মির্জাগঞ্জে নিলাম ছাড়াই বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির অভিযোগ

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের উত্তর বাজিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন টিনশেড ভবনের মালামাল ও ৩৭টি গাছ নিলাম ছাড়াই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। সরকারি বিধি-বিধান/পরিপত্র অনুসরন না করে পুরাতন টিনসেড ভবন, লাইব্রেরি ও ৪টি বাথরুম ভেঙ্গে মালামাল বিক্রি করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এছাড়াও নৈশপ্রহরী বিদ্যালয়ের সামনেই পুরাতন ভবনের টিন দিয়ে দোকান ঘর নির্মাণ করে দোকান চালাচ্ছেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. হালিম মোল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা যায়, বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ অনুমোদন হলে উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ পুরাতন ভবনটি নিলামের জন্য ইস্টিমেট তৈরি করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছেন। অথচ পুরাতন টিনশেড ভবন, লাইব্রেরি ও ৪টি বাথরুম ভেঙ্গে কিছু মালামাল বিক্রি করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নুরুল হক এবং বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মো. নুরুজ্জামান ফকির টিন নিয়ে দোকান ঘর নির্মাণ করেন। তারা দুথজনেই বিদ্যালয়ের পুরাতন ইটগুলো নিজেদের বাড়িতে রেখেছেন। নৈশপ্রহরী বিদ্যালয়ের সামনেই পুরাতন টিন দিয়ে দোকন ঘর নির্মাণ করেছেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. হালিম মোল্লা বলেন, উত্তর বাজিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭০-২০ ফুট টিনশেড ভবন স্কুল, লাইব্রেরি ২০-২০ফুট ও বাথরুম ৪টি নিলামের আগেই ভেঙ্গে মালামাল ও গাছ বিক্রি করেন সভাপতি।

বিদ্যালয়ের জমি দাতা মো. বজলুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ শুরুর আগেই সভাপতি বলেছেন পুরাতন টিনশেডের ভবনটি নিলাম হয়েছে। নিলামের কথা বলে সভাপতি- নিজেই ক্রয় করছেন তাই পুরাতন ভবনের মালামাল বিক্রি করেছেন বলে জানান।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নুরুল হক বলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন নিলামের জন্য শিক্ষা অফিসে জমা ইস্টিমেট দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের টিনশেড ভবনটি ভেঙ্গে মালামাল আমার বাড়ি ও বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরীর বাড়িতে রাখা হয়েছে। কিছু মালামাল বিক্রি করেছি।

প্রধান শিক্ষক মোসা. সাহিদা বেগম বলেন, সরকারি মালামাল নিলামের আগেই বিক্রি করে থাকলে তিনি তা ফেরত দিবেন।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. শেখ আজিমুর রশিদ বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে উপজেলার উত্তর বাজিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মান কাজ অনুমোদন হলে পুরাতন ভবনের ষ্টিমিট তৈরি করে রেজুলেশনের মাধ্যমে নিলামের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে সভাপতি নিলামের আগে মালামাল বিক্রি করে থাকেন তবে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রি করে থাকলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে মালামাল ফেরত চেয়ে চিঠি দেয়া হবে এবং বিক্রিত মালামালের অর্থ ফেরত আনা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. তানিয়া ফেরদৌস বলেন, সরকারি যে কোন মালামাল টেন্ডার দিয়ে বিক্রি করতে হবে। তবে বিদ্যালয়ের সভাপতি পুরাতন ভবনের মালামাল বিক্রি করে থাকলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সঙ্গে আলাপ করে তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শনিবার, ২২ মে ২০২১ , ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৯ শাওয়াল ১৪৪২

মির্জাগঞ্জে নিলাম ছাড়াই বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির অভিযোগ

প্রতিনিধি, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)

image

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের উত্তর বাজিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন টিনশেড ভবনের মালামাল ও ৩৭টি গাছ নিলাম ছাড়াই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। সরকারি বিধি-বিধান/পরিপত্র অনুসরন না করে পুরাতন টিনসেড ভবন, লাইব্রেরি ও ৪টি বাথরুম ভেঙ্গে মালামাল বিক্রি করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এছাড়াও নৈশপ্রহরী বিদ্যালয়ের সামনেই পুরাতন ভবনের টিন দিয়ে দোকান ঘর নির্মাণ করে দোকান চালাচ্ছেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. হালিম মোল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা যায়, বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ অনুমোদন হলে উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ পুরাতন ভবনটি নিলামের জন্য ইস্টিমেট তৈরি করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছেন। অথচ পুরাতন টিনশেড ভবন, লাইব্রেরি ও ৪টি বাথরুম ভেঙ্গে কিছু মালামাল বিক্রি করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নুরুল হক এবং বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মো. নুরুজ্জামান ফকির টিন নিয়ে দোকান ঘর নির্মাণ করেন। তারা দুথজনেই বিদ্যালয়ের পুরাতন ইটগুলো নিজেদের বাড়িতে রেখেছেন। নৈশপ্রহরী বিদ্যালয়ের সামনেই পুরাতন টিন দিয়ে দোকন ঘর নির্মাণ করেছেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. হালিম মোল্লা বলেন, উত্তর বাজিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭০-২০ ফুট টিনশেড ভবন স্কুল, লাইব্রেরি ২০-২০ফুট ও বাথরুম ৪টি নিলামের আগেই ভেঙ্গে মালামাল ও গাছ বিক্রি করেন সভাপতি।

বিদ্যালয়ের জমি দাতা মো. বজলুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ শুরুর আগেই সভাপতি বলেছেন পুরাতন টিনশেডের ভবনটি নিলাম হয়েছে। নিলামের কথা বলে সভাপতি- নিজেই ক্রয় করছেন তাই পুরাতন ভবনের মালামাল বিক্রি করেছেন বলে জানান।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নুরুল হক বলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন নিলামের জন্য শিক্ষা অফিসে জমা ইস্টিমেট দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের টিনশেড ভবনটি ভেঙ্গে মালামাল আমার বাড়ি ও বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরীর বাড়িতে রাখা হয়েছে। কিছু মালামাল বিক্রি করেছি।

প্রধান শিক্ষক মোসা. সাহিদা বেগম বলেন, সরকারি মালামাল নিলামের আগেই বিক্রি করে থাকলে তিনি তা ফেরত দিবেন।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. শেখ আজিমুর রশিদ বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে উপজেলার উত্তর বাজিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মান কাজ অনুমোদন হলে পুরাতন ভবনের ষ্টিমিট তৈরি করে রেজুলেশনের মাধ্যমে নিলামের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে সভাপতি নিলামের আগে মালামাল বিক্রি করে থাকেন তবে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রি করে থাকলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে মালামাল ফেরত চেয়ে চিঠি দেয়া হবে এবং বিক্রিত মালামালের অর্থ ফেরত আনা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. তানিয়া ফেরদৌস বলেন, সরকারি যে কোন মালামাল টেন্ডার দিয়ে বিক্রি করতে হবে। তবে বিদ্যালয়ের সভাপতি পুরাতন ভবনের মালামাল বিক্রি করে থাকলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সঙ্গে আলাপ করে তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।