আবারও গ্রেপ্তার এসপিসি ওয়ার্ল্ডের সিইও-এমডি আল আমিন

ই-কমার্সের নামে এমএলএম পরিচালনাকারী ‘এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আল আমিন প্রধান দ্বিতীয়বার গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকাল তাকে ও নিরাপদ শপ-এর পরিচালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন সিআইডির মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান। এসপিসি ওয়ার্ল্ডের সিইও আল আমিন এর আগেও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। জামিনে বেরিয়ে ফের গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। অবশেষে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় সিআইডি।

এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকের জমানো টাকা দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, বিভিন্ন উপায়ে এসপিসির মাধ্যমে আয় করা টাকাগুলো তাদের ওয়ালেটে জমা রয়েছে। তারা কোনভাবেই এ টাকা ক্যাশ আউট করতে পারছেন না। গত তিন-চার মাস ধরে তাদের সব গ্রাহকের একই অবস্থা। নিজেদের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দাবি করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, এসপিসি মূলত একটি বহু স্তরভিত্তিক বিপণন ব্যবসা (মাল্টি লেভেল মার্কেটিং-এমএলএম) প্রতিষ্ঠান। যেমনটি ছিল ডেসটিনি।

ই-কমার্সের নামে এমএলএম ব্যবসা ও প্রতারণার অভিযোগে ২০২০ সালে আল আমিনসহ প্রতিষ্ঠানটির ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ওই সময় জানানো হয়, এসপিসি ২২ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের দুই মাসের মধ্যেই জামিনে বের হয়ে আসেন আল আমিন। আবারও নতুন উদ্যমে শুরু করেন ব্যবসা। ২০২০ সালে নিজেদের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দাবি করে যাত্রা শুরু করে এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস। প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও হিসেবে আছেন আল আমিন প্রধান। তিনি ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের টিম লিডার ও প্রশিক্ষক ছিলেন।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, এসপিসি অনুমোদনহীন মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা পরিচালনা করে এক কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছে সিআইডি। তবে তদন্ত এখনও চলমান। আত্মসাতের টাকার অঙ্ক আরও বড় হতে পারে। কারণ, তাদের ব্যাংক লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি।

অর্থ আত্মসাতের মামলায় বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির এমডি আল আমিন গ্রাহকের ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে নিজের নামে তিনটি প্রাইভেটকার কিনেছেন। এছাড়া সিটি ব্যাংকের একটি হিসাব থেকে গ্রাহকের ৩৫ লাখ টাকা তার স্ত্রী সারমীন আক্তারের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন। সিআইডি জানায়, এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস লিমিটেডের মাধ্যমে গত বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করে। এসব লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সেখানে মোট ২২ কোটি পাঁচ লাখ টাকা জমা হয়েছে। তোলা হয়েছে মোট চার কোটি সাত লাখ টাকা। আর দীর্ঘদিন ধরে এমন প্রতারণা করে আসছিল। অভিযোগ পাওয়া গেছে নিরাপদ শপের বিরুদ্ধেও।

সোমবার, ০৪ অক্টোবর ২০২১ , ১৯ আশ্বিন ১৪২৮ ২৫ সফর ১৪৪৩

আবারও গ্রেপ্তার এসপিসি ওয়ার্ল্ডের সিইও-এমডি আল আমিন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ই-কমার্সের নামে এমএলএম পরিচালনাকারী ‘এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আল আমিন প্রধান দ্বিতীয়বার গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকাল তাকে ও নিরাপদ শপ-এর পরিচালকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন সিআইডির মিডিয়া কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমান। এসপিসি ওয়ার্ল্ডের সিইও আল আমিন এর আগেও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। জামিনে বেরিয়ে ফের গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। অবশেষে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় সিআইডি।

এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকের জমানো টাকা দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, বিভিন্ন উপায়ে এসপিসির মাধ্যমে আয় করা টাকাগুলো তাদের ওয়ালেটে জমা রয়েছে। তারা কোনভাবেই এ টাকা ক্যাশ আউট করতে পারছেন না। গত তিন-চার মাস ধরে তাদের সব গ্রাহকের একই অবস্থা। নিজেদের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দাবি করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, এসপিসি মূলত একটি বহু স্তরভিত্তিক বিপণন ব্যবসা (মাল্টি লেভেল মার্কেটিং-এমএলএম) প্রতিষ্ঠান। যেমনটি ছিল ডেসটিনি।

ই-কমার্সের নামে এমএলএম ব্যবসা ও প্রতারণার অভিযোগে ২০২০ সালে আল আমিনসহ প্রতিষ্ঠানটির ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ওই সময় জানানো হয়, এসপিসি ২২ লাখ গ্রাহকের কাছ থেকে ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের দুই মাসের মধ্যেই জামিনে বের হয়ে আসেন আল আমিন। আবারও নতুন উদ্যমে শুরু করেন ব্যবসা। ২০২০ সালে নিজেদের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দাবি করে যাত্রা শুরু করে এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস। প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও হিসেবে আছেন আল আমিন প্রধান। তিনি ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের টিম লিডার ও প্রশিক্ষক ছিলেন।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, এসপিসি অনুমোদনহীন মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা পরিচালনা করে এক কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছে সিআইডি। তবে তদন্ত এখনও চলমান। আত্মসাতের টাকার অঙ্ক আরও বড় হতে পারে। কারণ, তাদের ব্যাংক লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি।

অর্থ আত্মসাতের মামলায় বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির এমডি আল আমিন গ্রাহকের ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে নিজের নামে তিনটি প্রাইভেটকার কিনেছেন। এছাড়া সিটি ব্যাংকের একটি হিসাব থেকে গ্রাহকের ৩৫ লাখ টাকা তার স্ত্রী সারমীন আক্তারের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করেছেন। সিআইডি জানায়, এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস লিমিটেডের মাধ্যমে গত বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করে। এসব লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সেখানে মোট ২২ কোটি পাঁচ লাখ টাকা জমা হয়েছে। তোলা হয়েছে মোট চার কোটি সাত লাখ টাকা। আর দীর্ঘদিন ধরে এমন প্রতারণা করে আসছিল। অভিযোগ পাওয়া গেছে নিরাপদ শপের বিরুদ্ধেও।