বন্যা : পরিস্থিতি উন্নতির দিকে

জরুরি ত্রাণ সরবরাহ চলছে তবে অপ্রতুল

নদীর পানি কোথাও বাড়ছে কোথাও কমছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বাড়ছে, ভাঙনে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে আরও ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এখন জরুরি ভিত্তিতে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ সরবরাহকেই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সরকারের দু’জন মন্ত্রী দুটি জেলায় ত্রাণ বিতরণ করেছেন এবং যে কোন মূল্যে বন্যার্তদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন। ৩টি বরাদ্দ ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে এখনও বন্যার্তদের মাঝে যথেষ্ট ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে না। প্রতিনিধিরা তাদের পাঠানো খবরে এ দিকটিই তুলে ধরতে চেয়েছেন। সেইসঙ্গে বাড়ছে নানারকম রোগবালাই।

জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুরে যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে হ্রাস পেতে শুরু করলেও বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাই, জিঞ্জিরাম, দশানীসহ সব নদ-নদীর পানি। যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জামালপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ি, জামালপুর সদর ও বকশীগঞ্জ উপজেলার ৬১টি ইউনিয়ন ও ৭টি পৌরসভা বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব এলাকার সাড়ে ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। পানিবন্দী মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা চরম বিপাকে রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার বেশিরভাগ সড়ক ও রেললাইন ডুবে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। গতকাল বকশীগঞ্জের কৌশল নগরে বন্যার পানিতে ডুবে রাহাত মিয়া নামে এক শিশু এবং একই উপজেলার ঝালুরচরে রাজা বাদশা নামে এক ব্যক্তি সাপের কামড়ে মারা গেছে। জামালপুর সদর উপজেলার তিতপল্লা কামালখান মোড় এলাকায় রমজান আলীর ৮ বছরের শিশুপুত্র সজিব বন্যার পানি দেখতে গিয়ে ব্রিজ থেকে বন্যার পানির স্রোতে পড়ে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী বিধৌত চৌহালী উপজেলাজুড়ে বন্যা দুর্ভোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। যতই দিন যাচ্ছে এ দুর্ভোগের মাত্রা ততই বাড়ছে। বর্তমানে উপজেলা ৭টি ইউনিয়নের অন্তত অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বন্যাকবলিত।

যমুনার ভাঙনে বিপর্যস্ত জনপদ চৌহালীর যমুনা নদীতে সামান্য পানি কমলেও বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে উমরপুর, ঘোরজান, স্থল ও সদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘর-বাড়ি ১ থেকে ৩ ফুট পানিতে তলিয়ে থাকায় মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাড়ির নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির পাশাপাশি বেকার হয়ে যাওয়া মানুষের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওইসব এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বেশ কিছু মানুষ তাদের ঘর-বাড়ি তালা দিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। সরেজমিনে জেলার দক্ষিণের শেষ সীমানা মিনাদিয়া চরে গিয়ে দেখা যায়, চরপাচুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি ভাঙন হতে মাত্র ১৫ গজ দূরে থাকায় পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই স্কুলের পূর্বপাশের একটি বিশাল ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। এছাড়া সবগুলো ঘর ডুবে যাওয়ায় কোন রকমে মাচা করে চলছে সবার বসবাস। এ ব্যাপারে মিনাদিয়া গ্রামের কৃষি শ্রমিক ময়দান আলীর স্ত্রী অন্তরা খাতুন ও জয়েদ আলীর স্ত্রী ফুলমতি বানু জানান, আমরা আজ এক সপ্তাহ ধরে চরম কষ্টে দিনযাপন করছি। ঘর ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি নলকূপও তলিয়ে যাওয়ায় দূর থেকে পানি এনে পান করতে হচ্ছে। আমাদের পরিবারের কারও কাজ নেই, সবাই বেকার। স্কুলেও যেতে পারছে না ছেলেমেয়েরা। এ অবস্থায় খাবার সংকটই আমাদের বেশি সমস্যা। কোন ত্রাণ সহায়তা পাইনি আমরা। এ অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে চলতে হচ্ছে আমাদের।

এদিকে ঘোরজান ইউনিয়নের মুরাদপুরেও একই অবস্থা। যমুনায় ৪ বছর আগে বাড়ি-ঘর হারানো মানুষগুলো এখানে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে পুরো গ্রামের কয়েকশ ঘরবাড়ি, মসজিদ-মাদ্রাসা সবই তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ওসমান গণি, জয়নাল আবেদিন ও রহিমা খাতুনসহ ৫টি পরিবারের ২৫ জন মানুষ উপায় না পেয়ে নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে। তারা জানায়, এ দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রায় ১ কিলোমিটার দূর হতে আনা হচ্ছে পানি। আর কলাগাছের ভেলায় চলছে বাথরুম। এতো কষ্ট করলেও আমাদের কেউ খবর নেয়নি। ৫ কেজি চালও আমাদের দেয়া হয়নি।

টাঙ্গাইলের জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, সারাদেশে একযোগে বন্যা শুরু হয়েছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বন্যা চলাকালীন অবস্থায় আমাদের এই ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তবে ত্রাণ দিয়ে আপনাদের ছোট করতে চাই না। তাই বন্যা শেষ হলেই আপনাদের এলাকা রক্ষা করতে বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হবে। দেশে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীর মজুদ রয়েছে। কিন্তু বন্যার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্ন হওয়ায় ত্রাণ সমাগ্রী পৌঁছাতে সময় লাগছে।

শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের টেপিবাড়ী এলাকায় বাঁধ ভাঙন স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সারাদেশে চলমান বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলেও আশা প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার, প্রশাসন ও জনগণ বন্যাকবলিত মানুষকে সেবা দেয়ার জন্যে কাজ করছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলেও তারা একইভাবে সেবা দিয়ে যাবেন। এ বছর বন্যার পূর্বাভাস পাবার পর থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলায় গবাদিপশু আশ্রয়ের জন্য একটি করে মুজিবকেল্লা তৈরি করা হবে।

অপরদিকে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, নদী ভাঙনের কবল হতে টাঙ্গাইল জেলাকে রক্ষা করতে ২২শ’ ৩৯ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী ৬ মাসের মধ্যে যমুনা নদীর পূর্বপাড়ের বেড়িবাঁধের কাজ সম্পন্ন করা হবে।

বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়ায় যমুনার পানি কমলেও এখনো তা বিপদসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। অপরদিকে বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তা বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। শনিবার দুপুরে বাঙালির পানি বিপদসীমার প্রায় ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে যমুনার পানি কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। তবে নতুন করে কোন এলাকা বন্যাকবলিত হয়নি।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, যমুনার পানি বিপদসীমার নিচে নামতে আরও জ্জ দিন লাগবে।

রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। রাজিবপুর বাজার থেকে বানের পানি সরে গেলেও উপজেলা শহর এখনও ২/৩ ফিট পানি রয়েছে। পানি নামার সঙ্গে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ। এদিকে বানের পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে রোগ-বালাই। জ্বর ও পানিবাহিত রোগের চিকিৎসার জন্য বন্যার্তরা হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে ভিড় জমাচ্ছে। কেউ অগ্রিম ওষধ নিয়ে রাখছেন আপদকালীন সময়ের জন্য। রাজিবপুর থানা স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা ডাক্তার দেলোয়ার হোসেন জানান, ৩ ইউনিয়নের জন্য ৩টি মেডিকেল টিম রয়েছে। তারা সব সময় সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত। তা ছাড়া হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা দানকারীরাও সর্তক রয়েছেন।

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত ১৩ দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন নিমম্নাঞ্চল ও ৩ দিন ধরে উপজেলা সদরসহ গোটা চিলমারী উপজেলা পানির নিচে তলিয়ে আছে। ভেসে গেছে অনেকের ঘরবাড়ি-গবাদি পশু ও মৎস্য খামার। সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ বন্যার কবলে পড়েছে উপজেলাটি।

সরেজমিন উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে অথৈ পানি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা বাঁধ ও উঁচু ভবনে মানুষ গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়ে আছেন। এসব পরিবারের অনেকেরই অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তারা কোন ত্রাণ সহায়তা পায়নি। তারা দাবি করেন, সরকারী ভাবে বিপুল বরাদ্দ দেয়া হলেও তাদের কাছ পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছায় না।

নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ সেন্টিমিটার কমলেও এখনো বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ এবারের বন্যা ১৯৮৮ বা ১৯৯৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে দাবি করেন।

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার দিঘুলিয়া ইউনিয়নের প্রায় তিন শতাধিক বাড়ি নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পরেছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে শত শত বিঘা আবাদি জমির ফসল। এভাবে নদী ভাঙলে হুমকির মুখে পড়বে জালশুকা নাশুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মন্দির ও মসজিদসহ জালশুকা বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান।

যমুনা নদীর শাখা ধলেশ্বরী নদী সাটুরিয়ার দিঘুলিয়া ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে গেছে। একটি গ্রামে একটি নদী তিন ভাগে ভাগ হয়ে এই ভাঙন তান্ডব চালাচ্ছে। নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলছে নদী ভাঙন। বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও বসতভিটা। ভূমিহীন হয়ে পড়ছে শতশত মানুষ। নদীভাঙনে মানুষ আশ্রয় নেয় অন্যের বাড়িতে।

দিঘলিয়া ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদীর পাড়ের বাসিন্দা ঘেষা হাসনা বেগম জানান, গত তিনদিন আগে আমার বসত ভিটা কেড়ে নেয় ওই রাক্ষসী ধলেশ্বরী। আমি এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে পরের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। এখনো মিলেনি কোন সহযোগিতা।

রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, গতকাল কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করলেন মাননীয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপি। দুপুর ১টায় রৌমারী থেকে স্পিড বোটে রাজিবপুর পৌঁছান প্রতিমন্ত্রী। পরে রাজিবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বানভাসি মানুষের মাঝে জিআরের ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বন্যার্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি মন্ত্রী আমার বাড়িতেও বন্যার পানি উঠেছে। আপনারা চিন্তা করবেন না। আপনাদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণ রয়েছে। সরকারের যে খাদ্য মজুদ রয়েছে আগামী ৩ বছর বসে খেলেও শেষ হবে না। বন্যা পরবর্তীতেও আমাদের সরকার আপনাদের পাশে থাকবে। যাদের ঘর নেই তাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দেব। আপনারা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন।’

image

বন্যাকবলিত সিরাগঞ্জের চৌহালীতে বিশুদ্ধ পানির সন্ধানে নেমেছেন গৃহবধূরা -সংবাদ

আরও খবর
চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনায় লুটপাট
বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক
ডেঙ্গু : ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ২৩৩ জন
গণপূর্তের ক্রয়নীতিমালাই দুর্নীতির ফাঁদ
বিএনপি কি একা হয়ে যাচ্ছে?
ক্ষমতাসীন দলের ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান চলছে
সন্তুষ্ট রিফাতের বাবা অসন্তুষ্ট মিন্নির বাবা
প্রিয়া সাহার বক্তব্যে দেশব্যাপী তোলপাড়
আ’লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু আজ
ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ৩
অজয় বড়ুয়ার মরদেহ আসছে আজ
বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় ৬০ জনের মৃত্যু বাড়ছে পানিবাহিত রোগ
ত্রাণ বিতরণে আ’লীগের ৬ টিম

রবিবার, ২১ জুলাই ২০১৯ , ৬ শ্রাবন ১৪২৫, ১৭ জিলকদ ১৪৪০

বন্যা : পরিস্থিতি উন্নতির দিকে

জরুরি ত্রাণ সরবরাহ চলছে তবে অপ্রতুল

সংবাদ ডেস্ক

image

বন্যাকবলিত সিরাগঞ্জের চৌহালীতে বিশুদ্ধ পানির সন্ধানে নেমেছেন গৃহবধূরা -সংবাদ

নদীর পানি কোথাও বাড়ছে কোথাও কমছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বাড়ছে, ভাঙনে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে ডুবে ও সাপের কামড়ে আরও ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এখন জরুরি ভিত্তিতে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ সরবরাহকেই গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সরকারের দু’জন মন্ত্রী দুটি জেলায় ত্রাণ বিতরণ করেছেন এবং যে কোন মূল্যে বন্যার্তদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন। ৩টি বরাদ্দ ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে এখনও বন্যার্তদের মাঝে যথেষ্ট ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে না। প্রতিনিধিরা তাদের পাঠানো খবরে এ দিকটিই তুলে ধরতে চেয়েছেন। সেইসঙ্গে বাড়ছে নানারকম রোগবালাই।

জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুরে যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে হ্রাস পেতে শুরু করলেও বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাই, জিঞ্জিরাম, দশানীসহ সব নদ-নদীর পানি। যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জামালপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ি, জামালপুর সদর ও বকশীগঞ্জ উপজেলার ৬১টি ইউনিয়ন ও ৭টি পৌরসভা বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব এলাকার সাড়ে ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। পানিবন্দী মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা চরম বিপাকে রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার বেশিরভাগ সড়ক ও রেললাইন ডুবে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। গতকাল বকশীগঞ্জের কৌশল নগরে বন্যার পানিতে ডুবে রাহাত মিয়া নামে এক শিশু এবং একই উপজেলার ঝালুরচরে রাজা বাদশা নামে এক ব্যক্তি সাপের কামড়ে মারা গেছে। জামালপুর সদর উপজেলার তিতপল্লা কামালখান মোড় এলাকায় রমজান আলীর ৮ বছরের শিশুপুত্র সজিব বন্যার পানি দেখতে গিয়ে ব্রিজ থেকে বন্যার পানির স্রোতে পড়ে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী বিধৌত চৌহালী উপজেলাজুড়ে বন্যা দুর্ভোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষ। যতই দিন যাচ্ছে এ দুর্ভোগের মাত্রা ততই বাড়ছে। বর্তমানে উপজেলা ৭টি ইউনিয়নের অন্তত অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বন্যাকবলিত।

যমুনার ভাঙনে বিপর্যস্ত জনপদ চৌহালীর যমুনা নদীতে সামান্য পানি কমলেও বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে উমরপুর, ঘোরজান, স্থল ও সদিয়াচাঁদপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘর-বাড়ি ১ থেকে ৩ ফুট পানিতে তলিয়ে থাকায় মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাড়ির নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির পাশাপাশি বেকার হয়ে যাওয়া মানুষের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওইসব এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বেশ কিছু মানুষ তাদের ঘর-বাড়ি তালা দিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। সরেজমিনে জেলার দক্ষিণের শেষ সীমানা মিনাদিয়া চরে গিয়ে দেখা যায়, চরপাচুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি ভাঙন হতে মাত্র ১৫ গজ দূরে থাকায় পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই স্কুলের পূর্বপাশের একটি বিশাল ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। এছাড়া সবগুলো ঘর ডুবে যাওয়ায় কোন রকমে মাচা করে চলছে সবার বসবাস। এ ব্যাপারে মিনাদিয়া গ্রামের কৃষি শ্রমিক ময়দান আলীর স্ত্রী অন্তরা খাতুন ও জয়েদ আলীর স্ত্রী ফুলমতি বানু জানান, আমরা আজ এক সপ্তাহ ধরে চরম কষ্টে দিনযাপন করছি। ঘর ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি নলকূপও তলিয়ে যাওয়ায় দূর থেকে পানি এনে পান করতে হচ্ছে। আমাদের পরিবারের কারও কাজ নেই, সবাই বেকার। স্কুলেও যেতে পারছে না ছেলেমেয়েরা। এ অবস্থায় খাবার সংকটই আমাদের বেশি সমস্যা। কোন ত্রাণ সহায়তা পাইনি আমরা। এ অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে চলতে হচ্ছে আমাদের।

এদিকে ঘোরজান ইউনিয়নের মুরাদপুরেও একই অবস্থা। যমুনায় ৪ বছর আগে বাড়ি-ঘর হারানো মানুষগুলো এখানে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে পুরো গ্রামের কয়েকশ ঘরবাড়ি, মসজিদ-মাদ্রাসা সবই তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ওসমান গণি, জয়নাল আবেদিন ও রহিমা খাতুনসহ ৫টি পরিবারের ২৫ জন মানুষ উপায় না পেয়ে নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে। তারা জানায়, এ দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রায় ১ কিলোমিটার দূর হতে আনা হচ্ছে পানি। আর কলাগাছের ভেলায় চলছে বাথরুম। এতো কষ্ট করলেও আমাদের কেউ খবর নেয়নি। ৫ কেজি চালও আমাদের দেয়া হয়নি।

টাঙ্গাইলের জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, সারাদেশে একযোগে বন্যা শুরু হয়েছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বন্যা চলাকালীন অবস্থায় আমাদের এই ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তবে ত্রাণ দিয়ে আপনাদের ছোট করতে চাই না। তাই বন্যা শেষ হলেই আপনাদের এলাকা রক্ষা করতে বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হবে। দেশে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীর মজুদ রয়েছে। কিন্তু বন্যার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্ন হওয়ায় ত্রাণ সমাগ্রী পৌঁছাতে সময় লাগছে।

শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়কের টেপিবাড়ী এলাকায় বাঁধ ভাঙন স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সারাদেশে চলমান বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলেও আশা প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার, প্রশাসন ও জনগণ বন্যাকবলিত মানুষকে সেবা দেয়ার জন্যে কাজ করছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলেও তারা একইভাবে সেবা দিয়ে যাবেন। এ বছর বন্যার পূর্বাভাস পাবার পর থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলায় গবাদিপশু আশ্রয়ের জন্য একটি করে মুজিবকেল্লা তৈরি করা হবে।

অপরদিকে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, নদী ভাঙনের কবল হতে টাঙ্গাইল জেলাকে রক্ষা করতে ২২শ’ ৩৯ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী ৬ মাসের মধ্যে যমুনা নদীর পূর্বপাড়ের বেড়িবাঁধের কাজ সম্পন্ন করা হবে।

বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়ায় যমুনার পানি কমলেও এখনো তা বিপদসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। অপরদিকে বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তা বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। শনিবার দুপুরে বাঙালির পানি বিপদসীমার প্রায় ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে যমুনার পানি কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। তবে নতুন করে কোন এলাকা বন্যাকবলিত হয়নি।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, যমুনার পানি বিপদসীমার নিচে নামতে আরও জ্জ দিন লাগবে।

রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। রাজিবপুর বাজার থেকে বানের পানি সরে গেলেও উপজেলা শহর এখনও ২/৩ ফিট পানি রয়েছে। পানি নামার সঙ্গে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ। এদিকে বানের পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে রোগ-বালাই। জ্বর ও পানিবাহিত রোগের চিকিৎসার জন্য বন্যার্তরা হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে ভিড় জমাচ্ছে। কেউ অগ্রিম ওষধ নিয়ে রাখছেন আপদকালীন সময়ের জন্য। রাজিবপুর থানা স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা ডাক্তার দেলোয়ার হোসেন জানান, ৩ ইউনিয়নের জন্য ৩টি মেডিকেল টিম রয়েছে। তারা সব সময় সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত। তা ছাড়া হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা দানকারীরাও সর্তক রয়েছেন।

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত ১৩ দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন নিমম্নাঞ্চল ও ৩ দিন ধরে উপজেলা সদরসহ গোটা চিলমারী উপজেলা পানির নিচে তলিয়ে আছে। ভেসে গেছে অনেকের ঘরবাড়ি-গবাদি পশু ও মৎস্য খামার। সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ বন্যার কবলে পড়েছে উপজেলাটি।

সরেজমিন উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে অথৈ পানি। বন্যা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা বাঁধ ও উঁচু ভবনে মানুষ গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়ে আছেন। এসব পরিবারের অনেকেরই অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তারা কোন ত্রাণ সহায়তা পায়নি। তারা দাবি করেন, সরকারী ভাবে বিপুল বরাদ্দ দেয়া হলেও তাদের কাছ পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছায় না।

নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ সেন্টিমিটার কমলেও এখনো বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ এবারের বন্যা ১৯৮৮ বা ১৯৯৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে দাবি করেন।

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার দিঘুলিয়া ইউনিয়নের প্রায় তিন শতাধিক বাড়ি নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পরেছে। নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে শত শত বিঘা আবাদি জমির ফসল। এভাবে নদী ভাঙলে হুমকির মুখে পড়বে জালশুকা নাশুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মন্দির ও মসজিদসহ জালশুকা বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান।

যমুনা নদীর শাখা ধলেশ্বরী নদী সাটুরিয়ার দিঘুলিয়া ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে গেছে। একটি গ্রামে একটি নদী তিন ভাগে ভাগ হয়ে এই ভাঙন তান্ডব চালাচ্ছে। নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলছে নদী ভাঙন। বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি ও বসতভিটা। ভূমিহীন হয়ে পড়ছে শতশত মানুষ। নদীভাঙনে মানুষ আশ্রয় নেয় অন্যের বাড়িতে।

দিঘলিয়া ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদীর পাড়ের বাসিন্দা ঘেষা হাসনা বেগম জানান, গত তিনদিন আগে আমার বসত ভিটা কেড়ে নেয় ওই রাক্ষসী ধলেশ্বরী। আমি এখন ছেলেমেয়ে নিয়ে পরের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। এখনো মিলেনি কোন সহযোগিতা।

রাজিবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, গতকাল কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করলেন মাননীয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপি। দুপুর ১টায় রৌমারী থেকে স্পিড বোটে রাজিবপুর পৌঁছান প্রতিমন্ত্রী। পরে রাজিবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বানভাসি মানুষের মাঝে জিআরের ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করেন। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বন্যার্তদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি মন্ত্রী আমার বাড়িতেও বন্যার পানি উঠেছে। আপনারা চিন্তা করবেন না। আপনাদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ত্রাণ রয়েছে। সরকারের যে খাদ্য মজুদ রয়েছে আগামী ৩ বছর বসে খেলেও শেষ হবে না। বন্যা পরবর্তীতেও আমাদের সরকার আপনাদের পাশে থাকবে। যাদের ঘর নেই তাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দেব। আপনারা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন।’