দেশীয় কয়লা উত্তোলন থেকে দূরে থাকা আত্মঘাতী নীতি

গ্যাসের কারণে কমদামে বিদ্যুৎ পাওয়া গেলেও গ্যাস ফুরিয়ে আসছে। কয়লা বিদ্যুতের সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে পারত। দেশীয় কয়লা উত্তোলন থেকে সরে থাকা নীতি আত্মঘাতী হচ্ছে। কারণ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ কয়লাভিত্তিক সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন জরুরি। গতকাল পাক্ষিক ম্যাগাজিন ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’ আয়োজিত ‘২০২১ সালের এনার্জি চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, বাংলাদেশের ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপ্পা) প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম প্রমুখ।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, গ্যাস ব্যবহারের কারণে সবচেয়ে কমদামে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। কয়লা ব্যবহার না করার কারণে দাম বেশি পড়ছে। কয়লা নিয়ে কথাও হচ্ছে না। ২০ বছর পর হয়তো কেউ কয়লা তুলতে পারবে না।

অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় আরএমআইটি’র অধ্যাপক ড. ফিরোজ আলম বলেন, আন্তঃদেশীয় সমঝোতা থাকা উচিত। এতে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, নেপাল থাকবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ হচ্ছে সবচেয়ে সাশ্র্রয়ী। কয়লা ২৫ শতাংশের নিচে যেন না নামে। যদি কয়লা বাদ দিয়ে শুধু অন্যান্য এনার্জি নির্ভর হই তাহলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘চলতি বছরেই ৫০ শতাংশ অটোমেশন হবে। সবাই কোয়ালিটি ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে, গ্রিড বিদ্যুতে শিল্পের আস্থা ফিরবে। আমরা চাই সঞ্চালনেও প্রাইভেট কোম্পানি আসুক। নতুন পলিসিতে এসব বিষয় উন্মুক্ত থাকবে।’

বিপ্পার প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম বলেন, আমাদের ১৫-১৭’শ মেগাওয়াট ক্ষমতার কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র অনেক পুরনো যা বর্তমানে যুগের বিবেচনায় চলে না। ক্যাপটিভ ও অন্যান্য বাদ দিলে প্রকৃত পক্ষে ১৫ হাজার মেগাওয়াট দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে। গণমাধ্যমে সমালোচনা হয়- বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়েছে কিনা। আমি মনে করি সঠিক এবং যথাযথ রয়েছে। সঞ্চালন ও বিতরণেও প্রাইভেটাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সরকার যদি সহায়তা করে তাহলে অনেক বিনিয়োগকারী এগিয়ে আসবে।

প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, গ্যাস উত্তোলনে অনেক পিছিয়ে, কারণ সিদ্ধান্তহীনতা। লো-প্রাইস এবং মাল্ট্রিক্লেইন সার্ভের অভাবে অফসোরে বেশি অগ্রসর হতে পারিনি। হাইপ্রেসার জোনে বাপেক্স যেখানে পারছে না সেখানে পিএসসির মাধ্যমে করা যেতে পারে। কয়লাকে বাদ দিলে চলবে না। এটি এখনও সাশ্রয়ী এনার্জি। তবে এটির মিক্স কত হবে। নিজস্ব কয়লা ব্যবহার অবশ্যই করতে হবে।

অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, যদি আমরা ভারতেও হোলসেল মার্কেটে অংশ নিতে পারি তাহলে কমদামে বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। আমাদের মাত্র দুটি লাইন। অবকাঠামো উন্নয়ন করলে এটি করা সম্ভব। ভারতে সোলার ৩ টাকা ইউনিটে বিক্রি হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে কমপক্ষে আরও দুই-তিনটি পয়েন্ট বাড়ানো উচিত। পায়রা হাব, মাতারবাড়ী হাব হচ্ছে, পরমাণু বিদ্যুৎ হচ্ছে। অটোমেডেট সঞ্চালন সিস্টেম না হলে এসব বিদ্যুৎ নেয়া যাবে না। শিল্পে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে হবে।

আরও খবর
নির্বাচন এলে অভিযোগের বাক্স খুলে বসে বিএনপি তথ্যমন্ত্রী
বরিশালে করোনা পরীক্ষার আরটি পিসিআর ল্যাব আবারও বন্ধ
বিতর্কিতরা যাতে কমিটিতে আসতে না পারে দল সচেষ্ট থাকবে কাদের
বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা পৌঁছে দিয়েছি ১৪৪টি দেশে : নাজমুন
নারী নেত্রী আয়শা খানমের জীবনাবসান
গত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাংলা সাহিত্যিক শওকত ওসমান
নাট্যব্যক্তিত্ব মীর মুজতবা আলীর জন্মোৎসব
দিনাজপুরে শতবর্ষী মঞ্চে নাটক ‘ক্ষত-বিক্ষত’
বাঁশখালীতে বঙ্গবন্ধুর নামে সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার দাবি
কম্পিউটার অপারেটর থেকে এজিএম : আড়াই বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি
আশ্রয়হীন ১৫৩৪ পরিবার পাচ্ছে স্থায়ী ঠিকানা
ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন গৃহবধূ
গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে একদলীয় শাসন চলছে ফখরুল

রবিবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২১ , ১৯ পৌষ ১৪২৭, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

দেশীয় কয়লা উত্তোলন থেকে দূরে থাকা আত্মঘাতী নীতি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

গ্যাসের কারণে কমদামে বিদ্যুৎ পাওয়া গেলেও গ্যাস ফুরিয়ে আসছে। কয়লা বিদ্যুতের সাশ্রয়ী মূল্য নিশ্চিত করতে পারত। দেশীয় কয়লা উত্তোলন থেকে সরে থাকা নীতি আত্মঘাতী হচ্ছে। কারণ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ কয়লাভিত্তিক সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন জরুরি। গতকাল পাক্ষিক ম্যাগাজিন ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’ আয়োজিত ‘২০২১ সালের এনার্জি চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, বাংলাদেশের ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপ্পা) প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম প্রমুখ।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, গ্যাস ব্যবহারের কারণে সবচেয়ে কমদামে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। কয়লা ব্যবহার না করার কারণে দাম বেশি পড়ছে। কয়লা নিয়ে কথাও হচ্ছে না। ২০ বছর পর হয়তো কেউ কয়লা তুলতে পারবে না।

অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় আরএমআইটি’র অধ্যাপক ড. ফিরোজ আলম বলেন, আন্তঃদেশীয় সমঝোতা থাকা উচিত। এতে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, নেপাল থাকবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ হচ্ছে সবচেয়ে সাশ্র্রয়ী। কয়লা ২৫ শতাংশের নিচে যেন না নামে। যদি কয়লা বাদ দিয়ে শুধু অন্যান্য এনার্জি নির্ভর হই তাহলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘চলতি বছরেই ৫০ শতাংশ অটোমেশন হবে। সবাই কোয়ালিটি ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে, গ্রিড বিদ্যুতে শিল্পের আস্থা ফিরবে। আমরা চাই সঞ্চালনেও প্রাইভেট কোম্পানি আসুক। নতুন পলিসিতে এসব বিষয় উন্মুক্ত থাকবে।’

বিপ্পার প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম বলেন, আমাদের ১৫-১৭’শ মেগাওয়াট ক্ষমতার কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র অনেক পুরনো যা বর্তমানে যুগের বিবেচনায় চলে না। ক্যাপটিভ ও অন্যান্য বাদ দিলে প্রকৃত পক্ষে ১৫ হাজার মেগাওয়াট দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে। গণমাধ্যমে সমালোচনা হয়- বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়েছে কিনা। আমি মনে করি সঠিক এবং যথাযথ রয়েছে। সঞ্চালন ও বিতরণেও প্রাইভেটাইজেশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সরকার যদি সহায়তা করে তাহলে অনেক বিনিয়োগকারী এগিয়ে আসবে।

প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, গ্যাস উত্তোলনে অনেক পিছিয়ে, কারণ সিদ্ধান্তহীনতা। লো-প্রাইস এবং মাল্ট্রিক্লেইন সার্ভের অভাবে অফসোরে বেশি অগ্রসর হতে পারিনি। হাইপ্রেসার জোনে বাপেক্স যেখানে পারছে না সেখানে পিএসসির মাধ্যমে করা যেতে পারে। কয়লাকে বাদ দিলে চলবে না। এটি এখনও সাশ্রয়ী এনার্জি। তবে এটির মিক্স কত হবে। নিজস্ব কয়লা ব্যবহার অবশ্যই করতে হবে।

অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, যদি আমরা ভারতেও হোলসেল মার্কেটে অংশ নিতে পারি তাহলে কমদামে বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। আমাদের মাত্র দুটি লাইন। অবকাঠামো উন্নয়ন করলে এটি করা সম্ভব। ভারতে সোলার ৩ টাকা ইউনিটে বিক্রি হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে কমপক্ষে আরও দুই-তিনটি পয়েন্ট বাড়ানো উচিত। পায়রা হাব, মাতারবাড়ী হাব হচ্ছে, পরমাণু বিদ্যুৎ হচ্ছে। অটোমেডেট সঞ্চালন সিস্টেম না হলে এসব বিদ্যুৎ নেয়া যাবে না। শিল্পে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে হবে।