২০ বছর পর কিশোরী গণধর্ষণের রায়, দুইজনের যাবজ্জীবন

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মুরাদপুর গ্রামে দীর্ঘ ২০ বছর পর নাবালিকা কিশোরীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। দুই ধর্ষককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুর ১২টায় রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে ২০০২ সালের ১৪ মে তারিখে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আবদুল আজিজের নাবালিকা মেয়ে একই গ্রামে তার বড় বোনের বাড়িতে গিয়েছিল। ওই দিন রাত ৮টার দিকে কিশোরী মেয়েটি বাড়ির পাশেই টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে যায়। এ সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আসামি রফিকুল ইসলাম ও শাহ আলম কিশোরী মেয়েটিকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে বাড়ির অদূরে একটি খেতে নিয়ে গিয়ে দুই আসামি উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। মেয়েটির আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ধর্ষিতা কিশোরীর বাবা আবদুল আজিজ বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক মিঠাপুকুর থানাকে মামলাটি রেকর্ড করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেয়।

তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩০ জুন তারিখে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই খলিলুর রহমান দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট আদালতে দাখিল করে। মামলায় ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিজ্ঞ বিচারক আসামি রফিকুল ইসলাম ও শাহ আলমকে দোষী সাব্যস্ত করে অপহরণের অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। অন্যদিকে গণধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। আদালত উভয় দণ্ডই এক সঙ্গে পালন করার আদেশ দেন।

সরকার পক্ষের মামলা পরিচালনাকারী বিশেষ পিপি রফিক হাসনাইন অ্যাডভোকেট বলেন, ২০ বছর পরে হলেও নাবালিকা কিশোরী মেয়েকে অপহরণ করে গণধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেছেন। এ রায়ে বাদী ও সরকার পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে। রায় ঘোষণার পর আসামিদের আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামিদের পক্ষের কোন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

শুক্রবার, ২৯ জুলাই ২০২২ , ১৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৯ জিলহজ ১৪৪৩

২০ বছর পর কিশোরী গণধর্ষণের রায়, দুইজনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব বর্তা পরিবেশক, রংপুর

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মুরাদপুর গ্রামে দীর্ঘ ২০ বছর পর নাবালিকা কিশোরীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। দুই ধর্ষককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুর ১২টায় রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে ২০০২ সালের ১৪ মে তারিখে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আবদুল আজিজের নাবালিকা মেয়ে একই গ্রামে তার বড় বোনের বাড়িতে গিয়েছিল। ওই দিন রাত ৮টার দিকে কিশোরী মেয়েটি বাড়ির পাশেই টিউবওয়েল থেকে পানি আনতে যায়। এ সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আসামি রফিকুল ইসলাম ও শাহ আলম কিশোরী মেয়েটিকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে বাড়ির অদূরে একটি খেতে নিয়ে গিয়ে দুই আসামি উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। মেয়েটির আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ধর্ষিতা কিশোরীর বাবা আবদুল আজিজ বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক মিঠাপুকুর থানাকে মামলাটি রেকর্ড করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেয়।

তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩০ জুন তারিখে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই খলিলুর রহমান দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট আদালতে দাখিল করে। মামলায় ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিজ্ঞ বিচারক আসামি রফিকুল ইসলাম ও শাহ আলমকে দোষী সাব্যস্ত করে অপহরণের অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। অন্যদিকে গণধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। আদালত উভয় দণ্ডই এক সঙ্গে পালন করার আদেশ দেন।

সরকার পক্ষের মামলা পরিচালনাকারী বিশেষ পিপি রফিক হাসনাইন অ্যাডভোকেট বলেন, ২০ বছর পরে হলেও নাবালিকা কিশোরী মেয়েকে অপহরণ করে গণধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেছেন। এ রায়ে বাদী ও সরকার পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে। রায় ঘোষণার পর আসামিদের আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামিদের পক্ষের কোন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।