পাঁচ দিনের ব্যবধানে ফের একরাতে ১৪ বাড়িতে চুরি

কুড়িগ্রামের নাগেশ^রী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামে ৮ বাড়ীতে সিঁদেল চুরির ঘটনার ৫দিন পর একই গ্রামে আবারো ৬টি বাড়ীতে দ্বিতীয় দফা চুরির ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। পরপর দু’দফায় ১৪টি বাড়ীতে চুরির ঘটনায় এলাকাবাসী আইন শৃংখলা বাহিনীর অবহেলাকে দায়ী করছেন। প্রথম দফায় চুরির ঘটনায় কাউকে চিহ্নিত করতে না পারায় চোরের দল দ্বিতীয়বার এই দুর্ধষ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বাহের কেদার গ্রামের উত্তর পাড়ায় ৬টি বাড়ীতে সিঁদ কেটে ঢুকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন চুরি করে। এর ৫দিন পূর্বে (৩০ ডিসেম্বর) পাশাপাশি তিনশ’ গজ সন্নিকটে একই গ্রামের কবিরাজ পাড়া ও প্রধানী পাড়ায় ৮টি বাড়ীতে চুরির ঘটনা ঘটেছিল।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) রাতে চুরি যায় বাহের কেদার গ্রামের উত্তর পাড়ার মৃত: কুদ্দুস আলীর ছেলে আমীর হোসেন, মৃত: আকুল উদ্দিনের ছেলে জমসের উদ্দিন, মৃত: শুকুর আলী শেখের ছেলে দিদারুল ইসলাম, মৃত: মদন আলীর ছেলে মোজাম্মেল হক, মোজদার আলীর ছেলে শাহাদত হোসেন ও মনছের আলীর বাড়ি। এসময় ৬টি বাড়ী থেকে প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল খোয়া গেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।

ভূক্তভোগী আমীর হোসেনের স্ত্রী জুলেখা বেগম হতাশ স্বরে জানান, চোর সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে তার ১ লাখ ২০হাজার টাকা মূল্যমানের স্বর্ণ ও রুপার কয়েকটি অলংকার এবং নগদ ২হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায়। এ ক্ষতি সারা জীবনে পুরণ হবে না।

শাহাদত হোসেনের স্ত্রী ফেরেজা খাতুন জানান, মেয়েকে সদ্য বিয়ে দিয়েছেন মেয়েকে দেয়ার জন্য ধার দেনা করে ৪০হাজার টাকার সোনার অলংকার তৈরী করেছেন। সেগুলো সব চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়া নগদ এক হাজার টাকাও নিয়ে গেছে। জমসের আলী জানান, তার নগদ ১৫হাজার টাকা একটি টাচ মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে। দিদারুল ইসলামের নগদ একহাজার টাকা এবং একটি স্মার্ট ফোন, মনছের আলীর ঘর থেকে একটি স্মার্ট ফোন ও মোজাম্মেলে ১৫০ টাকা চুরি গেছে বলে তারা সাংবাদিকদের জানান।

নাগেশ^রীর কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুল আলম জানান, সংবাদ পাওয়ার পরপর আমরা গ্রামটিতে অবস্থান করছি। এই গ্রামে গত ২০/২২ বছরে কোন চুরির ঘটনা ঘটেনি। বাইরে থেকে এসে কেউ এটা করছে। আগের চুরির ঘটনায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। এবার অভিযোগ দিচ্ছে। আশা করছি তদন্ত করে আসামীদের সনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে। এলাকায় আতংকের ব্যাপারে তিনি বলেন, গ্রামবাসীদের আশ^স্থ করা হয়েছে। এদিকে পুলিশি টহল থাকবে।

চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রুহুল আমিন জানান, ঘটনাস্থলে কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জসহ পুলিশ টিম কাজ করছে। তারা বাড়ীগুলো পরিদর্শন করছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২২ , ২২ পৌষ ১৪২৮ ২ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

পাঁচ দিনের ব্যবধানে ফের একরাতে ১৪ বাড়িতে চুরি

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুড়িগ্রাম

image

কুড়িগ্রাম : এভাবেই সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে চুরি করছে চোরেরা -সংবাদ

কুড়িগ্রামের নাগেশ^রী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের বাহের কেদার গ্রামে ৮ বাড়ীতে সিঁদেল চুরির ঘটনার ৫দিন পর একই গ্রামে আবারো ৬টি বাড়ীতে দ্বিতীয় দফা চুরির ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। পরপর দু’দফায় ১৪টি বাড়ীতে চুরির ঘটনায় এলাকাবাসী আইন শৃংখলা বাহিনীর অবহেলাকে দায়ী করছেন। প্রথম দফায় চুরির ঘটনায় কাউকে চিহ্নিত করতে না পারায় চোরের দল দ্বিতীয়বার এই দুর্ধষ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বাহের কেদার গ্রামের উত্তর পাড়ায় ৬টি বাড়ীতে সিঁদ কেটে ঢুকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন চুরি করে। এর ৫দিন পূর্বে (৩০ ডিসেম্বর) পাশাপাশি তিনশ’ গজ সন্নিকটে একই গ্রামের কবিরাজ পাড়া ও প্রধানী পাড়ায় ৮টি বাড়ীতে চুরির ঘটনা ঘটেছিল।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) রাতে চুরি যায় বাহের কেদার গ্রামের উত্তর পাড়ার মৃত: কুদ্দুস আলীর ছেলে আমীর হোসেন, মৃত: আকুল উদ্দিনের ছেলে জমসের উদ্দিন, মৃত: শুকুর আলী শেখের ছেলে দিদারুল ইসলাম, মৃত: মদন আলীর ছেলে মোজাম্মেল হক, মোজদার আলীর ছেলে শাহাদত হোসেন ও মনছের আলীর বাড়ি। এসময় ৬টি বাড়ী থেকে প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল খোয়া গেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।

ভূক্তভোগী আমীর হোসেনের স্ত্রী জুলেখা বেগম হতাশ স্বরে জানান, চোর সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে তার ১ লাখ ২০হাজার টাকা মূল্যমানের স্বর্ণ ও রুপার কয়েকটি অলংকার এবং নগদ ২হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায়। এ ক্ষতি সারা জীবনে পুরণ হবে না।

শাহাদত হোসেনের স্ত্রী ফেরেজা খাতুন জানান, মেয়েকে সদ্য বিয়ে দিয়েছেন মেয়েকে দেয়ার জন্য ধার দেনা করে ৪০হাজার টাকার সোনার অলংকার তৈরী করেছেন। সেগুলো সব চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়া নগদ এক হাজার টাকাও নিয়ে গেছে। জমসের আলী জানান, তার নগদ ১৫হাজার টাকা একটি টাচ মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে। দিদারুল ইসলামের নগদ একহাজার টাকা এবং একটি স্মার্ট ফোন, মনছের আলীর ঘর থেকে একটি স্মার্ট ফোন ও মোজাম্মেলে ১৫০ টাকা চুরি গেছে বলে তারা সাংবাদিকদের জানান।

নাগেশ^রীর কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুল আলম জানান, সংবাদ পাওয়ার পরপর আমরা গ্রামটিতে অবস্থান করছি। এই গ্রামে গত ২০/২২ বছরে কোন চুরির ঘটনা ঘটেনি। বাইরে থেকে এসে কেউ এটা করছে। আগের চুরির ঘটনায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। এবার অভিযোগ দিচ্ছে। আশা করছি তদন্ত করে আসামীদের সনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে। এলাকায় আতংকের ব্যাপারে তিনি বলেন, গ্রামবাসীদের আশ^স্থ করা হয়েছে। এদিকে পুলিশি টহল থাকবে।

চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রুহুল আমিন জানান, ঘটনাস্থলে কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জসহ পুলিশ টিম কাজ করছে। তারা বাড়ীগুলো পরিদর্শন করছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে।