৫ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন আজ শুরু

৩০০টি প্রস্তাব থাকছে

৩০০টি প্রস্তাব নিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। এসব প্রস্তাবের অনেকগুলোই পুরনো এবং ইউএনও, ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি সংক্রান্ত; তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। বিগত ডিসি সম্মেলনে যেসব প্রস্তাব সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে সেসব বিষয়ও এবার নানাভাবে সামনে আনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল ৯টায় তার কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৯’-এর উদ্বোধন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত ডিসি সম্মেলন শেষ হবে ১৮ জুলাই।

ডিসিদের পাঠানো প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ন্যূনতম চারজন ডিসি নিজেদের নিরাপত্তায় এক প্লাটুন সশস্ত্র পুলিশ ফোর্স দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। কক্সবাজার, কুমিল্লা, চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাটের ডিসি এই প্রস্তাব করেছেন। বিগত সম্মেলনেও নানাভাবে এই ধরনের প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ডিসিরা চাইলে তাৎক্ষণিক পুলিশ ফোর্স পাচ্ছেন। জেলা পুলিশ সুপাররাও ডিসিদের সহযোগিতা করছেন। জেলায় কর্মরত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার এখতিয়ার ডিসিদের প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। আর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিবের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চেয়েছেন নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ডিসি। এসব প্রস্তাবও বিগত সময়ে ডিসি সম্মেলনে করা হয়েছিল। মৌলভীবাজারের ডিসি ইউএনওদের বাসভবনে সান্ধ্যকালীন অফিস চালুর প্রস্তাব করেছেন।

অন্য প্রস্তাবের মধ্যে, জ¦ালানি তেল ব্যবহারের সিলিং (সর্বোচ্চ সীমা) তুলে দেয়া, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ মোবাইল কোর্ট আইনের তফসিলভুক্তি করা, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানদের স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণ, বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি) এবং বিএড কলেজ বন্ধ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের (পিআইও) এসিআর ইউএনওদের হাতে দেয়া এবং ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার হলে প্যানেল চেয়ারম্যানকে আর্থিক ক্ষমতা দেয়ারও প্রস্তাব করেছেন ডিসিরা।

এছাড়াও জেলা-উপজেলায় আয়কর আদায়, ফৌজদারি অপরাধ বিচারের ক্ষমতা, এনজিও কার্যক্রম তদারকি, ডিপিপি (প্রকল্প দলিল তৈরি) প্রণয়ন, মোবাইল কোর্টের অধীনে নতুন নতুন আইন অন্তর্ভুক্তিকরণ, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে ডিসিদের সভাপতি করা, উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে ইউএনওদের সভাপতি করা এবং কোটি টাকার থোক বরাদ্দ, প্রশাসন ক্যাডারদের জন্য নতুন ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন ডিসিরা। এর মধ্যে উপরের পাঁচটি প্রস্তাবই বিগত সময়ে বিভিন্ন ডিসি সম্মেলনে করা হয়েছিল। কিন্তু ওইসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি।

নোয়াখালীর ডিসি সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর অধীনে পরিচালিত ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ‘জনপ্রশাসন ব্যাংক’ নামে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন। আর নরসিংদীর ডিসি সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ‘বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন।

বরিশালের ডিসি নিজেদের ব্যবহারের জন্য জ্বালানি খরচের সিলিং তুলে দেয়ার প্রস্তাব করে বলেছেন, জনগণের চাহিদার সঙ্গে ডিসিদের দায়িত্ব-কর্তব্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য জ্বালানি খরচও বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ২০০ লিটার জ্বালানি পান ডিসিরা।

আর জোরালোভাবে ইউএনওদের জন্য মূল বেতনের সঙ্গে ঝুঁকিভাতা দেয়ার প্রস্তাবটি করেছেন বেশ কয়েকজন ডিসি। এ বিষয়ে নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, পটুয়াখালী, ফরিদপুর ও ঝালকাঠির ডিসি’র যুক্তি হলো- ইউএনও’রা তাদের অধিক্ষেত্রের মধ্যে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করে থাকেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বিভিন্ন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইউএনওদের।

এছাড়াও ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন, দারিদ্র্য বিমোচন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার, শিক্ষার মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং উন্নয়ন কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও সমন্বয়Ñ এ বিষয়গুলো ডিসি সম্মেলনের আলোচনায় স্থান পাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এবার ডিসি সম্মেলনে মোট ২৯টি অধিবেশন হবে। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্যঅধিবেশন ২৪টি। এছাড়া একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, একটি মুক্ত আলোচনা, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠান হবে।

এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছাড়া মোট ৫৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করছে। কার্যঅধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও অন্য সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। অধিবেশনগুলো হবে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে। কার্যঅধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, সরকারের নীতিনির্ধারক ও ডিসিদের মধ্যে সরাসরি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য প্রতি বছর এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এবার এই সম্মেলনে প্রথমবারের মতো প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনী প্রধান, জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে ডিসিদের বৈঠক হবে।

জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা এবার ৩৩৩টি প্রস্তাব পাঠিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। এছাড়াও ডিসিদের তাৎক্ষণিক যদি কোন প্রস্তাব থাকে সেটি অধিবেশনে উপস্থাপন করতে পারেন। এ বছর সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ-সংক্রান্ত, এ বিভাগ-সংক্রান্ত প্রস্তাব ২৯টি। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত ২৬টি ও ভূমি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত ২০টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে।

রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯ , ৩০ আষাঢ় ১৪২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪০

৫ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন আজ শুরু

৩০০টি প্রস্তাব থাকছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

৩০০টি প্রস্তাব নিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। এসব প্রস্তাবের অনেকগুলোই পুরনো এবং ইউএনও, ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি সংক্রান্ত; তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। বিগত ডিসি সম্মেলনে যেসব প্রস্তাব সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে সেসব বিষয়ও এবার নানাভাবে সামনে আনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল ৯টায় তার কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৯’-এর উদ্বোধন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত ডিসি সম্মেলন শেষ হবে ১৮ জুলাই।

ডিসিদের পাঠানো প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ন্যূনতম চারজন ডিসি নিজেদের নিরাপত্তায় এক প্লাটুন সশস্ত্র পুলিশ ফোর্স দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। কক্সবাজার, কুমিল্লা, চুয়াডাঙ্গা ও বাগেরহাটের ডিসি এই প্রস্তাব করেছেন। বিগত সম্মেলনেও নানাভাবে এই ধরনের প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ডিসিরা চাইলে তাৎক্ষণিক পুলিশ ফোর্স পাচ্ছেন। জেলা পুলিশ সুপাররাও ডিসিদের সহযোগিতা করছেন। জেলায় কর্মরত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার এখতিয়ার ডিসিদের প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। আর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিবের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা চেয়েছেন নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ডিসি। এসব প্রস্তাবও বিগত সময়ে ডিসি সম্মেলনে করা হয়েছিল। মৌলভীবাজারের ডিসি ইউএনওদের বাসভবনে সান্ধ্যকালীন অফিস চালুর প্রস্তাব করেছেন।

অন্য প্রস্তাবের মধ্যে, জ¦ালানি তেল ব্যবহারের সিলিং (সর্বোচ্চ সীমা) তুলে দেয়া, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ মোবাইল কোর্ট আইনের তফসিলভুক্তি করা, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানদের স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণ, বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি) এবং বিএড কলেজ বন্ধ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের (পিআইও) এসিআর ইউএনওদের হাতে দেয়া এবং ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার হলে প্যানেল চেয়ারম্যানকে আর্থিক ক্ষমতা দেয়ারও প্রস্তাব করেছেন ডিসিরা।

এছাড়াও জেলা-উপজেলায় আয়কর আদায়, ফৌজদারি অপরাধ বিচারের ক্ষমতা, এনজিও কার্যক্রম তদারকি, ডিপিপি (প্রকল্প দলিল তৈরি) প্রণয়ন, মোবাইল কোর্টের অধীনে নতুন নতুন আইন অন্তর্ভুক্তিকরণ, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে ডিসিদের সভাপতি করা, উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে ইউএনওদের সভাপতি করা এবং কোটি টাকার থোক বরাদ্দ, প্রশাসন ক্যাডারদের জন্য নতুন ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন ডিসিরা। এর মধ্যে উপরের পাঁচটি প্রস্তাবই বিগত সময়ে বিভিন্ন ডিসি সম্মেলনে করা হয়েছিল। কিন্তু ওইসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি।

নোয়াখালীর ডিসি সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর অধীনে পরিচালিত ব্যাংক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ‘জনপ্রশাসন ব্যাংক’ নামে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন। আর নরসিংদীর ডিসি সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ‘বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন।

বরিশালের ডিসি নিজেদের ব্যবহারের জন্য জ্বালানি খরচের সিলিং তুলে দেয়ার প্রস্তাব করে বলেছেন, জনগণের চাহিদার সঙ্গে ডিসিদের দায়িত্ব-কর্তব্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য জ্বালানি খরচও বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ২০০ লিটার জ্বালানি পান ডিসিরা।

আর জোরালোভাবে ইউএনওদের জন্য মূল বেতনের সঙ্গে ঝুঁকিভাতা দেয়ার প্রস্তাবটি করেছেন বেশ কয়েকজন ডিসি। এ বিষয়ে নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, পটুয়াখালী, ফরিদপুর ও ঝালকাঠির ডিসি’র যুক্তি হলো- ইউএনও’রা তাদের অধিক্ষেত্রের মধ্যে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করে থাকেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বিভিন্ন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয় ইউএনওদের।

এছাড়াও ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন, দারিদ্র্য বিমোচন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার, শিক্ষার মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন এবং উন্নয়ন কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও সমন্বয়Ñ এ বিষয়গুলো ডিসি সম্মেলনের আলোচনায় স্থান পাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এবার ডিসি সম্মেলনে মোট ২৯টি অধিবেশন হবে। এর মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্যঅধিবেশন ২৪টি। এছাড়া একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, একটি মুক্ত আলোচনা, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠান হবে।

এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছাড়া মোট ৫৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করছে। কার্যঅধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও অন্য সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। অধিবেশনগুলো হবে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে। কার্যঅধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, সরকারের নীতিনির্ধারক ও ডিসিদের মধ্যে সরাসরি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়ার জন্য প্রতি বছর এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এবার এই সম্মেলনে প্রথমবারের মতো প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনী প্রধান, জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে ডিসিদের বৈঠক হবে।

জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা এবার ৩৩৩টি প্রস্তাব পাঠিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। এছাড়াও ডিসিদের তাৎক্ষণিক যদি কোন প্রস্তাব থাকে সেটি অধিবেশনে উপস্থাপন করতে পারেন। এ বছর সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ-সংক্রান্ত, এ বিভাগ-সংক্রান্ত প্রস্তাব ২৯টি। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত ২৬টি ও ভূমি মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত ২০টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে।