মেট্রোরেল চালু হবে ২০২১ সালে

ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসন ও গণপরিবহনের সক্ষমতা বাড়াতে ২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি মেট্রো রুটের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর উত্তরা-মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের কারণে সাময়িক অসুবিধা ‘মেনে নেয়ায়’ নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নির্মাণ কাজের জন্য রাস্তায় সেক্রিফাইস করতে হচ্ছে। দীর্ঘস্থায়ী স্বস্তির জন্য সাময়িক দুর্ভোগ মেনে নিতে হয়। ২০৩০ সাল পর্যন্ত এ দুর্ভোগ মেনে নিতে হবে, তবে একটি লাইন শুরু হলে আস্তে আস্তে ভোগান্তিও কমতে থাকবে। সিঙ্গাপুরে এসব কাজে ২৫ বছর লেগে গেছে। আমাদের দেশে ১৮ বছরের কম সময়েই হবে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেল নির্মাণের অগ্রগতি বিষয়ক সভা শেষ এ কথা জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, চলমান মেট্রোরেল রুট ৬-এর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৯ সালের মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত এবং ২০২০ সালের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের পূর্ত কাজ শেষ হবে। আমরা আশা করছি, ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে মেট্রো রুট। মেট্রো রুট-১ এর কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। প্রায় ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রুটে থাকছে দুটি অংশ। প্রথম অংশ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয় অংশ পূর্বাচল রুট, যা নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত। বিমানবন্দর রুটে ২০ কিলোমিটার বাংলাদেশের প্রথম পাতাল রেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মেট্রোরেলের ছয়টি রুটের কাজ শেষ হবে। তখন যানজটের ভোগান্তি অনেকটা কমে আসবে বলে আশা করা যায়। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ২০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-১ এর কাজ শীঘ্রই শুরু করা যাবে। এ রুটেই দেশের প্রথম পাতাল রেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল করা হবে। এর খরচ হবে পদ্মা সেতু ও এমআরটি লাইন-৬ এর খরচের সমান।

সড়ক মন্ত্রী বলেন, মেট্রো রুট ১ এর সম্ভাব্যতা যাচাইসহ বিভিন্ন সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। মূল নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ প্রান্তে। এ রুটে নির্মাণকাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের মধ্যে। এ রুটের সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে একটি অংশের বা প্রায় চার হাজার কোটি টাকা লোন এগ্রিমেন্ট জাপানে সফররত প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। মহানগর পূর্ব থেকে পশ্চিমে সংযোগ বাড়াতে মেট্রোরেল রুট ৫ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি হবে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ। সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ রুটে প্রায় ১৪ কিলোমিটার হবে পাতাল রেল। রুট ৫ এর নর্দান অংশের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। রুট ৫ এর সাউদার্ন অংশ হবে গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত; যার প্রায় ১৩ কিলোমিটার হবে পাতাল রেল।

ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-৬) প্রকল্পের আওতায় এরুটের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জুনে। জাপানি সহায়তায় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মেট্রোরেলের এই পথে প্রতি ঘণ্টায় উভয়দিকে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। এর ফলে সড়কে চাপ আর যানজটের ভোগান্তিও কমবে।

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০১৯ , ১৬ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৪ রমজান ১৪৪০

মেট্রোরেল চালু হবে ২০২১ সালে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসন ও গণপরিবহনের সক্ষমতা বাড়াতে ২০৩০ সালের মধ্যে ৬টি মেট্রো রুটের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর উত্তরা-মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের কারণে সাময়িক অসুবিধা ‘মেনে নেয়ায়’ নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নির্মাণ কাজের জন্য রাস্তায় সেক্রিফাইস করতে হচ্ছে। দীর্ঘস্থায়ী স্বস্তির জন্য সাময়িক দুর্ভোগ মেনে নিতে হয়। ২০৩০ সাল পর্যন্ত এ দুর্ভোগ মেনে নিতে হবে, তবে একটি লাইন শুরু হলে আস্তে আস্তে ভোগান্তিও কমতে থাকবে। সিঙ্গাপুরে এসব কাজে ২৫ বছর লেগে গেছে। আমাদের দেশে ১৮ বছরের কম সময়েই হবে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেল নির্মাণের অগ্রগতি বিষয়ক সভা শেষ এ কথা জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, চলমান মেট্রোরেল রুট ৬-এর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৯ সালের মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত এবং ২০২০ সালের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের পূর্ত কাজ শেষ হবে। আমরা আশা করছি, ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে মেট্রো রুট। মেট্রো রুট-১ এর কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। প্রায় ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রুটে থাকছে দুটি অংশ। প্রথম অংশ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয় অংশ পূর্বাচল রুট, যা নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত। বিমানবন্দর রুটে ২০ কিলোমিটার বাংলাদেশের প্রথম পাতাল রেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মেট্রোরেলের ছয়টি রুটের কাজ শেষ হবে। তখন যানজটের ভোগান্তি অনেকটা কমে আসবে বলে আশা করা যায়। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ২০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-১ এর কাজ শীঘ্রই শুরু করা যাবে। এ রুটেই দেশের প্রথম পাতাল রেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল করা হবে। এর খরচ হবে পদ্মা সেতু ও এমআরটি লাইন-৬ এর খরচের সমান।

সড়ক মন্ত্রী বলেন, মেট্রো রুট ১ এর সম্ভাব্যতা যাচাইসহ বিভিন্ন সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। মূল নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ প্রান্তে। এ রুটে নির্মাণকাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের মধ্যে। এ রুটের সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে একটি অংশের বা প্রায় চার হাজার কোটি টাকা লোন এগ্রিমেন্ট জাপানে সফররত প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। মহানগর পূর্ব থেকে পশ্চিমে সংযোগ বাড়াতে মেট্রোরেল রুট ৫ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি হবে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ। সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ রুটে প্রায় ১৪ কিলোমিটার হবে পাতাল রেল। রুট ৫ এর নর্দান অংশের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। রুট ৫ এর সাউদার্ন অংশ হবে গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত; যার প্রায় ১৩ কিলোমিটার হবে পাতাল রেল।

ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি-৬) প্রকল্পের আওতায় এরুটের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জুনে। জাপানি সহায়তায় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। মেট্রোরেলের এই পথে প্রতি ঘণ্টায় উভয়দিকে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। এর ফলে সড়কে চাপ আর যানজটের ভোগান্তিও কমবে।