বালু ব্যবসার জন্য মাটি কাটা হচ্ছে 

ঝুঁকিতে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু

দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখ লাখ মানুষের যাতায়াতের আশ্রয়স্থল কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুটি ঝুঁকিতে রয়েছে। বালু মহাল তৈরির জন্য সেতু সংলগ্ন একটি মহল এক্সেবেটর দিয়ে মাটি কেটে গভীর গর্ত করার ফলে সেতুটিতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। নদী থেকে বালু উত্তোলন করে তৈরিকৃত এই গর্তে স্তুপ রেখে পরে বিক্রি করা হবে বলে গতকাল সরেজমিন একটি সংগঠনের নেতারা জনিয়েছেন। এদিকে বাকলিয়া থানাধীন এ সেতু সংলগ্ন এলাকায় মাটি কাটার খবর পেয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহম্মদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেতুর নিচে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। যে রাস্তা দিয়ে কেটে ফেলা মাটি ট্রাক দিয়ে অপসারণ করা হয়।

গতকাল সরেজমিন মাটি কাটার বিষয়ে শ্রমিকদের জানতে চাওয়া হলে তারা দৈনিক চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করে বলে জানান। অন্যদিকে সেতু সংলগ্ন জায়গায় ট্রাক রাখা হয় বলে মাটি কেটে গর্ত না করতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে ট্রাক মালিকরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহম্মদ বলেন, তবে অবৈধভাবে ব্রিজ সংলগ্ন কোন গর্ত করে বালু মহাল তৈরি করলে কিংবা কোন স্থাপনা করলে যদি ব্রিজের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, মাটি কাটার স্থানটি বন্দর কর্তৃপক্ষের। তিনি বলেন, তবুও আমি সরেজমিন গিয়ে দেখেছি। সেতুর নিচে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। যাতে ট্রাক দিয়ে মাটি অপসারণ করতে না পারে।

এ বিষয়ে বাকলিয়া থানার ওসি জানান, এ জায়গা চট্টগ্রামবন্দর কিংবা সড়ক ও জনপদ বিভাগের। আমরাতো ব্যবস্থা নিতে পারি না। তারপরও যদি সংশ্লিষ্ট সেক্টর থানার সহযোগিতা চায়, তাহলে বাকলিয়া থানা ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে প্রভাবশালী ওই গ্রুপটি দাবি করে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী থেকে জায়গাটি ভাড়া নিয়েছে। এর আগে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় বর্তমান ভূমিমন্ত্রী বিগত সরকারের সময়ে যখন ভূমি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তখন কর্ণফুলী নদীর পাড়ে আসলাম চৌধুরীর ব্রিকফিল্ড সিলগালা করে দিয়েছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক, কাভার্ডভ্যান অ্যান্ড মিনি ট্রাক মালিক গ্রুপ বাকলিয়া-কোতোয়ালী উপ-কমিটির নেতারা বলেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে ট্রাকগুলো কর্নফুলী শাহআমানত সেতু সংলগ্ন এলাকায় রাখার সিদ্ধান্ত হয় ২০০৩ সলের ২৮ অক্টোবর। সেই থেকে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছাদগঞ্জ, টেরিবাজার এবং চট্টগ্রাম চেম্বারের ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে কাজে নিয়োজিত ট্রাকগুলো শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন রাখা হচ্ছে। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম দুলাল জানান, মাটি কেটে গর্ত করার ফলে শাহ আমানত সেতুর ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। তাছাড়া ওই স্থানে ট্রাক না রেখে রাস্তায় ট্রাক রাখলে যানজট সৃষ্টি হবে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলে তিনি অভিমত পোষণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করার কথা জানান।

এ ব্যাপারে বন্দর কর্তৃপক্ষের ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গায় যদি অবৈধ বালু মহাল করা হয় কিংবা কোন স্থাপনা করা হয় তাহলে বন্দর কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৩ মহররম ১৪৪২, ১৭ ভাদ্র ১৪২৭

বালু ব্যবসার জন্য মাটি কাটা হচ্ছে 

ঝুঁকিতে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু

চট্টগ্রাম ব্যুরো

image

কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুসংলগ্ন জায়গায় নিয়মিত মাটি কেটে গর্ত করছে একটি মহল -সংবাদ

দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখ লাখ মানুষের যাতায়াতের আশ্রয়স্থল কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুটি ঝুঁকিতে রয়েছে। বালু মহাল তৈরির জন্য সেতু সংলগ্ন একটি মহল এক্সেবেটর দিয়ে মাটি কেটে গভীর গর্ত করার ফলে সেতুটিতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। নদী থেকে বালু উত্তোলন করে তৈরিকৃত এই গর্তে স্তুপ রেখে পরে বিক্রি করা হবে বলে গতকাল সরেজমিন একটি সংগঠনের নেতারা জনিয়েছেন। এদিকে বাকলিয়া থানাধীন এ সেতু সংলগ্ন এলাকায় মাটি কাটার খবর পেয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহম্মদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেতুর নিচে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। যে রাস্তা দিয়ে কেটে ফেলা মাটি ট্রাক দিয়ে অপসারণ করা হয়।

গতকাল সরেজমিন মাটি কাটার বিষয়ে শ্রমিকদের জানতে চাওয়া হলে তারা দৈনিক চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করে বলে জানান। অন্যদিকে সেতু সংলগ্ন জায়গায় ট্রাক রাখা হয় বলে মাটি কেটে গর্ত না করতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে ট্রাক মালিকরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহম্মদ বলেন, তবে অবৈধভাবে ব্রিজ সংলগ্ন কোন গর্ত করে বালু মহাল তৈরি করলে কিংবা কোন স্থাপনা করলে যদি ব্রিজের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, মাটি কাটার স্থানটি বন্দর কর্তৃপক্ষের। তিনি বলেন, তবুও আমি সরেজমিন গিয়ে দেখেছি। সেতুর নিচে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছি। যাতে ট্রাক দিয়ে মাটি অপসারণ করতে না পারে।

এ বিষয়ে বাকলিয়া থানার ওসি জানান, এ জায়গা চট্টগ্রামবন্দর কিংবা সড়ক ও জনপদ বিভাগের। আমরাতো ব্যবস্থা নিতে পারি না। তারপরও যদি সংশ্লিষ্ট সেক্টর থানার সহযোগিতা চায়, তাহলে বাকলিয়া থানা ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে প্রভাবশালী ওই গ্রুপটি দাবি করে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী থেকে জায়গাটি ভাড়া নিয়েছে। এর আগে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় বর্তমান ভূমিমন্ত্রী বিগত সরকারের সময়ে যখন ভূমি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তখন কর্ণফুলী নদীর পাড়ে আসলাম চৌধুরীর ব্রিকফিল্ড সিলগালা করে দিয়েছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক, কাভার্ডভ্যান অ্যান্ড মিনি ট্রাক মালিক গ্রুপ বাকলিয়া-কোতোয়ালী উপ-কমিটির নেতারা বলেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে ট্রাকগুলো কর্নফুলী শাহআমানত সেতু সংলগ্ন এলাকায় রাখার সিদ্ধান্ত হয় ২০০৩ সলের ২৮ অক্টোবর। সেই থেকে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছাদগঞ্জ, টেরিবাজার এবং চট্টগ্রাম চেম্বারের ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে কাজে নিয়োজিত ট্রাকগুলো শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন রাখা হচ্ছে। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম দুলাল জানান, মাটি কেটে গর্ত করার ফলে শাহ আমানত সেতুর ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। তাছাড়া ওই স্থানে ট্রাক না রেখে রাস্তায় ট্রাক রাখলে যানজট সৃষ্টি হবে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলে তিনি অভিমত পোষণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করার কথা জানান।

এ ব্যাপারে বন্দর কর্তৃপক্ষের ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গায় যদি অবৈধ বালু মহাল করা হয় কিংবা কোন স্থাপনা করা হয় তাহলে বন্দর কর্তৃপক্ষ অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।