শিশু ধর্ষণের ১৭ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ

সন্দেহভাজনদের নিয়ে তদন্ত কর্তার ভূরিভোজ

রূপগঞ্জে ১৭ দিনেও ৮ বছর বয়সের এক শিশু ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ধর্ষণের ঘটনার সন্দেহভাজনদের নিয়ে ভূরিভোজ করার অভিযোগ উঠেছে তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই তদন্ত অফিসার দায়িত্বে অবহেলা করে শিশুর পরিবারকেই দায়িত্ব দেন ধর্ষণকারীকে খুঁজে বের করার জন্য। এতে নির্যাতিত ওই শিশুর পরিবার ও জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত ১০ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের হাটাবো এলাকায় ঘটে এ ধর্ষণের ঘটনা। ধর্ষণকারীকে চিহ্নিত করে এবং গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। তা না হলে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন কর্মসুচীসহ বৃহৎ আন্দোলন করার হুশিয়ারী দেয় পরিবারটি।

ধর্ষিত শিশুর মামা জানান, ১০ ডিসেম্বর শুক্রবার বোনসহ ভাগ্নি (শিশুটি) তাদের বাড়ি হাটাবোতে বেড়াতে আসে। ওই দিন সন্ধ্যার পর বাড়ির সামনের সিটি মার্কেট এলাকার মনিরের দোকান থেকে শুকনা মরিচ কিনতে যায় শিশুটি। পরে পার্শবতী বিপুল ভান্ডারির দোকানের সামনে থেকে জনসম্মুখে এক লম্পট ওই শিশুকে ডেকে এনে নিজেকে শিশুটির বাবার বন্ধু পরিচয় দেয়। এরপর স্থানীয় রবিউল ভুইয়া ও যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান ভুইয়ার বাড়িতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে শিশুর মুখ চেপে ধরে মতিউর রহমান ভুইয়ার ঘরের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ওই শিশু আতœচিৎকার করে পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি জানায়।

এ সময় পরিবারের সদস্যরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করলে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এএফএম সায়েদকে ব্যবস্থা নিতে বললে তিনি ব্যবস্থা নিতে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। এ ঘটনায় শিশুর পিতা বাদী হয়ে শিশু ও নারি নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মিন্টু বৈদ্যকে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। নির্যাতিত শিশুর পরিবারের অভিযোগ, তদন্ত অফিসার এসআই মিন্টু বৈদ্য এ মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর যারা সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ না করে রহস্যজনক কারণে তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেছেন। শুধু তাই নয়, তাদের বাড়িতে ভূরিভোজ করেন তিনি। পুলিশ ফাঁড়িতে আড্ডা করেন। এছাড়া মিন্টু বৈদ্য দায়িত্ব অবহেলা করে ওই শিশুর পরিবারকেই দায়িত্ব দেন ধর্ষণকারীকে খুজে বের করার জন্য এবং বের করে পুলিশকে জানানোর জন্য। এ বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিন্টু বৈদ্য বলেন, সন্দেভাজনদের সঙ্গে আড্ডা বা ভূরিভোজ এবং দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি মিথ্যা। তবে আমরা আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আসামিকে চিহ্নিত করতে পারি নাই। নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে আসামিকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে সহযোগিতা চেয়েছি। ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমান বলেন, দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি সঠিক নয়। তদন্তকারী অফিসার মিন্টু বৈদ্যা এ মামলাটি নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

শনিবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২২ , ২৪ পৌষ ১৪২৮ ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

শিশু ধর্ষণের ১৭ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ

সন্দেহভাজনদের নিয়ে তদন্ত কর্তার ভূরিভোজ

প্রতিনিধি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

রূপগঞ্জে ১৭ দিনেও ৮ বছর বয়সের এক শিশু ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ধর্ষণের ঘটনার সন্দেহভাজনদের নিয়ে ভূরিভোজ করার অভিযোগ উঠেছে তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই তদন্ত অফিসার দায়িত্বে অবহেলা করে শিশুর পরিবারকেই দায়িত্ব দেন ধর্ষণকারীকে খুঁজে বের করার জন্য। এতে নির্যাতিত ওই শিশুর পরিবার ও জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত ১০ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের হাটাবো এলাকায় ঘটে এ ধর্ষণের ঘটনা। ধর্ষণকারীকে চিহ্নিত করে এবং গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। তা না হলে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন কর্মসুচীসহ বৃহৎ আন্দোলন করার হুশিয়ারী দেয় পরিবারটি।

ধর্ষিত শিশুর মামা জানান, ১০ ডিসেম্বর শুক্রবার বোনসহ ভাগ্নি (শিশুটি) তাদের বাড়ি হাটাবোতে বেড়াতে আসে। ওই দিন সন্ধ্যার পর বাড়ির সামনের সিটি মার্কেট এলাকার মনিরের দোকান থেকে শুকনা মরিচ কিনতে যায় শিশুটি। পরে পার্শবতী বিপুল ভান্ডারির দোকানের সামনে থেকে জনসম্মুখে এক লম্পট ওই শিশুকে ডেকে এনে নিজেকে শিশুটির বাবার বন্ধু পরিচয় দেয়। এরপর স্থানীয় রবিউল ভুইয়া ও যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান ভুইয়ার বাড়িতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে শিশুর মুখ চেপে ধরে মতিউর রহমান ভুইয়ার ঘরের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ওই শিশু আতœচিৎকার করে পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি জানায়।

এ সময় পরিবারের সদস্যরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ধর্ষণের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করলে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এএফএম সায়েদকে ব্যবস্থা নিতে বললে তিনি ব্যবস্থা নিতে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমানকে দায়িত্ব দেন। এ ঘটনায় শিশুর পিতা বাদী হয়ে শিশু ও নারি নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মিন্টু বৈদ্যকে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। নির্যাতিত শিশুর পরিবারের অভিযোগ, তদন্ত অফিসার এসআই মিন্টু বৈদ্য এ মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর যারা সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ না করে রহস্যজনক কারণে তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেছেন। শুধু তাই নয়, তাদের বাড়িতে ভূরিভোজ করেন তিনি। পুলিশ ফাঁড়িতে আড্ডা করেন। এছাড়া মিন্টু বৈদ্য দায়িত্ব অবহেলা করে ওই শিশুর পরিবারকেই দায়িত্ব দেন ধর্ষণকারীকে খুজে বের করার জন্য এবং বের করে পুলিশকে জানানোর জন্য। এ বিষয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিন্টু বৈদ্য বলেন, সন্দেভাজনদের সঙ্গে আড্ডা বা ভূরিভোজ এবং দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি মিথ্যা। তবে আমরা আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আসামিকে চিহ্নিত করতে পারি নাই। নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে আসামিকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে সহযোগিতা চেয়েছি। ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমান বলেন, দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি সঠিক নয়। তদন্তকারী অফিসার মিন্টু বৈদ্যা এ মামলাটি নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।