কিশোরগঞ্জে করোনাকালে ১৭ স্কুল মাদরাসার ২৬০ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে

জেলা বার্তা পরিবেশক, কিশোরগঞ্জ

কোভিড পরিস্থিতিতে কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৬০ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে। এরমধ্যে ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯৩ জন, আর ৭টি দাখিল মাদরাসায় ৬৭ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। গত রোববার জেলা কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং বাল্যবিয়ে রোধ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী জজ ও জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সাদিয়া আফসানা রিমা ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। জেলা মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মামুন-অর রশিদের স্বাগত বক্তব্যের পর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি সংস্থা পপি’র জেলা সমন্বয়ক মুহাম্মদ ফরিদুল আলম।

মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, করোনাকালে জেলার ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯৩ জন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। ৭টি দাখিল মাদ্রায় ৬৭ জন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই সময়ে ৪০ জন এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৫৯টি। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট ধর্ষণ মামলা হয়েছে ৫৮টি। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে ১৫৩টি। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে ১৯৬টি।

সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধের জন্য আইনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কাজেই খুব সহজেই জনগণ বাল্যবিয়ে বন্ধের উদ্যোগ নিতে পারে।

সহকারী জজ বলেছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌতুক আলাদা রকমের অপরাধ। অনেক আইনজীবী সহজে মামলা সাজানোর সুবিধার্থে নির্যাতনের বিষয় বাদ দিয়ে যৌতুকের মামলা সাজান। যে কারণে প্রমাণের অভাবে ভিকটিম সুবিচার পান না। এসব বিষয়ে বাদীদের ধারণা না থাকায় বিচারককে দায়ী করেন। অথচ এক্ষেত্রে বিচারকের পক্ষে আইনের বাইরে গিয়ে রায় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। কাজেই মামলাটি যেন যথাযথ নিয়মে করা হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য সকলের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ , ২২ অগ্রহায়ণ ১৪২৮

কিশোরগঞ্জে করোনাকালে ১৭ স্কুল মাদরাসার ২৬০ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে

জেলা বার্তা পরিবেশক, কিশোরগঞ্জ

কোভিড পরিস্থিতিতে কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৬০ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে। এরমধ্যে ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯৩ জন, আর ৭টি দাখিল মাদরাসায় ৬৭ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। গত রোববার জেলা কালেক্টরেট সম্মেলন কক্ষে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা এবং বাল্যবিয়ে রোধ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী জজ ও জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সাদিয়া আফসানা রিমা ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। জেলা মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মামুন-অর রশিদের স্বাগত বক্তব্যের পর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি সংস্থা পপি’র জেলা সমন্বয়ক মুহাম্মদ ফরিদুল আলম।

মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়, করোনাকালে জেলার ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৯৩ জন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। ৭টি দাখিল মাদ্রায় ৬৭ জন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই সময়ে ৪০ জন এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৫৯টি। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট ধর্ষণ মামলা হয়েছে ৫৮টি। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে ১৫৩টি। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে ১৯৬টি।

সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধের জন্য আইনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কাজেই খুব সহজেই জনগণ বাল্যবিয়ে বন্ধের উদ্যোগ নিতে পারে।

সহকারী জজ বলেছেন, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌতুক আলাদা রকমের অপরাধ। অনেক আইনজীবী সহজে মামলা সাজানোর সুবিধার্থে নির্যাতনের বিষয় বাদ দিয়ে যৌতুকের মামলা সাজান। যে কারণে প্রমাণের অভাবে ভিকটিম সুবিচার পান না। এসব বিষয়ে বাদীদের ধারণা না থাকায় বিচারককে দায়ী করেন। অথচ এক্ষেত্রে বিচারকের পক্ষে আইনের বাইরে গিয়ে রায় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। কাজেই মামলাটি যেন যথাযথ নিয়মে করা হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য সকলের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।