বিচারের অপেক্ষায় পরিবার

বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার দুই বছর হলেও এখন পর্যন্ত বিচার কাজ শেষ হয়নি। সব খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেখে যেতে চান দাদা ৯০ বছর বয়সী আবদুল গফুরসহ পরিবারের সদস্যরা। আর আবারের ব্যবহৃত জামা, কাপড়, বইপত্র হাতড়ে প্রিয় সন্তানকে খুঁজে ফেরেন মা রোকেয়া খাতুন। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামের বরকত উল্লাহ ও রোকেয়া দম্পত্তির বড় সন্তান। দুই বছর আগে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর দুটি বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচারকাজ শেষ হয়নি। আবরারের সব থেকে প্রিয় মানুষ তার দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস নাতি হত্যার বিচারের প্রতীক্ষায় এখনও প্রহর গুনছেন। দ্রুত নাতি হত্যার বিচার দেখে যেতে চান তিনি।

দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতিসহ সবাই বলেছে আবরার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেয়া হবে, কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর হয়ে গেলেও এখনও বিচার কাজ শেষ হয়নি, আমার বয়স ৯০ ভয়স বছর। মৃত্যুর আগে আমি আমার নাতি আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখে যেতে চাই।

দাদা আবদুল গফুর বলেন, আমার প্রিয় নাতির জন্য মন কাঁদে। তাকে হারিয়েছি দুই বছর হলো। এখনও বিচার শেষ হয়নি।

তখন সবাই বলেছিল দ্রুত বিচার কাজ শেষ হবে। তবে নানা কারণে তা হয়নি। এখন বিচার দ্রুত শেষ করে খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর দেখতে চাই। মরার আগে অন্তত নাতি হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই।

এদিকে আবরার ফাহাদের সব হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান তার মা রোকেয়া খাতুন। কুষ্টিয়ার পিটিআই রোডের বাসায় আবরারের জামাকাপড়, বইপত্র, ব্যবহৃত জিনিসপত্রে প্রিয় ছেলেকে খোঁজেন তিনি। রোকেয়া খাতুন বলেন, সবাই দেখেছে আমার ছেলে আবরারকে কত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। দুই বছর অতিবাহিত হলেও আমার ছেলের হত্যাকারীরা এখনও জীবিত রয়েছে। অতি দ্রুত রায় ঘোষণার পাশাপশি তা কার্যক্রর দাবি জানান তিনি।

আবরার ফাহাদ হত্যার দুই বছরে তার পরিবারের এখন একটাই দাবি। অতি দ্রুত রায় ঘোষণার পাশাপশি তা কার্যকর করা হোক।

করোনাভাইরাসের কারণে বিচার কাজ বিঘ্ন ঘটেছে দাবি করে আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ বলেন, বিচার কাজ বিলম্ব হওয়ায় অনেকেই এই মামলাটিকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তাই অতি দ্রুত সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, তিন আসামি এহতেশামুল রাব্বি তামিম, মোর্শদুজ্জামান মণ্ডল জিসান ও মুজতবা রাফিদ এখনও পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের ধরতে পারেনি। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বাড়িতে থেকে সকালে রওনা দেন। সন্ধ্যার দিকে তিনি হলে পৌঁছান। এরপর রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে একদল বিপথগামী ছাত্ররা ছয় ঘণ্টা ধরে নির্মম নির্যাতন করে মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করে। পরদিন ৭ অক্টোবর সকালে তার লাশ উদ্ধার হলে প্রতিবাদে সারাদেশ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

এদিকে আবরারের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন পরিবার।

বৃহস্পতিবার, ০৭ অক্টোবর ২০২১ , ২২ আশ্বিন ১৪২৮ ২৮ সফর ১৪৪৩

বুয়েটের আবরার হত্যার দু’বছর

বিচারের অপেক্ষায় পরিবার

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুষ্টিয়া

বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার দুই বছর হলেও এখন পর্যন্ত বিচার কাজ শেষ হয়নি। সব খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেখে যেতে চান দাদা ৯০ বছর বয়সী আবদুল গফুরসহ পরিবারের সদস্যরা। আর আবারের ব্যবহৃত জামা, কাপড়, বইপত্র হাতড়ে প্রিয় সন্তানকে খুঁজে ফেরেন মা রোকেয়া খাতুন। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামের বরকত উল্লাহ ও রোকেয়া দম্পত্তির বড় সন্তান। দুই বছর আগে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর দুটি বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচারকাজ শেষ হয়নি। আবরারের সব থেকে প্রিয় মানুষ তার দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস নাতি হত্যার বিচারের প্রতীক্ষায় এখনও প্রহর গুনছেন। দ্রুত নাতি হত্যার বিচার দেখে যেতে চান তিনি।

দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতিসহ সবাই বলেছে আবরার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেয়া হবে, কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর হয়ে গেলেও এখনও বিচার কাজ শেষ হয়নি, আমার বয়স ৯০ ভয়স বছর। মৃত্যুর আগে আমি আমার নাতি আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখে যেতে চাই।

দাদা আবদুল গফুর বলেন, আমার প্রিয় নাতির জন্য মন কাঁদে। তাকে হারিয়েছি দুই বছর হলো। এখনও বিচার শেষ হয়নি।

তখন সবাই বলেছিল দ্রুত বিচার কাজ শেষ হবে। তবে নানা কারণে তা হয়নি। এখন বিচার দ্রুত শেষ করে খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকর দেখতে চাই। মরার আগে অন্তত নাতি হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই।

এদিকে আবরার ফাহাদের সব হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান তার মা রোকেয়া খাতুন। কুষ্টিয়ার পিটিআই রোডের বাসায় আবরারের জামাকাপড়, বইপত্র, ব্যবহৃত জিনিসপত্রে প্রিয় ছেলেকে খোঁজেন তিনি। রোকেয়া খাতুন বলেন, সবাই দেখেছে আমার ছেলে আবরারকে কত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। দুই বছর অতিবাহিত হলেও আমার ছেলের হত্যাকারীরা এখনও জীবিত রয়েছে। অতি দ্রুত রায় ঘোষণার পাশাপশি তা কার্যক্রর দাবি জানান তিনি।

আবরার ফাহাদ হত্যার দুই বছরে তার পরিবারের এখন একটাই দাবি। অতি দ্রুত রায় ঘোষণার পাশাপশি তা কার্যকর করা হোক।

করোনাভাইরাসের কারণে বিচার কাজ বিঘ্ন ঘটেছে দাবি করে আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ বলেন, বিচার কাজ বিলম্ব হওয়ায় অনেকেই এই মামলাটিকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তাই অতি দ্রুত সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, তিন আসামি এহতেশামুল রাব্বি তামিম, মোর্শদুজ্জামান মণ্ডল জিসান ও মুজতবা রাফিদ এখনও পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের ধরতে পারেনি। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বাড়িতে থেকে সকালে রওনা দেন। সন্ধ্যার দিকে তিনি হলে পৌঁছান। এরপর রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে একদল বিপথগামী ছাত্ররা ছয় ঘণ্টা ধরে নির্মম নির্যাতন করে মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করে। পরদিন ৭ অক্টোবর সকালে তার লাশ উদ্ধার হলে প্রতিবাদে সারাদেশ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

এদিকে আবরারের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন পরিবার।