ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ঝুঁকিতে ফেলেছে কৃষি খাতকে

গবেষণা প্রতিবেদন

মহামারী করোনার কারণে বৈশ্বিক সংকটের রেশ থাকতেই শুরু হওয়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাংলাদেশের কৃষি খাতকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। গ্রামের মানুষের তো বটেই, জাতীয়ভাবেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ও কর্মসংস্থানে। মূলত খাদ্য, জ্বালানি তেল ও সারের মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে।

গত বুধবার ‘ইউক্রেন এবং বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা, দারিদ্র্য এবং নীতি উদ্যোগ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপন করা গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত সেমিনারের গবেষণার ফল জানান ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের জেমস থার্লো। ২০২১ সালের জুন থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি এবং এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে এ গবেষণা করা হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্য, তেল ও সারের দাম বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের কৃষিতে জিডিপি কমেছে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং কর্মসংস্থান কমেছে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর সার্বিকভাবে জিডিপি কমেছে শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, কর্মসংস্থান কমেছে এক দশমিক ৬০ শতাংশ। অবশ্য কৃষিবহির্ভূত খাতে জিডিপি বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ, কর্মসংস্থান বেড়েছে এক দশমিক ১০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পণ্যমূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধির বিপরীতে আয় কমায় বাংলাদেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। জাতীয়ভাবে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। গ্রামে এ হার ৫ দশমিক ২০ শতাংশ এবং শহরে ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। দরিদ্র মানুষের মধ্যে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে আর্থিক বৈষম্যও বেড়েছে। দারিদ্র্যের হার বেড়েছে ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর বড় অংশ গ্রামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য ও নগদ সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত ও কার্যকর করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

শুক্রবার, ২৯ জুলাই ২০২২ , ১৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৯ জিলহজ ১৪৪৩

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ঝুঁকিতে ফেলেছে কৃষি খাতকে

গবেষণা প্রতিবেদন

মহামারী করোনার কারণে বৈশ্বিক সংকটের রেশ থাকতেই শুরু হওয়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাংলাদেশের কৃষি খাতকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। গ্রামের মানুষের তো বটেই, জাতীয়ভাবেও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ও কর্মসংস্থানে। মূলত খাদ্য, জ্বালানি তেল ও সারের মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে।

গত বুধবার ‘ইউক্রেন এবং বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা, দারিদ্র্য এবং নীতি উদ্যোগ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপন করা গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত সেমিনারের গবেষণার ফল জানান ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের জেমস থার্লো। ২০২১ সালের জুন থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি এবং এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে এ গবেষণা করা হয়।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্য, তেল ও সারের দাম বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের কৃষিতে জিডিপি কমেছে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং কর্মসংস্থান কমেছে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর সার্বিকভাবে জিডিপি কমেছে শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, কর্মসংস্থান কমেছে এক দশমিক ৬০ শতাংশ। অবশ্য কৃষিবহির্ভূত খাতে জিডিপি বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ, কর্মসংস্থান বেড়েছে এক দশমিক ১০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পণ্যমূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধির বিপরীতে আয় কমায় বাংলাদেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। জাতীয়ভাবে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। গ্রামে এ হার ৫ দশমিক ২০ শতাংশ এবং শহরে ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। দরিদ্র মানুষের মধ্যে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে আর্থিক বৈষম্যও বেড়েছে। দারিদ্র্যের হার বেড়েছে ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর বড় অংশ গ্রামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য ও নগদ সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত ও কার্যকর করার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।