ডাক্তার আছে ভবন নেই বেহাল ইউপি স্বাস্থ্যসেবা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে সীমান্তবর্তী দুই ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সেবা পেতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে অসহায় মানুষ। ইউনিয়ন স্থাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন না থাকায় যোগদানকৃত মেডিকেল অফিসার ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তারাও বসতে পাচ্ছেনা তাদের নির্ধারিত কর্মস্থলে। বাধ্য হয়েই ওই ডাক্তাররা অফিস করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ দুর্ভোগে পোহাচ্ছে উপজেলার যাদবপুর ও হাতিবান্ধা ইঊনিয়নের সাধারন মানুষ। বৃহত্তর দুটি ইউনিয়ন ভেঙে চারটি ইউনিয়ন গঠন করা হলেও এখনো কোন ইউনিয়নে স্থাপিত হয় নাই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যে কারনে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্বাস্থ্য সেবা পেতে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে যেতে হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

জানা যায়, হাতিবান্ধা ইউনিয়ন কেন্দ্রের জন্য মেডিকেল অফিসার হিসেবে আছেন ডা. শামীমা আক্তার ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা (এস.এ.সি.এম.ও) হিসেবে আছেন রাসিদা আক্তার। যাদবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য মেডিকেল অফিসার হিসেবে আছেন ডা. শারমিন সেলিম জ্যোতি ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা (এস.এ.সি.এম.ও) হিসেব আছেন মোস্তফা কামাল। ওনারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসেছন। স্থাপনা না থাকার বিষয়টি অফিসিয়াল ভাবে উর্ধবতন কর্মকর্তার কাছে জানানো হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্টরা।

সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সিমান্তবর্তী হাতিবান্ধা ইঊনিয়নের চাকদহ, কামালিয়াচালা, তক্তারচালা এবং যাদবপুর ইউনিয়নের রতনপুর, বেড়বাড়ি, জসিমের বাজার এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা হলে ছুটে আসতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে জরুরি ভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার সময় অনেক দুর্ভোগের শিকাড় হয়। মাঝেমধ্যে মৃত্যু ঝুকি নিয়েও চিকিৎসা সেবা নিতে আসতে হয় তাদের। অর্থবিত্ত পরিবারের লোকজন অসুস্থ হলে পার্শবর্তী উপজেলা মির্জাপুরে ও টাঙ্গাইল শহরের বড় বড় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে চলে যায়। অসহায় ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষের একমাত্র ভরসা হলো ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

যাদবপুর ও হাতিবান্ধা ইউনিয়ন এলাকার সাধারণ মানুষ এই প্রতিবেদকে পেয়ে বলেন ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রাণের দাবী আমাদের দুটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন চাই। যাতে ছোটখাটো কোন সমস্যা হলে আমাদের উপজেলা বা জেলাসদর হাসপাতালে যেতে না হয়।’

হতেয়া রামখালি পাড়া এলাকার এবাদত মিয়া বলেন, তিন দিন জ্বর থাকার পর ছেলেকে নিয়ে সখীপুর হাসপাতালে নিয়া আসছি। আমাগো জন্য সরকারি হাসপাতালই একমাত্র ভরসা। অনেক কষ্ট করে সিএনজি, আটোভ্যান নিয়ে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। যদি আমাগো গ্রামে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকত তাহলে এত কষ্ট করন লাগতো না।

চাকদাহ গ্রামের সাবজান বেগম বলেন, সখীপুর সরকারি হাসপাতালে সেবা দেয় ভালো। সকালে আইসা ডাক্তার দেখাইছি, পরীক্ষাও করায়ছি কিন্ত আগামীকাল রিপোর্ট দিবো তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি। আসতে যাইতে প্রায় দুই’শ টাকা খরচ হয়।

সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২ , ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৪

ডাক্তার আছে ভবন নেই বেহাল ইউপি স্বাস্থ্যসেবা

প্রতিনিধি, সখীপুর (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের সখীপুরে সীমান্তবর্তী দুই ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সেবা পেতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে অসহায় মানুষ। ইউনিয়ন স্থাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন না থাকায় যোগদানকৃত মেডিকেল অফিসার ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তারাও বসতে পাচ্ছেনা তাদের নির্ধারিত কর্মস্থলে। বাধ্য হয়েই ওই ডাক্তাররা অফিস করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ দুর্ভোগে পোহাচ্ছে উপজেলার যাদবপুর ও হাতিবান্ধা ইঊনিয়নের সাধারন মানুষ। বৃহত্তর দুটি ইউনিয়ন ভেঙে চারটি ইউনিয়ন গঠন করা হলেও এখনো কোন ইউনিয়নে স্থাপিত হয় নাই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যে কারনে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্বাস্থ্য সেবা পেতে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে যেতে হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

জানা যায়, হাতিবান্ধা ইউনিয়ন কেন্দ্রের জন্য মেডিকেল অফিসার হিসেবে আছেন ডা. শামীমা আক্তার ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা (এস.এ.সি.এম.ও) হিসেবে আছেন রাসিদা আক্তার। যাদবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য মেডিকেল অফিসার হিসেবে আছেন ডা. শারমিন সেলিম জ্যোতি ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা (এস.এ.সি.এম.ও) হিসেব আছেন মোস্তফা কামাল। ওনারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসেছন। স্থাপনা না থাকার বিষয়টি অফিসিয়াল ভাবে উর্ধবতন কর্মকর্তার কাছে জানানো হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্টরা।

সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সিমান্তবর্তী হাতিবান্ধা ইঊনিয়নের চাকদহ, কামালিয়াচালা, তক্তারচালা এবং যাদবপুর ইউনিয়নের রতনপুর, বেড়বাড়ি, জসিমের বাজার এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা হলে ছুটে আসতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে জরুরি ভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার সময় অনেক দুর্ভোগের শিকাড় হয়। মাঝেমধ্যে মৃত্যু ঝুকি নিয়েও চিকিৎসা সেবা নিতে আসতে হয় তাদের। অর্থবিত্ত পরিবারের লোকজন অসুস্থ হলে পার্শবর্তী উপজেলা মির্জাপুরে ও টাঙ্গাইল শহরের বড় বড় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে চলে যায়। অসহায় ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষের একমাত্র ভরসা হলো ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

যাদবপুর ও হাতিবান্ধা ইউনিয়ন এলাকার সাধারণ মানুষ এই প্রতিবেদকে পেয়ে বলেন ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রাণের দাবী আমাদের দুটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন চাই। যাতে ছোটখাটো কোন সমস্যা হলে আমাদের উপজেলা বা জেলাসদর হাসপাতালে যেতে না হয়।’

হতেয়া রামখালি পাড়া এলাকার এবাদত মিয়া বলেন, তিন দিন জ্বর থাকার পর ছেলেকে নিয়ে সখীপুর হাসপাতালে নিয়া আসছি। আমাগো জন্য সরকারি হাসপাতালই একমাত্র ভরসা। অনেক কষ্ট করে সিএনজি, আটোভ্যান নিয়ে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। যদি আমাগো গ্রামে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকত তাহলে এত কষ্ট করন লাগতো না।

চাকদাহ গ্রামের সাবজান বেগম বলেন, সখীপুর সরকারি হাসপাতালে সেবা দেয় ভালো। সকালে আইসা ডাক্তার দেখাইছি, পরীক্ষাও করায়ছি কিন্ত আগামীকাল রিপোর্ট দিবো তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি। আসতে যাইতে প্রায় দুই’শ টাকা খরচ হয়।