কুয়াকাটার পাখিমারা খালে ভাসমান সেতু নড়বড়ে

পটুয়াখালী কলাপাড়ায় একটি খালের ওপর স্থানীয়রা তৈরি করেছিল ভাসমান সেতু। ওই ভাসমান সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে ৫ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ। পানির ওপরে দেয়া হয়েছে প্লাস্টিকের ড্রাম। তার ওপরে কাঠের পাটাতন। দীর্ঘদিন পারাপারে বর্তমানে এ সেতুটি অনেকটা নড়বড়ে হয়ে গেছে। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে এ সেতু দিয়ে পরাপার হচ্ছে কৃষিপল্লী খ্যাত নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ গ্রামের মানুষ। বর্তমানে পথচারীরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। এতে প্রায়শই ঘটছে ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা ও কুমিরমারা এলাকার মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে পাখিমারা খাল। প্রায় ৫ বছর আগে এ খালের ওপর পুরাতন সেতুর মালামাল দিয়ে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় নতুন সেতু। ২০২০ সালের ৬ আগস্ট রাতে হঠাৎ সেতুটি খালের মধ্যে ভেঙ্গে পরে। পরে ওই বছরের অক্টোবর মাসে স্থানীয়রা চাঁদা তুলে ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেন ১১৬ মিটার দৈর্ঘ্যরে ভাসমান সেতু। সেতুটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে মালামাল বহন তো দূরের কথা দুইজন মানুষ একসঙ্গে হেঁটে যাওয়া দায়। বর্তমানে এ ভাসমান সেতুটিও নড়বড়ে হয়ে গেছে।

অনেক স্থানে কাঠ ভেঙ্গে গেছে, বিভিন্ন জায়গা দিয়ে ড্রাম ফুটো হয়ে পানি প্রবেশ করছে। বেশিরভাগ স্থানই দেবে গেছে। ফলে এ সেতু পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। গর্ভবতী মহিলাদের আনা-নেয়ার জন্য একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা। এছাড়া কৃষিপল্লী খ্যাত ওই ৫ গ্রামের কৃষি পণ্য বহন করতে হচ্ছে মাথায় করে। তাই এ ভোগান্তির অবসানের জন্য একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয় কৃষকসহ ওই এলাকার সাধারণ মানুষের।

কুমিরমারা গ্রামের কৃষক বেলায়েত হেসেন বলেন, কুমিরমারা গ্রামের কৃষকরা প্রচুর পরিমাণে ধান ও সবজি আবাদ করে থাকে।

স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু এই সেতুর অভাবে এসব মালামাল পরিবহন করতে হয় মাথায় করে। যেটা অনেক কষ্টকর কাজ। আরেক কৃষক জালাল খান বলেন, একটি সেতুর অভাবে আমাদের সবজি খাতে বছরে প্রচুর টাকা লোকসান হচ্ছে। বর্তমানে এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছে। ছেলে-মেয়েরা ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। যা ভোগান্তির চরম পর্যায় পৌঁছে গেছে। কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহর আলী গণমাধ্যমকে জানান, মূল সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পরই উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের নির্দেশে নতুন গার্ডার বিজ্র নির্মাণের লক্ষ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

দীর্ঘদিনেও কোন অগ্রগতি না হওয়ায় বর্তমানে আবার নতুন করে সাপোর্টিং ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবনা পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

বুধবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২২ , ২১ পৌষ ১৪২৮ ১ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

কুয়াকাটার পাখিমারা খালে ভাসমান সেতু নড়বড়ে

প্রতিনিধি, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)

image

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) : ভাসমান সেতুটি এখন চলাচলের অযোগ্য-সংবাদ

পটুয়াখালী কলাপাড়ায় একটি খালের ওপর স্থানীয়রা তৈরি করেছিল ভাসমান সেতু। ওই ভাসমান সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে ৫ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ। পানির ওপরে দেয়া হয়েছে প্লাস্টিকের ড্রাম। তার ওপরে কাঠের পাটাতন। দীর্ঘদিন পারাপারে বর্তমানে এ সেতুটি অনেকটা নড়বড়ে হয়ে গেছে। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে এ সেতু দিয়ে পরাপার হচ্ছে কৃষিপল্লী খ্যাত নীলগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ গ্রামের মানুষ। বর্তমানে পথচারীরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। এতে প্রায়শই ঘটছে ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা ও কুমিরমারা এলাকার মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে পাখিমারা খাল। প্রায় ৫ বছর আগে এ খালের ওপর পুরাতন সেতুর মালামাল দিয়ে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় নতুন সেতু। ২০২০ সালের ৬ আগস্ট রাতে হঠাৎ সেতুটি খালের মধ্যে ভেঙ্গে পরে। পরে ওই বছরের অক্টোবর মাসে স্থানীয়রা চাঁদা তুলে ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেন ১১৬ মিটার দৈর্ঘ্যরে ভাসমান সেতু। সেতুটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে মালামাল বহন তো দূরের কথা দুইজন মানুষ একসঙ্গে হেঁটে যাওয়া দায়। বর্তমানে এ ভাসমান সেতুটিও নড়বড়ে হয়ে গেছে।

অনেক স্থানে কাঠ ভেঙ্গে গেছে, বিভিন্ন জায়গা দিয়ে ড্রাম ফুটো হয়ে পানি প্রবেশ করছে। বেশিরভাগ স্থানই দেবে গেছে। ফলে এ সেতু পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। গর্ভবতী মহিলাদের আনা-নেয়ার জন্য একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা। এছাড়া কৃষিপল্লী খ্যাত ওই ৫ গ্রামের কৃষি পণ্য বহন করতে হচ্ছে মাথায় করে। তাই এ ভোগান্তির অবসানের জন্য একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয় কৃষকসহ ওই এলাকার সাধারণ মানুষের।

কুমিরমারা গ্রামের কৃষক বেলায়েত হেসেন বলেন, কুমিরমারা গ্রামের কৃষকরা প্রচুর পরিমাণে ধান ও সবজি আবাদ করে থাকে।

স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু এই সেতুর অভাবে এসব মালামাল পরিবহন করতে হয় মাথায় করে। যেটা অনেক কষ্টকর কাজ। আরেক কৃষক জালাল খান বলেন, একটি সেতুর অভাবে আমাদের সবজি খাতে বছরে প্রচুর টাকা লোকসান হচ্ছে। বর্তমানে এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছে। ছেলে-মেয়েরা ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। যা ভোগান্তির চরম পর্যায় পৌঁছে গেছে। কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহর আলী গণমাধ্যমকে জানান, মূল সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পরই উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের নির্দেশে নতুন গার্ডার বিজ্র নির্মাণের লক্ষ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

দীর্ঘদিনেও কোন অগ্রগতি না হওয়ায় বর্তমানে আবার নতুন করে সাপোর্টিং ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবনা পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।