সাময়িকী কবিতা

হয়তো

অঞ্জনা সাহা

হয়তো একদিন তোমার বোকা অভিমান

আত্মপ্রবঞ্চনার সমূহ অসুখ থেকে আমাকে মুক্তি দেবে;

নিজেই ছিন্ন করবে অবতামসিক প্রহরের ঈন্দ্রজাল!

ঘাসে ঘাসে জমে থাকা চিরস্নিগ্ধ শিশিরের অনুরক্ত

বিন্দু বিন্দু নীল জল আর ভোরের নরম রৌদ্রস্নান

তোমাকে দেবে প্রার্থনার বৈভব, আতপ্ত আদর।

এনে দেবে শৈশবের ফেলে আসা

মহুয়ামদির কিছু মাতাল সৌরভ

চারদিকের আবহ ঘিরে তুমুল উৎসবের ঘনঘটায়

অকস্মাৎ দ্রিমিকি দ্রিমিকি তালে মাদলের ছন্দে

মেঘ-বিদ্যুতের পাখোয়াজ

আর বৃষ্টিনূপুর একসঙ্গে গাইবে কোরাস...।

পেখম মেলে দিয়ে নাচবে প্রফুল্ল ময়ূর

হয়তো শ্যামের বাঁশি বেজে উঠবে

ব্যাকুল গভীর এক ভিন্ন রকম সুরে।

হৃদয়ের নাদ

প্রদীপ মিত্র

বিশাল সত্তার ভেতর কী তুমুল আনন্দ; কী তুমুল জাগরণ; কী তমুল শুদ্ধতার অনন্য তরঙ্গ; কী বাহুমেলা ডাক বিশ্বধের আততী জড়ানো হাতের অনন্ত উদ্ভাস যেন মনে হয় পৃথিবীর দরোজা- জানালা এক ধাক্কায় কে যেন খুলে দিলো আজ। আজ ভোরে কে যেন দরাজ কণ্ঠে গেয়ে গেয়ে শোনালেন ভোররাঙা ভোরবেলাকার গান। কতদিন পরে এমন সুরের রণনে রণনে যেন হলো মোহভঙ্গ। কী যে ভালোলাগা; কী যে ভালোবাসা। কী অবাক

করা কাণ্ড যেন মাথার উপর থেকে অকস্মাৎ ধেই ধেই করে নেমে গেলো ষণ্ডাকাল। আমার আকাশভরা চাঁদ, চাঁদ; নিরন্তর শুভবোধের সভ্যতা করতলে উদ্ভাসিত; আমি সদাশয় দাসের মতোন পদতলে বসে তার সেবায় নিজেকে সঁপেছি সামান্য; প্রশ্নহীন অন্তর আমার;- এমন আলোর রেখার সাম্যতায় আর কি কিছু প্রশ্নও করা যায়? প্রশ্ন! সে তো শুধু শুধু ধু ধু আকাশের বুকে ওড়ে চলা গতিহীনা ছিন্ন চিহ্ন মেঘেদের পালছেঁড়া খণ্ডচিহ্ন হৃদয়ের নাদ।

ধূসরতত্ত্ব

মেহনাজ আলতাফ

নিট সা এর কথা মাঝে মাঝে মন্ত্রের মতো জপি,

যে দিনগুলোতে মরফিনের মতো প্রয়োজন হয়, সহজ অথচ জীবনের মতো সত্য একটি মন্ত্রের।

সমস্যা হলো পৃথিবীর বইগুলো মাথার ভেতর এক অদ্ভুত জগৎ তৈরি করে ফেলেছে- ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ের মতো- ওপেন এন্ড ক্লোজ সার্জারির মতো- আর কিছু করার নেই।

যদি শুরুতেই ধরতে পারতাম: ধূসরতা, দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম মাত্রা,

আরো বহুমাত্রা- যা এখনো জানা হয়নি!

সমস্যা হলো সব সুপার হিরো, সব আদর্শ মানব বেধড়ক মারা গেছে মাথার ভেতর- ধূসরতত্ত্বে অজ্ঞতার বিষবাষ্পে ঠাসা মাথা!

রিফাইন আটার মতো ঝাঁ চকচকে পরিবেশিত সত্য, অনুপ্রেরণার রাসায়নিক ঝড় তুলতো একসময়;

কিন্তু তারপর যেদিন তুষ উড়লো বাতাসে- তাজমহলের ফাটলের মতো একটা চির অলিন্দ ধরে এগুচ্ছেই কেবল।

বহুদিন স্টোনহেঞ্জ-এর মতো মুখ থেকে, শেষমেশ বুদ্ধার খোঁজে!

খুব কম লোকেই সাদা পাতা আর কালো কালির জগতে আটকা পড়েন।

কেউ কেউ পড়েন এরপরও,

আমার ধারণা এরা কিছু হার্মিট দার্শনিক, কিছু নামহীন লেখক আর কিছু নাক উঁচু, বাস্তবতায় রুচিহীন, নির্বোধ পতঙ্গ।

জলজীবন

মাহমুদ মৌসুম

বারান্দা রেলিঙে বিবর্ণ মেঘ

সময় ঝুলে থাকে ধূসরিত ভুলে

অপেক্ষারা বাড়ে দীর্ঘ ছায়ায়

বিমূঢ় আক্ষেপ দূর মাস্তুলে

জানালার বাইরে একলা আকাশ

একরাশ হাওয়া বিষাদ মাখা

সন্ধানী নাবিক সমতট খোঁজে

জাহাজী দু’চোখ বাতিঘর আঁকা

কার্নিশে দাঁড়িয়ে উদাস বিকেল

ক্ষয়ে যাওয়া রোদ অপলক দেখে

পাড় ভেঙ্গে চলে অশ্রু সাগর

নোনাজল ঢেউয়ে আছড়ে ভেসে ভেসে

সন্ধ্যা নেমে এলে আবছা অবয়ব

হাওয়ায় নুয়ে পড়ে দূর ঝাউবন

ছাদের এক কোণে মৌন শূন্যতা

স্মৃতির বেলাভূমি পরিযায়ী মন

ভাঙ্গা গলুইয়ের কড়িকাঠ থেকে

স্মৃতির জঞ্জাল খলবল করে

গভীর আঁধারের ভগ্নস্তুপেরা

শব্দহীন ডাকে রক্ত বুক চিরে

মানুষ মারা যায়

সালাহউদ্দিন সালমান

গ্রিলের বাহিরে পৃথিবীটা কেমন অপরিচিত দেখায় ইদানীং

সমুদ্রের জলে রক্তের রং, নক্ষত্রের শরীরে মৃতের মাংস

পিপাসার নদীতে লাশের গন্ধ চতুর্দিকের এলোমেলো আকাশ

নিঃসঙ্গ বাতাসের বুকে কেবলই কান্নার শব্দ শুনি আজকাল।

আহা স¤পর্ক, ভালোবাসার অটুট বন্ধন, আমরণ জীবনের অংশ

আজ বড়বেশি অসহায়, বড়বেশি দুঃসাধ্য দুর্গম অপ্রতিরোধ্য।

ঘুমের ভিড়ে উদাসী বাউলের সুর শুধুই আর্তনাদ জাগিয়ে দেয় বারংবার

শ্মশানে পোড়া দেহের বৈরি ঘ্রাণ আরেকটা লাশের বাণী শোনায়

রাতে চাঁদের আলোর তলে জোনাকি পোকা হিশেব মিলায় শবযাত্রার

কবরস্থান থেকে মসজিদের মাইকে কেবলই শোক সংবাদ

ক্লান্তির মতন বিচ্ছিন্ন অন্ধকার নুয়ে পরে চতুর্দিকে বেদনায়

ব্যস্তর চেয়েও অধিক অধীরতায় অহেতুক মানুষ মরে যায় দুনিয়ায়

দিগি্বদিক ক্ষমতা পরায়ণের চোখের সন্মুখে শুধু মানুষ মারা যায়।

একটা মৃত্যুর থেকে আরেকটা মৃত্যুর দূরত্ব কয়েক সেকেন্ড মাত্র

একটা স¤পর্ক থেকে বিচ্ছেদের দূরত্ব কতিপয় পলক মাত্র

শীতের শেষে হেমন্ত, হেমন্ত শেষে এই বসন্তের খোশগল্প এখন স্মৃতিমাত্র

তবুও চোখজুড়ে কার্তিকের নীল কুয়াশায় অনাগত ভবিষতের স্বপ্ন

একদিন কেটে যাবে সন্ধ্যার ধূসর অন্ধকার, গণবিচ্ছিন্ন ভালোবাসার বসবাস

অবিনশ্বর প্রেমে আমরা আবার একত্রিত হবো সম্পর্কের উদ্দীপনে

অসীম আলোর বলয়ে পূর্বদিগন্তে উদয় হবে নব সূর্যের উদ্ভাস,

উত্তেজিত মহামারির এই মরন জিজ্ঞাসা সৃষ্টিকর্তার কৃপায়

একদিন ঠিক ঠিক মানবসভ্যতার কাছে হবেই ভুষ্টিনাশ।

নিটোল রাজধানী

তোফায়েল তফাজ্জল

রূপ-লাবণ্যের নিটোল রাজধানী থেকে প্রায়ই চুরি যাচ্ছে

অমূল্য রত্নের অংশ, চুপিসারে- আছে কি খবর এর?

অনেকের চোরা দৃষ্টি ঘুঘু হয়ে উড়ে গিয়ে বসে

সযতেœ কুড়িয়ে নিয়ে ফিরছে মণিরূপ সর্ষেদানা

খোলা পেয়ে ঢাকনা, যতো খুশি ততোবার।

বুলবুল বা বসন্তদূতেরা ফুটাচ্ছে গানের কলি

যেভাবে তা পেয়ে ফোটে ডিম।

অলি, বোলতা, মৌমাছি বা মাছি তো পড়ছেই

হিসেবের খাতা না খুলেই।

এভাবেই জানা-অজানায় নষ্ট-দষ্ট হচ্ছে মৌসুমী ফসল,

সময়ের সেরা উপহার, বেখেয়ালে।

এমন সমূহ তথ্য পাওয়ার পরেও

বিষয়-সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে দিন থাকতে হবে না সজাগ,

নেবে না নিশ্ছিদ্র বিহিত ব্যবস্থা? উদ্যোগী হবে না

সদর দরজা বন্ধে এর?

না, ঠিক হবে না এই ভাবা, কাঁটায় কাঁটায় ঠিক হয়ে যাবে

যার বা যাদের হাত টানের অভ্যাস;

বরং নিজের মাল রক্ষা করতে অতন্দ্রপ্রহরী হতে হবে নিজেকেই।

বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৩ মহররম ১৪৪২, ১৭ ভাদ্র ১৪২৭

সাময়িকী কবিতা

হয়তো

অঞ্জনা সাহা

হয়তো একদিন তোমার বোকা অভিমান

আত্মপ্রবঞ্চনার সমূহ অসুখ থেকে আমাকে মুক্তি দেবে;

নিজেই ছিন্ন করবে অবতামসিক প্রহরের ঈন্দ্রজাল!

ঘাসে ঘাসে জমে থাকা চিরস্নিগ্ধ শিশিরের অনুরক্ত

বিন্দু বিন্দু নীল জল আর ভোরের নরম রৌদ্রস্নান

তোমাকে দেবে প্রার্থনার বৈভব, আতপ্ত আদর।

এনে দেবে শৈশবের ফেলে আসা

মহুয়ামদির কিছু মাতাল সৌরভ

চারদিকের আবহ ঘিরে তুমুল উৎসবের ঘনঘটায়

অকস্মাৎ দ্রিমিকি দ্রিমিকি তালে মাদলের ছন্দে

মেঘ-বিদ্যুতের পাখোয়াজ

আর বৃষ্টিনূপুর একসঙ্গে গাইবে কোরাস...।

পেখম মেলে দিয়ে নাচবে প্রফুল্ল ময়ূর

হয়তো শ্যামের বাঁশি বেজে উঠবে

ব্যাকুল গভীর এক ভিন্ন রকম সুরে।

হৃদয়ের নাদ

প্রদীপ মিত্র

বিশাল সত্তার ভেতর কী তুমুল আনন্দ; কী তুমুল জাগরণ; কী তমুল শুদ্ধতার অনন্য তরঙ্গ; কী বাহুমেলা ডাক বিশ্বধের আততী জড়ানো হাতের অনন্ত উদ্ভাস যেন মনে হয় পৃথিবীর দরোজা- জানালা এক ধাক্কায় কে যেন খুলে দিলো আজ। আজ ভোরে কে যেন দরাজ কণ্ঠে গেয়ে গেয়ে শোনালেন ভোররাঙা ভোরবেলাকার গান। কতদিন পরে এমন সুরের রণনে রণনে যেন হলো মোহভঙ্গ। কী যে ভালোলাগা; কী যে ভালোবাসা। কী অবাক

করা কাণ্ড যেন মাথার উপর থেকে অকস্মাৎ ধেই ধেই করে নেমে গেলো ষণ্ডাকাল। আমার আকাশভরা চাঁদ, চাঁদ; নিরন্তর শুভবোধের সভ্যতা করতলে উদ্ভাসিত; আমি সদাশয় দাসের মতোন পদতলে বসে তার সেবায় নিজেকে সঁপেছি সামান্য; প্রশ্নহীন অন্তর আমার;- এমন আলোর রেখার সাম্যতায় আর কি কিছু প্রশ্নও করা যায়? প্রশ্ন! সে তো শুধু শুধু ধু ধু আকাশের বুকে ওড়ে চলা গতিহীনা ছিন্ন চিহ্ন মেঘেদের পালছেঁড়া খণ্ডচিহ্ন হৃদয়ের নাদ।

ধূসরতত্ত্ব

মেহনাজ আলতাফ

নিট সা এর কথা মাঝে মাঝে মন্ত্রের মতো জপি,

যে দিনগুলোতে মরফিনের মতো প্রয়োজন হয়, সহজ অথচ জীবনের মতো সত্য একটি মন্ত্রের।

সমস্যা হলো পৃথিবীর বইগুলো মাথার ভেতর এক অদ্ভুত জগৎ তৈরি করে ফেলেছে- ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ের মতো- ওপেন এন্ড ক্লোজ সার্জারির মতো- আর কিছু করার নেই।

যদি শুরুতেই ধরতে পারতাম: ধূসরতা, দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম মাত্রা,

আরো বহুমাত্রা- যা এখনো জানা হয়নি!

সমস্যা হলো সব সুপার হিরো, সব আদর্শ মানব বেধড়ক মারা গেছে মাথার ভেতর- ধূসরতত্ত্বে অজ্ঞতার বিষবাষ্পে ঠাসা মাথা!

রিফাইন আটার মতো ঝাঁ চকচকে পরিবেশিত সত্য, অনুপ্রেরণার রাসায়নিক ঝড় তুলতো একসময়;

কিন্তু তারপর যেদিন তুষ উড়লো বাতাসে- তাজমহলের ফাটলের মতো একটা চির অলিন্দ ধরে এগুচ্ছেই কেবল।

বহুদিন স্টোনহেঞ্জ-এর মতো মুখ থেকে, শেষমেশ বুদ্ধার খোঁজে!

খুব কম লোকেই সাদা পাতা আর কালো কালির জগতে আটকা পড়েন।

কেউ কেউ পড়েন এরপরও,

আমার ধারণা এরা কিছু হার্মিট দার্শনিক, কিছু নামহীন লেখক আর কিছু নাক উঁচু, বাস্তবতায় রুচিহীন, নির্বোধ পতঙ্গ।

জলজীবন

মাহমুদ মৌসুম

বারান্দা রেলিঙে বিবর্ণ মেঘ

সময় ঝুলে থাকে ধূসরিত ভুলে

অপেক্ষারা বাড়ে দীর্ঘ ছায়ায়

বিমূঢ় আক্ষেপ দূর মাস্তুলে

জানালার বাইরে একলা আকাশ

একরাশ হাওয়া বিষাদ মাখা

সন্ধানী নাবিক সমতট খোঁজে

জাহাজী দু’চোখ বাতিঘর আঁকা

কার্নিশে দাঁড়িয়ে উদাস বিকেল

ক্ষয়ে যাওয়া রোদ অপলক দেখে

পাড় ভেঙ্গে চলে অশ্রু সাগর

নোনাজল ঢেউয়ে আছড়ে ভেসে ভেসে

সন্ধ্যা নেমে এলে আবছা অবয়ব

হাওয়ায় নুয়ে পড়ে দূর ঝাউবন

ছাদের এক কোণে মৌন শূন্যতা

স্মৃতির বেলাভূমি পরিযায়ী মন

ভাঙ্গা গলুইয়ের কড়িকাঠ থেকে

স্মৃতির জঞ্জাল খলবল করে

গভীর আঁধারের ভগ্নস্তুপেরা

শব্দহীন ডাকে রক্ত বুক চিরে

মানুষ মারা যায়

সালাহউদ্দিন সালমান

গ্রিলের বাহিরে পৃথিবীটা কেমন অপরিচিত দেখায় ইদানীং

সমুদ্রের জলে রক্তের রং, নক্ষত্রের শরীরে মৃতের মাংস

পিপাসার নদীতে লাশের গন্ধ চতুর্দিকের এলোমেলো আকাশ

নিঃসঙ্গ বাতাসের বুকে কেবলই কান্নার শব্দ শুনি আজকাল।

আহা স¤পর্ক, ভালোবাসার অটুট বন্ধন, আমরণ জীবনের অংশ

আজ বড়বেশি অসহায়, বড়বেশি দুঃসাধ্য দুর্গম অপ্রতিরোধ্য।

ঘুমের ভিড়ে উদাসী বাউলের সুর শুধুই আর্তনাদ জাগিয়ে দেয় বারংবার

শ্মশানে পোড়া দেহের বৈরি ঘ্রাণ আরেকটা লাশের বাণী শোনায়

রাতে চাঁদের আলোর তলে জোনাকি পোকা হিশেব মিলায় শবযাত্রার

কবরস্থান থেকে মসজিদের মাইকে কেবলই শোক সংবাদ

ক্লান্তির মতন বিচ্ছিন্ন অন্ধকার নুয়ে পরে চতুর্দিকে বেদনায়

ব্যস্তর চেয়েও অধিক অধীরতায় অহেতুক মানুষ মরে যায় দুনিয়ায়

দিগি্বদিক ক্ষমতা পরায়ণের চোখের সন্মুখে শুধু মানুষ মারা যায়।

একটা মৃত্যুর থেকে আরেকটা মৃত্যুর দূরত্ব কয়েক সেকেন্ড মাত্র

একটা স¤পর্ক থেকে বিচ্ছেদের দূরত্ব কতিপয় পলক মাত্র

শীতের শেষে হেমন্ত, হেমন্ত শেষে এই বসন্তের খোশগল্প এখন স্মৃতিমাত্র

তবুও চোখজুড়ে কার্তিকের নীল কুয়াশায় অনাগত ভবিষতের স্বপ্ন

একদিন কেটে যাবে সন্ধ্যার ধূসর অন্ধকার, গণবিচ্ছিন্ন ভালোবাসার বসবাস

অবিনশ্বর প্রেমে আমরা আবার একত্রিত হবো সম্পর্কের উদ্দীপনে

অসীম আলোর বলয়ে পূর্বদিগন্তে উদয় হবে নব সূর্যের উদ্ভাস,

উত্তেজিত মহামারির এই মরন জিজ্ঞাসা সৃষ্টিকর্তার কৃপায়

একদিন ঠিক ঠিক মানবসভ্যতার কাছে হবেই ভুষ্টিনাশ।

নিটোল রাজধানী

তোফায়েল তফাজ্জল

রূপ-লাবণ্যের নিটোল রাজধানী থেকে প্রায়ই চুরি যাচ্ছে

অমূল্য রত্নের অংশ, চুপিসারে- আছে কি খবর এর?

অনেকের চোরা দৃষ্টি ঘুঘু হয়ে উড়ে গিয়ে বসে

সযতেœ কুড়িয়ে নিয়ে ফিরছে মণিরূপ সর্ষেদানা

খোলা পেয়ে ঢাকনা, যতো খুশি ততোবার।

বুলবুল বা বসন্তদূতেরা ফুটাচ্ছে গানের কলি

যেভাবে তা পেয়ে ফোটে ডিম।

অলি, বোলতা, মৌমাছি বা মাছি তো পড়ছেই

হিসেবের খাতা না খুলেই।

এভাবেই জানা-অজানায় নষ্ট-দষ্ট হচ্ছে মৌসুমী ফসল,

সময়ের সেরা উপহার, বেখেয়ালে।

এমন সমূহ তথ্য পাওয়ার পরেও

বিষয়-সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে দিন থাকতে হবে না সজাগ,

নেবে না নিশ্ছিদ্র বিহিত ব্যবস্থা? উদ্যোগী হবে না

সদর দরজা বন্ধে এর?

না, ঠিক হবে না এই ভাবা, কাঁটায় কাঁটায় ঠিক হয়ে যাবে

যার বা যাদের হাত টানের অভ্যাস;

বরং নিজের মাল রক্ষা করতে অতন্দ্রপ্রহরী হতে হবে নিজেকেই।