তালুকদার। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, ডিটিসিএ ও ডিএমটিসিএলসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ডিপো এলাকায় উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৪ শতাংশের মতো। আর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি প্রায় ৮৫ শতাংশ। আর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্তকাজের অগ্রগতি প্রায় ৬০ শতাংশ এবং ইলেক্ট্রিক্যাল মেকানিক্যাল সিস্টেম ও রোলিং স্টোন ও ডিপোর ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি প্রায় ৫৫ শতাংশ। ডিপোর ভূমি উন্নয়ন কাজের নয় মাস আগে আমরা শেষ করেছি। এতে সরকারের ৭০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। ডিপোর পূর্ত কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। প্রকল্পের ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৪ দশমিক ৪৯ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের ইরেকশন সম্পন্ন হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, এমআরটি-৬ প্রকল্পের সব ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ চলমান রয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে রেললাইন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভায়াডাক্টের উপর সাড়ে ১০ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ভায়াডাক্টের উপর মূল রেলপথে বৈদ্যুতিক ট্রেনের ‘পারফরমেন্স টেস্ট’ শুরু করা হবে। এরপর ‘ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট’ করা হবে। এরপর ট্রেনের ‘ট্রায়াল রান’ শুরু হবে।

জাইকার আবাসিক প্রতিনিধি ইউহো হায়াকাওয়া বলেন, ‘এই প্রকল্প বাংলাদেশ এবং জাপানের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার একটি নমুনা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ডিএমটিসিএল এবং জাইকা দুই পক্ষই মহামারীর মধ্যেও আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এটি ঢাকা শহরের গণপরিবহনের চেহারা পাল্টে দেবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বৈদ্যুতিক এই ট্রেন চালু হলে এর সুফল ভোগ করবে এই রুটের বিপুল কর্মজীবী মানুষ। জাপানি প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়া এই পরিবহন ব্যবস্থা নিরাপদ, জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। এই রেলের ছয় কোচের প্রতিটি সেট একসঙ্গে আগে ভাড়া পরিশোধ সিস্টেমে এক হাজার ৭০০ যাত্রী পরিবহন করবে।’

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বপ্নের উন্নয়নের মাইলফলকের এই প্রকল্পে অংশীদার হতে পেরে আমরা সত্যি গর্বিত। কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে এই প্রকল্পটির অসাধারণ অগ্রগতি হয়েছে। এজন্য তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১০০ মিনিটের ভ্রমণ সময় মেট্রোরেল লাইন চালুর মাধ্যমে মাত্র ৩৬ মিনিটে নেমে আসবে। ২০২২ সালে জাপান বাংলাদেশের বন্ধুত্বের ৫০ বছরের সুবর্ণজয়ন্তীতে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।