বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় ৬০ জনের মৃত্যু বাড়ছে পানিবাহিত রোগ

বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় পানিতে ডুবে ও নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একই সঙ্গে বাড়ছে ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত বন্যাকবলিত এলাকায় ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬ হাজার ২৭৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে পানিতে ডুবে ৪৮ জন, বজ্রপাতে ৭ জন ও সাপের কামড়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, দেশে ২০টির বেশি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় সেখানে শিশু ও বয়স্করা বিপাকে পড়েছে। শিশুরা পানিতে চলাচলের সময় পানির নিচে থাকা শক্ত বস্তুতে আঘাত পেয়ে অনেকেই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। কোন কোন অঞ্চলের পানি এত বাড়ছে যে, মানুষ ঘরের চালে বা উঁচু স্থানে গিয়ে অবস্থান করছে। অনেক জেলায় শিশুরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, বন্যাকবলিত জেলায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট বিরাজ করছে। সরকার যে খাবার দেয় তা অনেকের কাছে পৌঁছে না। আবার অনেক পরিবার অনাহারে ও পানির অভাবে ভেজাল খাবার খেয়ে অসুস্থ হচ্ছে। অনেক জায়গায় ত্রাণ ঠিক মতো পৌঁছার ব্যবস্থা নেই। আর নতুন করে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ।

সূত্র মতে, বন্যাকবলিত অঞ্চলের পানি বেড়ে যাওয়ায় সেখানে বন-জঙ্গলের বিষাক্ত প্রাণী ও সাপের উপদ্রব বাড়ছে। অন্য বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণে শরীরে নানা রোগ দেখা দেয়। চর্মরোগ, জন্ডিস, টাইফয়েড ও আমাশয়সহ পানিবাহিত নানা রোগ ছড়ায়।

বন্যাকবলিত অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে। মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে না বুঝে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার সময় বজ্রপাতের কবলে পড়ে মারা যাচ্ছে। আবার বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকরা বৃষ্টির সময় ফসল কাটতে গিয়ে বা মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, বন্যার কারণে পানিবাহিত রোগ বেশি দেখা দেয়। এর মধ্যে ডায়রিয়া, কলেরা, চর্মরোগ, পেটের পীড়াসহ নানা রোগ দেখা দিতে পারে। বন্যার্তদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহর করা বেশি জরুরি।

রবিবার, ২১ জুলাই ২০১৯ , ৬ শ্রাবন ১৪২৫, ১৭ জিলকদ ১৪৪০

বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় ৬০ জনের মৃত্যু বাড়ছে পানিবাহিত রোগ

বাকী বিল্লাহ

বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় পানিতে ডুবে ও নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একই সঙ্গে বাড়ছে ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত বন্যাকবলিত এলাকায় ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬ হাজার ২৭৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে পানিতে ডুবে ৪৮ জন, বজ্রপাতে ৭ জন ও সাপের কামড়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জানা গেছে, দেশে ২০টির বেশি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় সেখানে শিশু ও বয়স্করা বিপাকে পড়েছে। শিশুরা পানিতে চলাচলের সময় পানির নিচে থাকা শক্ত বস্তুতে আঘাত পেয়ে অনেকেই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। কোন কোন অঞ্চলের পানি এত বাড়ছে যে, মানুষ ঘরের চালে বা উঁচু স্থানে গিয়ে অবস্থান করছে। অনেক জেলায় শিশুরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, বন্যাকবলিত জেলায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট বিরাজ করছে। সরকার যে খাবার দেয় তা অনেকের কাছে পৌঁছে না। আবার অনেক পরিবার অনাহারে ও পানির অভাবে ভেজাল খাবার খেয়ে অসুস্থ হচ্ছে। অনেক জায়গায় ত্রাণ ঠিক মতো পৌঁছার ব্যবস্থা নেই। আর নতুন করে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ।

সূত্র মতে, বন্যাকবলিত অঞ্চলের পানি বেড়ে যাওয়ায় সেখানে বন-জঙ্গলের বিষাক্ত প্রাণী ও সাপের উপদ্রব বাড়ছে। অন্য বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণে শরীরে নানা রোগ দেখা দেয়। চর্মরোগ, জন্ডিস, টাইফয়েড ও আমাশয়সহ পানিবাহিত নানা রোগ ছড়ায়।

বন্যাকবলিত অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে। মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে না বুঝে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার সময় বজ্রপাতের কবলে পড়ে মারা যাচ্ছে। আবার বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকরা বৃষ্টির সময় ফসল কাটতে গিয়ে বা মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, বন্যার কারণে পানিবাহিত রোগ বেশি দেখা দেয়। এর মধ্যে ডায়রিয়া, কলেরা, চর্মরোগ, পেটের পীড়াসহ নানা রোগ দেখা দিতে পারে। বন্যার্তদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহর করা বেশি জরুরি।