এলপি গ্যাসের দাম বাড়লো

এলপি গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আজ থেকে বেসরকারি খাতের ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার ভোক্তাকে কিনতে হবে ৮৯১ টাকায়, যা জুনে ৮৪২ টাকা ছিল, বেড়েছে ৪৯ টাকা। যানবাহনে ব্যবহৃত এলপিজির (অটোগ্যাসের) দাম লিটার প্রতি ৪১ টাকা ৭৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪৪ টাকা করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশে ভোক্তাপর্যায়ে তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য তৃতীয়বারের মতো সমন্বয় করল বিইআরসি। গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জুলাই মাসের জন্য নতুন দাম ঘোষণা করে কমিশন। সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল বলেন, ‘জুনে সৌদি আরামকোর কনট্রাক্ট প্রাইসের (সিপি) ভিত্তিতে জুলাই মাসের বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’

বিইআরসির নতুন আদেশে দেখা যায়, প্রোপেন-বিউটেনের মিশ্রণমূল্য পরিবর্তন হলেও রিটেইল চার্জ, ডিস্ট্রিবিউটর চার্জ, পরিবহন চার্জ, মূসক, মজুদকরণ চার্জ অপরিবর্তিত রয়েছে। উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয় পরিবর্তন না হওয়ায় রাষ্ট্রীয় কোম্পানির এলপি গ্যাসের (এলপিজির) দাম পরিবর্তন করা হয়নি। সরকারি সাড়ে ১২ কেজি এলপিজির দাম আগের ৫৯১ টাকাই থাকছে।

নতুন মূল্যহার অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি এলপিজির খুচরা মূল্য ৭০ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৪ টাকা ২৪ পয়সা করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৪ টাকা সাত পয়সা। সে অনুযায়ী, জুলাইয়ে মূসকসহ ১২ কেজির সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯১ টাকা। যা জুনে ৮৪২ টাকা এবং মে মাসে ৯০৬ টাকা ছিল।

নতুন দামে এলপিজির সাড়ে ৫ কেজি সিলিন্ডার ৪০৮ টাকা, সাড়ে ১২ কেজি ৯২৮ টাকা, ১৫ কেজি ১১১৪ টাকা, ১৬ কেজি ১১৮৮ টাকা, ১৮ কেজি ১৩৩৭ টাকা, ২০ কেজি ১৪৮৫ টাকা, ২২ কেজি ১৬৩৩ টাকা, ২৫ কেজি ১৮৫৬ টাকা, ৩০ কেজি ২২২৮ টাকা, ৩৩ কেজি ২৪৫১ টাকা, ৩৫ কেজি ২৫৯৯ টাকা এবং ৪৫ কেজি ৩৩৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাসাবাড়িতে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত (রেটিকুলেটেড পদ্ধতি) এলপিজির দাম প্রতি কেজি ৭১ টাকা ৯৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে যা আগের মাসে ছিল ৬৭ টাকা ৮৭ পয়সা।

সৌদি আরমকো কোম্পানির প্রোপেন ও বিউটেনের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতি মাসে এলপিজির নতুন দর ঘোষণা করে বিইআরসি। উচ্চ আদালতের নির্দেশে গণশুনানি করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত ১২ এপ্রিল প্রথমবার দেশে এলপিজির দাম বেঁধে দেয় বিইআরসি। এরপর প্রতি মাসে সৌদি আরমকোর সিপির ওপর ভিত্তি করে দাম পুনঃনির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী জুলাইয়ের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভোক্তাদের অভিযোগ, বিইআরসি’র নির্ধারণ করা দামে বাজারে এলপিজি পাওয়া যায় না। রাজধানীতেই ১২ কেজি এলপিজির সিলিন্ডার এক হাজার বা তারও বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হয়। তবে ঢাকার বাইরে কিছু এলাকায় নির্ধারিত মূল্যে বা এর চেয়ে কমেও এলপিজি বিক্রির খবর পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ভোক্তাদের লিখিত অভিযোগের অপেক্ষায় আছি। ডিলার ডিস্ট্রেবিউটরদের তালিকা সংগ্রহ করছি। বাস্তবায়নের একক দায়িত্ব বিইআরসির নয়, এটা সবার দায়িত্ব। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও খনিজসম্পদ বিভাগকে চিঠি দিয়ে দাম কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে বলেছে বিইআরসি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসকরাও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারেন।’

বৃহস্পতিবার, ০১ জুলাই ২০২১ , ১৭ আষাঢ় ১৪২৮ ১৯ জিলক্বদ ১৪৪২

এলপি গ্যাসের দাম বাড়লো

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

এলপি গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আজ থেকে বেসরকারি খাতের ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার ভোক্তাকে কিনতে হবে ৮৯১ টাকায়, যা জুনে ৮৪২ টাকা ছিল, বেড়েছে ৪৯ টাকা। যানবাহনে ব্যবহৃত এলপিজির (অটোগ্যাসের) দাম লিটার প্রতি ৪১ টাকা ৭৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪৪ টাকা করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশে ভোক্তাপর্যায়ে তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য তৃতীয়বারের মতো সমন্বয় করল বিইআরসি। গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জুলাই মাসের জন্য নতুন দাম ঘোষণা করে কমিশন। সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল বলেন, ‘জুনে সৌদি আরামকোর কনট্রাক্ট প্রাইসের (সিপি) ভিত্তিতে জুলাই মাসের বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’

বিইআরসির নতুন আদেশে দেখা যায়, প্রোপেন-বিউটেনের মিশ্রণমূল্য পরিবর্তন হলেও রিটেইল চার্জ, ডিস্ট্রিবিউটর চার্জ, পরিবহন চার্জ, মূসক, মজুদকরণ চার্জ অপরিবর্তিত রয়েছে। উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয় পরিবর্তন না হওয়ায় রাষ্ট্রীয় কোম্পানির এলপি গ্যাসের (এলপিজির) দাম পরিবর্তন করা হয়নি। সরকারি সাড়ে ১২ কেজি এলপিজির দাম আগের ৫৯১ টাকাই থাকছে।

নতুন মূল্যহার অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি এলপিজির খুচরা মূল্য ৭০ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৪ টাকা ২৪ পয়সা করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৪ টাকা সাত পয়সা। সে অনুযায়ী, জুলাইয়ে মূসকসহ ১২ কেজির সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯১ টাকা। যা জুনে ৮৪২ টাকা এবং মে মাসে ৯০৬ টাকা ছিল।

নতুন দামে এলপিজির সাড়ে ৫ কেজি সিলিন্ডার ৪০৮ টাকা, সাড়ে ১২ কেজি ৯২৮ টাকা, ১৫ কেজি ১১১৪ টাকা, ১৬ কেজি ১১৮৮ টাকা, ১৮ কেজি ১৩৩৭ টাকা, ২০ কেজি ১৪৮৫ টাকা, ২২ কেজি ১৬৩৩ টাকা, ২৫ কেজি ১৮৫৬ টাকা, ৩০ কেজি ২২২৮ টাকা, ৩৩ কেজি ২৪৫১ টাকা, ৩৫ কেজি ২৫৯৯ টাকা এবং ৪৫ কেজি ৩৩৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাসাবাড়িতে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত (রেটিকুলেটেড পদ্ধতি) এলপিজির দাম প্রতি কেজি ৭১ টাকা ৯৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে যা আগের মাসে ছিল ৬৭ টাকা ৮৭ পয়সা।

সৌদি আরমকো কোম্পানির প্রোপেন ও বিউটেনের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতি মাসে এলপিজির নতুন দর ঘোষণা করে বিইআরসি। উচ্চ আদালতের নির্দেশে গণশুনানি করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত ১২ এপ্রিল প্রথমবার দেশে এলপিজির দাম বেঁধে দেয় বিইআরসি। এরপর প্রতি মাসে সৌদি আরমকোর সিপির ওপর ভিত্তি করে দাম পুনঃনির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী জুলাইয়ের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

ভোক্তাদের অভিযোগ, বিইআরসি’র নির্ধারণ করা দামে বাজারে এলপিজি পাওয়া যায় না। রাজধানীতেই ১২ কেজি এলপিজির সিলিন্ডার এক হাজার বা তারও বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হয়। তবে ঢাকার বাইরে কিছু এলাকায় নির্ধারিত মূল্যে বা এর চেয়ে কমেও এলপিজি বিক্রির খবর পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ভোক্তাদের লিখিত অভিযোগের অপেক্ষায় আছি। ডিলার ডিস্ট্রেবিউটরদের তালিকা সংগ্রহ করছি। বাস্তবায়নের একক দায়িত্ব বিইআরসির নয়, এটা সবার দায়িত্ব। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও খনিজসম্পদ বিভাগকে চিঠি দিয়ে দাম কার্যকর করার উদ্যোগ নিতে বলেছে বিইআরসি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসকরাও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারেন।’