‘ভুল মশার ওপর পরীক্ষায় ওষুধ কার্যকর হচ্ছে না’

রাজধানীতে ডেঙ্গুজ্বর প্রায় মহামারীর মতো ছড়িয়ে পরার প্রেক্ষাপটে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক অ্যাডিস মশার প্রজনন ধ্বংস করার জন্য মশার ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু নসে ওষুধের পরীক্ষা অ্যাডিস মশার ওপর না করে করা হয়েছে কিউলেক্স মশার ওপর। ফলে অ্যাডিস মশার ওপর ওষুধ কার্যকর হচ্ছে না। এ বিষয়টি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ও অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন তার ফেসবুক পেজে তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন-

‘সিটি করপোরেশনে ব্যবহার করা মশার ওষুধের এফিকেসি (কার্যকারিতা) টেস্ট করা হয় মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতরের ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (IEDCR-আইইডিসিআর) ল্যাব থেকে। এই পরীক্ষায় জীবন্ত মশার ওপর পরীক্ষা করে দেখা হয় তা কতটুকু কার্যকর। অর্থাৎ মশা মরে কি না। গত ১৫-০৭-১৯ তারিখে সিটি করপোরেশন থেকে পাঠানো ওষুধ পরীক্ষা করে আইইডিসিআর থেকে রেজাল্ট দেয়া হয়েছে ১০০ শতাংশ কার্যকর। তবে এ রিপোর্টটি একটি গুরুতর সমস্যার দিকে নজর পড়ে মাহবুব কবির মিলনের, যা এসব কার্যক্রমকে ভ-ুল করে দিতে পারে। বিষয়টি হলো সব মশার ক্ষেত্রে ওষুধটি পরীক্ষা করা হয়নি। এমনকি বর্তমানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অ্যাডিস মশার ওপরেও পরীক্ষা হয়নি ওষুধটি।

মাহবুব কবির মিলন লিখেছেন, হঠাৎ এক জায়গায় চোখ আটকে গেল! রিপোর্টে বলা হয়েছে তারা কিউলেক্স (Culex Quinquefasciatus) প্রজাতির মশার ওপর এই এফিকেসি বা কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছেন। আমি যতটুকু জানি অ্যাডিস এবং কিউলেক্স প্রজাতি আলাদা। এক প্রজাতির ওষুধ দিয়ে অন্য প্রজাতির মশা ঘায়েল করার সুযোগ মনে হয় নেই বা আশা করা বোকামি।

বিষয়টি পরবর্তীতে নিশ্চিত হয়েছেন মাহবুব কবির মিলন। তিনি লিখেছেন, ‘ফোন করলাম আইইডিসিআর ল্যাবে। তারা যতটুকু জানালেন, এর আগেও সব সময় তারা কিউলেক্স প্রজাতির মশার ওপর এসব ওষুধ প্রয়োগ করেছেন। তিনি স্বীকার করলেন, অ্যাডিস মশা এই ওষুধে ধ্বংস নাও হতে পারে।’

গুরুত্বপূর্ণ এ সমস্যাটি উপেক্ষা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘তাহলে কেন অ্যাডিস মশা দিয়ে পরীক্ষা করেননি? আমার প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, সিটি করপোরেশন এবং কৃষি সম্প্রসারণ উইং থেকে তা বলা হয়নি বলে তারা অ্যাডিস মশার ওপর পরীক্ষা করেননি। তাদের চিঠিতে সব সময় কিউলেক্সের কথা বলা হয়েছে।’

কিউলেক্স প্রজাতি একটি সাধারণ প্রজাতির মশা। অ্যাডিস ভয়াবহ। ভয়াবহ তার ক্ষমতা। অথচ কিউলেক্স প্রজাতির মশার ওপর পরীক্ষা করে তা স্প্রে করা হচ্ছে অ্যাডিস মশার ওপর। ফলাফল কি হচ্ছে আমরা সবাই জানি তা উল্লেখ করেছেন মাহবুব কবির মিলন।

ভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহারে অ্যাডিস মশা আরও ভয়ংকর ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘হয়তো ভালো কাজ দেয়নি প্রথম থেকে। কিউলেক্সের ওষুধ সহ্য আর হজম করে দিনে দিনে অ্যাডিস হয়ে উঠেছে ভয়ংকর ক্ষমতার অধিকারী। পেয়েছে মহাজীবনী শক্তি। অ্যাডিসের জন্য কোন ওষুধ দরকার, তা পরীক্ষা করা হয়নি এখনও।

image
আরও খবর
ভেঙে পড়ছে হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা
সমন্বিত প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু ও বন্যার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হবে : কাদের
মায়ানমারকে ২৫ হাজার রোহিঙ্গার নতুন তালিকা দিল বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক শামিম কবির আর নেই
বিভিন্ন সংগঠনের শোক
স্কয়ারসহ তিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তলব
মিল্কভিটা দুধ বিপণনে বাধা নেই
পানির দরে দুধ খামারিরা বিপাকে
বাংলাদেশে সবচেয়ে কম মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত
ডেঙ্গুর ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিতে পদক্ষেপ
২৪ ঘণ্টায় আরও ১০৯৬ জন আক্রান্ত মৃত্যু ৩ মৃত্যু ৩
বিদেশি গুঁড়োদুধ যেন বাজার দখল করতে না পারে
আসেনি শৃঙ্খলা কমেনি দুর্ঘটনা
দুই আসামির যাবজ্জীবন
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
মামলা হয়নি হেলমেটধারী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯ , ১৫ শ্রাবন ১৪২৫, ২৬ জিলকদ ১৪৪০

‘ভুল মশার ওপর পরীক্ষায় ওষুধ কার্যকর হচ্ছে না’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

রাজধানীতে ডেঙ্গুজ্বর প্রায় মহামারীর মতো ছড়িয়ে পরার প্রেক্ষাপটে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক অ্যাডিস মশার প্রজনন ধ্বংস করার জন্য মশার ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু নসে ওষুধের পরীক্ষা অ্যাডিস মশার ওপর না করে করা হয়েছে কিউলেক্স মশার ওপর। ফলে অ্যাডিস মশার ওপর ওষুধ কার্যকর হচ্ছে না। এ বিষয়টি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ও অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন তার ফেসবুক পেজে তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন-

‘সিটি করপোরেশনে ব্যবহার করা মশার ওষুধের এফিকেসি (কার্যকারিতা) টেস্ট করা হয় মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদফতরের ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (IEDCR-আইইডিসিআর) ল্যাব থেকে। এই পরীক্ষায় জীবন্ত মশার ওপর পরীক্ষা করে দেখা হয় তা কতটুকু কার্যকর। অর্থাৎ মশা মরে কি না। গত ১৫-০৭-১৯ তারিখে সিটি করপোরেশন থেকে পাঠানো ওষুধ পরীক্ষা করে আইইডিসিআর থেকে রেজাল্ট দেয়া হয়েছে ১০০ শতাংশ কার্যকর। তবে এ রিপোর্টটি একটি গুরুতর সমস্যার দিকে নজর পড়ে মাহবুব কবির মিলনের, যা এসব কার্যক্রমকে ভ-ুল করে দিতে পারে। বিষয়টি হলো সব মশার ক্ষেত্রে ওষুধটি পরীক্ষা করা হয়নি। এমনকি বর্তমানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অ্যাডিস মশার ওপরেও পরীক্ষা হয়নি ওষুধটি।

মাহবুব কবির মিলন লিখেছেন, হঠাৎ এক জায়গায় চোখ আটকে গেল! রিপোর্টে বলা হয়েছে তারা কিউলেক্স (Culex Quinquefasciatus) প্রজাতির মশার ওপর এই এফিকেসি বা কার্যকারিতা পরীক্ষা করেছেন। আমি যতটুকু জানি অ্যাডিস এবং কিউলেক্স প্রজাতি আলাদা। এক প্রজাতির ওষুধ দিয়ে অন্য প্রজাতির মশা ঘায়েল করার সুযোগ মনে হয় নেই বা আশা করা বোকামি।

বিষয়টি পরবর্তীতে নিশ্চিত হয়েছেন মাহবুব কবির মিলন। তিনি লিখেছেন, ‘ফোন করলাম আইইডিসিআর ল্যাবে। তারা যতটুকু জানালেন, এর আগেও সব সময় তারা কিউলেক্স প্রজাতির মশার ওপর এসব ওষুধ প্রয়োগ করেছেন। তিনি স্বীকার করলেন, অ্যাডিস মশা এই ওষুধে ধ্বংস নাও হতে পারে।’

গুরুত্বপূর্ণ এ সমস্যাটি উপেক্ষা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘তাহলে কেন অ্যাডিস মশা দিয়ে পরীক্ষা করেননি? আমার প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, সিটি করপোরেশন এবং কৃষি সম্প্রসারণ উইং থেকে তা বলা হয়নি বলে তারা অ্যাডিস মশার ওপর পরীক্ষা করেননি। তাদের চিঠিতে সব সময় কিউলেক্সের কথা বলা হয়েছে।’

কিউলেক্স প্রজাতি একটি সাধারণ প্রজাতির মশা। অ্যাডিস ভয়াবহ। ভয়াবহ তার ক্ষমতা। অথচ কিউলেক্স প্রজাতির মশার ওপর পরীক্ষা করে তা স্প্রে করা হচ্ছে অ্যাডিস মশার ওপর। ফলাফল কি হচ্ছে আমরা সবাই জানি তা উল্লেখ করেছেন মাহবুব কবির মিলন।

ভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহারে অ্যাডিস মশা আরও ভয়ংকর ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘হয়তো ভালো কাজ দেয়নি প্রথম থেকে। কিউলেক্সের ওষুধ সহ্য আর হজম করে দিনে দিনে অ্যাডিস হয়ে উঠেছে ভয়ংকর ক্ষমতার অধিকারী। পেয়েছে মহাজীবনী শক্তি। অ্যাডিসের জন্য কোন ওষুধ দরকার, তা পরীক্ষা করা হয়নি এখনও।