আইনি নোটিশ পেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বাসায় ফল নিয়ে মেয়র খোকন

আইনি নোটিশ পেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বাসায় গেলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ওই আইনজীবীর বাসায় যান তিনি। মেয়রের আগমন উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকেই খিলগাঁওয়ের একতা সড়কে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রাস্তা পরিষ্কার শুরু করে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম।

তানজিম আল ইসলামের স্ত্রী সাদেকুন নাহার ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর ডেঙ্গু ও এডিস মশা নিধনে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ডিএসসিসি মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে গত বৃহস্পতিবার আইনি নোটিশ পাঠান এই আইনজীবী।

অ্যাডভোকেট তানজিম জানান, মেয়রের আগমন উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকেই খিলগাঁওয়ের একতা সড়কে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রাস্তা পরিষ্কার শুরু করে। বেলা সাড়ে ১১টায় মেয়র সাঈদ খোকন আইনজীবীর বাসার সামনে পৌঁছান। এরপর তিনি সরাসরি তানজিমের বাসায় ফল নিয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় সাদেকুন নাহারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাদেকুন নাহার অসুস্থতার অভিজ্ঞতার কথা মেয়রকে জানান। এই এলাকায় আর বেশিদিন থাকবেন না বলেও মেয়রকে জানান তিনি। এ সময় অ্যাডভোকেট তানজিম মেয়রকে মশা নিধনে সব বিভাগের সমন্বয়ের পরামর্শ দেন। সাঈদ খোকন প্রায় আধঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন।

আইনজীবীর বাসা থেকে বেরিয়ে মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডেঙ্গুর প্রকোপ বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বেশি। নগর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে। সব শক্তি দিয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলার জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্মানিত নাগরিকদের আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা সতর্ক থাকবেন। নাগরিকের সতর্কতা এবং কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে ডেঙ্গুমুক্ত শহর উপহার দিতে পারব বলে আশা করি। নাগরিকদের বলব, ভয়ের কিছু নেই, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই; আমরা আপনাদের পাশে আছি।’

মেয়র বলেন, আমাদের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ এসেছে। বিষয়টির আইনি প্রক্রিয়ার ব্যাপার রয়েছে। এটি আইন বিভাগের বিষয়। যে নাগরিক ক্ষুব্ধ হয়েছেন, মেয়র হিসেবে তার সঙ্গে থাকা, দেখা করা আমার নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। দায়িত্ববোধ থেকে চলে এসেছি। আমার বোনকে দেখে এসেছি। তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছি, তাকে আশ্বস্ত করেছি, সবাই মিলে অচিরেই ডেঙ্গুমুক্ত শহর গড়ে তুলব।’

এ সময় অ্যাডভোকেট তানজিম বলেন, ‘মেয়র এসেছেন তার নৈতিক দায়িত্বের জায়গা থেকে। আমার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই। ৫০ লাখ টাকার বিষয়টি ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেখলে হবে না, প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে দেখতে হবে।’

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকালে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম লিগ্যাল নোটিশ পাঠান দক্ষিণ সিটি মেয়রকে। নোটিশে উল্লেখ করেন, ‘২৯ জুন আমার স্ত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর পাঁচদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি কিছুটা সুস্থ হন। যেহেতু এডিস মশা নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পুরোপুরি ব্যর্থ, তাই এর দায়ভার তাদের (মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) নিতে হবে। এ কারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এই নোটিশ পাঠানো হলো।’

ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি আগামী তিন দিনের মধ্যে খিলগাঁও এক নম্বর ওয়ার্ডে মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। এসব দাবি না মানলে যথাযথ ক্ষতিপূরণ আদায়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯ , ৩০ আষাঢ় ১৪২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪০

আইনি নোটিশ পেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বাসায় ফল নিয়ে মেয়র খোকন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আইনি নোটিশ পেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বাসায় গেলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ওই আইনজীবীর বাসায় যান তিনি। মেয়রের আগমন উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকেই খিলগাঁওয়ের একতা সড়কে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রাস্তা পরিষ্কার শুরু করে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম।

তানজিম আল ইসলামের স্ত্রী সাদেকুন নাহার ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর ডেঙ্গু ও এডিস মশা নিধনে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ডিএসসিসি মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে গত বৃহস্পতিবার আইনি নোটিশ পাঠান এই আইনজীবী।

অ্যাডভোকেট তানজিম জানান, মেয়রের আগমন উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকেই খিলগাঁওয়ের একতা সড়কে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা রাস্তা পরিষ্কার শুরু করে। বেলা সাড়ে ১১টায় মেয়র সাঈদ খোকন আইনজীবীর বাসার সামনে পৌঁছান। এরপর তিনি সরাসরি তানজিমের বাসায় ফল নিয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় সাদেকুন নাহারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাদেকুন নাহার অসুস্থতার অভিজ্ঞতার কথা মেয়রকে জানান। এই এলাকায় আর বেশিদিন থাকবেন না বলেও মেয়রকে জানান তিনি। এ সময় অ্যাডভোকেট তানজিম মেয়রকে মশা নিধনে সব বিভাগের সমন্বয়ের পরামর্শ দেন। সাঈদ খোকন প্রায় আধঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন।

আইনজীবীর বাসা থেকে বেরিয়ে মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডেঙ্গুর প্রকোপ বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বেশি। নগর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে। সব শক্তি দিয়ে ডেঙ্গু মোকাবিলার জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্মানিত নাগরিকদের আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা সতর্ক থাকবেন। নাগরিকের সতর্কতা এবং কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে ডেঙ্গুমুক্ত শহর উপহার দিতে পারব বলে আশা করি। নাগরিকদের বলব, ভয়ের কিছু নেই, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই; আমরা আপনাদের পাশে আছি।’

মেয়র বলেন, আমাদের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ এসেছে। বিষয়টির আইনি প্রক্রিয়ার ব্যাপার রয়েছে। এটি আইন বিভাগের বিষয়। যে নাগরিক ক্ষুব্ধ হয়েছেন, মেয়র হিসেবে তার সঙ্গে থাকা, দেখা করা আমার নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। দায়িত্ববোধ থেকে চলে এসেছি। আমার বোনকে দেখে এসেছি। তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছি, তাকে আশ্বস্ত করেছি, সবাই মিলে অচিরেই ডেঙ্গুমুক্ত শহর গড়ে তুলব।’

এ সময় অ্যাডভোকেট তানজিম বলেন, ‘মেয়র এসেছেন তার নৈতিক দায়িত্বের জায়গা থেকে। আমার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই। ৫০ লাখ টাকার বিষয়টি ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেখলে হবে না, প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে দেখতে হবে।’

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকালে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম লিগ্যাল নোটিশ পাঠান দক্ষিণ সিটি মেয়রকে। নোটিশে উল্লেখ করেন, ‘২৯ জুন আমার স্ত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর পাঁচদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি কিছুটা সুস্থ হন। যেহেতু এডিস মশা নিধনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পুরোপুরি ব্যর্থ, তাই এর দায়ভার তাদের (মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) নিতে হবে। এ কারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এই নোটিশ পাঠানো হলো।’

ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি আগামী তিন দিনের মধ্যে খিলগাঁও এক নম্বর ওয়ার্ডে মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। এসব দাবি না মানলে যথাযথ ক্ষতিপূরণ আদায়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।