সাড়ে পাঁচ মাসে আমদানির নতুন এলসি কমেছে ৩০ শতাংশ

বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের সংকট কাটাতে পণ্য আমদানিতে নানা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। বিলাসী ও কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি করতে নিরুৎসাহিত করা হয়। এতে কমে যায় এলসি খোলা। এতে গত সাড়ে পাঁচ মাসে আমদানি কমেছে ৩০ শতাংশ। আর চলতি নভেম্বরের প্রথম পক্ষে (১-১৬ তারিখ পর্যন্ত) নতুুন এলসির পরিমাণ ৬৩ শতাংশেরও বেশি কমেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ব্যাংকগুলোর ডলার সংকট থাকলেও বেশি দামে প্রবাসী রেমিট্যান্সে কিনে আমদানি দায় পরিশোধ করত। কিন্তু এখন একক রেট হওয়ায় সেই সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে অধিকাংশ ব্যাংকের আমদানির পরিমাণ কমে এসেছে। এছাড়া অধিকাংশ ব্যাংকের ডলার সংকটে থাকায় আমদানি এলসি খোলায় মনোযোগ কম। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সংকট কাটাতে নানাভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করেছে। গত এপ্রিল অনেক ধরনের শতভাগ থেকে আমদানিতে এলসি মার্জিনের নিয়ম চালু করেছিল। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় আমদানি দায় মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে কমে ৩৪ বিলিয়ন ডলার এসেছে। এ বছর ১৪ জুলাই এলসি খোলার আগে ৫০ লাখ ডলার বা এর বেশি মূল্যের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এমন কড়াকড়ি করা হয়েছিল।

আমদানি কমাতে শতভাগ এলসি মার্জিন নির্ধারণের পাশাপাশি এলসি খোলার আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনাপত্তি নিতে হচ্ছে। সব ঠিক থাকার পরও কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক বলে দিচ্ছে, এই এলসি খোলা যাবে না। বিশেষ করে গাড়ি, টিভি, ফ্রিজ, ফুল, ফলের মতো পণ্য আমদানিতে অনেক ক্ষেত্রে অনাপত্তি দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেননা, এ ধরনের পণ্যের এলসি খোলার খুব কম দিনের মধ্যে পণ্য এসে যায়

ে পৃষ্ঠা ১১ : ক : ৮

সাড়ে পাঁচ মাসে

(১ম পৃষ্ঠার পর)

দায় পরিশোধও করতে হয় দ্রুততম সময়ে। এসব পণ্যের বাইরে অন্য যেকোন ক্ষেত্রে ডলার সংস্থান না করে এলসি না খোলার বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। অধিকাংশ ব্যাংক এখন এলসি খুলছে না। এছাড়া বর্তমানে প্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি খোলা যাচ্ছে না।

বেসরকারি একটি ব্যাংকের ট্রেজারি হেড বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে বিশ্ব অর্থনীতি এখন টালমাটাল। এরই প্রভাবে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সরবরাহ ও চাহিদায় ব্যত্যয় ঘটতে থাকে। গত জুনের শুরুতে বড় ব্যবসায়ীরা আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারলেও ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো এলসি খুলতে সমস্যায় পড়েছে। এখন বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও আমদানি এলসি খুলতে সমস্যায় পড়ছেন।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, দেশের রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কমার কারণে অধিকাংশ ব্যাংকের ডলার সংকটে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০টি ব্যাংকের ফরেন কারেন্সির নেট ওপেন পজিশন নেগেটিভ। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার ব্যাংকে এলসি খোলার তুলনায় ডলার কীভাবে সংরক্ষণ করব সেটা ভাবছি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুন থেকে আমদানি কমতে শুরু করেছে। গতবছর জুনে আমদানি ছিল ৮ হাজার ৩২৩ মিলিয় ডলার। এ বছর ৮ হাজার ৪৮৬ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। গত বছরের জুলাই মাসে আমদানি ছিল ৫ হাজার ২১৯ মিলিয়ন ডলার। এ বছর জুলাই মাসে আমদানি হয়েছে ৬ হাজার ৩৯৩ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল আমদানি ৭ হাজার ৩৯৯ মিলিয়ন ডলার। এ বছরের আগস্টে এসে আমদানি হয়েছে ৬ হাজার ৬১৮ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম। এছাড়া গত বছরের সেপ্টেম্বরে আমদানি ছিল ৮ হাজার ২৭৫ মিলিয়ন ডলার। এ বছর সেপ্টেম্বরে আমদানি হয়েছে ৬ হাজার ৫১০ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ২১ দশমিক ৩২ শতাংশ কম। গত বছর অক্টোবর মাসে আমদানি ছিল ৭ হাজার ৬৯০ মিলিয়ন ডলার। এ বছর অক্টোবর মাসে আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৭৪২ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৮ শতাংশ কম। আর গত বছরের নভেম্বর মাসে আমদানি ছিল ৪ হাজার ৬১৩ মিলিয়ন ডলার। এ বছর নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত আমদানি হয় ১ হাজার ৭০৩ কোটি মিলিয়ন ডলার। যা ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ কম।

তবে নতুন এলসি খোলা কমলেও চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে। গত অর্থবছরের ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ১৫১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ২ হাজার ২৫৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে। সে হিসাবে এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এলসি নিষ্পত্তির চাপ বাড়ায় দেশে ডলার সংকটও বাড়ছে বলে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তবে আশার বাণী শুনিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। গত বৃহস্পতিবার স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ নিয়ে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় সেমিনারে তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারির মধ্যে ডলারের সংকট কেটে যাবে। হুন্ডি প্রতিরোধে রয়েছে কঠোর নজরদারি। ‘চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে অস্বাভাবিকভাবে এলসি খোলা হয়েছে। এটি আমরা কমিয়েছি। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট নেই। তবে দেশে আন্ডার ইনভয়েসিং (কম মূল্য দেখানো) ঠেকাতে আমরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছি।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, কমার্শিয়াল এলসি ওপেন বা খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। স্ব স্ব ব্যাংক তাদের রেমিট্যান্স আয়, ব্যয় সাপেক্ষে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা তহবিল বিবেচনায় তারা ঋণপত্র খুলছে, খুলে যাবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিপূর্ণ গাইডলাইন অনুযায়ী তদারকি করে যাচ্ছে। তবে ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই যাচাই-বাছাই করে এলসি খোলা হচ্ছে। বর্তমান ডলারের যে সমস্যা চলছে আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের চাহিদা ও সরবরাহে অনেকটাই ভারসাম্য অবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২ , ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৯, ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৪

সাড়ে পাঁচ মাসে আমদানির নতুন এলসি কমেছে ৩০ শতাংশ

রমজান আলী

বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের সংকট কাটাতে পণ্য আমদানিতে নানা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। বিলাসী ও কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি করতে নিরুৎসাহিত করা হয়। এতে কমে যায় এলসি খোলা। এতে গত সাড়ে পাঁচ মাসে আমদানি কমেছে ৩০ শতাংশ। আর চলতি নভেম্বরের প্রথম পক্ষে (১-১৬ তারিখ পর্যন্ত) নতুুন এলসির পরিমাণ ৬৩ শতাংশেরও বেশি কমেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ব্যাংকগুলোর ডলার সংকট থাকলেও বেশি দামে প্রবাসী রেমিট্যান্সে কিনে আমদানি দায় পরিশোধ করত। কিন্তু এখন একক রেট হওয়ায় সেই সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে অধিকাংশ ব্যাংকের আমদানির পরিমাণ কমে এসেছে। এছাড়া অধিকাংশ ব্যাংকের ডলার সংকটে থাকায় আমদানি এলসি খোলায় মনোযোগ কম। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার সংকট কাটাতে নানাভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করেছে। গত এপ্রিল অনেক ধরনের শতভাগ থেকে আমদানিতে এলসি মার্জিনের নিয়ম চালু করেছিল। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় আমদানি দায় মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে কমে ৩৪ বিলিয়ন ডলার এসেছে। এ বছর ১৪ জুলাই এলসি খোলার আগে ৫০ লাখ ডলার বা এর বেশি মূল্যের পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এমন কড়াকড়ি করা হয়েছিল।

আমদানি কমাতে শতভাগ এলসি মার্জিন নির্ধারণের পাশাপাশি এলসি খোলার আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনাপত্তি নিতে হচ্ছে। সব ঠিক থাকার পরও কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক বলে দিচ্ছে, এই এলসি খোলা যাবে না। বিশেষ করে গাড়ি, টিভি, ফ্রিজ, ফুল, ফলের মতো পণ্য আমদানিতে অনেক ক্ষেত্রে অনাপত্তি দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেননা, এ ধরনের পণ্যের এলসি খোলার খুব কম দিনের মধ্যে পণ্য এসে যায়

ে পৃষ্ঠা ১১ : ক : ৮

সাড়ে পাঁচ মাসে

(১ম পৃষ্ঠার পর)

দায় পরিশোধও করতে হয় দ্রুততম সময়ে। এসব পণ্যের বাইরে অন্য যেকোন ক্ষেত্রে ডলার সংস্থান না করে এলসি না খোলার বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। অধিকাংশ ব্যাংক এখন এলসি খুলছে না। এছাড়া বর্তমানে প্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি খোলা যাচ্ছে না।

বেসরকারি একটি ব্যাংকের ট্রেজারি হেড বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে বিশ্ব অর্থনীতি এখন টালমাটাল। এরই প্রভাবে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সরবরাহ ও চাহিদায় ব্যত্যয় ঘটতে থাকে। গত জুনের শুরুতে বড় ব্যবসায়ীরা আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারলেও ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো এলসি খুলতে সমস্যায় পড়েছে। এখন বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও আমদানি এলসি খুলতে সমস্যায় পড়ছেন।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, দেশের রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কমার কারণে অধিকাংশ ব্যাংকের ডলার সংকটে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০টি ব্যাংকের ফরেন কারেন্সির নেট ওপেন পজিশন নেগেটিভ। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার ব্যাংকে এলসি খোলার তুলনায় ডলার কীভাবে সংরক্ষণ করব সেটা ভাবছি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুন থেকে আমদানি কমতে শুরু করেছে। গতবছর জুনে আমদানি ছিল ৮ হাজার ৩২৩ মিলিয় ডলার। এ বছর ৮ হাজার ৪৮৬ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। গত বছরের জুলাই মাসে আমদানি ছিল ৫ হাজার ২১৯ মিলিয়ন ডলার। এ বছর জুলাই মাসে আমদানি হয়েছে ৬ হাজার ৩৯৩ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। গত বছরের আগস্ট মাসে ছিল আমদানি ৭ হাজার ৩৯৯ মিলিয়ন ডলার। এ বছরের আগস্টে এসে আমদানি হয়েছে ৬ হাজার ৬১৮ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম। এছাড়া গত বছরের সেপ্টেম্বরে আমদানি ছিল ৮ হাজার ২৭৫ মিলিয়ন ডলার। এ বছর সেপ্টেম্বরে আমদানি হয়েছে ৬ হাজার ৫১০ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ২১ দশমিক ৩২ শতাংশ কম। গত বছর অক্টোবর মাসে আমদানি ছিল ৭ হাজার ৬৯০ মিলিয়ন ডলার। এ বছর অক্টোবর মাসে আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৭৪২ মিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৮ শতাংশ কম। আর গত বছরের নভেম্বর মাসে আমদানি ছিল ৪ হাজার ৬১৩ মিলিয়ন ডলার। এ বছর নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত আমদানি হয় ১ হাজার ৭০৩ কোটি মিলিয়ন ডলার। যা ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ কম।

তবে নতুন এলসি খোলা কমলেও চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে। গত অর্থবছরের ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ১৫১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ২ হাজার ২৫৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে। সে হিসাবে এলসি নিষ্পত্তি বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এলসি নিষ্পত্তির চাপ বাড়ায় দেশে ডলার সংকটও বাড়ছে বলে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তবে আশার বাণী শুনিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। গত বৃহস্পতিবার স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ নিয়ে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় সেমিনারে তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারির মধ্যে ডলারের সংকট কেটে যাবে। হুন্ডি প্রতিরোধে রয়েছে কঠোর নজরদারি। ‘চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে অস্বাভাবিকভাবে এলসি খোলা হয়েছে। এটি আমরা কমিয়েছি। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট নেই। তবে দেশে আন্ডার ইনভয়েসিং (কম মূল্য দেখানো) ঠেকাতে আমরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছি।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, কমার্শিয়াল এলসি ওপেন বা খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। স্ব স্ব ব্যাংক তাদের রেমিট্যান্স আয়, ব্যয় সাপেক্ষে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা তহবিল বিবেচনায় তারা ঋণপত্র খুলছে, খুলে যাবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পরিপূর্ণ গাইডলাইন অনুযায়ী তদারকি করে যাচ্ছে। তবে ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই যাচাই-বাছাই করে এলসি খোলা হচ্ছে। বর্তমান ডলারের যে সমস্যা চলছে আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের চাহিদা ও সরবরাহে অনেকটাই ভারসাম্য অবস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।