রশি দিয়ে ৮ তলা থেকে নামতে গিয়ে আহত ২ শিশু

দুই শিশু গৃহকর্মী মো. স্বপন (১১) ও মো. শরীফ (১২)। এ দুজনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর। রাজধানী ধানমন্ডির ১৪/এ সড়কের ২৮ নম্বর বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিল এরা। ওই বাড়ির গৃহকর্তা গোলাম কিবরিয়া কাস্টমসের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা। স্বপন ও শরীফ কাজে ভুল করলে কিংবা কাজ করতে দেরি হলেই গোলাম কিবরিয়া, স্ত্রী ও তাদের মেয়ে এদের মারধর করত। মারধরে কখনও কখনও রক্তাক্ত হতো দুই শিশু। নির্যাতন সইতে না পেরে মূল দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে তারা। কিন্তু ধরা খেলে সিঁড়িতেই মারধর করা হয় তাদের। গতকাল সকালে আটতলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে রশি বেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় রশি থেকে পড়ে শরীফ গুরুতর আহত হয়েছে। আর রশিতে ঝুলে থাকা স্বপনকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

ধানমন্ডি থানার ওসি (তদন্ত) পারভেজ ইসলাম বলেন, দুই শিশুর হাতে ও পায়ে আগে মারধরের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে ছেলে কখনও মারধর করেনি বলে দুই শিশু জানিয়েছে। তিনজনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তারা সার্ভেন্টরুমের টয়লেটের ভেন্টিলেটর দিয়ে বের হয়। পরে রশি বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে। এতে তারা আহত হয়।

ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল্লাহ হিল কাফী বলেন, দুজনের মধ্যে একজন দেড় বছর, আরেকজন ৮-১০ দিন আগে ওই বাসায় কাজে যোগ দিয়েছে। তাদের নির্যাতন করা হতো। আমরা তাদের শরীরে মারধর ও নির্যাতনের আলামতও পেয়েছি। তারা টয়লেটের অ্যাডজাস্ট ফ্যান খুলে কাপড় শুকানোর রশি দিয়ে নামার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে একজন পাঁচতলা থেকে দ্বিতীয়তলায় পড়ে যায়। আরেকজন রশিতে ঝুলতে থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, ভিকটিমদের অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে। তারা ঢাকায় আসছেন, তারা অবশ্যই মামলা করবেন। মামলা হলে গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীসহ জড়িতদের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। ঘটনার পরপর গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রী ছেলে ও মেয়েকে আটক করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দফতর কন্ট্রোলরুমের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিবেন বলেন, আহত শিশু গিয়ে শরীফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢামেক চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরীফের একটি পা ভেঙে গেছে। তার অবস্থা গুরুতর।

রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯ , ৩০ আষাঢ় ১৪২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪০

নির্যাতন সইতে না পেরে

রশি দিয়ে ৮ তলা থেকে নামতে গিয়ে আহত ২ শিশু

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দুই শিশু গৃহকর্মী মো. স্বপন (১১) ও মো. শরীফ (১২)। এ দুজনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর। রাজধানী ধানমন্ডির ১৪/এ সড়কের ২৮ নম্বর বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিল এরা। ওই বাড়ির গৃহকর্তা গোলাম কিবরিয়া কাস্টমসের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা। স্বপন ও শরীফ কাজে ভুল করলে কিংবা কাজ করতে দেরি হলেই গোলাম কিবরিয়া, স্ত্রী ও তাদের মেয়ে এদের মারধর করত। মারধরে কখনও কখনও রক্তাক্ত হতো দুই শিশু। নির্যাতন সইতে না পেরে মূল দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে তারা। কিন্তু ধরা খেলে সিঁড়িতেই মারধর করা হয় তাদের। গতকাল সকালে আটতলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে রশি বেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় রশি থেকে পড়ে শরীফ গুরুতর আহত হয়েছে। আর রশিতে ঝুলে থাকা স্বপনকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

ধানমন্ডি থানার ওসি (তদন্ত) পারভেজ ইসলাম বলেন, দুই শিশুর হাতে ও পায়ে আগে মারধরের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে ছেলে কখনও মারধর করেনি বলে দুই শিশু জানিয়েছে। তিনজনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তারা সার্ভেন্টরুমের টয়লেটের ভেন্টিলেটর দিয়ে বের হয়। পরে রশি বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করে। এতে তারা আহত হয়।

ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল্লাহ হিল কাফী বলেন, দুজনের মধ্যে একজন দেড় বছর, আরেকজন ৮-১০ দিন আগে ওই বাসায় কাজে যোগ দিয়েছে। তাদের নির্যাতন করা হতো। আমরা তাদের শরীরে মারধর ও নির্যাতনের আলামতও পেয়েছি। তারা টয়লেটের অ্যাডজাস্ট ফ্যান খুলে কাপড় শুকানোর রশি দিয়ে নামার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে একজন পাঁচতলা থেকে দ্বিতীয়তলায় পড়ে যায়। আরেকজন রশিতে ঝুলতে থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, ভিকটিমদের অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়েছে। তারা ঢাকায় আসছেন, তারা অবশ্যই মামলা করবেন। মামলা হলে গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীসহ জড়িতদের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। ঘটনার পরপর গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রী ছেলে ও মেয়েকে আটক করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সদর দফতর কন্ট্রোলরুমের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিবেন বলেন, আহত শিশু গিয়ে শরীফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢামেক চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরীফের একটি পা ভেঙে গেছে। তার অবস্থা গুরুতর।