আড়ং কর্মীর কাছে চেঞ্জরুমের ৩৭টি গোপন ভিডিও

আড়ংয়ের বনানী শাখায় এক সময় চাকরি করতো সিরাজুল ইসলাম সজীব। এক সহকর্মীর ভিডিও ধারণ ও সামাজিক মাধ্যমে আপলোডের অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বরে তাকে চাকরিচ্যুত করে আড়ং। এর পরপরই জানুয়ারিতে সজীব ২২ বছর বয়সী এক তরুণী স্টাফের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তার কাপড় পরিবর্তনের ভিডিও পাঠিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে। ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয় ওই তরুণীকে। পরবর্তীতে ওই তরুণীর দায়ের করা মামলায় গত ২৫ জানুয়ারি মিরপুরের পূর্ব শেওড়াপাড়া থেকে সজীবকে গ্রেফতার করে এক দিনের রিমান্ডে নেয় ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগ। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে কর্মচারীর চেঞ্জরুমে গোপনে ধারণ করা ৩৭টি ভিডিও উদ্ধার করা হয়। এগুলো আড়ংয়ের বনানী শাখার তরুণী স্টাফদের পোশাক পরিবর্তনের সময় ধারণ করা হয়।

ডিএমপির সাইবার ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম বলেন, সজীবের কাছ থেকে ৩৭টি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। যে ভিডিও উদ্ধার হয়েছে, সেখানে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার তরুণী ছাড়াও আরও চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, দেড় বছর আগ থেকে সজীব বিভিন্ন কৌশলে স্টাফদের চেঞ্জরুমে মোবাইলের ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও করতে থাকেন। এ পর্যন্ত সে অনেকের ভিডিও ধারণ করলেও একজন তরুণীই শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। সজীব ওই তরুণীর ম্যাসেঞ্জারে ছবি পাঠিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয় এবং চাঁদা দাবি করে।

সজীবের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আড়ংয়ের বনানী শাখায় কর্মরত ওই তরুণীকে ১১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৩৭ মিনিটে সজীব তার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার থেকে বার্তা পাঠিয়ে সীমান্ত সৈকত নামে আরেক ফেসবুক আইডি থেকে পাঠানো একটি ভিডিও দেখতে বলে। ওই তরুণী ভিডিওতে দেখেন, আড়ংয়ের বনানী শাখার চতুর্থ তলার কর্মচারীদের চেঞ্জরুমে তার পোশাক পরিবর্তনের দৃশ্য এটি। এ সময় সজীব তাকে ভিডিও করে শরীর দেখাতে বলে এবং তার কথামতো কাজ না করলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।

তদন্ত সূত্র জানায়, সজীবের গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন থানার আমিনাবাদে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ওই নারীকর্মীর ভিডিও করা এবং তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে আড়ংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, সিরাজুল ইসলাম সজীবের বিরুদ্ধে বনানী আউটলেটের একজন বিক্রয় প্রতিনিধি ১৬ জানুয়ারি বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এ ব্যাপারে অভিযোগকারীকে শুরু থেকেই সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছি আমরা। আড়ং যৌন হয়রানিমূলক যে কোন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নীতিগতভাবে সর্বদা কঠোর অবস্থানে।

image
আরও খবর
একনেকে ৪ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯ প্রকল্প অনুমোদন
আগামী জুনে পদ্মা সেতু ডিসেম্বরে মেট্রোরেল উদ্বোধন
চার জেলায় প্রাণ গেল ৭ জনের
ভোট সংশ্লিষ্ট তথ্য জানা যাবে এসএমএসে
আ’লীগ এমপি আফজাল হোসেনের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক
অ্যাসকড সম্মেলন শুরু
চার শিল্পপতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ক্যানসার আক্রান্ত শিশুর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন
শিল্পকলায় বহুবচনের ‘প্রেম বড় কবিরাজ’ মঞ্চায়ন আজ
আজ সিনেমাটোগ্রাফির ওপর কর্মশালা
মুক্তিপণ নিয়ে ৪ পুলিশসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ
না’গঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ আজ
কাপ্তাই ভাইস চেয়ারম্যানের ৩ বছর কারাদণ্ড

বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০ , ১৫ মাঘ ১৪২৬, ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪১

আড়ং কর্মীর কাছে চেঞ্জরুমের ৩৭টি গোপন ভিডিও

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

আড়ংয়ের বনানী শাখায় এক সময় চাকরি করতো সিরাজুল ইসলাম সজীব। এক সহকর্মীর ভিডিও ধারণ ও সামাজিক মাধ্যমে আপলোডের অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বরে তাকে চাকরিচ্যুত করে আড়ং। এর পরপরই জানুয়ারিতে সজীব ২২ বছর বয়সী এক তরুণী স্টাফের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তার কাপড় পরিবর্তনের ভিডিও পাঠিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে। ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয় ওই তরুণীকে। পরবর্তীতে ওই তরুণীর দায়ের করা মামলায় গত ২৫ জানুয়ারি মিরপুরের পূর্ব শেওড়াপাড়া থেকে সজীবকে গ্রেফতার করে এক দিনের রিমান্ডে নেয় ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগ। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে কর্মচারীর চেঞ্জরুমে গোপনে ধারণ করা ৩৭টি ভিডিও উদ্ধার করা হয়। এগুলো আড়ংয়ের বনানী শাখার তরুণী স্টাফদের পোশাক পরিবর্তনের সময় ধারণ করা হয়।

ডিএমপির সাইবার ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম বলেন, সজীবের কাছ থেকে ৩৭টি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। যে ভিডিও উদ্ধার হয়েছে, সেখানে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার তরুণী ছাড়াও আরও চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, দেড় বছর আগ থেকে সজীব বিভিন্ন কৌশলে স্টাফদের চেঞ্জরুমে মোবাইলের ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও করতে থাকেন। এ পর্যন্ত সে অনেকের ভিডিও ধারণ করলেও একজন তরুণীই শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। সজীব ওই তরুণীর ম্যাসেঞ্জারে ছবি পাঠিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয় এবং চাঁদা দাবি করে।

সজীবের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আড়ংয়ের বনানী শাখায় কর্মরত ওই তরুণীকে ১১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৩৭ মিনিটে সজীব তার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার থেকে বার্তা পাঠিয়ে সীমান্ত সৈকত নামে আরেক ফেসবুক আইডি থেকে পাঠানো একটি ভিডিও দেখতে বলে। ওই তরুণী ভিডিওতে দেখেন, আড়ংয়ের বনানী শাখার চতুর্থ তলার কর্মচারীদের চেঞ্জরুমে তার পোশাক পরিবর্তনের দৃশ্য এটি। এ সময় সজীব তাকে ভিডিও করে শরীর দেখাতে বলে এবং তার কথামতো কাজ না করলে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।

তদন্ত সূত্র জানায়, সজীবের গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন থানার আমিনাবাদে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ওই নারীকর্মীর ভিডিও করা এবং তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে আড়ংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, সিরাজুল ইসলাম সজীবের বিরুদ্ধে বনানী আউটলেটের একজন বিক্রয় প্রতিনিধি ১৬ জানুয়ারি বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এ ব্যাপারে অভিযোগকারীকে শুরু থেকেই সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছি আমরা। আড়ং যৌন হয়রানিমূলক যে কোন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে নীতিগতভাবে সর্বদা কঠোর অবস্থানে।