চট্টগ্রাম মহানগরীতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে নার্সরা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে নার্সরা আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এসব হাসপাতালে প্রায় অর্ধশত নার্স আক্রান্ত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত এই ৫০ জন নার্সের মধ্যে ৪৪ জন নারী ও ৬ জন পুরুষ বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রামে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে যেসব নার্স রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে প্রতিদিন।
বেসরকারি হাসপাতালের নার্স করোনা আক্রান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের প্রণোদনার সরকারি কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমাদের বিভিন্ন মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে বেসরকারি নার্সদের বিষয়ে। আমাদের করোনা প্রতিরোধ বিভাগীয় কমিটির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত অধিকাংশ নার্স বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ৫০ জনের মধ্যে ৮ জন সুস্থ হয়েছে। তার মধ্যে ৪ জন পুনরায় হাসপাতালের রোগীদের সেবায় যোগদানও করেছেন। বাকি ৪ জন দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালের সেবায় যোগদান করবেন। তবে এই হিসাবে নেই বেসরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্সদের তালিকা।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্স করোনা হলে চিকিৎসার বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, নার্সদের চিকিৎসা যেখানে প্রয়োজন সেখানে দেয়া হচ্ছে। তবে অধিকাংশ নার্স বাসায় থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। যাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন হয়েছে তাদের জেনারেল হাসপাতালে কয়েকজনকে আনা হয়েছে। আমরা প্রতিদিন সব স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সামর্থ রয়েছে সবটুকু দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৩৫ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১০ জন ও চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে ৫ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে হাসাপতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন নার্স। তার মধ্যে ৮ জন নারী ও ২ জন পুরুষ। তারা মোটামুটি সুস্থ রয়েছেন। অনেকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সুস্থ হলেও নমুনা পরীক্ষা না করাই সুস্থ বলা যাচ্ছে না। কিন্তু করোনার নমুনা দেয়ার পরও প্রায় ৭ দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে রিপোর্টের জন্য। তারা সুস্থ হয়ে হাসপাতালে যোগদান করলে আরও ভালো করে রোগীদের সেবা দেয়া যেত।
চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের
আরেক নার্স বলেন, আমাদের হাসপাতালে ৫ জন নার্স করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে ৪ জন মহিলা ও ১ জন পুরুষ। ৫ জনের মধ্যে একজন সুস্থ হয়ে হাসপাতালে পুনরায় রোগীদের সেবায় নিয়োজিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ নার্সিং অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি ও সিনিয়র স্টাফ নার্স আশু চৌধুরী বলেন, আমাদের হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়কসহ ৩৫ জন নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মোটামুটি সবার শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। ৩৫ জন নার্সদের মধ্যে ৩২ জন নারী বাকি ৩ জন পুরুষ। ৩৫ জনের মধ্যে ৩২ জনই বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার মধ্যে ২ জন করোনা ইউনিটে ও একজন হাসপাতালের কেবিন থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকে সুস্থ হলেও নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট না আসায় সুস্থ বলা যাচ্ছে না।
শনিবার, ১৩ জুন ২০২০ , ৩০ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ২০ শাওয়াল ১৪৪১
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম মহানগরীতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে গিয়ে আক্রান্ত হচ্ছে নার্সরা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে নার্সরা আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এসব হাসপাতালে প্রায় অর্ধশত নার্স আক্রান্ত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত এই ৫০ জন নার্সের মধ্যে ৪৪ জন নারী ও ৬ জন পুরুষ বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রামে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে যেসব নার্স রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে প্রতিদিন।
বেসরকারি হাসপাতালের নার্স করোনা আক্রান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের প্রণোদনার সরকারি কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমাদের বিভিন্ন মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে বেসরকারি নার্সদের বিষয়ে। আমাদের করোনা প্রতিরোধ বিভাগীয় কমিটির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত অধিকাংশ নার্স বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ৫০ জনের মধ্যে ৮ জন সুস্থ হয়েছে। তার মধ্যে ৪ জন পুনরায় হাসপাতালের রোগীদের সেবায় যোগদানও করেছেন। বাকি ৪ জন দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালের সেবায় যোগদান করবেন। তবে এই হিসাবে নেই বেসরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্সদের তালিকা।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্স করোনা হলে চিকিৎসার বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, নার্সদের চিকিৎসা যেখানে প্রয়োজন সেখানে দেয়া হচ্ছে। তবে অধিকাংশ নার্স বাসায় থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। যাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন হয়েছে তাদের জেনারেল হাসপাতালে কয়েকজনকে আনা হয়েছে। আমরা প্রতিদিন সব স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সামর্থ রয়েছে সবটুকু দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৩৫ জন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১০ জন ও চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে ৫ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে হাসাপতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন নার্স। তার মধ্যে ৮ জন নারী ও ২ জন পুরুষ। তারা মোটামুটি সুস্থ রয়েছেন। অনেকে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সুস্থ হলেও নমুনা পরীক্ষা না করাই সুস্থ বলা যাচ্ছে না। কিন্তু করোনার নমুনা দেয়ার পরও প্রায় ৭ দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে রিপোর্টের জন্য। তারা সুস্থ হয়ে হাসপাতালে যোগদান করলে আরও ভালো করে রোগীদের সেবা দেয়া যেত।
চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের
আরেক নার্স বলেন, আমাদের হাসপাতালে ৫ জন নার্স করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে ৪ জন মহিলা ও ১ জন পুরুষ। ৫ জনের মধ্যে একজন সুস্থ হয়ে হাসপাতালে পুনরায় রোগীদের সেবায় নিয়োজিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ নার্সিং অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি ও সিনিয়র স্টাফ নার্স আশু চৌধুরী বলেন, আমাদের হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়কসহ ৩৫ জন নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মোটামুটি সবার শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। ৩৫ জন নার্সদের মধ্যে ৩২ জন নারী বাকি ৩ জন পুরুষ। ৩৫ জনের মধ্যে ৩২ জনই বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার মধ্যে ২ জন করোনা ইউনিটে ও একজন হাসপাতালের কেবিন থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকে সুস্থ হলেও নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট না আসায় সুস্থ বলা যাচ্ছে না।