পশ্চিমবঙ্গ : মন্ত্রিত্বের সঙ্গে দলীয় পদও গেল পার্থর

পশ্চিমবঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব এবং দলীয় মহসাচিবের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী এবং তৃণমূলের মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন। এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর প্রথমে মন্ত্রিত্ব, পরে দলীয় মহাসচিবের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়।

এর আগে তার দুর্নীতির কারণে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার এবং তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুই ফ্ল্যাট থেকে দুই দফায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এরমধ্যে গত শুক্রবার টালিগঞ্জের অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ২২ কোটি টাকা এবং গত বুধবার অর্পিতার বেলঘড়িয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ২৮ কোটি রুপি। এছাড়া দুই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ।

এরপরই পার্থকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়। এক পর্যায়ে দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তাকে মন্ত্রী ও দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠতে থাকে।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চ্যাটার্জিকে গত শনিবার গ্রেপ্তার করে ইডি। গ্রেপ্তারের ৬ দিন পর পার্থকে সরিয়ে দেয়া হলো মন্ত্রীত্ব থেকে।

এই কা-ের পর বিরোধীরা শুরু থেকেই পার্থের অপসারণের দাবি তুলেছিল। একই দাবি উঠেছিল দলের অন্দরেও। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ টুইট করে মন্ত্রীসভা ও দলের সব দায়িত্ব থেকে পার্থকে সরানোর দাবি জানিয়েছিলেন।

এই পরিস্থিতিতে গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ করে জানিয়ে দেয়া হয় পার্থকে অপসারণের কথা।

রাজ্যে একাধিক দায়িত্ব ছিল পার্থের কাঁধে। পরিষদীয়, শিল্প ও বাণিজ্য এবং তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ ছিল তার হাতে। এই তিন বিভাগ থেকেই সরিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে। এর আগে পার্থ শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন।

পার্থ চ্যাটার্জির অপসারণ প্রসঙ্গে খোদ মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, নতুন করে মন্ত্রিসভা গঠন পর্যন্ত পার্থ চ্যাটার্জির দায়িত্বে থাকা বিভাগগুলো তার হাতেই থাকছে।

মন্ত্রীত্বের পর এবার তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিবসহ সমস্ত পদ থেকে অপসারিত করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। গতকাল বিকেলে তৃণমূল ভবনে জরুরি বৈঠক বসে দলীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির। বৈঠক শেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়।

বৈঠক শেষে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘শৃঙ্খলা কমিটির সব সদস্যের মতামত অনুযায়ী দলের সমস্ত পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অপসারণ করা হলো। বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে তিনি যদি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেন তবে সসম্মানে তিনি আবার দলে ফিরতে পারবেন। দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকলে যতবড় নেতাই হোন না কেন দল কাউকেই রেয়াত করবে না।’

শুক্রবার, ২৯ জুলাই ২০২২ , ১৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ২৯ জিলহজ ১৪৪৩

পশ্চিমবঙ্গ : মন্ত্রিত্বের সঙ্গে দলীয় পদও গেল পার্থর

প্রতিনিধি, কলকাতা

image

পশ্চিমবঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব এবং দলীয় মহসাচিবের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী এবং তৃণমূলের মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন। এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর প্রথমে মন্ত্রিত্ব, পরে দলীয় মহাসচিবের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়।

এর আগে তার দুর্নীতির কারণে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার এবং তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুই ফ্ল্যাট থেকে দুই দফায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এরমধ্যে গত শুক্রবার টালিগঞ্জের অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ২২ কোটি টাকা এবং গত বুধবার অর্পিতার বেলঘড়িয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ২৮ কোটি রুপি। এছাড়া দুই ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ।

এরপরই পার্থকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়। এক পর্যায়ে দলের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তাকে মন্ত্রী ও দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠতে থাকে।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চ্যাটার্জিকে গত শনিবার গ্রেপ্তার করে ইডি। গ্রেপ্তারের ৬ দিন পর পার্থকে সরিয়ে দেয়া হলো মন্ত্রীত্ব থেকে।

এই কা-ের পর বিরোধীরা শুরু থেকেই পার্থের অপসারণের দাবি তুলেছিল। একই দাবি উঠেছিল দলের অন্দরেও। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ টুইট করে মন্ত্রীসভা ও দলের সব দায়িত্ব থেকে পার্থকে সরানোর দাবি জানিয়েছিলেন।

এই পরিস্থিতিতে গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ করে জানিয়ে দেয়া হয় পার্থকে অপসারণের কথা।

রাজ্যে একাধিক দায়িত্ব ছিল পার্থের কাঁধে। পরিষদীয়, শিল্প ও বাণিজ্য এবং তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ ছিল তার হাতে। এই তিন বিভাগ থেকেই সরিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে। এর আগে পার্থ শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন।

পার্থ চ্যাটার্জির অপসারণ প্রসঙ্গে খোদ মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, নতুন করে মন্ত্রিসভা গঠন পর্যন্ত পার্থ চ্যাটার্জির দায়িত্বে থাকা বিভাগগুলো তার হাতেই থাকছে।

মন্ত্রীত্বের পর এবার তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিবসহ সমস্ত পদ থেকে অপসারিত করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। গতকাল বিকেলে তৃণমূল ভবনে জরুরি বৈঠক বসে দলীয় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির। বৈঠক শেষে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়।

বৈঠক শেষে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘শৃঙ্খলা কমিটির সব সদস্যের মতামত অনুযায়ী দলের সমস্ত পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অপসারণ করা হলো। বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে তিনি যদি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেন তবে সসম্মানে তিনি আবার দলে ফিরতে পারবেন। দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকলে যতবড় নেতাই হোন না কেন দল কাউকেই রেয়াত করবে না।’